< ১ম পিতর 2 >

1 তাই তোমরা সমস্ত মন্দ জিনিস ও সমস্ত ছলনা এবং ভণ্ডামি ও হিংসা ও সমস্ত পরনিন্দা ত্যাগ করে
অতএব, তোমরা সমস্ত বিদ্বেষ ও সমস্ত ছলনা, ভণ্ডামি, ঈর্ষা ও সমস্ত রকম কুৎসা-রটানো ত্যাগ করো।
2 নবজাত শিশুদের মত সেই আত্মিক পরিষ্কার খাঁটি দুধের আকাঙ্খা কর, যেন তার গুণে উদ্ধারের জন্য বৃদ্ধি পাও,
নবজাত শিশুর মতো, বিশুদ্ধ আত্মিক দুধের আকাঙ্ক্ষা করো, যেন এর গুণে তোমরা পরিত্রাণের পূর্ণ অভিজ্ঞতায় বৃদ্ধিলাভ করতে পারো,
3 যদি তোমরা এমন স্বাদ পেয়ে থাক যে, প্রভু মঙ্গলময়।
যেহেতু এখন তোমরা আস্বাদন করে দেখেছ যে, প্রভু মঙ্গলময়।
4 তোমরা তাঁরই কাছে, মানুষের কাছে অগ্রাহ্য, কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মনোনীত ও মহামূল্য, জীবন্ত পাথরের কাছে এসে,
তোমরা যখন তাঁর কাছে অর্থাৎ সেই জীবন্ত পাথরের কাছে এসেছ—যিনি মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত, কিন্তু ঈশ্বরের দ্বারা মনোনীত হয়েছিলেন ও তাঁর কাছে মহামূল্যবান ছিলেন—
5 জীবন্ত পাথরের মতো আত্মিক বাড়ির মতো তোমাদের গেঁথে তোলা হচ্ছে, যেন পবিত্র যাজকবর্গ হয়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য আত্মিক বলি উৎসর্গ করতে পার।
তখন তোমাদেরও জীবন্ত পাথরের মতো, একটি আত্মিক আবাসরূপে গড়ে তোলা হচ্ছে, যেন এক পবিত্র যাজকসমাজ হয়ে তোমরা যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য আত্মিক বলি উৎসর্গ করতে পারো।
6 কারণ শাস্ত্রে এই কথা পাওয়া যায়, “দেখ, আমি সিয়োনে কোণের এক মনোনীত মহামূল্য পাথর স্থাপন করি; তাঁর উপর যে বিশ্বাস করে, সে লজ্জিত হবে না।”
কারণ শাস্ত্রে বলা হয়েছে: “দেখো, আমি সিয়োনে এক পাথর স্থাপন করি, এক মনোনীত ও মহামূল্যবান কোণের পাথর, যে তাঁর উপরে আস্থা রাখে, সে কখনও লজ্জিত হবে না।”
7 তাই তোমরা যারা বিশ্বাস করছ, ঐ মহামূল্যতা তোমাদেরই জন্য, কিন্তু যারা বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য “যে পাথর গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করেছে, সেটাই কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠল,”
এখন তোমরা যারা বিশ্বাস করো, তাদের কাছে এই পাথর বহুমূল্য। কিন্তু যারা বিশ্বাস করে না, তাদের ক্ষেত্রে, “গাঁথকেরা যে পাথর অগ্রাহ্য করেছিল, তাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর,”
8 আবার তা হয়ে উঠল, “বাধাজনক পাথর ও বাধাজনক পাষাণ।” বাক্যের অবাধ্য হওয়াতে তারা হোঁচট পায় এবং তার জন্যই নিযুক্ত হয়েছিল।
এবং “এক পাথর, যাতে মানুষ হোঁচট খাবে এবং এক শিলা, যার কারণে তাদের পতন হবে।” সেই বাক্যের অবাধ্য হওয়াতে তারা হোঁচট খায়, যার জন্য তারা নির্ধারিত হয়েই আছে।
9 কিন্তু তোমরা “মনোনীত বংশ, রাজকীয় যাজকবর্গ, পবিত্র জাতি, ঈশ্বরের নিজস্ব প্রজাবৃন্দ, যেন তাঁরই গুণকীর্ত্তন কর,” যিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে নিজের আশ্চর্য্য আলোর মধ্যে ডেকেছেন।
কিন্তু তোমরা এক মনোনীত বংশ, এক রাজকীয় যাজক-সম্প্রদায়, এক পবিত্র জাতি, ঈশ্বরের অধিকারস্বরূপ নিজস্ব এক প্রজা, যেন তোমরা তাঁরই গুণকীর্তন করতে পারো, যিনি তোমাদের অন্ধকার থেকে আহ্বান করে তাঁর আশ্চর্য জ্যোতির মধ্যে নিয়ে এসেছেন।
10 ১০ পূর্বে তোমরা “প্রজা ছিলে না, কিন্তু এখন ঈশ্বরের প্রজা হয়েছ, দয়ার যোগ্য ছিলে না কিন্তু এখন দয়া পেয়েছ।”
এক সময় তোমরা তাঁর প্রজা ছিলে না, কিন্তু এখন তোমরা ঈশ্বরের প্রজা হয়েছ; এক সময় তোমরা করুণা পাওনি, কিন্তু এখন তোমরা করুণা লাভ করেছ।
11 ১১ প্রিয়তমেরা, আমি অনুরোধ করি, তোমরা বিদেশী ও প্রবাসী বলে সমস্ত মাংসিক অভিলাষ থেকে দূরে থাক, সেগুলি আত্মার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
প্রিয় বন্ধুরা, আমি তোমাদের অনুনয় করি, যেহেতু পৃথিবীতে তোমরা বিদেশি ও প্রবাসী তাই তোমরা পাপপূর্ণ কামনাবাসনা থেকে দূরে থাকো, যেগুলি তোমাদের প্রাণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
12 ১২ আর অযিহুদিদের মধ্যে তোমাদের ভালো ব্যবহার বজায় রাখ; কারণ একজন মন্দ কাজ করা ব্যক্তিকে যেমন নিন্দা করা হয়, তারা তেমনই তোমাদের নিন্দা করে, তারা নিজের চোখে তোমাদের ভালো কাজ দেখলে সেই বিষয়ে তাঁর আগমনের দিনের ঈশ্বরের গৌরব করবে।
অবিশ্বাসী প্রতিবেশীদের মধ্যে তোমরা এমন উৎকৃষ্ট মানের জীবনযাপন করো যে, যদিও তারা তোমাদের দুষ্কর্মকারী বলে অপবাদ দেয়, তবুও তারা তোমাদের সৎ কর্মগুলি দেখতে পায় ও যেদিন ঈশ্বর আমাদের পরিদর্শন করেন, সেদিন তারা তাঁর গৌরব কীর্তন করবে।
13 ১৩ তোমরা প্রভুর জন্য মানুষের সৃষ্টি সমস্ত শাসনের বশীভূত হও, রাজার বশীভূত হও, তিনি প্রধান;
তোমরা প্রভুর কারণে মানুষের মধ্যে নিযুক্ত প্রত্যেক কর্তৃপক্ষের বশ্যতাস্বীকার করো—তা তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাজা হন
14 ১৪ অন্য শাসনকর্ত্তাদের বশীভূত হও, তাঁরা মন্দ লোকেদের বিচার করার জন্য ও ভালো কাজের প্রশংসা করার জন্য তাঁদের তিনি পাঠিয়েছেন।
বা তাঁর প্রেরিত প্রদেশপাল হন। কারণ অন্যায়কারীদের শাস্তি ও সদাচারীদের প্রশংসা করতে রাজাই তাঁদের নিযুক্ত করেছেন।
15 ১৫ কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, যেন এই ভাবে তোমরা ভালো কাজ করতে করতে নির্বোধ লোকদের অজ্ঞানতাকে চুপ করাতে পার।
কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা হল এই যে, সৎকর্মের দ্বারা তোমরা নির্বোধ লোকেদের অর্থইীন কথাবার্তাকে যেন স্তব্ধ করে দিতে পারো।
16 ১৬ স্বাধীন লোক হিসাবে, তোমরা তোমাদের স্বাধীনতাকে মন্দ কাজ ঢাকার বস্ত্র করো না, কিন্তু নিজেদেরকে ঈশ্বরের দাস বলে মনে কর।
তোমরা স্বাধীন মানুষের মতো জীবনযাপন করো; কিন্তু তোমাদের স্বাধীনতাকে দুষ্কর্মের আড়ালস্বরূপ ব্যবহার কোরো না; বরং তোমরা ঈশ্বরের সেবকরূপে জীবনযাপন করো।
17 ১৭ সবাইকে সম্মান কর, সমস্ত ভাইদের ভালবাসো, ঈশ্বরকে ভয় কর, রাজাকে সম্মান কর।
প্রত্যেক মানুষের প্রতি যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করো: বিশ্বাসী সমাজকে প্রেম করো, ঈশ্বরকে ভয় করো, রাজাকে সমাদর করো।
18 ১৮ দাসেরা, তোমরা সম্পূর্ণ ভয়ের সঙ্গে তোমাদের মনিবের বশীভূত হও, শুধুমাত্র ভালো ও শান্ত মনিবদের নয়, কিন্তু নিষ্ঠুর মনিবদেরও বশীভূত হও।
ক্রীতদাসেরা, তোমরা সব ব্যাপারে শ্রদ্ধার সঙ্গে তোমাদের মনিবদের বশ্যতাস্বীকার করো; কেবলমাত্র যারা সজ্জন ও সুবিবেচক, তাদেরই নয়, কিন্তু যারা হৃদয়হীন, তাদেরও।
19 ১৯ কারণ কেউ যদি ঈশ্বরের কাছে তার বিবেক ঠিক রাখার জন্য অন্যায় সহ্য করে দুঃখ পায়, তবে সেটাই প্রশংসার বিষয়।
কারণ ঈশ্বরসচেতন কোনো ব্যক্তি যদি অন্যায্য যন্ত্রণা পেয়ে কষ্টভোগ করে, তাহলে তা প্রশংসার যোগ্য।
20 ২০ কিন্তু যদি পাপ করার জন্য যদি তোমরা শাস্তি সহ্য কর, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? কিন্তু ভালো কাজ করে যদি দুঃখ সহ্য কর, তবে সেটাই তো ঈশ্বরের কাছে প্রশংসার বিষয়।
কিন্তু অন্যায় কাজের জন্য যদি মার খাও ও তা সহ্য করো, তাহলে এতে তোমাদের কৃতিত্ব কোথায়? বরং সৎকর্মের জন্য যদি কষ্টভোগ করো ও তা সহ্য করো, তাই ঈশ্বরের কাছে প্রশংসনীয়।
21 ২১ কারণ তোমাদের এর জন্যই ডাকা হয়েছে, কারণ খ্রীষ্টও তোমাদের জন্য দুঃখ সহ্য করলেন, এ বিষয়ে তোমাদের জন্য এক আদর্শ রেখে গেছেন, যেন তোমরা তাঁর রাস্তাকে অনুসরণ কর;
এই উদ্দেশ্যেই তোমাদের আহ্বান করা হয়েছ, কারণ খ্রীষ্টও তোমাদের জন্য কষ্টভোগ করেছেন ও তোমাদের কাছে এক দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, যেন তোমরাও তাঁর চলার পথ অনুসরণ করো।
22 ২২ “তিনি পাপ করেননি, তাঁর মুখে কোন ছলনা পাওয়া যায় নি।”
“তিনি কোনও পাপ করেননি, তাঁর মুখেও কোনো ছলনার বাণী পাওয়া যায়নি।”
23 ২৩ তিনি নিন্দিত হলে তিরস্কার করতেন না, যখন তিনি দুঃখ সহ্য করেছেন তখন তিনি কাউকে কোনো উত্তর দেননি, কিন্তু, ঈশ্বর যিনি সঠিক বিচার করেন, তাঁর উপর ভরসা রাখতেন।
তাঁর প্রতি যখন নিন্দা-অপমান বর্ষিত হল, তিনি প্রতিনিন্দা করলেন না। যখন কষ্টভোগ করলেন, তিনি কোনও কটু বাক্য উচ্চারণ করলেন না। পরিবর্তে, যিনি ন্যায়বিচারক, তিনি তাঁরই হাতে বিচারের ভার অর্পণ করলেন।
24 ২৪ তিনি আমাদের “পাপের ভার নিয়ে” তাঁর দেহে ক্রুশের উপরে তা বহন করলেন, যেন আমরা পাপের পক্ষে মৃত্যুবরণ করি ও ধার্মিকতার পক্ষে জীবিত হই, “তাঁর ক্ষত দিয়েই তোমরা আরোগ্য লাভ করেছ।”
স্বয়ং তিনি ক্রুশের উপরে নিজ শরীরে আমাদের “পাপরাশি বহন করলেন,” যেন আমরা পাপসমূহের প্রতি মৃত্যুবরণ করে ধার্মিকতার প্রতি জীবিত হই; “তাঁরই সব ক্ষত দ্বারা তোমরা আরোগ্য লাভ করেছ।”
25 ২৫ কারণ তোমরা “ভেড়ার মতো ভ্রান্ত হয়েছিলে,” কিন্তু এখন তোমাদের প্রাণের পালক ও রক্ষকের কাছে ফিরে এসেছ।
কারণ “তোমরা বিপথগামী মেষের মতো ছিলে,” কিন্তু এখন তোমরা তোমাদের প্রাণের পালক ও তত্ত্বাবধায়কের কাছে ফিরে এসেছ।

< ১ম পিতর 2 >