< ইয়োবের বিবরণ 6 >

1 তারপর ইয়োব উত্তর দিল এবং বলল,
পরে ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 উহু, যদি শুধু আমার যন্ত্রণা মাপা যেত; যদি শুধু আমার সমস্ত দুঃখ দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা যেত!
“শুধু যদি আমার মনস্তাপ মাপা যেত আর আমার সব দুর্দশা দাঁড়িপাল্লায় তোলা যেত!
3 কারণ এখন এটা সমুদ্রের বালির থেকেও ভারী হবে। এই জন্যই আমার কথা এত বেপরোয়া।
তবে তা নিঃসন্দেহে সমুদ্রের বালুকণাকেও ছাপিয়ে যেত— এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে আমার কথাগুলি দুর্দমনীয় হয়েছে।
4 কারণ সর্বশক্তিমানের তীর আমার মধ্যে, আমার আত্মা বিষ পান করেছে; ঈশ্বরের আতঙ্ক আমার বিরুদ্ধে দলবদ্ধ হয়েছে।
সর্বশক্তিমানের তিরগুলি আমাকে বিদ্ধ করেছে, আমার আত্মা সেগুলির বিষে জর্জরিত; ঈশ্বরের আতঙ্ক আমার বিরুদ্ধে শ্রেণীবদ্ধ হয়েছে।
5 বন্য গাধা কি হতাশ হয়ে চিত্কার করে যখন তার ঘাস থাকে? অথবা বলদ কি খিদেয় হতাশ হয় যখন সেটার খাবার থাকে?
বুনো গাধা ঘাস পেয়ে কি ডাক ছাড়ে? বা বলদ জাব পেয়ে কি গর্জন করে?
6 যার স্বাদ নেই সেটা কি নুন ছাড়া খাওয়া যায়? অথবা ডিমের সাদা অংশে কি কোন স্বাদ আছে?
বিস্বাদ খাদ্য কি বিনা লবণে খাওয়া যায়? বা ম্যালোর রসে কি কোনও স্বাদ আছে?
7 আমি তাদের স্পর্শ করতে অস্বীকার করি; তারা আমার কাছে জঘন্য খাবারের মত।
আমি তা স্পর্শ করতে চাই না; এ ধরনের খাদ্য আমাকে অসুস্থ করে তোলে।
8 আহা, যদি আমি কেবল আমার প্রার্থনার উত্তর পেতে পারি; আহা, ঈশ্বর যেন আমায় সেই জিনিস দেন যা আমি চাই:
“আহা, আমি যদি অনুরোধ জানাতে পারতাম, যেন আমার আশা ঈশ্বর পূরণ করেন,
9 আমি যদি চূর্ণ হতাম তবে এটা হয়ত ঈশ্বরকে খুশি করত, তিনি তাঁর হাত বাড়াবেন এবং এই জীবন থেকে কেটে ফেলবেন!
যেন ঈশ্বর আমাকে চূর্ণ করতে ইচ্ছুক হয়ে, তাঁর হাত বাড়িয়ে আমার প্রাণ ধ্বংস করেন!
10 ১০ তবুও এটা আমার সান্ত্বনা হোক, এমনকি আমি যন্ত্রণাতেও আনন্দ করি, যে আমি সেই পবিত্র ব্যক্তির কথা অস্বীকার করি নি।
তবে তখনও আমি এই সান্ত্বনা পেতাম— নির্মম যন্ত্রণার মধ্যেও আনন্দিত হতাম— যে আমি সেই পবিত্রজনের কথা অগ্রাহ্য করিনি।
11 ১১ আমার শক্তি কি, যে আমি অপেক্ষা করতে পারি? আমার শেষ কি, যে আমি ধৈর্য্য ধরতে পারি?
“আমার কী শক্তি আছে, যে এখনও আমি আশা রাখব? কী সম্ভাবনা আছে, যে আমি ধৈর্যশীল থাকব?
12 ১২ আমার শক্তি কি পাথরের শক্তি? অথবা আমার মাংস কি পিতল দিয়ে তৈরী?
পাথরের মতো শক্তি কি আমার আছে? আমার দেহ কি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি?
13 ১৩ এটা কি সত্যি নয় যে আমার নিজের জন্য আমার কোন সাহায্য নেই এবং সেই জ্ঞান কি আমার থেকে দূর হয়ে গেছে?
নিজেকে সাহায্য করার কোনও শক্তি কি আমার আছে, যেহেতু সাফল্য আমার কাছ থেকে অপবাহিত হয়েছে?
14 ১৪ সেই লোকের প্রতি যে প্রায় অজ্ঞান হতে চলেছে, তার বন্ধুর বিশ্বস্ততা দেখানো উচিত; এমনকি তার প্রতিও যে সর্বশক্তিমানের ভয় ত্যাগ করেছে।
“যে কেউ বন্ধুর প্রতি দয়া দেখাতে কার্পণ্য বোধ করে সে সর্বশক্তিমানের ভয় ত্যাগ করে।
15 ১৫ কিন্তু আমার ভায়েরা আমার প্রতি মরুপ্রান্তের প্রবাহের মত বিশ্বস্ত, যেমন বয়ে যায় জলের প্রবাহের মত।
কিন্তু আমার ভাইরা সবিরাম জলপ্রবাহের মতো অনির্ভরযোগ্য, সেই জলপ্রবাহের মতো যা তখনই উপচে পড়ে
16 ১৬ যা বরফের জন্য অন্ধকারাছন্ন হয় এবং যার মধ্যে তুষার বিলীন হয়ে যায়।
যখন গলা বরফের দ্বারা তা কালো হয়ে যায় আর তরল তুষারে ফুলেফেঁপে ওঠে,
17 ১৭ যখন তারা গলে যায়, তারা অদৃশ্য হয়; যখন তা উতপ্ত হয়, তারা তাদের জায়গায় গলে যায়।
কিন্তু সুখা মরশুমে তা আর প্রবাহিত হয় না, আর গ্রীষ্মকালে খাত থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
18 ১৮ মরুযাত্রীর লোকেরা যারা সেই রাস্তা দিয়ে যায় এবং জলের জন্য সেই রাস্তা থেকে সরে যায়; তারা মরুপ্রান্তে ঘুরে বেড়ায় এবং পরে ধ্বংস হয়।
বণিক দল তাদের গতিপথ ছেড়ে অন্য পথে সরে যায়; তারা পতিত জমিতে গিয়ে বিনষ্ট হয়।
19 ১৯ টেমার মরুযাত্রীর লোকেরা দেখল, যখন শিবার লোকেরা তাদের উপর আশা করেছিল।
টেমার বণিক দল জলের খোঁজ করে, শিবার ভ্রমণকারী বণিকেরা আশা নিয়ে তাকায়।
20 ২০ তারা হতাশ হয়েছিল কারণ তারা জল খোঁজার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল; তারা সেখানে গেল, কিন্তু তারা প্রতারিত হল।
তারা আকুল হয়, কারণ তারা আত্মবিশ্বাসী হয়েছিল; তারা সেখানে পৌঁছায়, শুধু নিরাশ হওয়ার জন্য।
21 ২১ কারণ এখন তোমরা বন্ধুরা আমার কাছে কিছুই নও; তোমরা আমার ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখেছ এবং ভয় পেয়েছ।
এখন তোমরাও প্রমাণ দিয়েছ যে তোমরা কোনও কাজের নও; তোমরা ভয়ংকর কিছু দেখে ভয় পেয়েছ।
22 ২২ আমি কি বলেছিলাম, আমাকে কিছু দাও? অথবা তোমাদের সম্পত্তি থেকে আমাকে উপহার দাও?
আমি কি কখনও বলেছি, ‘আমাকে কিছু দাও, তোমাদের ধনসম্পত্তি থেকে আমার জন্য এক মুক্তিপণ দাও,
23 ২৩ অথবা, বিপক্ষের হাত থেকে আমাকে রক্ষা কর? অথবা, আমার অত্যাচারীর হাত থেকে আমায় রক্ষা কর?
শত্রুর হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করো, নিষ্ঠুর লোকের খপ্পর থেকে আমাকে মুক্ত করো’?
24 ২৪ আমাকে শিক্ষা দাও এবং আমি আমার শান্তি ধরে রাখব; আমাকে বুঝিয়ে দাও কোথায় আমি ভুল করে এসেছি।
“আমাকে শিক্ষা দাও, ও আমি শান্ত থাকব; আমায় দেখিয়ে দাও কোথায় আমি ভুল করেছি।
25 ২৫ সত্যি কথা কতটা যন্ত্রণা দেয়! কিন্তু তোমাদের তর্ক বিতর্ক, প্রকৃত পক্ষে সেগুলো কীভাবে আমাকে দোষী করে?
সরল কথাবার্তা কতই না যন্ত্রণাদায়ক! কিন্তু তোমাদের যুক্তিতর্ক কী প্রমাণ করে?
26 ২৬ তোমরা কি আমার কথা অগ্রাহ্য করার পরিকল্পনা করছ, একজন আশাহীন লোকের কথার আচরণ বাতাসের মত?
আমি যা বলেছি তা কি তোমরা শুধরে দিতে চাও, আর আমার মরিয়া কথাবার্তাকে কি বাতাসের মতো গণ্য করতে চাও?
27 ২৭ সত্যি, তোমরা এক অনাথের জন্য গুলিবাঁট করেছ, ব্যবসায়ীদের মত তোমাদের বন্ধুর ওপর দর কষাকষি করেছ।
পিতৃহীনের জন্য তোমরা এমনকি গুটিকাপাতের দান চালবে আর তোমাদের বন্ধুকে বিক্রি করে দেবে।
28 ২৮ এখন, এই জন্য, দয়া করে আমার দিকে দেখ, নিশ্চিত ভাবে আমি তোমাদের মুখের ওপর মিথ্যা বলব না।
“কিন্তু এখন দয়া করে আমার দিকে তাকাও। আমি কি তোমাদের মুখের উপরে মিথ্যা কথা বলব?
29 ২৯ তোমরা ফিরে যাও, অন্যায় না হোক; আমি বলি ফিরে যাও, আমার অভিযোগ ন্যায্য।
কঠোরতা কমাও, অন্যায় কোরো না; পুনর্বিবেচনা করো, কারণ আমার সততা বিপন্নতার সম্মুখীন।
30 ৩০ আমার জিভে কি কোন মন্দতা আছে? আমার মুখ কি খারাপ জিনিস সনাক্ত করতে পারে না?
আমার ঠোঁটে কি কোনও দুষ্টতা আছে? আমার মুখ কি বিদ্বেষ ঠাহর করতে পারে না?

< ইয়োবের বিবরণ 6 >