< দ্বিতীয় বিবরণ 29 >

1 সদাপ্রভু হোরেবে ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেছিলেন, তাছাড়া মোয়াব দেশে তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করতে মোশিকে আজ্ঞা করলেন, এই সব সেই নিয়মের বাক্য।
সদাপ্রভু হোরেব পাহাড়ে যে বিধান দিয়েছিলেন তার অতিরিক্ত বিধানের এসব নিয়মাবলি তিনি মোয়াব দেশে ইস্রায়েলীদের কাছে মোশিকে দিতে আদেশ দিয়েছিলেন।
2 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলকে ডাকলেন এবং তাদেরকে বললেন, সদাপ্রভু মিশর দেশে ফরৌণের, তাঁর সব দাসের ও সব দেশের প্রতি যে সব কাজ তোমাদের সামনে করেছিলেন, তা তোমরা দেখেছ;
মোশি সব ইস্রায়েলীকে ডেকে বললেন: সদাপ্রভু মিশরে ফরৌণ ও তাঁর সমস্ত কর্মচারী এবং সম্পূর্ণ দেশের প্রতি যা করেছিলেন তা তোমরা নিজেরাই দেখেছ।
3 পরীক্ষাসিদ্ধ সেই সব মহৎ প্রমাণ, সেই সব চিহ্ন ও সেই সব মহৎ অদ্ভুত লক্ষণ তোমরা নিজের চোখে দেখেছ;
তোমরা নিজের চোখে সেই সমস্ত মহাপরীক্ষা, চিহ্ন এবং মহা আশ্চর্য লক্ষণ দেখেছ।
4 কিন্তু সদাপ্রভু আজ পর্যন্ত তোমাদেরকে জানার হৃদয়, দেখার চোখ ও শোনার কান দেননি।
কিন্তু আজ পর্যন্ত সদাপ্রভু সেই মন যে বুঝতে পারে কিংবা চোখ যে দেখতে পায় কিংবা কান যে শুনতে পায় তা তোমাদের দেননি।
5 আমি চল্লিশ বছর মরুপ্রান্তে তোমাদেরকে চালিয়েছি; তোমাদের গায়ে তোমাদের পোষাক পুরানো হয়নি ও তোমার পায়ে তোমার জুতা পুরাতন হয়নি;
তবুও সদাপ্রভু বলেন, “আমি চল্লিশ বছর তোমাদের প্রান্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছি, তোমাদের কাপড় ছেঁড়েনি কিংবা তোমাদের পায়ের চটি নষ্ট হয়নি।
6 তোমরা রুটি খাওনি এবং আঙ্গুর রস কি সুরা পান করনি; যেন তোমরা জানতে পার যে, আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।
তোমরা কোনও রুটি খাওনি এবং কোনও দ্রাক্ষারস কিংবা কোনও গাঁজানো পানীয় পান করোনি। আমি এরকম করেছিলাম যেন তোমরা জানতে পারো যে আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।”
7 আর তোমরা যখন এই জায়গায় উপস্থিত হলে, তখন হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হলে আমরা তাদেরকে আঘাত করলাম;
তোমরা এই জায়গায় পৌঁছানোর পর, হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়ে এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদের হারিয়ে দিয়েছি।
8 আর তাদের দেশ নিয়ে অধিকারের জন্যে রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে এবং মনঃশীয়দের অর্ধেক বংশকে দিলাম।
আমরা তাদের দেশ নিয়ে অধিকারের জন্য তা রূবেণীয়, গাদীয় এবং মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে দিয়েছি।
9 অতএব তোমরা যা যা করবে, সমস্ত বিষয়ে যেন উন্নতিলাভ করতে পার, এই জন্য এই নিয়মের কথা সব পালন কোরো এবং সেই অনুসারে কাজ কোরো।
তোমরা এই বিধানের নিয়মাবলি যত্নের সঙ্গে পালন কোরো, যেন তোমরা যা কিছু করো তাতেই উন্নতি করতে পারো।
10 ১০ তোমরা সবাই আজ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছ, তোমাদের অধ্যক্ষরা, তোমাদের বংশ সব, তোমাদের প্রাচীনরা, তোমাদের শাসকরা, এমন কি, ইস্রায়েলের সব পুরুষ,
তোমরা সবাই এখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছ—তোমাদের নেতারা ও প্রধান লোকেরা, তোমাদের প্রবীণ নেতারা ও কর্মকর্তারা, এবং ইস্রায়েলের সব লোকজন,
11 ১১ তোমাদের বালক বালিকারা, তোমাদের স্ত্রীরা এবং তোমার শিবিরের মধ্যে তোমার কাঠ কাটার লোক থেকে জলবাহক পর্যন্ত এবং বিদেশী, সবাই আছ;
তাদের সঙ্গে তোমাদের সন্তানেরা ও তোমাদের স্ত্রীরা, এবং বিদেশিরা যারা তোমাদের ছাউনিতে বসবাস করে তোমাদের জন্য কাঠ কাটে ও জল তোলে।
12 ১২ যেন তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই নিয়মে ও সেই শপথে আবদ্ধ হও, যা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আজ তোমার সঙ্গে করছেন;
তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য আজ নিশ্চয়তার শপথ করে যে বিধান স্থাপন করেছেন সেই শপথ ও বিধান মেনে নেবার জন্য তোমরা এখানে এসে দাঁড়িয়েছ,
13 ১৩ এই জন্য করছেন, যেন তিনি আজ তোমাকে নিজের লোক হিসাবে স্থাপন করেন ও তোমার ঈশ্বর হন, যেমন তিনি তোমাকে বলেছেন, আর যেমন তিনি তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে শপথ করেছেন।
যেন তিনি আজ তোমাদের নিজের প্রজারূপে স্থাপন করেন, যেন তিনি তোমাদের ঈশ্বর হন যেমন তিনি তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে প্রতিজ্ঞা করে শপথ করেছিলেন।
14 ১৪ এবং আমি এই নিয়ম ও এই শপথ শুধু তোমাদেরই সঙ্গে করছি, তা না;
আমি এই নিয়ম স্থাপন ও তার সঙ্গে শপথ করছি, কেবল তোমাদের সঙ্গে নয়
15 ১৫ বরং আমাদের সঙ্গে আজ এই জায়গায় আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে যে কেউ দাঁড়িয়ে আছে ও আমাদের সঙ্গে আজ যে নেই, সেই সবের সঙ্গে করছি।
যারা এখানে আমাদের সঙ্গে আজ দাঁড়িয়ে আছ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে কিন্তু যারা আজ এখানে নেই তাদের জন্যও করছি।
16 ১৬ কারণ আমরা মিশর দেশে যেভাবে বাস করেছি এবং জাতিদের মধ্যে দিয়ে যেভাবে এসেছি, তা তোমরা জানো
তোমরা নিজেরা জানো আমরা মিশরে কীভাবে বসবাস করেছি এবং এখানে আমরা কেমন করে বিভিন্ন দেশের মধ্য দিয়ে এসেছি।
17 ১৭ এবং তাদের ঘৃণার্হ জিনিস সব, তাদের মধ্যে কাঠের, পাথরের, রূপার ও সোনার মূর্ত্তি সব দেখেছ।
কাঠ, পাথর, রুপো ও সোনার তৈরি ঘৃণ্য মূর্তি এবং প্রতিমা তোমরা তাদের মধ্যে দেখেছ।
18 ১৮ এই জাতিদের দেবতাদের সেবা করতে যাবার জন্য আজ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু থেকে যার হৃদয় অন্য পথে ফিরে যায়, এমন কোনো পুরুষ কিংবা স্ত্রী কিংবা গোষ্ঠী কিংবা বংশ তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে, বিষগাছের কি নাগদানার মূল তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে
সেই জাতিগুলির দেবতাদের সেবা করবার জন্য আজ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ফেলে এমন কোনও পুরুষ বা স্ত্রীলোক, কোনও বংশ বা গোষ্ঠী তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে; কোনও তীব্র বিষাক্ত মূল যেন তোমাদের মধ্যে না থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত হবে।
19 ১৯ এবং এই শাপের কথা শোনার দিনের কেউ যেন মনে মনে নিজের ধন্যবাদ করত না বলে, আমি ভিজের সঙ্গে শুকনোর ধ্বংস করার জন্য নিজের হৃদয়ের একগুঁয়েমিতায় চললেও আমার শান্তি হবে।
যখন কোনও ব্যক্তি এই শপথ করা কথাগুলি শোনার সময় নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করে এবং মনে মনে ভাবে, “নিজের ইচ্ছামতো চলতে থাকলেও আমি নিরাপদে থাকব,” তারা উর্বর জমি এমনকি শুষ্ক জমির উপর বিপর্যয় নিয়ে আসবে।
20 ২০ সদাপ্রভু তাকে ক্ষমা করতে রাজি হবেন না, কিন্তু সেই মানুষের ওপরে তখন সদাপ্রভুর রাগ ও তাঁর কোপ ধূমায়িত হবে এবং এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ তার ওপরে শুয়ে থাকবে এবং সদাপ্রভু আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে তার নাম মুছে দেবেন।
সদাপ্রভু কখনও তাদের ক্ষমা করতে রাজি হবেন না; তাদের বিরুদ্ধে তাঁর ক্রোধ এবং অন্তর ঈর্ষায় জ্বলে উঠবে। এই পুস্তকে যেসব অভিশাপের কথা লেখা আছে তা সবই তাদের উপরে পড়বে, এবং সদাপ্রভু পৃথিবী থেকে তাদের নাম মুছে ফেলবেন।
21 ২১ আর এই নিয়মের বইয়ে লেখা নিয়মের সব শাপ অনুসারে সদাপ্রভু তাকে ইস্রায়েলের সব বংশ থেকে বিপর্যয়ের জন্য বিতাড়িত করবেন।
বিধানপুস্তকে লেখা নিয়মের সমস্ত অভিশাপ অনুসারে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে অমঙ্গলের জন্য তাদেরই পৃথক করবেন।
22 ২২ আর সদাপ্রভু সেই দেশের উপরে যে সব আঘাত ও রোগ আনবেন, তা যখন আগামী বংশ, তোমাদের পরে উৎপন্ন তোমাদের সন্তানরা এবং বিদেশ থেকে আসা বিদেশী দেখবে
সেই দেশের উপরে সদাপ্রভু যেসব বিপর্যয় ও রোগ পাঠিয়ে দেবেন তা তোমাদের বংশধরেরা আর দূরদেশ থেকে আসা বিদেশিরা দেখবে।
23 ২৩ এবং সদাপ্রভু নিজের রাগে ও ক্রোধে যে সদোম, ঘমোরা, অদমা ও সবোয়িম শহর উৎপন্ন করেছিলেন, তার মত এই দেশের সব ভূমি গন্ধক, জলন্ত লবণে পরিপূর্ণ হয়েছে, তাতে কিছুই বোনা যায় না ও তা ফল উৎপন্ন করে না ও তাতে কোনো তৃণ হয় না, এ সব যখন দেখবে; তখন তারা বলবে,
সমগ্র দেশটি নুন আর গন্ধকে পুড়ে পড়ে থাকবে—তাতে কোনও গাছ লাগানো যাবে না, কোনও বীজ অঙ্কুরিত হবে না, কোনও গাছপালা জন্মাবে না। এই দেশের অবস্থা হবে সদোম, ঘমোরা, অদ্‌মা ও সবোয়িমের মতো, যেগুলি সদাপ্রভু তাঁর ভয়ংকর ক্রোধে জ্বলে উঠে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
24 ২৪ এমন কি, সব জাতি বলবে, সদাপ্রভু এ দেশের প্রতি কেন এমন করলেন? এমন মহাক্রোধ প্রজ্বলিত হবার কারণ কি?
সমস্ত জাতি জিজ্ঞাসা করবে “সদাপ্রভু কেন এই দেশটির এই দশা করেছেন? কেন তাঁর এই ভয়ংকর জ্বলন্ত ক্রোধ?”
25 ২৫ তখন লোকে বলবে, কারণ এই, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিশর দেশ থেকে সেই পূর্বপুরুষদেরকে বের করে আনার দিনের তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেন, সেই নিয়ম তারা ত্যাগ করেছিল
আর তার উত্তর হবে “কারণ এই জাতি তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম ত্যাগ করেছে, যে নিয়ম মিশর দেশ থেকে তাদের বের করে আনবার পর তিনি তাদের জন্য স্থাপন করেছিলেন।
26 ২৬ আর গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল, যে দেবতাদেরকে তারা জানত না, যাদেরকে তিনি তাদের জন্য নির্ধারণ করেননি, সেই দেবতাদের কাছে নত করেছিল;
তারা গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছে এবং তাদের সামনে মাথা নত করেছে, যে দেবতাদের তারা জানত না, যাদের সদাপ্রভু তাদের দেননি।
27 ২৭ তাই এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ দেশের উপর আনতে এই দেশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর রাগ প্রজ্বলিত হল
সেইজন্য সদাপ্রভুর ক্রোধ এই দেশের প্রতি জ্বলে উঠেছিল, আর তিনি এই পুস্তকে লেখা সমস্ত অভিশাপ ঢেলে দিয়েছিলেন।
28 ২৮ এবং সদাপ্রভু রাগে, ক্রোধে ও মহাকোপে তাদেরকে তাদের দেশ থেকে অন্য দেশে নিক্ষেপ করেছেন, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে।
ভীষণ ক্রোধে এবং ভয়ংকর জ্বলন্ত ক্রোধে সদাপ্রভু তাদের নিজেদের দেশ থেকে উপড়ে নিয়ে তাদের অন্য দেশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন, আর আজও তারা সেখানে আছে।”
29 ২৯ গোপন বিষয় সব আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অধিকার; কিন্তু প্রকাশিত বিষয় সব আমাদের ও চিরকাল আমাদের বংশধরদের অধিকার, যেন এই নিয়মের সব কথা আমরা পালন করতে পারি।
গোপন সবকিছু আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অধিকার, কিন্তু প্রকাশিত সবকিছু চিরকালের জন্য আমাদের ও আমাদের সন্তানদের অধিকার, যেন এই বিধানের সব কথা আমরা পালন করতে পারি।

< দ্বিতীয় বিবরণ 29 >