< প্রকাশিত বাক্য 14 >

1 পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম আমার সামনে সেই মেষ শিশু সিয়োন পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তাঁর সঙ্গে এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার লোক ছিল, তাদের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর বাবার নাম লেখা আছে।
তারপর আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে সিয়োন পর্বতের উপরে দাঁড়িয়েছিলেন সেই মেষশাবক ও তাঁর সঙ্গে ছিল সেই 1,44,000 জন মানুষ, যাদের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লেখা ছিল।
2 পরে আমি স্বর্গ থেকে বয়ে যাওয়া অনেক জলের স্রোতের মত শব্দ এবং বাজ পড়া শব্দের মত আওয়াজ শুনতে পেলাম; যে শব্দ শুনলাম, তাতে মনে হলো যে বীণা বাদকরা নিজে নিজেদের বীণা বাজাচ্ছে;
আর আমি স্বর্গ থেকে প্রবহমান মহা জলস্রোতের মতো গর্জন ও বজ্রপাতের মতো শব্দ শুনতে পেলাম। যে শব্দ আমি শুনলাম, মনে হল যেন কোনো বীণাবাদকের দল তাদের বীণা বাজাচ্ছে।
3 আর তারা সিংহাসনের সামনে ও সেই চার প্রাণীর ও নেতাদের সামনে নতুন একটি গান করলো; পৃথিবী থেকে কিনে নেওয়া সেই এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার লোক ছাড়া আর কেউ সেই গান শিখতে পারল না।
আর তাঁরা সেই সিংহাসনের সামনে এবং চারজন সজীব প্রাণীর ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইলেন। পৃথিবী থেকে মুক্ত করা সেই 1,44,000 জন ব্যক্তি ছাড়া আর কেউই সেই গান শিখতে পারল না।
4 এরা স্ত্রীলোকদের সঙ্গে ব্যভিচার করে নিজেদের অশুচি করে নি, কারণ এরা নিজেরা ব্যভিচার থেকে সূচী রেখেছেন। যে কোন জায়গায় মেষ শিশু যান, সেই জায়গায় এরা তাঁর সঙ্গে যান। এরা ঈশ্বরের ও মেষশিশুর জন্য প্রথম ফল বলে মানুষের মধ্য থেকে কিনে নেওয়া হয়েছে।
এঁরা তাঁরাই, যাঁরা নারী-সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেননি, কারণ তাঁরা নিজেদের শুচিশুদ্ধ রেখেছিলেন। মেষশাবক যেখানেই যান, তাঁরা তাঁকে অনুসরণ করেন। তাঁদের মানুষদের মধ্য থেকে কিনে নেওয়া হয়েছিল এবং ঈশ্বর ও সেই মেষশাবকের উদ্দেশে প্রথম ফসলরূপে তাঁদের নিবেদন করা হয়েছিল।
5 আর তাদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায়নি; তাদের কোনো দোষ ছিল না।
তাঁদের মুখে কোনও মিথ্যা কথা পাওয়া যায়নি, তাঁরা ছিলেন নিষ্কলঙ্ক।
6 আমি আর এক দূতকে আকাশের অনেক উঁচুঁতে উড়তে দেখলাম, তাঁর কাছে পৃথিবীতে বাস করে সমস্ত জাতি, বংশ, ভাষা এবং প্রজাদের কাছে প্রচারের জন্য চিরকালের স্থায়ী সুসমাচার আছে; (aiōnios g166)
এরপর আমি অন্য এক স্বর্গদূতকে মধ্যাকাশে উড়ে যেতে দেখলাম। তাঁর কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার, যেন তিনি প্রত্যেক দেশ, গোষ্ঠী, ভাষাভাষী, জাতির, পৃথিবীর সমস্ত অধিবাসীর কাছে তা ঘোষণা করেন। (aiōnios g166)
7 তিনি চীৎকার করে বলছেন, ঈশ্বরকে ভয় কর এবং তাঁকে গৌরব কর। কারণ তাঁর বিচার করার দিন এসে গেছে; যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র এবং জলের উত্স এই সব সৃষ্টি করেছেন তাঁর পূজো কর।
তিনি উচ্চকণ্ঠে বললেন, “ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁকে সম্মান দাও, কারণ তাঁর বিচারের সময় এসে উপস্থিত হয়েছে। যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও জলের সব উৎস উৎপন্ন করেছেন, তাঁর উপাসনা করো।”
8 পরে তাঁর পেছনে দ্বিতীয় একজন স্বর্গদূত আসলেন, তিনি বললেন, সেই মহান ব্যাবিলন যে সব জাতিকে নিজের ব্যাভিচারের মদ খাইয়েছে, সেটা ধ্বংস হয়ে গেল।
দ্বিতীয় এক স্বর্গদূত তাঁকে অনুসরণ করে এসে বললেন, “পতন হল! বিশাল সেই ব্যাবিলনের পতন হল, যে তার ব্যভিচারের উন্মত্তকারী সুরা সমস্ত জাতিকে পান করিয়েছে।”
9 পরে তৃতীয় এক দূত আগের দূতদের পরেই আসলেন, তিনি চিৎকারে করে বললেন, যদি কেউ সেই জন্তু ও তার প্রতিমূর্ত্তির পূজো করে এবং নিজের কপালে কি হাতে চিহ্ন নিয়ে থাকে,
তৃতীয় এক স্বর্গদূত তাঁদের অনুসরণ করে এসে উচ্চকণ্ঠে বললেন: “যদি কেউ সেই পশুর ও তার মূর্তির পূজা করে এবং কপালে বা হাতে তার চিহ্ন গ্রহণ করে,
10 ১০ তবে তাকেও ঈশ্বরের সেই ক্রোধের মদ খেতে হবে, তাঁর রাগের পানপাত্রে জল না মিশিয়ে ক্রোধের মদ ঢেলে দেওয়া হয়েছে; যে এই মদ খাবে, পবিত্র দূতদের এবং মেষশিশুর সামনে আগুনও গন্ধকের দ্বারা সেই লোককে যন্ত্রণা দেওয়া হবে।
সেও ঈশ্বরের রোষের সুরা অবশ্যই পান করবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পানপাত্রে পূর্ণ শক্তির সঙ্গে ঢেলে দেওয়া হয়েছে। সে পবিত্র দূতদের ও মেষশাবকের সাক্ষাতে জ্বলন্ত আগুন ও গন্ধকে যন্ত্রণা পাবে।
11 ১১ যে আগুন এই লোকদের যন্ত্রণা দেবে সেই আগুনের ধোঁয়া চিরকাল জ্বলতে থাকবে; যারা সেই জন্তুর ও তার মূর্তির পূজা করে এবং যে কেউ তার নামের চিহ্ন ব্যবহার করে, তারা দিনের কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না। (aiōn g165)
আর তাদের যন্ত্রণাভোগের ধোঁয়া যুগে যুগে চিরকাল উঠতে থাকবে। যারা সেই পশু ও তার মূর্তিকে পূজা করে, বা যে কেউ তার নামের চিহ্ন গ্রহণ করে, দিনরাত কখনও সে বিশ্রাম পাবে না।” (aiōn g165)
12 ১২ এখানে পবিত্র লোক যারা ঈশ্বরের আদেশ ও যীশুর প্রতি বিশ্বাস মেনে চলে তাদের ধৈর্য্য দেখা যায়।
পবিত্রগণ যারা ঈশ্বরের আদেশ পালন করে ও যীশুর কাছে বিশ্বস্ত থাকে, এখানেই তাদের ধৈর্যশীল সহিষ্ণুতার পরীক্ষা হবে।
13 ১৩ পরে আমি স্বর্গ থেকে এক জনকে বলতে শুনলাম, তুমি লেখ, ধন্য সেই মৃতেরা যারা এ পর্যন্ত প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে মরেছে, হ্যাঁ, আত্মা বলছেন, তারা নিজে নিজের পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম পাবে; কারণ তাদের কাজগুলি তাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবে।
তখন আমি স্বর্গ থেকে এই কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম, “তুমি লেখো: ধন্য সেই মৃতজনেরা, যারা এখন থেকে প্রভুতে মৃত্যুবরণ করবে।” পবিত্র আত্মা বলছেন, “হ্যাঁ, তারা তাদের শ্রম থেকে বিশ্রাম পাবে, কারণ তাদের সব কাজ তাদের অনুসরণ করবে।”
14 ১৪ আর আমি তাকিয়ে দেখতে পেলাম সেখানে একটি সাদা মেঘ ছিল এবং সেই মেঘের উপরে মনুষ্যপুত্রের মত একজন লোক বসে ছিলেন, তাঁর মাথায় একটি সোনার মুকুট এবং তাঁর হাতে একটি ধারালো কাস্তে ছিল।
আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে ছিল এক সাদা রংয়ের মেঘ। সেই মেঘের উপরে “মনুষ্যপুত্রের মতো” একজনকে উপবিষ্ট দেখলাম, যাঁর মাথায় ছিল সোনার মুকুট ও হাতে ছিল এক ধারালো কাস্তে।
15 ১৫ পরে উপাসনা ঘর থেকে আর এক দূত বের হয়ে যিনি মেঘের ওপরে বসে ছিলেন, তাঁকে জোরে চীৎকার করে বললেন, “আপনার কাস্তে নিন এবং শস্য কাটতে শুরু করুন; কারণ শস্য কাটার দিন হয়েছে;” কারণ পৃথিবীর শস্য পেকে গেছে।
তারপর মন্দির থেকে অন্য এক স্বর্গদূত বের হয়ে, যিনি মেঘের উপরে উপবিষ্ট ছিলেন, তাঁকে উচ্চকণ্ঠে বললেন, “আপনার কাস্তে নিন ও শস্য কাটুন, কারণ শস্য কাটার সময় উপস্থিত হয়েছে, কারণ পৃথিবীর শস্য পরিপক্ব হয়েছে।”
16 ১৬ তখন যিনি মেঘের ওপরে বসে ছিলেন তিনি নিজের কাস্তে পৃথিবীতে লাগালেন এবং পৃথিবীর শস্য কেটে নিলেন।
তাই যিনি মেঘের উপরে উপবিষ্ট তিনি পৃথিবীর উপরে তাঁর কাস্তে চালালেন, আর পৃথিবীর শস্য কাটা হল।
17 ১৭ আর এক দূত স্বর্গের উপাসনা ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন; তাঁরও হাতে একটি ধারালো কাস্তে ছিল।
স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন, তাঁর কাছেও ছিল ধারালো এক কাস্তে।
18 ১৮ আবার বেদির কাছ থেকে আর এক দূত বের হয়ে আসলেন, তাঁর আগুনের উপরে ক্ষমতা ছিল, তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে দূতকে জোরে চীৎকার করে বললেন, তোমার ধারালো কাস্তে নাও, পৃথিবীর আঙ্গুর গাছ থেকে আঙ্গুর সংগ্রহ কর, কারণ আঙ্গুর ফল পেকে গেছে।
আরও একজন স্বর্গদূত বেদি থেকে বেরিয়ে এলেন। আগুনের উপরে তাঁর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা ছিল। যাঁর কাছে ধারালো কাস্তে ছিল, তিনি তাঁকে উচ্চকণ্ঠে ডেকে বললেন, “আপনার ধারালো কাস্তে নিন ও পৃথিবীর দ্রাক্ষালতার গুচ্ছ সংগ্রহ করুন, কারণ তার দ্রাক্ষা পরিপক্ব হয়েছে।”
19 ১৯ তখন ঐ দূত পৃথিবীতে নিজের কাস্তে লাগিয়ে পৃথিবীর আঙ্গুর গাছগুলি কেটে নিলেন, আর ঈশ্বরের ক্রোধের গর্তে আঙ্গুর মাড়াই করার জন্য ফেললেন।
সেই স্বর্গদূত পৃথিবীতে তাঁর কাস্তে চালালেন, তাঁর দ্রাক্ষাগুচ্ছ সংগ্রহ করলেন ও সেগুলি ঈশ্বরের ক্রোধের বিশাল দ্রাক্ষাকুণ্ডে নিক্ষেপ করলেন।
20 ২০ শহরের বাইরে একটি গর্তে তা মাড়াই করা হলো, তাতে গর্ত থেকে রক্ত বের হলো যা ঘোড়াগুলির লাগাম পর্যন্ত উঠল, এতে এক হাজার ছয় শত তীর রক্তে ডুবে গেল।
সেগুলি নগরের বাইরে দ্রাক্ষাকুণ্ডে পদদলিত করা হল এবং কুণ্ড থেকে রক্তস্রোত প্রবাহিত হল। তা 300 কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবাহিত হল ও ঘোড়ার বলগা পর্যন্ত উঠল।

< প্রকাশিত বাক্য 14 >