< আদিপুস্তক 34 >

1 আর লেয়ার মেয়ে দীণা, যাকে তিনি যাকোবের জন্য প্রসব করেছিলেন, সেই দেশের মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে বাইরে গেল।
যে মেয়েটিকে লেয়া যাকোবের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন, সেই দীণা সেদেশের মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে গেল।
2 আর হিব্বীয় হমোর যিনি সেই দেশের রাজা ছিলেন তার ছেলে শিখিম তাকে দেখতে পেল এবং তাকে ধরে নিয়ে তার সঙ্গে শয়ন করল, তাঁকে ভ্রষ্ট করল।
সেই অঞ্চলের শাসনকর্তা হিব্বীয় হমোরের ছেলে শিখিম যখন তাকে দেখতে পেল, তখন সে তাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল।
3 আর যাকোবের মেয়ে দীণার প্রতি তাঁর প্রাণ অনুরক্ত হওয়াতে সে সেই যুবতীকে প্রেম করল ও তাকে স্নেহপূর্বক কথা বলল।
যাকোবের মেয়ে দীণার প্রতি তার মন আকর্ষিত হল; সে সেই যুবতী মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলল ও তার সঙ্গে কোমলভাবে কথা বলল।
4 পরে শিখিম নিজের বাবা হমোরকে বলল, “তুমি আমার সঙ্গে বিয়ে দেবার জন্য এই মেয়েকে গ্রহণ কর।”
আর শিখিম তার বাবা হমোরকে বলল, “এই মেয়েটিকে আমার স্ত্রী করে এনে দাও।”
5 আর যাকোব শুনলেন, সে তার মেয়ে দীণাকে ভ্রষ্ট করেছে; ঐ দিনের তার ছেলেরা মাঠে পশুপালের সঙ্গে ছিল; আর যাকোব তাদের আসা পর্যন্ত চুপ থাকলেন।
যাকোব যখন শুনতে পেলেন যে তাঁর মেয়ে দীণাকে কলুষিত করা হয়েছে, তখন তাঁর ছেলেরা তাঁর গৃহপালিত পশুপাল নিয়ে মাঠেই ছিল; তাই তারা বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি সে বিষয়ে কিছুই করলেন না।
6 পরে শিখিমের বাবা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে গেল।
পরে শিখিমের বাবা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন।
7 যাকোবের ছেলেরাও ঐ খবর পেয়ে মাঠ থেকে এসেছিল; তারা ক্ষুব্ধ ও খুব রেগে গিয়েছিল, কারণ যাকোবের মেয়ের সঙ্গে শয়ন করাতে শিখিম ইস্রায়েলের মধ্যে মূর্খামি ও অকর্তব্য কাজ করেছিল।
এদিকে, যে ঘটনা ঘটেছিল তা শুনে যাকোবের ছেলেরা মাঠ থেকে ফিরে এসেছিল। তারা মর্মাহত ও অগ্নিশর্মা হয়ে উঠল, কারণ যাকোবের মেয়ের সাথে শুয়ে শিখিম ইস্রায়েলে এমন এক নির্লজ্জ কাজ করেছিল—যা করা একদম উচিত হয়নি।
8 তখন হমোর তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বলল, “তোমাদের সেই মেয়ের প্রতি আমার ছেলে শিখিমের প্রাণ আসক্ত হয়েছে; অনুরোধ করি, আমার ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে দাও।
কিন্তু হমোর তাঁদের বললেন, “আমার ছেলে শিখিম আপনার মেয়েকে তার মন দিয়ে বসেছে। দয়া করে তাকে স্ত্রীরূপে তার হাতে তুলে দিন।
9 এবং আমাদের সঙ্গে আত্মীয়তা কর; তোমাদের মেয়েদেরকে আমাদেরকে দান কর এবং আমাদের মেয়েদেরকে তোমরা গ্রহণ কর। আর আমাদের সঙ্গে বাস কর;
আমাদের সাথে অসবর্ণমতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হোন; আপনাদের মেয়েদের আমাদের হাতে তুলে দিন ও আমাদের মেয়েদের আপনারা গ্রহণ করুন।
10 ১০ এই দেশ তোমাদের সামনে থাকল, তোমরা এখানে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য কর, এখানে অধিকার গ্রহণ কর।”
আমাদের মধ্যে আপনারা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেন; দেশটি আপনাদের কাছে খোলা পড়ে আছে। এখানে বসবাস করুন, এখানে ব্যবসাবাণিজ্য করুন, এবং এখানে বিষয়সম্পত্তি অর্জন করুন।”
11 ১১ আর শিখিম দীণার বাবাকে ও ভাইদেরকে বলল, “আমার প্রতি তোমাদের অনুগ্রহ দৃষ্টি হোক; তা হলে যা বলবে, তাই দেব।
তখন শিখিম দীণার বাবাকে ও দাদাদের বলল, “আপনাদের দৃষ্টিতে আমাকে দয়া পেতে দিন, এবং আপনারা যা চান আমি আপনাদের তাই দেব।
12 ১২ পণ ও দান যত বেশি চাইবে, তোমাদের কথানুসারে তাই দেব; কোনো মতে আমার সঙ্গে ঐ মেয়ের বিয়ে দাও।”
যে স্ত্রী-পণ ও উপহার আমাকে দিতে হবে, তা যতই বেশি হোক না কেন, আপনাদের ইচ্ছানুসারে তা আপনারাই ঠিক করুন, আর আপনারা আমার কাছে যা চাইবেন, আমি আপনাদের তাই দেব। শুধু যুবতী মেয়েটিকে আমার স্ত্রীরূপে আমায় দিন।”
13 ১৩ কিন্তু সে তাদের বোন দীণাকে ভ্রষ্ট করেছিল বলে যাকোবের ছেলেরা ছলনার সাথে আলাপ করে শিখিমকে ও তাঁর বাবা হমোরকে উত্তর দিল;
যেহেতু তাদের বোন দীণাকে কলুষিত করা হয়েছিল, তাই যাকোবের ছেলেরা শিখিম ও তার বাবা হমোরের সঙ্গে কথা বলার সময় ছলনা করে উত্তর দিয়েছিল।
14 ১৪ তারা তাদেরকে বলল, “অচ্ছিন্নত্বক লোককে যে আমাদের বোনকে দিই, এমন কাজ আমরা করতে পারিনা; করলে আমাদের বদনাম হবে।
তারা তাদের বলল, “আমরা এরকম কাজ করতে পারব না; আমরা এমন কোনও পুরুষের হাতে আমাদের বোনকে তুলে দিতে পারব না, যার সুন্নত হয়নি। তা আমাদের পক্ষে মর্যাদাহানিকর হবে।
15 ১৫ শুধু এই কাজটি করলে আমরা তোমাদের কথায় রাজি হব; আমাদের মতো তোমরা প্রত্যেক পুরুষ যদি ছিন্নত্বক হও,
একটিমাত্র শর্তে শুধু আমরা তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারি: তোমাদের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করিয়ে যদি আমাদের মতো হয়ে যাও, তবেই তা সম্ভব।
16 ১৬ তবে আমরা তোমাদেরকে নিজেদের মেয়েদের দেব এবং তোমাদের মেয়েদেরকে গ্রহণ করব ও তোমাদের সঙ্গে বাস করে এক জাতি হব।
তখনই আমাদের মেয়েদের আমরা তোমাদের হাতে তুলে দেব ও তোমাদের মেয়েদের আমরা নিজেদের জন্য গ্রহণ করব। আমরা তোমাদের মধ্যেই স্থায়ীভাবে বসবাস করব এবং তোমাদের সঙ্গে মিলেমিশে এক জাতি হয়ে যাব।
17 ১৭ কিন্তু যদি ত্বকছেদের বিষয়ে আমাদের কথা না শোন, তবে আমরা নিজেদের ঐ মেয়েকে নিয়ে চলে যাব।”
কিন্তু তোমরা যদি সুন্নত করাতে রাজি না হও, তবে আমরা আমাদের বোনকে নিয়ে চলে যাব।”
18 ১৮ তখন তাদের এই কথায় হমোর ও তার ছেলে শিখিম সন্তুষ্ট হল।
তাদের প্রস্তাবটি হমোর ও তার ছেলে শিখিমের ভালোই লেগেছিল।
19 ১৯ আর সেই যুবক তাড়াতাড়ি সেই কাজ করল, কারণ সে যাকোবের মেয়েতে প্রীত হয়েছিল; আর সে নিজের বাবার বংশে সবচেয়ে সম্মানীত ছিল।
সেই যুবকটি, যে তার বাবার পরিবারে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত ছিল, সে তাদের কথামতো কাজ করতে একটুও সময় নষ্ট করেনি, কারণ যাকোবের মেয়েকে পেয়ে সে খুশি হয়েছিল।
20 ২০ পরে হমোর ও তার ছেলে শিখিম নিজের নগরের দরজায় এসে নগর নিবাসীদের সঙ্গে আলোচনা বলে বলল,
অতএব হমোর ও তার ছেলে শিখিম তাদের নগরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদের নগরের ফটকে চলে গেল।
21 ২১ “সেই লোকেরা আমাদের সঙ্গে শান্তিতে আছে; তাই তারা এই দেশে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য করুক; কারণ দেখ, তাদের সামনে দেশটি সুপ্রশস্ত; এস, আমরা তাদের মেয়েদেরকে গ্রহণ করি ও আমাদের মেয়েদেরকে তাদেরকে দিই।
“এই লোকেরা আমাদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন,” তারা বলল। “তারা আমাদের দেশেই বসবাস করুক ও এখানেই ব্যবসাবাণিজ্য করুক; এদেশে তাদের জন্য প্রচুর স্থান আছে। আমরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারি ও তারাও আমাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে।
22 ২২ কিন্তু তাদের এই এক পণ আছে, আমাদের মধ্যে প্রত্যেক পুরুষ যদি তাদের মত ছিন্নত্বক হয়, তবে তারা আমাদের সঙ্গে বাস করে এক জাতি হতে রাজি আছে।
কিন্তু সেই লোকেরা একটিই মাত্র শর্তে আমাদের সঙ্গে এক জাতি হয়ে বসবাস করবে, যে আমাদের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করাবে, যেমনটি তারা নিজেরাও করিয়েছে।
23 ২৩ আর তাদের ধন, সম্পত্তি ও পশু সব কি আমাদের হবে না? আমরা তাদের কথায় রাজি হলেই তারা আমাদের সঙ্গে বাস করবে।”
তাদের গবাদি পশুপাল, তাদের বিষয়সম্পত্তি ও তাদের বাকি সব পশু কি আমাদের হয়ে যাবে না? তাই এসো, আমরা তাদের শর্তে রাজি হয়ে যাই, এবং তারা আমাদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করুক।”
24 ২৪ তখন হমোরের ও তার ছেলে শিখিমের কথায় তার নগরের দরজা দিয়ে যে সব লোক বাইরে যেত, তারা রাজি হল, আর তার নগর দরজা দিয়ে যে সব পুরুষ বাইরে যেত, তাদের ত্বকছেদ করা হল।
যেসব লোকজন নগরের ফটকের বাইরে গিয়েছিল, তারা হমোর ও তার ছেলে শিখিমের কথায় রাজি হল, এবং সেই নগরের সব পুরুষমানুষ সুন্নত করাল।
25 ২৫ পরে তৃতীয় দিনের যন্ত্রণায় পরিপূর্ণ হলে দীণার ভাই শিমিয়ন ও লেবি, যাকোবের এই দুই ছেলে নিজের নিজের খড়্গ গ্রহণ করে নির্ভয়ে নগর আক্রমণ করতঃ সকল পুরুষকে হত্যা করল।
তিন দিন পর, যখন তারা সবাই তখনও ব্যথায় কাতরাচ্ছিল, তখন যাকোবের ছেলেদের মধ্যে দুজন—দীণার দাদা শিমিয়োন ও লেবি, তাদের তরোয়াল হাতে তুলে নিয়ে সেই অসন্দিগ্ধ নগরটি আক্রমণ করল, ও প্রত্যেকটি পুরুষমানুষকে হত্যা করল।
26 ২৬ এবং হমোর ও তার ছেলে শিখিমকে তরবারির আঘাতে হত্যা করে শিখিমের বাড়ি থেকে দীণাকে নিয়ে চলে আসল।
তারা হমোর ও তার ছেলে শিখিমকেও তরোয়াল দিয়ে হত্যা করল এবং দীণাকে শিখিমের বাড়ি থেকে নিয়ে চলে এল।
27 ২৭ ওরা তাদের বোনকে ভ্রষ্ট করেছিল, এই জন্য যাকোবের ছেলেরা নিহত লোকদের কাছে গিয়ে নগর লুট করল।
যাকোবের ছেলেরা মৃতদেহগুলির কাছে গিয়ে সেই নগরে লুটপাট চালাল, যেখানে তাদের বোনকে কলুষিত করা হয়েছিল।
28 ২৮ তারা ওদের ভেড়া, গরু ও গাধা সব এবং নগরের ও ক্ষেত্রের যাবতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করল;
তারা তাদের মেষপাল ও পশুপাল ও গাধাগুলি এবং সেই নগরে ও মাঠেঘাটে তাদের আরও যা যা ছিল, সেসবকিছু দখল করে নিল।
29 ২৯ আর ওদের শিশু ও স্ত্রীদেরকে বন্দি করে ওদের সমস্ত ধন ও গৃহের সর্বস্ব লুট করল।
তারা তাদের ধনসম্পদ ও তাদের সব স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিকে তুলে এনে, তাদের বাড়িঘরের সর্বস্ব লুট করল।
30 ৩০ তখন যাকোব শিমিয়ন ও লেবিকে বললেন, “তোমরা এই দেশনিবাসী কনানীয় ও পরিষীয়দের কাছে আমাকে দূর্গন্ধস্বরূপ করে ব্যাকুল করলে; আমার লোক অল্প, তারা আমার বিরুদ্ধে জড়ো হয়ে আমাকে আঘাত করবে; আর আমি সপরিবারে বিনষ্ট হব।”
তখন যাকোব শিমিয়োন ও লেবিকে বললেন, “তোমরা সেই কনানীয় ও পরিষীয়দের কাছে, এই দেশে বসবাসকারী জাতিদের কাছে আমাকে আপত্তিকর করে তুলে আমার উপর সমস্যার বোঝা চাপিয়ে দিলে। আমরা সংখ্যায় কয়েকজন মাত্র, এবং তারা যদি আমার বিরুদ্ধে দল বেঁধে আমাকে আক্রমণ করে, তবে আমি ও আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাব।”
31 ৩১ তারা উত্তর করল, যেমন বেশ্যার সঙ্গে, তেমনি আমার বোনের সঙ্গে ব্যবহার করা কি তার উচিত ছিল?
কিন্তু তারা উত্তর দিল, “আমাদের বোনের সাথে এক বেশ্যার মতো ব্যবহার করা কি তার উচিত হয়েছে?”

< আদিপুস্তক 34 >