< রোমীয় 7 >

1 হে ভাইয়েরা, তোমরা কি জান না কারণ যারা আইন কানুন জানে আমি তাদেরকেই বলছি, যে মানুষ যত দিন জীবিত থাকে, ততদিন পর্যন্ত আইন কানুন তার উপরে কর্তৃত্ব করে?
ভাইবোনেরা, বিধান সম্বন্ধে যাদের কিছুটা জ্ঞান আছে আমি তাদের বলছি, তোমরা কি জানো না যে যতদিন কোনো মানুষ জীবিত থাকে, বিধান ততদিনই তার উপরে কর্তৃত্ব করে?
2 কারণ যত দিন স্বামী জীবিত থাকে ততদিন স্ত্রীলোকেরা আইনের মাধ্যমে তার কাছে বাঁধা থাকে; কিন্তু স্বামী মরলে সে স্বামীর বিয়ের আইন থেকে মুক্ত হয়।
উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিবাহিত নারী, যতদিন তার স্বামী জীবিত থাকে ততদিন সে তার সঙ্গে বিবাহের বাঁধনে যুক্ত থাকে; কিন্তু যদি তার স্বামী মারা যায়, সে বিবাহের বাঁধন থেকে মুক্ত হয়।
3 সুতরাং যদি সে স্বামী জীবিত থাকা সত্বেও অন্য পুরুষের সঙ্গে বাস করে, তবে তাকে ব্যভিচারী বলা হবে; কিন্তু যদি স্বামী মরে যায় সে ঐ আইন থেকে মুক্ত হয়, সুতরাং সে যদি অন্য পুরুষের সঙ্গে বাস করে তবেও সে ব্যভিচারিণী হবে না।
সেই কারণে, তার স্বামী জীবিত থাকাকালীন সে যদি অপর পুরুষকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচারিণীরূপে গণ্য হবে। কিন্তু যদি তার স্বামী মারা যায়, সে বিধান থেকে মুক্ত হয়। ফলে সে অপর পুরুষকে বিবাহ করলেও আর ব্যভিচারিণী হয় না।
4 অতএব, হে আমার ভাইয়েরা, খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে আইন অনুসারে তোমাদেরও মৃত্যু হয়েছে, যেন তোমরা অন্যের অর্থাৎ যিনি মৃতদের মধ্য থেকে উঠেছেন তাঁরই হও; যাতে আমরা ঈশ্বরের জন্য ফল উৎপন্ন করতে পারি।
অতএব, আমার ভাইবোনেরা, তোমরাও খ্রীষ্টের শরীরের মাধ্যমে বিধানের কাছে মৃত্যুবরণ করেছ, যেন তোমরা অন্যের হও, যাঁকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করা হয়েছিল, যেন আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশে ফল উৎপন্ন করতে পারি।
5 কারণ যখন আমরা মাংসের অধীনে ছিলাম, তখন আইন কানুন আমাদের ভিতর পাপের কামনা বাসনা গুলি জাগিয়ে তুলত এবং মৃত্যুর জন্য ফল উৎপন্ন করবার জন্য আমাদের শরীরের মধ্যে কাজ করত।
কারণ, যখন আমরা পাপ-প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতাম, তখন আমাদের শরীরে পাপপূর্ণ বাসনাগুলি বিধানের মাধ্যমে জাগৃত হয়ে সক্রিয় হত, যেন আমরা মৃত্যুর উদ্দেশে ফল উৎপন্ন করি।
6 কিন্তু এখন আমরা নিয়ম কানুন থেকে মুক্ত হয়েছি; আমরা যাতে আবদ্ধ ছিলাম, তার জন্যই আমরা মরেছি, যেন আমরা পুরানো লেখা আইনের দাস নয় কিন্তু আত্মায় নতুনতায় দাসের কাজ করি।
কিন্তু এক সময় যে বিধান আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছিল, এখন তার প্রতি মৃত্যুবরণ করার ফলে আমরা বিধানের বাঁধন থেকে মুক্ত হয়েছি, যেন আমরা লিখিত বিধানের পুরোনো পদ্ধতিতে নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মার নতুন পথে ঈশ্বরের দাসত্ব করি।
7 আমরা তবে কি বলব? আইন কি নিজেই পাপ? তা কোনদিন ই না; বরং পাপকে আমি জানতাম না যদি কি না আইন না থাকত; কারণ “লোভ কর না,” এই কথা যদি আইনে না বলত, তবে লোভ কি তা জানতে পারতাম না;
তাহলে, আমরা কী বলব? বিধানই কি পাপ? নিশ্চিতরূপে তা নয়! প্রকৃতপক্ষে বিধান না থাকলে পাপ কী, আমি তা জানতেই পারতাম না, কারণ বিধান যদি না বলত, “লোভ কোরো না,” তাহলে লোভ প্রকৃতপক্ষে কী, তা আমি জানতে পারতাম না।
8 কিন্তু পাপ সুযোগ নিয়ে সেই আদেশের মাধ্যমে আমার মধ্যে সব রকমের কামনা বাসনা সম্পন্ন করেছে; কারণ আইন ছাড়া পাপ মৃত।
কিন্তু পাপ, সেই বিধানের সুযোগ নিয়ে আমার মধ্যে সব ধরনের লোভের ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলল, কারণ বিধান ছাড়া পাপ মৃত।
9 আমি একদিন আইন ছাড়াই বেঁচে ছিলাম, কিন্তু যখন আদেশ আসলো পাপ আবার জীবিত হয়ে উঠল এবং আমি মরলাম।
এক সময় আমি বিধান ছাড়াই জীবিত ছিলাম, কিন্তু দশাজ্ঞা আসার পরে পাপ জীবিত হয়ে উঠল, আর আমার মৃত্যু হল।
10 ১০ যে আদেশ জীবন আনে তাতে আমি মৃত্যু পেলাম।
আমি দেখলাম, যে আজ্ঞার জীবন নিয়ে আসার কথা ছিল, প্রকৃতপক্ষে তা মৃত্যু নিয়ে এল।
11 ১১ কারণ পাপ সুযোগ নিয়ে আদেশের মাধ্যমে আমাকে প্রতারণা করল এবং সেই আদেশ দিয়েই আমাকে হত্যা করল।
কারণ আজ্ঞার সুযোগ নিয়ে পাপ আমার সঙ্গে প্রতারণা করল এবং আজ্ঞার মাধ্যমে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দিল।
12 ১২ অতএব আইন হলো পবিত্র এবং আদেশ হলো পবিত্র, ন্যায্য এবং চমত্কার।
তাহলে বিধান পবিত্র, সেই আজ্ঞাও পবিত্র, ন্যায়সংগত ও কল্যাণকর।
13 ১৩ তবে যা উত্তম তা কি আমার মৃত্যু হয়ে আসলো? তা যেন কখনো না হয়। কিন্তু পাপ হলো যেন সুশ্রী বস্তু দিয়ে আমার মৃত্যুর জন্য তা পাপ বলে প্রকাশ পায়, যেন আদেশের মাধ্যমে পাপ পরিমাণ ছাড়া পাপী হয়ে ওঠে।
তাহলে, যা কল্যাণকর, তাই কি আমার পক্ষে মৃত্যুজনক হয়ে উঠল? কোনোভাবেই নয়! কিন্তু পাপকে যেন পাপরূপেই চিনতে পারা যায়, তাই যা কল্যাণকর ছিল তারই মধ্য দিয়ে পাপ আমার মধ্যে মৃত্যু নিয়ে এল, যেন আজ্ঞার মাধ্যমে সেই পাপ চরম পাপময় হয়ে ওঠে।
14 ১৪ কারণ আমরা জানি আইন হলো আত্মিক, কিন্তু আমি মাংসিক, আমি পাপের কাছে বিক্রি হয়েছি।
আমরা জানি যে বিধান আত্মিক, কিন্তু আমি অনাত্মিক, পাপের কাছে ক্রীতদাসরূপে বিক্রীত।
15 ১৫ কারণ আমি যা প্রকৃত বুঝি না তাই আমি করি। কারণ আমি যা করতে চাই তাই আমি করি না, বরং আমি যা ঘৃণা করি, সেটাই করে থাকি।
আমি যা করি, তা আমি বুঝি না, কারণ আমি যা করতে চাই, তা আমি করি না, কিন্তু যা আমি ঘৃণা করি, আমি তাই করি।
16 ১৬ কিন্তু আমি যেটা করতে চাই না সেটা যদি করি, তখন আইন যে ঠিক তা আমি স্বীকার করে নেই।
আবার আমি যা করতে চাই না, যদি তাই করি, তাহলে আমি মেনে নিই যে বিধান উৎকৃষ্ট।
17 ১৭ কিন্তু এখন আমি কোনো মতেই সেই কাজ আর করি না কিন্তু আমাতে যে পাপ বাস করে সেই তা করে।
তাই যদি হয়, আমি আর নিজে থেকে এ কাজ করি না, কিন্তু আমার মধ্যে যে পাপ বাস করে তাই করে।
18 ১৮ কারণ আমি জানি যে আমার ভিতরে, অর্থাৎ আমার দেহে ভালো কিছু বাস করে না। কারণ ভালো কোনো কিছুর ইচ্ছা আমার মধ্যে আছে বটে কিন্তু আমি তা করি না।
আমি জানি যে আমার মধ্যে, অর্থাৎ আমার পাপময় প্রকৃতির মধ্যে ভালো কিছুই বাস করে না। কারণ যা কিছু কল্যাণকর, তা করার ইচ্ছা আমার আছে, কিন্তু আমি তা করে উঠতে পারি না।
19 ১৯ কারণ আমি যে ভালো কাজ করতে চাই সেই কাজ আমি করি না; কিন্তু যা আমি চাই না সেই মন্দ কাজ আমি করি।
কারণ আমি যা করতে চাই, সেই ভালো কাজ আমি করি না, কিন্তু যে দুষ্কর্ম আমি করতে চাই না, তা ক্রমাগত করেই যাই।
20 ২০ এখন যা আমি করতে চাই না তাই যদি করি, তবে তা আর আমি কোনো মতেই করি না, কিন্তু আমার মধ্যে যে পাপ বাস করে সেই করে।
এখন, যা আমি করতে চাই না তা যদি আমি করি, সে কাজটি আর আমি নিজে করি না, কিন্তু আমার মধ্যে বাস করা পাপ-ই তা করে।
21 ২১ অতএব আমি একটা মূল তথ্য দেখতে পাচ্ছি যে, আমি ঠিক কাজ করতে চাই কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মন্দ আমার মধ্যে উপস্থিত থাকে।
তাই আমি এই নিয়ম সক্রিয় দেখতে পাচ্ছি: যখন আমি সৎকর্ম করতে চাই, তখনই মন্দ আমার সঙ্গী হয়।
22 ২২ সাধারণত অভ্যন্তরীণ মানুষের ভাব অনুযায়ী আমি ঈশ্বরের আইন কানুনে আনন্দ করি।
কারণ আমার আন্তরিক সত্তায় আমি ঈশ্বরের বিধানে আনন্দ করি,
23 ২৩ কিন্তু আমার শরীরের অঙ্গে অন্য প্রকার এক মূল তথ্য দেখতে পাচ্ছি; তা আমার মনের মূল তত্ত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পাপের যে নিয়ম আমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে আমাকে তার বন্দি দাস করে।
কিন্তু আমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য এক বিধান কার্যকরী দেখতে পাই; তা আমার মনের বিধানের সঙ্গে সংগ্রাম করে চলে এবং পাপের যে বিধান আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তার বন্দি করে রাখে।
24 ২৪ আমি একজন দুঃখদায়ক মানুষ! কে আমাকে এই মৃত্যুর দেহ থেকে উদ্ধার করবে?
কী দুর্ভাগ্যপূর্ণ মানুষ আমি! মৃত্যুর এই শরীর থেকে কে আমাকে উদ্ধার করবে?
25 ২৫ কিন্তু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেই। অতএব একদিকে আমি নিজে মন দিয়ে ঈশ্বরের আইনের সেবা করি, কিন্তু অন্য দিকে দেহ দিয়ে পাপের মূল তত্ত্বের সেবা করি।
আমাদের প্রভু, খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই। সুতরাং, মনে মনে আমি ঈশ্বরের বিধানের ক্রীতদাস, কিন্তু পাপময় প্রকৃতিতে পাপের বিধানের দাসত্ব করি।

< রোমীয় 7 >