< লুক 13 >

1 সেই সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন যীশুকে সেই গালীলীয়দের সম্পর্কে সংবাদ দিল, যাদের রক্ত পীলাত তাদের বলির সঙ্গে মিশিয়ে ছিলেন। 2 যীশু উত্তর দিলেন, “তোমরা কি মনে করো যে, এইভাবে তাড়িত হয়েছিল বলে তারা অন্যান্য গালীলীয়দের তুলনায় বেশি পাপী ছিল? 3 আমি তোমাদের বলছি, না! কিন্তু মন পরিবর্তন না করলে তোমরা সবাই সেরকমই বিনষ্ট হবে। 4 অথবা, সিলোয়ামের মিনার চাপা পড়ে যে আঠারো জনের মৃত্যু হয়েছিল, তোমরা কি মনে করো, অন্যান্য জেরুশালেমবাসীদের চেয়ে তারা বেশি অপরাধী ছিল? 5 আমি তোমাদের বলছি, না! কিন্তু মন পরিবর্তন না করলে তোমরা সেরকমই বিনষ্ট হবে।” 6 তারপর তিনি এই রূপকটি বললেন: “এক ব্যক্তি তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেতে একটি ডুমুর গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি ফলের আশায় গাছটির কাছে গেলেন কিন্তু একটি ফলও খুঁজে পেলেন না। 7 তাই দ্রাক্ষাক্ষেতের রক্ষককে তিনি বললেন, ‘গত তিন বছর ধরে আমি এই গাছে ফলের আশায় আসছি, কিন্তু কোনো ফলই পাইনি। এটাকে কেটে ফেলো। কেন শুধু শুধু এ জমি জুড়ে থাকবে?’ 8 “লোকটি উত্তর দিল, ‘মহাশয়, আর শুধু এক বছর এটাকে থাকতে দিন। আমি এর চারপাশে গর্ত খুঁড়ে সার দেব। 9 এতে পরের বছর যদি ফল ধরে, ভালো! না হলে, এটাকে কেটে ফেলবেন।’” 10 বিশ্রামদিনে যীশু কোনও এক সমাজভবনে শিক্ষা দিচ্ছিলেন। 11 সেখানে এক নারী মন্দ-আত্মার প্রভাবে আঠারো বছর ধরে পঙ্গু হয়েছিল। সে কুঁজো হয়ে পড়েছিল, কিছুতেই সোজা হতে পারত না। 12 যীশু তাকে দেখে সামনে ডেকে বললেন, “নারী, তুমি তোমার দুর্বলতা থেকে মুক্ত হলে।” 13 তারপর তিনি তাকে স্পর্শ করলে সে সঙ্গে সঙ্গে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। 14 বিশ্রামদিনে যীশু সুস্থ করেছেন দেখে সমাজভবনের অধ্যক্ষ ঘৃণামিশ্রিত ক্রোধে অন্যান্য লোকদের লক্ষ্য করে বলল, “কাজ করার জন্য অন্য ছয় দিন আছে। তাই, ওই দিনগুলিতে তোমরা সুস্থ হতে এসো, বিশ্রামদিনে নয়।” 15 প্রভু তাকে উত্তর দিলেন, “ওহে ভণ্ডের দল! তোমরা প্রত্যেক বিশ্রামদিনে বলদ অথবা গর্দভকে গোয়ালঘর থেকে বাঁধন খুলে জল খাওয়ানোর জন্য কি বাইরে নিয়ে যাও না? 16 তাহলে, অব্রাহামের কন্যা এই নারী, শয়তান যাকে দীর্ঘ আঠারো বছর বেঁধে রেখেছিল, বিশ্রামদিনে তাকে বাঁধন থেকে মুক্ত করা কি উচিত নয়?” 17 একথা শুনে তাঁর সমস্ত বিরোধী লজ্জিত হল। কিন্তু তাঁর বিস্ময়কর কাজগুলি দেখে সাধারণ লোকেরা আনন্দিত হল। 18 এরপর যীশু প্রশ্ন করলেন, “ঈশ্বরের রাজ্য কীসের মতো? কার সঙ্গে আমি এর তুলনা দেব? 19 এ হল এক সর্ষে বীজের মতো যা এক ব্যক্তি সেটাকে তার বাগানে রোপণ করল। তারপর সেটি বেড়ে উঠে গাছে পরিণত হল, আর আকাশের পাখিরা এসে তার শাখায় আশ্রয় নিল।” 20 তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “ঈশ্বরের রাজ্যকে আমি কীসের সঙ্গে তুলনা করব? 21 এ এমন খামিরের মতো যা একজন স্ত্রীলোক তিন পাল্লা ময়দার সঙ্গে মেশালো, ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল।” 22 তারপর যীশু নগরে ও গ্রামে শিক্ষা দিতে দিতে জেরুশালেমের দিকে চললেন। 23 তখন এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “প্রভু, শুধু কি অল্প সংখ্যক লোকই পরিত্রাণ পাবে?” 24 তিনি তাকে বললেন, “সংকীর্ণ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করো, কারণ আমি তোমাদের বলছি, বহু মানুষই প্রবেশ করার চেষ্টা করবে, কিন্তু সফল হবে না। 25 বাড়ির কর্তা একবার উঠে দ্বার বন্ধ করে দিলে তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়িয়ে মিনতি করতে থাকবে, ‘মহাশয়, আমাদের জন্য দ্বার খুলে দিন।’ কিন্তু তিনি উত্তর দেবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না।’ 26 “তখন তোমরা বলবে, ‘আমরা আপনার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি, আমাদের পথে পথে আপনি শিক্ষা দিয়েছেন।’ 27 “কিন্তু তিনি উত্তর দেবেন, ‘তোমরা কে বা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না। হে অন্যায়কারীরা, আমার কাছ থেকে তোমরা দূর হও!’ 28 “সেখানে হবে রোদন ও দন্তঘর্ষণ; তখন তোমরা দেখবে, ঈশ্বরের রাজ্যে রয়েছেন অব্রাহাম, ইস্‌হাক, যাকোব ও সব ভাববাদী, কিন্তু তোমরা নিজেরা বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়েছ। 29 আর পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ থেকে লোকেরা এসে ঈশ্বরের রাজ্যের ভোজসভায় আসন গ্রহণ করবে। 30 বাস্তবিক, যারা আছে, তারা কেউ কেউ প্রথমে স্থান পাবে এবং যারা প্রথমে আছে, তাদের কারোর কারোর স্থান সকলের শেষে হবে।” 31 সেই সময় কয়েকজন ফরিশী যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, “এই স্থান ত্যাগ করে অন্য কোথাও চলে যান। হেরোদ আপনাকে হত্যা করতে চাইছেন।” 32 তিনি উত্তর দিলেন, “সেই শিয়ালকে গিয়ে বলো, ‘আজ ও আগামীকাল, আমি ভূতদের তাড়াব, অসুস্থ মানুষদের সুস্থ করব এবং তৃতীয় দিনে আমি আমার লক্ষ্যে উপনীত হব।’ 33 যেভাবেই হোক, আজ, কাল ও তার পরের দিন আমাকে এগিয়ে চলতেই হবে—কারণ নিঃসন্দেহে, কোনো ভাববাদীই জেরুশালেমের বাইরে মৃত্যুবরণ করবেন না। 34 “হায়! জেরুশালেম, জেরুশালেম, তুমি ভাববাদীদের হত্যা করো ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের পাথরের আঘাত করে থাকো। কতবার আমি তোমার সন্তানদের একত্র করতে চেয়েছি, যেমন মুরগি তার শাবকদের নিজের ডানার তলায় একত্র করে, কিন্তু তোমরা ইচ্ছুক হওনি! 35 দেখো, তোমাদের গৃহ তোমাদের জন্য পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রইল। আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন’ ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না।”

< লুক 13 >