< ইয়োবের বিবরণ 7 >

1 পৃথিবীতে কি প্রত্যেক মানুষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না? তার দিন গুলো কি ভাড়া করা মানুষের মত নয়?
“পৃথিবীতে কি নশ্বর মানুষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না? ভাড়াটে মানুষের মতো তার দিনগুলি কি নয়?
2 যেমন একজন দাস আগ্রহের সঙ্গে সন্ধ্যার ছায়ার অপেক্ষা করে, যেমন একজন ভাড়া করা কাজের লোক তার মজুরীর চেষ্টা করে,
ক্রীতদাস যেমন সান্ধ্য ছায়ার জন্য ব্যাকুল হয়, বা দিনমজুর বেতনের অপেক্ষায় থাকে,
3 তাই আমি কষ্টের মাসগুলো সহ্য করতে পেরেছি; আমায় কষ্ট পূর্ণ রাতগুলো দেওয়া হয়েছে।
সেভাবে ব্যর্থতাযুক্ত মাস আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, আর দুর্দশাযুক্ত রাত আমার জন্য নিরূপিত হয়েছে।
4 যখন আমি শুই, আমি নিজেকে বলি, কখন আমি উঠব এবং কখন রাত শেষ হবে? আমি ছটফট করতে থাকি এবং এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াই যতক্ষণ না সকাল হয়।
শুয়ে শুয়ে আমি ভাবি, ‘কখন উঠব?’ রাত বেড়েই গেল, আর আমি ভোর পর্যন্ত বিছানায় ছটফট করে গেলাম।
5 আমার মাংস পোকায় এবং মাটির ঢেলায় ঢাকা; আমার চামড়ার ঘাগুলো শক্ত হয়ে ওঠেছে এবং তারপর গলে গেছে এবং আবার নতুন করে হয়েছে।
আমার শরীর পোকা ও খোস-পাঁচড়ায় ভরে উঠেছে, আমার গায়ের চামড়ায় ফাটল ধরেছে ও তা পেকে গিয়েছে।
6 তাঁতিদের তাঁত বোনা যন্ত্রের থেকেও আমার জীবনের আয়ু দ্রুতগামী; তারা আশাহীন ভাবে শেষ হয়।
“আমার দিনগুলি তাঁতির মাকুর চেয়েও দ্রুতগামী, আর কোনও আশা ছাড়াই সেগুলি শেষ হয়ে যায়।
7 ঈশ্বর, স্মরণ কর যে আমার জীবন শুধু শ্বাসমাত্র; আমার চোখ আর কখন ভালো দেখতে পাবে না।
হে ঈশ্বর, মনে রেখো, যে আমার জীবন এক শ্বাসমাত্র; আমার দু-চোখ আর কখনও আনন্দ দেখতে পাবে না।
8 ঈশ্বরের চোখ, যা আমায় দেখে, আর আমায় দেখতে পাবে না; ঈশ্বরের চোখ আমার ওপরে থাকবে, কিন্তু আমার অস্তিত্ব থাকবে না।
যে চোখ আজ আমায় দেখতে পাচ্ছে তা আর কখনও আমায় দেখতে পাবে না; তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।
9 একটি মেঘ যেমন ক্ষয় পায় এবং অদৃশ্য হয়ে যায়, তাই যে পাতালে নেমে যায় সে আর উঠবে না। (Sheol h7585)
মেঘ যেমন মুহূর্তে মিলিয়ে যায়, সেভাবে যে কবরে যায় সে আর ফিরে আসে না। (Sheol h7585)
10 ১০ সে আর তার ঘরে ফিরবে না; না তার জায়গা তাকে আর চিনবে।
সে আর তার বাড়িতে ফিরে আসবে না; তার স্থান তাকে আর চিনতেও পারবে না।
11 ১১ এই জন্য আমি আর আমার মুখ সংযত করব না; আমি আমার আত্মার যন্ত্রণায় কথা বলব; আমি আমার প্রাণের তিক্ততায় অভিযোগ করব।
“তাই আমি আর নীরব থাকব না; আমার আত্মার যন্ত্রণায় আমি কথা বলব, আমার প্রাণের তিক্ততায় আমি অভিযোগ জানাব।
12 ১২ আমি কি সমুদ্র অথবা আমি কি সমুদ্রের দৈত্য, যে তুমি আমার ওপর পাহারা বসিয়েছ রেখেছ?
আমি কি সমুদ্র না সমুদ্রদানব যে তুমি আমাকে পাহারা দিয়ে রেখেছ?
13 ১৩ যখন আমি বলি, আমার বিছানা আমায় আরাম দেবে এবং আমার খাট আমার অভিযোগকে শান্ত করবে,
যখন আমি ভাবি যে আমার বিছানা আমাকে সান্ত্বনা দেবে আর আমার শয্যা আমার অসুখ দূর করবে,
14 ১৪ তখন তুমি আমায় স্বপ্নে ভয় দেখাবে এবং বিভিন্ন দর্শনে আমায় আতঙ্কিত করবে,
তখনও তুমি বিভিন্ন স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাও আর বিভিন্ন দর্শন দিয়ে আমাকে আতঙ্কিত করো,
15 ১৫ তাতে আমার প্রাণ শ্বাসরোধ চায় এবং আমার এই অস্থিকঙ্কাল অপেক্ষা মৃত্যু চায়।
তাতে আমার এই শরীরের চেয়েও শ্বাসরোধ ও মৃত্যুও আমার কাছে বেশি পছন্দসই হয়।
16 ১৬ আমি আমার জীবন ঘৃণা করি; আমি সব দিন বেঁচে থাকতে চাই না; আমাকে একা থাকতে দাও কারণ আমার আয়ু বেকার।
আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি; আমি চিরকাল বাঁচতে চাই না। আমায় একা থাকতে দাও; আমার জীবনের দিনগুলি অর্থহীন।
17 ১৭ মানুষ কি, যে তোমায় তার দিকে মনোযোগ দিতে হবে, যে তোমায় তার ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে,
“মানবজাতি কী যে তুমি তাদের এত বিরাট কিছু মনে করো, যে তুমি তাদের প্রতি এত মনোযোগ দাও,
18 ১৮ যে তোমায় প্রত্যেক সকালে তাকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং তাকে প্রত্যেক মুহূর্তে পরীক্ষা করতে হবে?
যে প্রতিদিন সকালে তুমি তাদের পরখ করো আর প্রতি মুহূর্তে তাদের পরীক্ষা করো?
19 ১৯ কতকাল এটা তোমার সামনে থাকবে, আমার থেকে চোখ সরাও, তোমার সামনে আমায় কি একটু একা থাকতে দেবে না, আমার নিজের থুতু গেলার জন্য?
তুমি কি কখনও আমার দিক থেকে তোমার দৃষ্টি ফেরাবে না, বা ক্ষণিকের জন্যও কি আমায় একা থাকতে দেবে না?
20 ২০ এমনকি যদিও আমি পাপ করেছি, তাতে তোমার কি হয়, কেন তুমি আমাকে তোমার লক্ষ্য বানালে, যাতে আমি তোমার জন্য বোঝা হই?
আমি যদি পাপ করেই থাকি, আমাদের সব কাজ যাঁর দৃষ্টিগোচর, সেই তোমার প্রতি আমি কী করেছি? তুমি আমাকে কেন তোমার লক্ষ্যবস্তু করেছ? আমি কি তোমার কাছে বোঝা হয়েছি?
21 ২১ কেন তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর না এবং আমার অন্যায় নিয়ে নাও না? কারণ আমি কি এখন ধূলোয় শুয়ে পরব; তুমি আমায় যত্নসহকারে খুঁজবে, কিন্তু আমার কোন অস্তিত্ব থাকবে না।
তুমি কেন আমার অপরাধ মার্জনা করছ না ও আমার পাপ ক্ষমা করছ না? কারণ অচিরেই আমি ধুলোয় মিশে যাব; তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।”

< ইয়োবের বিবরণ 7 >