< শলোমনের পরমগীত 2 >

1 আমি শারোণের উপত্যকার একটি লিলি ফুল।
আমি শারোণের গোলাপ, উপত্যকায় ফুটে থাকা লিলি।
2 কাঁটাবনের মধ্যে যেমন লিলি ফুল, আমার দেশের মেয়েদের মধ্যে তেমন তুমি, আমার প্রিয়।
তরুণীদের মধ্যে আমার প্রেমিকা ঠিক যেন কাঁটাগাছের মধ্যে ফুটে থাকা লিলি ফুল।
3 বনের গাছপালার মধ্যে যেমন আপেল গাছ, তেমনি যুবকদের মধ্যে আমার প্রিয়। আমি তাঁর ছায়াতে বসে আনন্দ পাই, আমার মুখে তাঁর ফল মিষ্টি লাগে।
তরুণদের মধ্যে আমার প্রেমিক ঠিক যেন অরণ্যের বৃক্ষরাজির মধ্যে একটি আপেল গাছ। তাঁর ছায়ায় বসলে আমার আনন্দ হয়, তাঁর ফলের স্বাদ আমার মুখে মিষ্টি লাগে।
4 তিনি আমাকে খাবার ঘরে নিয়ে গেলেন, আর আমার উপরে প্রেমই তাঁর পতাকা হল।
তিনি আমাকে ভোজসভায় নিয়ে গেলেন, তখন যেন তাঁর পতাকাই হয়ে উঠল প্রেম।
5 কিশমিশের পিঠে খাইয়ে আমাকে শক্তিশালী কর আর আপেল দিয়ে আমাকে সতেজ করে তোলো, কারণ আমি প্রেমে দুর্বল হয়ে পরেছি।
তোমরা আমাকে কিশমিশ দিয়ে সবল করো, আপেল দিয়ে চনমনে করে তোল, কেননা প্রেম আমাকে মূর্চ্ছিত করেছে।
6 তাঁর বাঁ হাত আমার মাথার নীচে আছে, তাঁর ডান হাত আমাকে জড়িয়ে ধরে।
তাঁর বাম বাহু আমার মস্তকের নিচে, আর তাঁর ডান বাহু আমাকে আলিঙ্গন করে।
7 হে যিরূশালেমের মেয়েরা, আমি কৃষ্ণসার হরিণ ও মাঠের হরিণদের নামে দিব্যি দিয়ে বলছি, তোমরা ভালবাসাকে জাগিয়ো না বা উত্তেজিত কোরো না যতক্ষণ না তার বাসনা হয়।
জেরুশালেমের কন্যারা, মাঠের গজলা হরিণীদের এবং হরিণশাবকদের দিব্যি দিয়ে আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না বাসনা জেগে উঠছে, ততক্ষণ প্রেমকে জাগিও না বা তাকে উত্তেজিত কোরো না।
8 ঐ শোন, আমার প্রিয়ের শব্দ, ঐ দেখ, তিনি আসছেন; তিনি পাহাড় পর্বতের উপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে আসছেন।
ওই শোনো! এ যে আমার প্রেমিক! ওই দেখো, পর্বতমালা পেরিয়ে, লম্ফঝম্প সহকারে পাহাড় টপকে তিনি আসছেন।
9 আমার প্রিয় যেন কৃষ্ণসার হরিণ অথবা হরিণের বাচ্চা। দেখ, তিনি আমাদের দেওয়ালের পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন, তিনি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখছেন, জালির মধ্যে দিয়ে উঁকি মারছেন।
আমার প্রেমিক গজলা হরিণের বা হরিণশাবকের মতো। ওই দেখো! উনি দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের প্রাচীরের পশ্চাতে, গবাক্ষ দিয়ে অপলকে দেখছেন, জাফরির মধ্যে দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
10 ১০ আমার প্রিয়তম আমাকে বলল, “আমার প্রিয়, ওঠো; আমার সুন্দরী, আমার সঙ্গে এস।
আমার প্রেমিক মুখ খুললেন এবং আমাকে বললেন, “প্রিয়তমা আমার, ওগো আমার সুন্দরীশ্রেষ্ঠা, উঠে পড়ো এবং আমার সঙ্গে চলো।
11 ১১ দেখ, শীতকাল চলে গেছে; বর্ষা শেষ হয়েছে এবং চলে গেছে।
চেয়ে দেখো! শীতকাল চলে গেছে; বারিধারাও সমাপ্ত হয়েছে এবং বিদায় নিয়েছে।
12 ১২ মাঠে মাঠে ফুল ফুটেছে, গানের দিন এসেছে; আমাদের দেশে ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে।
মাঠে মাঠে ফুল ফুটেছে; গান গাওয়ার ঋতু এসেছে, আমাদের দেশে এখন ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে।
13 ১৩ ডুমুর গাছে ফল ধরতে শুরু হয়েছে; আঙ্গুর লতায় ফুল ধরে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। হে আমার প্রিয়, ওঠো, এস; আমার সুন্দরী, এস আমার সঙ্গে।”
ডুমুর গাছের ফল পুষ্ট হয়েছে; মুকুলিত দ্রাক্ষালতা বাতাসে তার সৌরভ ছড়াচ্ছে। উঠে এসো, চলো, প্রিয়া আমার। আমার সুন্দরীশ্রেষ্ঠা, চলে এসো আমার সঙ্গে।”
14 ১৪ ঘুঘু আমার, তুমি পাহাড়ের ফাটলে, পাহাড়ের গায়ের লুকানো জায়গায় রয়েছ; আমাকে তোমার মুখ দেখাও, তোমার গলার স্বর শুনতে দাও, কারণ তোমার স্বর মিষ্টি আর মুখের চেহারা সুন্দর।
আমার কপোতের অবস্থান যেন শৈলের ফাটলে, যেন পাহাড়ি এলাকার গুপ্ত স্থানে, আমাকে দেখতে দাও তোমার মুখশ্রী, আমাকে শুনতে দাও তোমার কণ্ঠস্বর; কেননা তোমার মুখশ্রী লাবণ্যময়, তোমার কণ্ঠস্বর মধুর।
15 ১৫ তোমরা সেই শিয়ালগুলোকে আমাদের জন্য, সেই ছোট ছোট শিয়ালগুলোকে ধর, কারণ তারা আমাদের আঙ্গুর ক্ষেতগুলো নষ্ট করে; আমাদের আঙ্গুর ক্ষেতে ফুলের কুঁড়ি ধরেছে।
তোমরা আমাদের জন্য সেইসব শিয়ালদের ধরো, সেইসব ক্ষুদ্র শিয়ালদের, যারা দ্রাক্ষাক্ষেত্রকে, আমাদের মুকুলিত দ্রাক্ষাক্ষেত্রকে তছনছ করে দেয়।
16 ১৬ আমার প্রিয় আমারই আর আমি তাঁরই; তিনি লিলি ফুলের বনে চরেন।
আমার প্রেমিক শুধু আমার এবং আমিও শুধু তাঁর; লিলিফুলের মাঝে তাঁর পদচারণ।
17 ১৭ হে আমার প্রিয়, তুমি ফিরে এসো; যতক্ষণ না ভোর হয় আর অন্ধকার চলে যায় ততক্ষণ তুমি থাক। অসমতল পাহাড়ের উপর তুমি কৃষ্ণসার হরিণ কিংবা বাচ্চা হরিণের মত হও।
দিন শেষ হওয়ার আগে এবং ছায়া মুছে যাওয়ার আগে, ওগো আমার প্রিয়তম, ফিরে এসো এবং রুক্ষ পর্বতের গজলা হরিণ বা হরিণশাবকের মতো হয়ে ওঠো।

< শলোমনের পরমগীত 2 >