< প্রকাশিত বাক্য 16 >

1 আমি উপাসনা ঘর থেকে এক চীৎকার শুনতে পেলাম, একজন জোরে সেই সাতটি স্বর্গদূতকে বলছেন, তোমরা যাও এবং ঈশ্বরের ক্রোধের ঐ সাতটি বাটি পৃথিবীতে ঢেলে দাও।
এরপর আমি মন্দিরের মধ্য থেকে এক উচ্চ রব শুনতে পেলাম, যা ওই সাতজন স্বর্গদূতকে বলছিল, “তোমরা যাও, গিয়ে ঈশ্বরের ক্রোধে পূর্ণ ওই সাতটি বাটি পৃথিবীতে ঢেলে দাও।”
2 তখন প্রথম দূত গিয়ে পৃথিবীর উপরে নিজের বাটি ঢেলে দিলেন, ফলে সেই জন্তুটার চিহ্ন যাদের গায়ে ছিল এবং তার মূর্তির পূজো করত মানুষদের গায়ে খুব খারাপ ও বিষাক্ত ঘা দেখা দিল।
প্রথম স্বর্গদূত গিয়ে তাঁর বাটি পৃথিবীর উপরে ঢেলে দিলেন। এতে যারা সেই পশুর ছাপ ধারণ করেছিল ও তার মূর্তির পূজা করেছিল, তাদের গায়ে বীভৎস ও যন্ত্রণাদায়ক ক্ষত উৎপন্ন হল।
3 পরে দ্বিতীয় দূত সমুদ্রের ওপরে নিজের বাটি ঢেলে দিলেন, তাতে সেটি মরা লোকের রক্তের মত হলো এবং সমুদ্রের সব জীবিত প্রাণী মরে গেল।
দ্বিতীয় স্বর্গদূত সমুদ্রের উপরে তাঁর বাটি ঢেলে দিলেন। এতে তা মৃত মানুষের রক্তের মতো হল ও সমুদ্রের সমস্ত সজীব প্রাণী মারা পড়ল।
4 তৃতীয় দূত গিয়ে নদনদী ও জলের ফোয়ারার ওপরে নিজের বাটি ঢাললেন, ফলে সেগুলো রক্তের নদী ও ফোয়ারা হয়ে গেল।
তৃতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটি সব নদনদী ও জলের উৎসের উপরে ঢেলে দিলেন, ও সেগুলি রক্তে পরিণত হল।
5 জলের উপর যে স্বর্গদূতের ক্ষমতা ছিল তাকে আমি বলতে শুনলাম, হে পবিত্র, তুমি আছ ও তুমি ছিলে, তুমি ন্যায়বান, কারণ তুমি এই রকম বিচার করছ;
তখন আমি শুনলাম, জলরাশির উপরে ভারপ্রাপ্ত স্বর্গদূত বলছেন: “যিনি আছেন ও যিনি ছিলেন, সেই পবিত্রজন, এই সমস্ত বিচারে তুমিই ধর্মময়, যেহেতু তুমি এরকম বিচার করেছ;
6 কারণ তারা ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ও ভাববাদীদের খুন করেছে; তুমি তাদেরকে পান করার জন্য রক্ত দিয়েছ; এটাই তাদের জন্য উপযুক্ত।
কারণ তারা তোমার পবিত্রগণের ও ভাববাদীদের রক্তপাত করেছিল, আর তুমি তাদের রক্ত পান করতে দিয়েছ, কারণ তারা তারই উপযুক্ত।”
7 পরে আমি বেদি থেকে উত্তর দিতে শুনলাম, হ্যাঁ, প্রভু সর্বশক্তিমান, সবার শাসনকর্ত্তা, তোমার বিচারগুলি সত্য ও ন্যায়বান।
আর আমি সেই যজ্ঞবেদির প্রত্যুত্তর শুনতে পেলাম: “হ্যাঁ, প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, তোমার সব বিচারাদেশ যথার্থ ও ন্যায়সংগত।”
8 চতুর্থ স্বর্গদূত তাঁর নিজের বাটি সুর্য্যের ওপরে ঢেলে দিলেন এবং আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারার অনুমতি তাকে দেওয়া হল।
চতুর্থ স্বর্গদূত তাঁর বাটি সূর্যের উপরে ঢেলে দিলেন। আর সূর্যকে ক্ষমতা দেওয়া হল, যেন সে আগুনের দ্বারা সব মানুষকে ঝলসে দেয়।
9 ভীষণ তাপে মানুষের গা পুড়ে গেল এবং এই সব আঘাতের উপরে যাঁর ক্ষমতা আছে, সেই ঈশ্বরের নামের নিন্দা করতে লাগলো; তাঁকে গৌরব করার জন্য তারা মন ফেরাল না।
তখন প্রখর উত্তাপে তারা তাপদগ্ধ হয়ে, এই সমস্ত আঘাতের উপরে যাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল সেই ঈশ্বরের নামকে অভিশাপ দিতে লাগল। কিন্তু তারা মন পরিবর্তন করতে ও তাঁকে গৌরব দিতে চাইল না।
10 ১০ পরে পঞ্চম স্বর্গদূত সেই জন্তুর সিংহাসনের উপরে নিজের বাটি ঢেলে দিলেন; তাতে শয়তানের রাজ্য অন্ধকারে ঢেকে গেল এবং মানুষেরা যন্ত্রণায় তাদের নিজ নিজ জিভ কামড়াতে লাগলো।
পঞ্চম স্বর্গদূত সেই পশুর সিংহাসনের উপরে তাঁর বাটি ঢেলে দিলেন। ফলে তার রাজ্য অন্ধকারে ছেয়ে গেল। লোকেরা যন্ত্রণায় তাদের জিভ কামড়াতে লাগল
11 ১১ তাদের যন্ত্রণা ও ঘায়ের জন্য তারা স্বর্গের ঈশ্বরের নিন্দা করতে লাগলো, তবুও তারা নিজেদের মন্দ কাজ থেকে মন ফেরালো না।
এবং তাদের যন্ত্রণা ও তাদের ক্ষতের জন্য স্বর্গের ঈশ্বরকে অভিশাপ দিল। কিন্তু তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করল না।
12 ১২ ষষ্ঠ স্বর্গদূত ইউফ্রেটীস মহানদীর উপর নিজের বাটি উপুড় করে ঢেলে দিলেন এবং এই নদীর জল শুকিয়ে গেল, যেন পূর্ব দিক থেকে রাজাদের আসার জন্য রাস্তা তৈরী করা যেতে পারে।
ষষ্ঠ স্বর্গদূত মহানদী ইউফ্রেটিসের উপরে তাঁর বাটি ঢেলে দিলেন। এতে সেই নদীর জল শুকিয়ে গিয়ে পূর্বদিক থেকে রাজাদের আগমনের পথ সুগম করল।
13 ১৩ পরে আমি দেখতে পেলাম, সেই বিরাটাকার সাপের মুখ থেকে, জন্তুটির মুখ থেকে এবং ভণ্ড ভাববাদীর মুখ থেকে ব্যাঙের মত দেখতে তিনটে মন্দ আত্মা বের হয়ে আসছে।
তারপর আমি তিনটি মন্দ-আত্মা দেখলাম, যেগুলি দেখতে ছিল ব্যাঙের মতো। সেগুলি সেই নাগ-দানবের মুখ থেকে, সেই পশুর মুখ থেকে ও সেই ভণ্ড ভাববাদীর মুখ থেকে বেরিয়ে এল।
14 ১৪ কারণ তারা হলো ভূতেদের আত্মা নানা চিহ্ন ও আশ্চর্য্য কাজ করে; তারা পৃথিবীর সব রাজাদের কাছে গিয়ে সর্বশক্তিমান্ ঈশ্বরের সেই মহান দিনের যুদ্ধের জন্য মন্দ আত্মাদের জড়ো করে।
তারা ভূতদের আত্মা, অলৌকিক সব চিহ্নকাজ করে, আর তারা সমস্ত জগতের রাজাদের কাছে যায়, যেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সেই মহাদিনের জন্য সেইসব রাজাদের যুদ্ধে একত্র করতে পারে।
15 ১৫ দেখ, আমি চোরের মত আসবো; ধন্য সেই ব্যক্তি যে জেগে থাকে এবং নিজের কাপড় পরে থাকে যেন সে উলঙ্গ না হয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং লোকে তার লজ্জা না দেখে।
“দেখো, আমি চোরের মতো আসছি! ধন্য সেই মানুষ, যে জেগে থেকে তার পোশাক সঙ্গে রাখে, যেন সে উলঙ্গ না হয় ও তার লজ্জা প্রকাশ হয়ে না পড়ে।”
16 ১৬ তারা রাজাদের এক জায়গায় জড়ো করলো যে জায়গার নাম ইব্রীয় ভাষায় হরমাগিদোন বলে।
তারপর তারা সেই রাজাদের একটি স্থানে একত্র করল, হিব্রু ভাষায় যে স্থানটির নাম হরমাগিদোন।
17 ১৭ পরে সপ্তম স্বর্গদূত আকাশের বাতাসের ওপরে নিজ বাটি ঢেলে দিলেন, তখন উপাসনা ঘরের সিংহাসন থেকে জোরে এই কথা গুলি বলা হলো, “এটা করা হয়েছে।”
সপ্তম স্বর্গদূত আকাশের উপরে তাঁর বাটি ঢেলে দিলেন। তখন মন্দিরের ভিতরের সিংহাসন থেকে এক উচ্চধ্বনি শোনা গেল, যা বলছিল, “সমাপ্ত হল!”
18 ১৮ আর তখন বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো, বিকট শব্দ ও বাজ পড়তে লাগলো এবং এমন এক ভূমিকম্প হল যা পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির পর থেকে কখনও হয়নি, এটা খুব ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প ছিল।
তারপর সেখানে প্রকাশ পেল বিদ্যুতের ঝলকানি, গুরুগম্ভীর ধ্বনি, বজ্রপাত ও এক প্রচণ্ড ভূমিকম্প। পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টি হওয়া থেকে এমন ভূমিকম্প আর কখনও হয়নি, সেই ভূমিকম্প ছিল এমনই সাংঘাতিক।
19 ১৯ ফলে সেই মহান শহরটি তিন ভাগে ভাগ হয়ে গেল এবং নানা জাতির শহরগুলি ভেঙে পড়ল; তখন ঈশ্বর সেই মহান বাবিলনকে মনে করলেন এবং ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের মদ পূর্ণ পেয়ালা বাবিলকে পান করতে দিলেন।
এতে সেই মহানগরী তিন ভাগে বিভক্ত হল ও বিভিন্ন দেশের নগর ধূলিসাৎ হল। ঈশ্বর মহানগরী ব্যাবিলনকে স্মরণ করলেন এবং তাঁর ভয়ংকর ক্রোধে পূর্ণ সুরার পানপাত্র তাকে দিলেন।
20 ২০ প্রত্যেকটি দ্বীপ তখন অদৃশ্য হয়ে গেল এবং পর্বত গুলিকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না।
প্রত্যেকটি দ্বীপ পালিয়ে গেল ও পর্বতগণকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না।
21 ২১ আর আকাশ থেকে মানুষের ওপর বড় বড় শীল বৃষ্টির মত পড়ল, তার এক একটির ওজন প্রায় এক তালন্ত (প্রায় ছত্রিশ কেজি); এই শিলাবৃষ্টিতে আঘাত পেয়ে মানুষেরা ঈশ্বরের নিন্দা করল; কারণ সেই আঘাত খুব ভয়ানক ছিল।
আর মহাকাশ থেকে মানুষদের উপরে বড়ো বড়ো শিলাবৃষ্টি হল, তার এক একটির ওজন প্রায় পঞ্চাশ কিলোগ্রাম। তখন তারা শিলাবৃষ্টির জন্য ঈশ্বরকে অভিশাপ দিল, কারণ সেই আঘাত ছিল অত্যন্ত ভয়ংকর।

< প্রকাশিত বাক্য 16 >