প্রকাশিত বাক্য 9
1 ১ তারপর পঞ্চম স্বর্গদূত তাঁর তূরী বাজালেন, আর আমি একটা তারা দেখতে পেলাম। তারাটা আকাশ থেকে পৃথিবীতে পড়েছিল। তারাটাকে অতল গর্তের চাবি দেওয়া হয়েছিল। (Abyssos g12)
পঞ্চম স্বর্গদূত তাঁর তূরী বাজালেন, আর আমি দেখলাম আকাশ থেকে একটি তারা পৃথিবীতে খসে পড়ল। সেই তারাটিকে অতল-গহ্বরের সুড়ঙ্গপথের চাবি দেওয়া হল। (Abyssos g12)
2 ২ তারাটা সেই অতল গর্তটা খুলল, আর বিরাট চুলা থেকে যেমন ধোঁয়া বের হয় ঠিক সেইভাবে সেই গর্তটা থেকে ধোঁয়া বের হতে লাগল। সেই গর্তের ধোঁয়ায় সূর্য্য ও আকাশ অন্ধকার হয়ে গেল। (Abyssos g12)
যখন সে অতল-গহ্বরের সুড়ঙ্গপথটি খুলল, তার মধ্যে থেকে বিশাল চুল্লির ধোঁয়ার মতো একটি ধোঁয়া উঠতে লাগল। অতল-গহ্বরের সেই ধোঁয়ায় সূর্য ও চাঁদ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেল। (Abyssos g12)
3 ৩ পরে সেই ধোঁয়ার ভেতর থেকে অনেক পঙ্গপাল পৃথিবীতে বের হয়ে এল আর পঙ্গপাল গুলোকে পৃথিবীর কাঁকড়াবিছার মত ক্ষমতা দেওয়া হল।
আর সেই ধোঁয়ার মধ্য থেকে পঙ্গপাল বের হয়ে পৃথিবীতে নেমে এল। তাদেরকে পৃথিবীর কাঁকড়াবিছেদের মতোই ক্ষমতা দেওয়া হল।
4 ৪ তাদের বলা হল তারা যেন পৃথিবীর কোনো ঘাস অথবা সবুজ কোন কিছু অথবা কোনো গাছের ক্ষতি না করে, যে লোকদের কপালে ঈশ্বরের সীলমোহর নেই কেবল সেই মানুষদের ক্ষতি করবে।
তাদের বলা হল, তারা যেন পৃথিবীর কোনো ঘাস বা গাছপালা বা গাছের ক্ষতি না করে, কিন্তু সেইসব মানুষের ক্ষতি করে, যাদের কপালে ঈশ্বরের সিলমোহর নেই।
5 ৫ ঐ সব লোকদের মেরে ফেলবার কোনো অনুমতি তাদের দেওয়া হল না, কিন্তু পাঁচ মাস ধরে কষ্ট দেবার অনুমতি তাদেরকে দেওয়া হল। কাঁকড়া বিছে যখন কোন মানুষকে হুল ফুটিয়ে দেয় তখন যেমন কষ্ট হয় তাদের দেওয়া কষ্টও সেই রকম।
তাদের হত্যা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি, কিন্তু পাঁচ মাস ধরে অত্যাচার করার ক্ষমতা দেওয়া হল। আর তারা সেরকম যন্ত্রণাভোগ করল, যেমন কাঁকড়াবিছে কোনো মানুষকে হুল ফোটালে যন্ত্রণা হয়।
6 ৬ সেই দিন লোকে মৃত্যুর খোঁজ করবে কিন্তু কোন মতেই তা পাবে না। তারা মরতে চাইবে কিন্তু মৃত্যু তাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।
ওই দিনগুলিতে মানুষ মৃত্যুর সন্ধান করবে, কিন্তু তার সন্ধান পাবে না। তারা আকুল হয়ে মৃত্যুবরণ করতে চাইবে, কিন্তু মৃত্যু তাদের নাগাল এড়িয়ে যাবে।
7 ৭ ঐ পঙ্গপালগুলো দেখতে যুদ্ধের জন্য তৈরী করা ঘোড়ার মত। তাদের মাথায় সোনার মুকুটের মত একরকম জিনিস ছিল এবং তাদের মুখের চেহারা ছিল মানুষের মত।
সেই পঙ্গপালগুলি দেখতে ছিল রণসাজে সজ্জিত ঘোড়ার মতো। তাদের মাথায় ছিল সোনার মুকুটের মতো দেখতে কিছু এক জিনিস এবং তাদের মুখমণ্ডল দেখতে ছিল মানুষের মুখমণ্ডলের মতো।
তাদের চুল ছিল নারীর চুলের মতো এবং দাঁত ছিল সিংহের দাঁতের মতো।
9 ৯ তাদের বুকে লোহার বুক রক্ষার পোষাকের মত পোষাক ছিল এবং অনেকগুলো ঘোড়া একসঙ্গে যুদ্ধের রথ টেনে নিয়ে ছুটে গেলে যেমন আওয়াজ হয় তাদের ডানার আওয়াজ ঠিক সেই রকমই ছিল।
তাদের বুকের পাটা ছিল লোহার বুকের পাটার মতো এবং তাদের ডানার আওয়াজ ছিল যুদ্ধে চলেছে এমন অনেক ঘোড়া ও রথের গুরুগম্ভীর শব্দের মতো।
10 ১০ তাদের লেজ ও হুল কাঁকড়াবিছার লেজ ও হুলের মত ছিল; তাদের লেজে এমন ক্ষমতা ছিল যা দিয়ে পাঁচ মাস ধরে তারা লোকেদের ক্ষতি করতে পারত।
কাঁকড়াবিছের মতো ছিল তাদের লেজ ও হুল। পাঁচ মাস ধরে মানুষকে যন্ত্রণা দেওয়ার ক্ষমতা তাদের ওই লেজে ছিল,
11 ১১ অতল গর্তের দূতই ছিল ঐ পঙ্গপালদের রাজা। ইব্রীয় ভাষায় সেই দূতের নাম ছিল “আবদ্দোন,” [বিনাশক] ও গ্রীক ভাষায় তার নাম ছিল “আপল্লুয়োন” [বিনাশীত]। (Abyssos g12)
অতল-গহ্বরের এক দূত ছিল তাদের রাজা। হিব্রু ভাষায় তার নাম আবদ্দোন ও গ্রিক ভাষায়, আপল্লিয়োন। (Abyssos g12)
প্রথম দুর্দশার অন্ত হল; আরও বাকি দুই দুর্দশার সময় ছিল সন্নিকট।
13 ১৩ ষষ্ঠ স্বর্গদূত তূরী বাজালে এবং আমি স্বর্গের ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে যে সোনার বেদি যে চার কোন আছে সেখান থেকে শিঙায় এক জনের গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম।
ষষ্ঠ দূত তাঁর তূরী বাজালেন, আর আমি ঈশ্বরের সামনে স্থিত সোনার বেদির শৃঙ্গগুলি থেকে এক বাণী শুনতে পেলাম।
14 ১৪ যাঁর কাছে তূরী ছিল সেই ষষ্ঠ স্বর্গদূতকে বললেন, “যে চারজন দূত মহা নদী ইউফ্রেটীসের কাছে বাঁধা আছে, তাদের ছেড়ে দাও।”
তা তূরীধারী সেই ষষ্ঠ স্বর্গদূতকে বলছিল, “ইউফ্রেটিস মহানদীর কাছে যে চারজন দূত রুদ্ধ আছে, তাদের মুক্ত করে দাও।”
15 ১৫ সেই চারজন দূতকে ছেড়ে দেওয়া হল। ঐ বছরের, ঐ মাসের, ঐ দিনের র এবং ঐ ঘন্টার জন্য সেই দূতদের তৈরী রাখা হয়েছিল, যেন তারা তিন ভাগের একভাগ মানুষকে মেরে ফেলে।
তখন যে চারজন দূতকে সেই ক্ষণ ও দিন ও মাস ও বছরের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল, তাদের মুক্ত করা হল, যেন তারা মানবজাতির এক-তৃতীয়াংশকে হত্যা করতে পারে।
আর অশ্বারোহী ওই সৈন্যের সংখ্যা ছিল কুড়ি কোটি। আমি তাদের সংখ্যা শুনলাম।
17 ১৭ দর্শনে আমি যে ঘোড়াগুলো দেখলাম এবং যারা তাদের ওপর চড়েছিল: তাদের চেহারা এই রকম ছিল তাদের বুক রক্ষার পোষাক ছিল আগুনের মত লাল, ঘননীল ও গন্ধকের মত হলুদ রঙের। ঘোড়াগুলোর মাথা ছিল সিংহের মাথার মত এবং তাদের মুখ থেকে আগুন, ধোঁয়া ও গন্ধক বের হচ্ছিল।
আমি আমার দর্শনে যেসব ঘোড়া ও তাদের আরোহীদের দেখতে পেলাম, তারা দেখতে ছিল এরকম: তাদের বুকের পাটা ছিল আগুনে-লাল, ঘন নীল ও গন্ধকের মতো হলুদ রংয়ের। ঘোড়াগুলির মাথা ছিল সিংহের মাথার মতো এবং তাদের মুখ দিয়ে বের হচ্ছিল আগুন, ধোঁয়া ও গন্ধক।
18 ১৮ তাদের মুখ থেকে যে আগুন, ধোঁয়া ও গন্ধক বের হচ্ছিল সেই তিনটি জিনিসের আঘাতে তিন ভাগের একভাগ মানুষকে মেরে ফেলা হল।
তাদের মুখ থেকে বের হওয়া সেই তিন মহামারি, আগুন, ধোঁয়া ও গন্ধকের দ্বারা মানবজাতির এক-তৃতীয়াংশ নিহত হল।
19 ১৯ সেই ঘোড়াগুলোর মুখ ও লেজের মধ্যেই তাদের ক্ষমতা ছিল কারণ তাদের লেজগুলো ছিল সাপের মত এবং সেই লেজগুলোর মাথা দিয়ে তারা মানুষের ক্ষতি করছিল।
ঘোড়াগুলির ক্ষমতা ছিল তাদের মুখে ও তাদের লেজে; কারণ তাদের লেজে সাপের মতো মাথা ছিল, যার দ্বারা তারা মানুষের ক্ষতি করতে পারত।
20 ২০ এই সব আঘাতের পরেও যে সব মানুষ বেঁচে রইল, তারা নিজের হাতে তৈরী মুর্ত্তিগুলো থেকে মন ফেরালো না, ভূতদের এবং যারা দেখতে, শুনতে অথবা হাঁটতে পারে না, সেই সব সোনা, রূপা, পিতল, পাথর ও কাঠ দিয়ে তৈরী মুর্ত্তিগুলোকে পূজা করতেই থাকল।
মানবজাতির অবশিষ্ট লোক, যারা এই সমস্ত মহামারির দ্বারা নিহত হল না, তারা তখনও তাদের হাত দিয়ে করা কাজ থেকে মন পরিবর্তন করল না; তারা ভূতদের পূজা এবং সোনা, রুপো, পিতল, পাথর ও কাঠ দ্বারা নির্মিত বিভিন্ন প্রতিমা—যে প্রতিমারা দেখতে বা শুনতে বা চলতে পারে না, তাদের পূজা করা থেকে বিরত থাকল না।
এছাড়াও তারা তাদের নরহত্যা, তাদের তন্ত্রমন্ত্র-মায়াবিদ্যা, তাদের অবৈধ যৌনাচার, কিংবা তাদের চুরি করা থেকেও মন পরিবর্তন করল না।
