< যোহন 2 >

1 তৃতীয় দিনে গালীলের কানা নগরে এক বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। যীশুর মা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। 2 যীশু এবং তাঁর শিষ্যেরাও সেই বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন। 3 দ্রাক্ষারস শেয হয়ে গেলে, যীশুর মা তাঁকে বললেন, “ওদের দ্রাক্ষারস আর নেই।” 4 যীশু বললেন, “নারী! কেন তুমি এর সঙ্গে আমাকে জড়াচ্ছ? এখনও আমার সময় উপস্থিত হয়নি।” 5 তাঁর মা পরিচারকদের বললেন, “উনি যা বলেন, তোমরা সেইমতো করো।” 6 কাছেই জল রাখার জন্য ছয়টি পাথরের জালা ছিল। ইহুদিদের শুচিকরণ রীতি অনুযায়ী সেগুলিতে জল রাখা হত। প্রতিটি জালায় কুড়ি থেকে তিরিশ গ্যালন জল ধরত। 7 যীশু দাসদের বললেন, “জালাগুলি জলে পূর্ণ করো।” তারা কানায় কানায় সেগুলি ভর্তি করল। 8 তখন তিনি তাদের বললেন, “এবার এখান থেকে কিছুটা তুলে ভোজের কর্তার কাছে নিয়ে যাও।” তারা তাই করল। 9 ভোজের কর্তা দ্রাক্ষারসে রূপান্তরিত জলের স্বাদ গ্রহণ করলেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারলেন না কোথা থেকে এই দ্রাক্ষারস এল। সেকথা দাসেরা জানত। তখন তিনি বরকে এক পাশে ডেকে বললেন, 10 “সবাই প্রথমে উৎকৃষ্ট দ্রাক্ষারসই পরিবেশন করে। অতিথিরা যথেষ্ট পান করার পর কমদামি দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়। কিন্তু তুমি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো জিনিসই বাঁচিয়ে রেখেছ!” 11 এ ছিল গালীলের কানা নগরে করা যীশুর প্রথম চিহ্নকাজ। এইভাবে তিনি তাঁর মহিমা প্রকাশ করলেন এবং তাঁর শিষ্যেরা তাঁর উপর বিশ্বাস করলেন। 12 এরপর তিনি তাঁর মা, ভাইদের ও শিষ্যদের নিয়ে কফরনাহূমে গেলেন। তাঁরা সেখানে কিছুদিন থাকলেন। 13 ইহুদিদের নিস্তারপর্ব প্রায় এসে গেলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন। 14 তিনি দেখলেন মন্দির-প্রাঙ্গণে লোকেরা গবাদি পশু, মেষ ও পায়রা বিক্রি করছে আর অন্যেরা টেবিল সাজিয়ে মুদ্রা বিনিময় করছে। 15 তিনি দড়ি দিয়ে একটি চাবুক তৈরি করে গবাদি পশু ও মেষপালসহ সবাইকে মন্দির চত্বর থেকে তাড়িয়ে দিলেন। তিনি মুদ্রা-বিনিময়কারীদের মুদ্রা ছড়িয়ে দিয়ে তাদের টেবিল উল্টে দিলেন। 16 যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের তিনি বললেন, “এখান থেকে এসব বের করে নিয়ে যাও! আমার পিতার গৃহকে ব্যবসার গৃহে পরিণত কোরো না!” 17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল, শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার গৃহের জন্য আবেগ আমাকে গ্রাস করবে।” 18 ইহুদিরা তখন তাঁর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “এই সমস্ত কাজ করার অধিকার যে তোমার আছে, তার প্রমাণস্বরূপ তুমি আমাদের কোন চিহ্ন দেখাতে পারো?” 19 প্রত্যুত্তরে তিনি তাদের বললেন, “তোমরা এই মন্দির ধ্বংস করে ফেলো, আমি তিনদিনে আবার এটি গড়ে তুলব।” 20 ইহুদিরা বলল, “এই মন্দির নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছে, আর তুমি কি না সেটি তিনদিনে গড়ে তুলবে?” 21 কিন্তু যীশু মন্দির বলতে নিজের দেহের কথা বলেছিলেন। 22 তিনি মৃতলোক থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার পর তাঁর শিষ্যদের মনে পড়েছিল, তিনি কী বলেছিলেন। তখন তাঁরা শাস্ত্র ও যীশুর কথিত বাক্যে বিশ্বাস করলেন। 23 নিস্তারপর্বের উৎসবের সময় জেরুশালেমে থাকাকালীন তিনি যে সমস্ত চিহ্নকাজ করছিলেন, তা দেখে তারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল। 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের বিশ্বাস করতেন না, কারণ তিনি সব মানুষকেই জানতেন। 25 মানুষের সম্পর্কে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন তাঁর ছিল না, কারণ মানুষের অন্তরে কী আছে তা তিনি জানতেন।

< যোহন 2 >