< যাত্রাপুস্তক 23 >

1 তুমি কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিও না; অসৎ সাক্ষী হয়ে দুষ্টু লোকের সাহায্য কোরো না।
“মিথ্যা গুজব ছড়িয়ো না। এক বিদ্বেষপরায়ণ সাক্ষী হওয়ার দ্বারা কোনও দোষী লোককে সাহায্য কোরো না।
2 তুমি খারাপ কাজ করতে জনতার অনুসরণকারী হয়ো না এবং বিচারে অন্যায় করার জন্য জনতার পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ কোরো না।
“অন্যায় করার ক্ষেত্রে জনসাধারণের অনুগামী হোয়ো না। কোনো মামলায় তুমি যখন সাক্ষ্য দাও, তখন জনসাধারণের পক্ষ নিয়ে ন্যায়বিচার বিকৃত কোরো না,
3 তুমি গরিবদের বিচারের দিনের তার পক্ষপাত করিও না।
এবং কোনো মামলায় কোনও দরিদ্র লোকের প্রতি পক্ষপাতিত্ব কোরো না।
4 যদি তোমার শত্রুর গরু অথবা গাধাকে অন্য পথে যেতে দেখ তবে তুমি অবশ্যই তার কাছে তাকে নিয়ে যাবে।
“তোমার শত্রুর বলদ অথবা গাধাকে যদি তুমি পথভ্রষ্ট হয়ে চরতে দেখো, তবে নিঃসন্দেহে সেটি ফিরিয়ে দেবে।
5 যদি তুমি যে তোমাকে ঘৃণা করে তার গাধাকে ভারের নীচে পড়ে যেতে দেখ, তাকে ভার মুক্ত করতে ইচ্ছা না হয়, তা সত্বেও তুমি অবশ্যই তার গাধার সঙ্গে তাকে সাহায্য করবে।
যে তোমাকে ঘৃণা করে, এমন কোনও লোকের গাধাকে যদি তুমি সেটির ভারের তলায় চাপা পড়তে দেখো, তবে সেটিকে সেখানে পড়ে থাকতে দিয়ো না; তুমি নিঃসন্দেহে সেটিকে ভারমুক্ত হতে সাহায্য করবে।
6 গরিব প্রতিবেশীর বিচারে তার প্রতি অন্যায় কোরো না।
“তোমাদের মধ্যবর্তী দরিদ্র লোকজনের মামলায় তাদের প্রতি যেন ন্যায়বিচার অস্বীকার করা না হয়।
7 মিথ্যা বিষয়ে দোষারোপ করতে অন্যদের সঙ্গে যোগ দিও না এবং নির্দোষ অথবা ধার্ম্মিককে হত্যা কোরো না, কারণ আমি দুষ্ট লোককে নির্দোষ করব না।
মিথ্যা দোষারোপ করা থেকে দূরে সরে থেকো এবং কোনও নির্দোষ বা সৎলোককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ো না, কারণ আমি সেই দোষীকে বেকসুর খালাস হতে দেব না।
8 আর তুমি ঘুষ নিও না, কারণ ঘুষ যারা দেখতে পায় তাদের অন্ধ করে দেয় এবং ধার্মিক লোকদের কথা গুলি বিপথে নিয়ে যায়।
“ঘুস নিয়ো না, কারণ যাদের দৃষ্টিশক্তি আছে, ঘুস তাদের অন্ধ করে তোলে এবং নির্দোষ লোকদের কথা পরিবর্তন করে।
9 আর তুমি বিদেশীদের উপর নির্যাতন কোরো না; যেহেতু তোমরা বিদেশীদের হৃদয় জান, কারণ তোমরাও মিশর দেশে বিদেশী হয়ে ছিলে।
“কোনও বিদেশির উপর জোরজুলুম কোরো না; তোমরা নিজেরাই জানো বিদেশি হয়ে থাকতে কেমন লাগে, কারণ তোমরাও মিশরে বিদেশিই হয়ে ছিলে।
10 ১০ তুমি নিজের মাটিতে ছয় বছর ধরে বীজ বপন কোরো এবং উৎপন্ন শস্য সংগ্রহ কোরো।
“ছয় বছর ধরে তুমি তোমার জমিতে বীজ বুনবে এবং শস্য কাটবে,
11 ১১ কিন্তু সপ্তম বছরে তাকে বিশ্রাম দিও, ফেলে রেখো; তাতে তোমাদের মধ্যে দরিদ্ররা খেতে পাবে, আর তারা যা অবশিষ্ট রাখে, তা বনের পশুরা খাবে এবং তোমার আঙ্গুর ক্ষেতের ও জিতগাছের বিষয়েও সেইরূপ কোরো।
কিন্তু সপ্তম বছরে সেই জমিটি অকর্ষিত ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেবে। তখন তোমাদের লোকজনের মধ্যবর্তী দরিদ্র লোকেরা সেখান থেকে হয়তো খাদ্যশস্য পাবে, এবং যা অবশিষ্ট থেকে যাবে তা হয়তো বন্যপশুরা খেতে পারবে। তোমার দ্রাক্ষাক্ষেতের ও জলপাই বাগানের ক্ষেত্রেও তুমি তাই কোরো।
12 ১২ তুমি ছয় দিন ধরে নিজের কাজ কোরো, কিন্তু সপ্তম দিনের তুমি অবশ্যই বিশ্রাম কোরো; যেন তোমার গরু ও গাধা বিশ্রাম পায় এবং তোমার দাসীর ছেলে ও বিদেশীরা বিশ্রাম নিতে পারে ও প্রাণ জুড়াতে পারে।
“ছয় দিন তুমি কাজ কোরো, কিন্তু সপ্তম দিন কাজ কোরো না; যেন তোমার বলদ ও গাধা বিশ্রাম নিতে পারে, এবং তোমার পরিবারে জন্মানো ক্রীতদাস ও তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশি যেন চাঙ্গা থাকতে পারে।
13 ১৩ আমি তোমাদেরকে যা যা বললাম তার সকল বিষয়ে সাবধান থেকো; অন্য দেবতাদের নাম উল্লেখ কোরো না, তোমাদের মুখ থেকে যেন তাদের নাম শোনা না যায়।
“আমি তোমাকে যা যা বলেছি সেসবকিছু করার ক্ষেত্রে সাবধান থেকো। অন্যান্য দেবতাদের নাম ধরে ডেকো না; তোমার মুখে যেন তাদের কথা শোনাও না যায়।
14 ১৪ তুমি বছরে তিন বার আমার জন্য উৎসব করার উদ্দেশ্যে যাত্রা কোরো।
“বছরে তিনবার তোমাকে আমার উদ্দেশে উৎসব পালন করতে হবে।
15 ১৫ তুমি খামির বিহীন রুটির উৎসব পালন কোরো; যেমন আমি তোমাকে আজ্ঞা দিয়েছি, সাত দিন খামির বিহীন রুটি ভোজন কোরো, সেই নির্ধারিত দিনের, আবীব মাসে তুমি আমার সামনে উপস্থিত হবে, কারণ এই মাসে তুমি মিশর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে। কিন্তু তুমি খালি হাতে আমার কাছে আসবে না।
“খামিরবিহীন রুটির উৎসব উদ্‌যাপন কোরো; সাত দিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খেয়ো, যেমনটি আমি তোমাকে আদেশ দিয়েছি। আবীব মাসের নির্দিষ্ট সময়ে এরকমটি কোরো, কারণ সেই মাসেই তোমরা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে। “কেউ যেন খালি হাতে আমার সামনে এসে না দাঁড়ায়।
16 ১৬ আর তুমি শস্য ছেদনের উৎসব, অর্থাৎ তোমার পরিশ্রমে ক্ষেত্রে যা যা বুনেছ, তার প্রথম ফলের উৎসব পালন কোরো। আর বৎসরের শেষে ক্ষেত্র থেকে ফল সংগ্রহ করার দিনের ফল সঞ্চয়ের উৎসব পালন কোরো।
“তোমার জমিতে বোনা ফসলের প্রথম ফল দিয়ে শস্যচ্ছেদনের উৎসব উদ্‌যাপন কোরো। “বছর-শেষে, জমি থেকে যখন তুমি তোমার শস্য সংগ্রহ করবে, তখন শস্য সংগ্রহের উৎসব উদ্‌যাপন কোরো।
17 ১৭ বছরে তিন বার তোমার সব পুরুষেরা প্রভু সদাপ্রভুর সামনে অবশ্যই উপস্থিত হবে।
“বছরে তিনবার সব পুরুষকে সার্বভৌম সদাপ্রভুর সামনে এসে দাঁড়াতে হবে।
18 ১৮ তুমি বলির রক্ত খামিরযুক্ত জিনিসের সঙ্গে আমাকে উত্সর্গ কোরো না; আর আমার উৎসব সম্পর্কীয় মেদ সমস্ত রাত্রি থেকে সকাল পর্যন্ত না থাকুক।
“খামিরযুক্ত কোনো কিছু সমেত আমার উদ্দেশে বলির রক্ত উৎসর্গ কোরো না। “আমার উৎসব-বলির মেদ যেন সকাল পর্যন্ত রেখে দেওয়া না হয়।
19 ১৯ তোমার জমির প্রথম ফলের অগ্রিমাংশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘরে এনো। আর তোমরা ছাগল ছানাকে তার মায়ের দুধের সঙ্গে রান্না কোরো না।
“তোমার জমির সেরা প্রথম ফলটি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে এসো। “ছাগ-শিশুকে তার মায়ের দুধে রান্না কোরো না।
20 ২০ দেখ, পথের মধ্যে তোমাকে রক্ষা করতে এবং আমি যে জায়গা প্রস্তুত করেছি, সেই জায়গায় তোমাকে নিয়ে যেতে তোমার আগে আগে এক দূত আমি পাঠিয়ে দিয়েছি।
“দেখো, পথে তোমাকে রক্ষা করার জন্য ও যে স্থানটি আমি তৈরি করে রেখেছি, সেখানে তোমাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি তোমার আগে আগে এক দূত পাঠাচ্ছি।
21 ২১ তাঁর প্রতি সাবধান থেকো এবং তাঁর রবে মান্য কোরো, তাঁর অসন্তোষ জন্মাইও না; কারণ তিনি তোমাদের অধর্ম্ম সকল ক্ষমা করবেন না; কারণ তাঁর হৃদয়ে আমার নাম রয়েছে।
তাঁর কথায় মনোযোগ দিয়ো এবং তিনি যা কিছু বলেন তা শুনো। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কোরো না; তিনি তোমার বিদ্রোহ ক্ষমা করবেন না, যেহেতু তাঁর মধ্যে আমার নাম আছে।
22 ২২ কিন্তু যদি তুমি নিশ্চই তাঁর রবে মান্য কর এবং আমি যা যা বলি সে সমস্ত কর, তবে আমি তোমার শত্রুদের শত্রু হব এবং তোমার প্রতিদ্বন্দীদের প্রতিদ্বন্দী হব।
তিনি যা বলেন তা যদি তুমি সযত্নে শোনো এবং আমি যা কিছু বলি সেসব করো, তবে আমি তোমার শত্রুদের শত্রু হব ও যারা তোমার বিরোধিতা করে তাদের বিরোধিতা করব।
23 ২৩ কারণ আমার দূত তোমার আগে আগে যাবেন এবং ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়ের দেশে তোমাকে নিয়ে যাবেন; আর আমি তাদেরকে ধ্বংস করব।
আমার দূত তোমার আগে আগে যাবেন এবং ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিব্বীয়, ও যিবূষীয়দের দেশে তোমাকে নিয়ে আসবেন, এবং আমি তাদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলব।
24 ২৪ তুমি তাদের দেবতাদের কাছে মাথা নিচু করে প্রণাম কোরো না ও তারা যা করে তা কোরো না; কিন্তু তাদেরকে পুরোপুরিভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিও এবং তাদের পাথরের স্তম্ভগুলি ভেঙে ফেলো।
তাদের দেবতাদের সামনে মাথা নত কোরো না বা তাদের আরাধনা কোরো না অথবা তাদের রীতিনীতি পালন কোরো না। তোমরা অবশ্যই তাদের ধ্বংস করবে এবং তাদের পুণ্য পাথরগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবে।
25 ২৫ তোমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অর্থাৎ আমাকে সেবা কোরো; যদি তোমরা তা কর, তাতে আমি তোমার রুটি ও জলে আশীর্বাদ করব এবং আমি তোমার মধ্য থেকে রোগ দূর করব।
তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আরাধনা কোরো, এবং তাঁর আশীর্বাদ তোমার খাদ্যে ও জলে বজায় থাকবে। তোমার মধ্যে থেকে আমি সব রোগব্যাধি দূর করে দেব,
26 ২৬ তোমার দেশে কারও গর্ভপাত হবে না এবং কেউ বন্ধ্যা হবে না; আমি তোমার আয়ূর পরিমাণ বেশী করব।
এবং তোমার দেশে কারোর গর্ভপাত হবে না বা কেউ বন্ধ্যা থাকবে না। আমি তোমার আয়ুর পরিমাণ পূর্ণ করব।
27 ২৭ আমি তোমার আগে আগে আমার বিষয়ে ভয় দেব এবং তুমি যে সব জাতির কাছে যাবে তাদেরকে আঘাত করব ও তোমার শত্রুদেরকে তোমার থেকে ফিরিয়ে দেব।
“তোমার আগে আগে আমি আমার আতঙ্ক পাঠিয়ে দেব এবং যেসব জাতি তোমার সম্মুখীন হবে, তাদের প্রত্যেককে আমি বিশৃঙ্খল করে তুলব। তোমার সব শত্রুকে আমি পিছু ফিরে পালাতে বাধ্য করব।
28 ২৮ আর আমি তোমার আগে আগে ভীমরুল পাঠাব; যারা হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়কে তোমার সামনে থেকে বের করে দেবে।
তোমার সামনে থেকে হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়দের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমি তোমার আগে আগে ভিমরুল পাঠিয়ে দেব।
29 ২৯ কিন্তু দেশ যেন ধ্বংসের জায়গা না হয় ও তোমার বিরুদ্ধে বন্য পশুর সংখ্যা যেন বেশী না হয়, এই জন্য আমি এক বৎসরে তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেব না।
কিন্তু এক বছরের মধ্যেই আমি তাদের তাড়িয়ে দেব না, কারণ দেশটি জনশূন্য হয়ে যাবে এবং বন্যপশুরা তোমার পক্ষে অত্যধিক বহুসংখ্যক হয়ে যাবে।
30 ৩০ পরিবর্তে, তুমি যে পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে দেশ অধিকার না কর, ততক্ষণ তোমার সামনে থেকে তাদেরকে আস্তে আস্তে তাড়িয়ে দেব।
তোমার সামনে থেকে আমি তাদের একটু একটু করে তাড়িয়ে দেব, যতক্ষণ না পর্যন্ত তুমি সংখ্যায় যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে দেশের দখল নিতে পারছ।
31 ৩১ আর সূফসাগর থেকে ফরাৎ নদী পর্যন্ত এবং মরুভূমি থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত তোমার সীমানা নির্ধারণ করব; কারণ আমি সেই দেশের বসবাসকারীদের তোমার হাতে সমর্পণ করব এবং তুমি তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে।
“লোহিত সাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত, এবং মরুভূমি থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত আমি তোমার সীমানা স্থাপন করব। যারা সেই দেশে বসবাস করে তাদের আমি তোমার হাতে তুলে দেব, এবং তোমার সামনে থেকে তুমি তাদের তাড়িয়ে দেবে।
32 ৩২ তাদের সঙ্গে অথবা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনো নিয়ম ঠিক করবে না।
তাদের সঙ্গে বা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনও নিয়ম স্থির কোরো না।
33 ৩৩ তারা তোমার দেশে বাস করবে না, না হলে তারা আমার বিরুদ্ধে তোমাকে পাপ করাবে; কারণ যদি তুমি তাদের দেবতাদের সেবা কর, তবে তা অবশ্য তোমার জন্য ফাঁদের মত হবে।
তোমার দেশে তাদের বসবাস করতে দিয়ো না, তা না হলে আমার বিরুদ্ধে তারা তোমাকে দিয়ে পাপ করাবে, কারণ তাদের দেবতাদের আরাধনা নিঃসন্দেহে তোমার পক্ষে এক ফাঁদ হয়ে উঠবে।”

< যাত্রাপুস্তক 23 >