< মথি 10 >

1 পরে তিনি নিজের বারো জন শিষ্যকে কাছে ডেকে তাঁদের অশুচি আত্মাদের উপরে শিক্ষা দিলেন, যেন তাঁরা তাদের ছাড়াতে এবং সব রকম রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থ করতে পারেন।
যীশু তাঁর বারোজন শিষ্যকে নিজের কাছে ডাকলেন। তিনি তাঁদের অশুচি আত্মা তাড়ানোর, সমস্ত রকম রোগ ও পীড়া ভালো করার ক্ষমতা দিলেন।
2 সেই বারো জন প্রেরিতের নাম এই প্রথম, শিমোন, যাকে পিতর বলে এবং তাঁর ভাই আন্দ্রিয়, সিবদিয়ের পুত্র যাকোব এবং তাঁর ভাই যোহন,
সেই বারোজন প্রেরিতের নাম হল: প্রথমে, শিমোন যাকে পিতর নামে ডাকা হত ও তার ভাই আন্দ্রিয়; সিবদিয়ের পুত্র যাকোব ও তার ভাই যোহন;
3 ফিলিপ ও বর্থলময়, মথি, থোমা ও কর আদায়কারী, আলফেয়ের ছেলে যাকোব ও থদ্দেয়,
ফিলিপ ও বর্থলময়; থোমা ও কর আদায়কারী মথি; আলফেয়ের পুত্র যাকোব ও থদ্দেয়;
4 উদ্যোগী শিমোন ও ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা, যে তাঁকে শত্রুদের হাতে তুলে দিল।
উদ্যোগী শিমোন ও যিহূদা ইষ্কারিয়োৎ, যে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।
5 এই বারো জনকে যীশু পাঠিয়ে দিলেন, আর তাঁদের এই নির্দেশ দিলেন, তোমরা অযিহূদীরা যেখানে বাস করে সেখানে যেও না এবং শমরীয়দের কোন শহরে প্রবেশ কর না;
যীশু বারোজনকে এসব আদেশ দিয়ে পাঠালেন: “তোমরা অইহুদিদের মধ্যে যেয়ো না বা শমরীয়দের কোনো নগরে প্রবেশ কোরো না।
6 বরং ইস্রায়েল কুলের হারান মেষদের কাছে যাও।
বরং তোমরা ইস্রায়েলের হারিয়ে যাওয়া মেষদের কাছে যাও।
7 আর তোমরা যেতে যেতে এই কথা প্রচার কর, স্বর্গরাজ্য কাছাকাছি এসে পড়েছে।
তোমরা যেতে যেতে এই বার্তা প্রচার কোরো: ‘স্বর্গরাজ্য সন্নিকট।’
8 অসুস্থদেরকে সুস্থ কর, মৃতদেরকে বাঁচিয়ে তোল, কুষ্ঠ রোগীদেরকে শুদ্ধ কর, ভূতদেরকে বের করে দাও; কারণ তোমরা বিনামূল্যে পেয়েছ, বিনামূল্যে দান কর।
তোমরা পীড়িতদের সুস্থ করো, মৃতদের উত্থাপন করো, যাদের কুষ্ঠরোগ আছে, তাদের শুচিশুদ্ধ করো, ভূতদের তাড়িও। তোমরা বিনামূল্যে পেয়েছ, সেইরূপ বিনামূল্যেই দান করো।
9 তোমাদের কোমরের কাপড়, সোনা কি রূপা কি পিতল এবং
“তোমাদের কোমরের বেল্টে সোনা, বা রুপো, বা তামার মুদ্রা নিয়ো না;
10 ১০ যাওয়ার জন্য থলি কি দুটি জামাকাপড় কি জুতো কি লাঠি, এ সব নিও না; কারণ যে কাজ করে সে তার বেতনের যোগ্য।
যাত্রার উদ্দেশ্যে কোনো থলি, বা অতিরিক্ত পোশাক, বা চটিজুতো বা কোনো ছড়ি নিয়ো না; কর্মচারী তার বেতন পাওয়ার যোগ্য।
11 ১১ আর তোমরা যে শহরে কি গ্রামে প্রবেশ করবে, সেখানকার কোন ব্যক্তি যোগ্য, তা খোঁজ করো, আর যে পর্যন্ত অন্য জায়গায় না যাও, সেখানে থেকো।
আর তোমরা যে নগরে বা গ্রামে প্রবেশ করবে, সেখানকার কোনো উপযুক্ত লোকের সন্ধান করে সেই স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার বাড়িতেই থেকো।
12 ১২ আর তার ঘরে প্রবেশ করবার দিনের সেই ঘরের লোকদেরকে শুভেচ্ছা জানাও।
সেই বাড়িতে প্রবেশ করার সময়, তোমরা তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ো।
13 ১৩ তাতে সেই ঘরের লোক যদি যোগ্য হয়, তবে তোমাদের শান্তি তাদের প্রতি আসুক; কিন্তু যদি যোগ্য না হয়, তবে তোমাদের শান্তি তোমাদের কাছে ফিরে আসুক।
যদি সেই বাড়ি যোগ্য হয়, তোমাদের শান্তি তার উপরে বিরাজ করুক; যদি যোগ্য না হয়, তাহলে তোমাদের শান্তি তোমাদেরই কাছে ফিরে আসুক।
14 ১৪ আর যে কেউ তোমাদের গ্রহণ না করে এবং তোমাদের কথা না শোনে, সেই ঘর কিংবা সেই শহর থেকে বের হবার দিনের নিজের নিজের পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেলো।
কেউ যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, বা তোমাদের কথা না শোনে, সেই বাড়ি বা নগর ত্যাগ করার সময় তোমাদের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলো।
15 ১৫ আমি তোমাদের সত্য কথা বলছি, বিচার দিনের সেই শহরের দশা থেকে বরং সদোম ও ঘমোরা দেশের দশা সহনীয় হবে।
আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, বিচারদিনে সদোম ও ঘমোরার দশা, বরং সেই নগরের চেয়ে বেশি সহনীয় হবে।
16 ১৬ দেখ, নেকড়েদের মধ্যে যেমন মেষ, তেমনি আমি তোমাদের পাঠাচ্ছি; অতএব তোমরা সাপের মতো সতর্ক ও পায়রার মতো অমায়িক হও।
“আমি নেকড়েদের মধ্যে তোমাদের মেষের মতো পাঠাচ্ছি। সেই কারণে, তোমরা সাপের মতো চতুর ও কপোতের মতো সরল হও।
17 ১৭ কিন্তু লোকদের থেকে সাবধান থেকো; কারণ তারা তোমাদের বিচার সভায় সমর্পণ করবে এবং নিজেদের সমাজঘরে নিয়ে বেত মারবে।
লোকেদের ব্যাপারে তোমরা সাবধান থেকো। তারা তোমাদের স্থানীয় বিচার-পরিষদের হাতে তুলে দেবে এবং তাদের সমাজভবনে তোমাদের চাবুক মারবে।
18 ১৮ এমনকি, আমার জন্য তোমরা রাজ্যপাল ও রাজাদের সামনে, তাদের ও অইহূদিদের কাছে সাক্ষ্য দেবার জন্য হাজির হবে।
আমারই কারণে প্রদেশপালদের ও রাজাদের কাছে এবং অইহুদিদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তোমাদের নিয়ে যাওয়া হবে।
19 ১৯ কিন্তু লোকে যখন তোমাদের সমর্পণ করবে, তখন তোমরা কিভাবে কি বলবে, সে বিষয়ে ভেবো না; কারণ তোমাদের যা বলবার তা সেই দিনেই তোমাদের দান করা যাবে।
কিন্তু, তারা যখন তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, কী বলবে বা কীভাবে তা বলবে, সে বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না। সেই সময়ে, তোমরা কী বলবে, তা তোমাদের বলে দেওয়া হবে।
20 ২০ কারণ তোমরা কথা বলবে না, কিন্তু তোমাদের পিতার আত্মা তোমাদের মাধ্যমে কথা বলবেন।
কারণ তোমরা যে কথা বলবে, তা নয়, কিন্তু তোমাদের পিতার আত্মাই তোমাদের মাধ্যমে কথা বলবেন।
21 ২১ আর ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুতে সমর্পণ করবে; এবং সন্তানেরা মা বাবার বিপক্ষে উঠে তাদের হত্যা করাবে।
“ভাই ভাইকে ও পিতা সন্তানকে প্রতারিত করবে; ছেলেমেয়েরা বাবা-মার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে তাদের মৃত্যুর উদ্দেশে সমর্পণ করবে।
22 ২২ আর আমার নামের জন্য তোমাদের সবাই ঘৃণা করবে; কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে, সেই পরিত্রান পাবে।
আমার কারণে সব মানুষ তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত অবিচল থাকবে, সেই পরিত্রাণ পাবে।
23 ২৩ আর তারা যখন তোমাদের এক শহর থেকে তাড়না করবে, তখন অন্য শহরে পালিয়ে যেও; কারণ আমি তোমাদের সত্য বলছি, ইস্রায়েলের সব শহরে তোমাদের কাজ শেষ হবে না, যে পর্যন্ত মনুষ্যপুত্র না আসেন।
কোনো এক স্থানে তোমরা নির্যাতিত হলে অন্য স্থানে পালিয়ে যেয়ো। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, মনুষ্যপুত্রের আগমনের পূর্বে ইস্রায়েলের নগরগুলির পরিক্রমা তোমরা শেষ করতে পারবে না।
24 ২৪ শিষ্য গুরুর থেকে বড় নয় এবং দাস মনিবের থেকে বড় নয়।
“কোনো শিষ্য তার গুরু থেকে বড়ো নয়, কোনো দাস তার মনিব থেকেও নয়।
25 ২৫ শিষ্য নিজের গুরুর তুল্য ও দাস নিজের কর্তার সমান হলেই তার পক্ষে যথেষ্ট। তারা যখন ঘরের মালিককে ভূতেদের অধিপতি বলেছে, তখন তাঁর আত্মীয়দেরকে আরও কি না বলবে?
শিষ্য যদি গুরুর সদৃশ হয় এবং দাস তার মনিবের সদৃশ, তাহলেই যথেষ্ট। বাড়ির কর্তাকেই যদি বেলসবুল বলা হয়, তার পরিজনদের আরও কত নাকি বলা হবে।
26 ২৬ অতএব তোমরা তাদের ভয় কর না, কারণ এমন ঢাকা কিছুই নেই, যা প্রকাশ পাবে না এবং এমন গোপন কিছুই নেই, যা জানা যাবে না।
“সুতরাং, তোমরা তাদের ভয় পেয়ো না। এমন কিছুই লুকোনো নেই যা প্রকাশ পাবে না, বা এমন কিছুই গোপন নেই যা জানা যাবে না।
27 ২৭ আমি যা তোমাদের অন্ধকারে বলি, তা তোমরা আলোতে বল এবং যা কানে কানে শোন, তা ছাদের উপরে প্রচার কর।
আমি তোমাদের অন্ধকারে যা কিছু বলি, দিনের আলোয় তোমরা তা বোলো; তোমাদের কানে কানে যা বলা হয়, তা ছাদের উপর থেকে ঘোষণা কোরো।
28 ২৮ আর যারা দেহ হত্যা করে, কিন্তু আত্মা বধ করতে পারে না, তাদের ভয় কর না; কিন্তু যিনি আত্মাও দেহ দুটি কেই নরকে বিনষ্ট করতে পারেন, বরং তাঁকেই ভয় কর। (Geenna g1067)
যারা কেবলমাত্র শরীর বধ করতে পারে, কিন্তু আত্মাকে বধ করতে পারে না, তাদের ভয় কোরো না। বরং, যিনি আত্মা ও শরীর, উভয়কেই নরকে ধ্বংস করতে পারেন, তোমরা তাঁকেই ভয় কোরো। (Geenna g1067)
29 ২৯ দুটি চড়াই পাখী কি এক পয়সায় বিক্রি হয় না? আর তোমাদের পিতার অনুমতি ছাড়া তাদের একটিও মাটিতে পড়ে না।
দুটি চড়ুইপাখি কি এক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবুও, তোমাদের পিতার ইচ্ছা ব্যতিরেকে তাদের একটিও মাটিতে পড়ে না।
30 ৩০ কিন্তু তোমাদের মাথার চুলগুলিও সব গোনা আছে।
এমনকি, তোমাদের মাথার চুলগুলিরও সংখ্যা গোনা আছে।
31 ৩১ অতএব ভয় কর না, তোমরা অনেক চড়াই পাখীর থেকে শ্রেষ্ঠ।
তাই ভয় পেয়ো না কারণ চড়ুইপাখি থেকেও তোমরা অনেক বেশি মূল্যবান।
32 ৩২ অতএব যে কেউ লোকদের সামনে আমাকে স্বীকার করে, আমিও নিজের স্বর্গস্থ পিতার সামনে তাকে স্বীকার করব।
“যে কেউ মানুষের সাক্ষাতে আমাকে স্বীকার করে, আমিও স্বর্গে আমার পিতার কাছে তাকে স্বীকার করব।
33 ৩৩ কিন্তু যে মানুষদের সামনে আমাকে অস্বীকার করে, আমিও নিজের স্বর্গস্থ পিতার সামনে তাকে অস্বীকার করব।
কিন্তু কেউ যদি মানুষের সাক্ষাতে আমাকে অস্বীকার করে, আমিও স্বর্গে আমার পিতার কাছে তাকে অস্বীকার করব।
34 ৩৪ মনে কর না যে, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি; শান্তি দিতে আসিনি, কিন্তু খড়গ দিতে এসেছি।
“মনে কোরো না যে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি। আমি শান্তি দিতে নয়, কিন্তু এক খড়্গ দিতে এসেছি।
35 ৩৫ কারণ আমি বাবার সাথে ছেলের, মায়ের সাথে মেয়ের এবং শাশুড়ীর সাথে বৌমার বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতে এসেছি;
কারণ আমি এসেছি, “পুত্রকে তার পিতার বিরুদ্ধে বিচ্ছেদ করাতে ‘কন্যাকে তার মাতার বিরুদ্ধে, পুত্রবধূকে তার শাশুড়ির বিরুদ্ধে—
36 ৩৬ আর নিজের নিজের পরিবারের লোকেরা মানুষের শত্রু হবে।
একজন মানুষের শত্রু তার নিজ পরিবারের সদস্যই হবে।’
37 ৩৭ যে কেউ বাবা কি মাকে আমার থেকে বেশি ভালবাসে, সে আমার যোগ্য নয় এবং যে কেউ ছেলে কি মেয়েকে আমার থেকে বেশি ভালবাসে, সে আমার যোগ্য নয়।
“যে তার বাবা অথবা মাকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সে আমার যোগ্য নয়। যে তার ছেলে বা মেয়েকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সে আমার যোগ্য নয়।
38 ৩৮ আর যে কেউ নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার পিছনে না আসে, সে আমার যোগ্য নয়।
আর যে আমার অনুগামী হতে চায় অথচ নিজের ক্রুশ বহন করে না, সে আমার যোগ্য নয়।
39 ৩৯ যে কেউ নিজের প্রাণ রক্ষা করে, সে তা হারাবে; এবং যে কেউ আমার জন্য প্রাণ হারায়, সে তা রক্ষা করবে।
যে তার প্রাণরক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে এবং কেউ যদি আমার কারণে তার প্রাণ হারায় সে তা লাভ করবে।
40 ৪০ যে তোমাদের গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর যে আমাকে গ্রহণ করে, সে তো আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন সেই ঈশ্বরকেই গ্রহণ করে।
“যে তোমাদের গ্রহণ করে সে আমাকেই গ্রহণ করে; যে আমাকে গ্রহণ করে সে তাঁকেই গ্রহণ করে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
41 ৪১ যে ভাববাদীকে ভাববাদী বলে গ্রহণ করে, সে ভাববাদীর পুরষ্কার পাবে; এবং যে ধার্ম্মিককে ধার্মিক বলে গ্রহণ করে, সে ধার্ম্মিকের পুরষ্কার পাবে।
কেউ যদি কোনো ভাববাদীকে ভাববাদী জেনে গ্রহণ করে, সে এক ভাববাদীরই পুরস্কার লাভ করবে। আবার যে এক ধার্মিক ব্যক্তিকে ধার্মিক ব্যক্তি বলে গ্রহণ করে, সেও ধার্মিকের পুরস্কার পাবে।
42 ৪২ আর যে কেউ এই সামান্য লোকদের মধ্যে কোন এক জনকে আমার শিষ্য বলে কেবল এক বাটি ঠান্ডা জল পান করতে দেয়, আমি তোমাদের সত্য বলছি, সে কোনো মতে আপন রাজত্ব থেকে বঞ্চিত হবে না।
আবার এই ক্ষুদ্রজনেদের মধ্যে কোনো একজনকে কেউ যদি আমার শিষ্য জেনে এক পেয়ালা ঠান্ডা জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি সে কোনোমতেই তার প্রাপ্য পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না।”

< মথি 10 >