< প্রকাশিত বাক্য 18 >

1 এরপরে আমি অন্য এক দূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম। তিনি ছিলেন মহা কর্তৃত্বসম্পন্ন, পৃথিবী তাঁর প্রতাপে আলোকিত হয়ে উঠল। 2 তিনি প্রবল রবে চিৎকার করে বললেন, “‘পতন হল! বিশাল সেই ব্যাবিলনের পতন হল!’ সে হয়ে উঠেছিল ভূতপ্রেতদের গৃহ, সমস্ত মন্দ-আত্মার লুকোনোর স্থান, প্রত্যেক অশুচি পাখির এক আস্তানা। প্রত্যেক অশুচি ও ঘৃণ্য পশুর এক আস্তানা। 3 কারণ সমস্ত জাতি তার ব্যভিচারের উন্মত্তকারী সুরা পান করেছে। পৃথিবীর রাজারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছে, আবার পৃথিবীর বণিকেরা তার বিলাসিতার প্রাচুর্যে ধনবান হয়েছে।” 4 তারপর আমি স্বর্গ থেকে শুনলাম অন্য এক কণ্ঠস্বর: “‘আমার প্রজারা, ওর মধ্য থেকে বের হয়ে এসো,’ যেন তোমরা তার পাপসকলের অংশীদার না হও, যেন তার কোনো বিপর্যয় তোমাদের প্রতি না ঘটে; 5 কারণ তার সব পাপ আকাশ পর্যন্ত স্তূপীকৃত হয়েছে; আর ঈশ্বর তার সব অপরাধ স্মরণ করেছেন। 6 সে যেমন করেছে, তার প্রতি ফিরে সেরকমই করো; তার কৃতকর্মের দ্বিগুণ প্রতিফল তাকে দাও। তার নিজের পানপাত্রেই তার জন্য দ্বিগুণ পানীয় মিশ্রিত করো। 7 সে যত আত্মগরিমা ও বিলাসিতা করত, সেই পরিমাণে তাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট দাও। সে তার মনে মনে দম্ভ করে, ‘আমি রানির মতো উপবিষ্ট, আমি বিধবা নই, আর আমি কখনও শোকবিলাপ করব না।’ 8 এই কারণে একদিনেই তার সমস্ত বিপর্যয়, মৃত্যু, শোকবিলাপ ও দুর্ভিক্ষ, তার উপরে এসে পড়বে। আগুন তাকে গ্রাস করবে, কারণ তার বিচারকর্তা প্রভু ঈশ্বর, শক্তিমান। 9 “যখন পৃথিবীর রাজারা, যারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছিল ও তার বিলাসিতায় অংশগ্রহণ করেছিল, তারা তার দাহ হওয়ার ধোঁয়া দেখবে, তারা তার জন্য কাঁদবে ও শোকবিলাপ করবে। 10 তার যন্ত্রণাভোগে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তারা দূরে দাঁড়িয়ে থাকবে ও আর্তনাদ করে বলবে, “‘হায়! হায় সেই মহানগরী, ও ব্যাবিলন, পরাক্রান্ত নগরী! এক ঘণ্টার মধ্যেই তোমার সর্বনাশ উপস্থিত হল।’ 11 “পৃথিবীর বণিকেরা তার জন্য কাঁদবে ও বিলাপ করবে, কারণ কেউই আর তাদের বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী কিনবে না। 12 সেই বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী হল সোনা, রুপো, মণিমাণিক্য ও মুক্তো; মিহি মসিনা, বেগুনি, সিল্ক ও লাল রংয়ের পোশাক; সব ধরনের চন্দনকাঠ ও হাতির দাঁত, মূল্যবান কাঠ, পিতল, লোহা ও মার্বেল পাথরের তৈরি সমস্ত ধরনের দ্রব্য; 13 দারচিনি ও মশলা, সুগন্ধি ধূপ, কুন্দুরু ও গন্ধরস, সুরা ও জলপাই তেল, সূক্ষ্ম ময়দা ও গম, গবাদি পশুপাল ও মেষ, ঘোড়া ও রথ, ক্রীতদাস ও মানুষের প্রাণ। 14 “আর তারা বলবে, ‘যে ফলের তুমি আকাঙ্ক্ষা করতে, তা তোমার হাতছাড়া হয়ে গেছে। তোমার সমস্ত ঐশ্বর্য ও সমারোহ তোমার নাগালের বাইরে, আর কখনও সেসব ফিরে পাওয়া যাবে না।’ 15 যে বণিকেরা এই সমস্ত পণ্য বিক্রি করত ও তার কাছ থেকে তাদের ঐশ্বর্য লাভ করত, তারা তার যন্ত্রণায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকবে। তারা কাঁদবে ও হাহাকার করবে 16 এবং চিৎকার করে বলে উঠবে, “‘হায়! হায়! সেই মহানগরী, সে মিহি মসিনা, বেগুনি ও লাল রংয়ের পোশাকে সজ্জিত ছিল, সে সজ্জিত ছিল সোনা, মণিমাণিক্য ও মুক্তায়! 17 এক ঘণ্টায় এই বিপুল ঐশ্বর্য ধ্বংস হয়ে গেল!’ “আর সমুদ্রের প্রত্যেক দলপতি, যারা জলপথে যাত্রা করে, নাবিকের দল ও সমুদ্র থেকে যারা তাদের জীবিকা অর্জন করে, তারা সবাই দূরে দাঁড়িয়ে থাকবে। 18 তারা যখন তার দাহ হওয়ার ধোঁয়া দেখবে, তারা চিৎকার করে বলবে, ‘এই মহানগরীর সমতুল্য আর কোনও নগর কি ছিল?’ 19 তারা তাদের মাথায় ধুলো ছড়াবে, কাঁদতে কাঁদতে ও বিলাপ করতে করতে হাহাকার করে বলবে: “হায়! হায়! হে মহানগরী, তারা কোথায়, যাদের জাহাজ সমুদ্রে ছিল, যারা তার ঐশ্বর্যের দ্বারা সমৃদ্ধ হয়েছিল! এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে ধ্বংস করা হল! 20 “হে স্বর্গ, তার এ দশায় উল্লসিত হও! পবিত্রগণেরা ও প্রেরিতশিষ্যেরা এবং সব ভাববাদী, তোমরা আনন্দ করো! কারণ সে তোমাদের প্রতি যে রকম আচরণ করেছে, ঈশ্বর তেমনই তার বিচার করেছেন।” 21 পরে এক শক্তিমান স্বর্গদূত বড়ো জাঁতার মতো বিশাল এক পাথর তুলে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলেন ও বললেন: “এ ধরনের কঠোরতার সঙ্গে মহানগরী ব্যাবিলনকে নিক্ষিপ্ত করা হবে, তার সন্ধান আর কখনও পাওয়া যাবে না। 22 বীণাবাদক ও সংগীতজ্ঞদের গানবাজনা, বাঁশি-বাদক ও তূরীবাদকদের ধ্বনি, আর শোনা যাবে না। কোনও বাণিজ্যের কোনো শ্রমিককে আর তোমার মধ্যে পাওয়া যাবে না, কোনো জাঁতার শব্দ আর কখনও তোমার মধ্যে শোনা যাবে না। 23 প্রদীপের শিখা তোমার মধ্যে আর কখনও আলো জ্বালাবে না। বর ও কনের রব আর কখনও তোমার মধ্যে শোনা যাবে না। তোমার বণিকেরা ছিল জগতের সব মহৎ ব্যক্তি। তোমার তন্ত্রমন্ত্রের মায়ায় সব জাতি বিপথে চালিত হয়েছিল। 24 তার মধ্যে পাওয়া গিয়েছে ভাববাদীদের ও পবিত্রগণের এবং যতজন পৃথিবীতে নিহত হয়েছে, তাদের সকলের রক্ত।”

< প্রকাশিত বাক্য 18 >