< গীতসংহিতা 22 >

1 প্রধান বাদ্যকরের জন্য। স্বর, ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ? আমাকে রক্ষা করা থেকে এবং আমার যন্ত্রণার উক্তি থেকে কেন তুমি দূরে থাক?
প্রধান সংগীত পরিচালকের জন্য। সুর: “প্রভাতের হরিণী।” দাউদের গীত। ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ? আমাকে রক্ষা করা থেকে কেন দূরে আছ, আমার বেদনার আর্তনাদ থেকে কেন অত দূরে?
2 আমার ঈশ্বর, আমি দিনের র বেলা ডাকি, কিন্তু তুমি উত্তর দাও না এবং রাতেও আমি নিরব থাকি না!
হে আমার ঈশ্বর, আমি দিনে তোমাকে ডাকি, কিন্তু তুমি উত্তর দাও না, রাতেও ডাকি, কিন্তু কোনও অব্যাহতি পাই না।
3 তবুও তুমিই পবিত্র, তুমিই ইস্রায়েলের প্রশংসার সঙ্গে রাজা হিসাবে বসবে।
তথাপি তুমিই পবিত্র; ইস্রায়েলের প্রশংসায় তুমিই অধিষ্ঠিত।
4 আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার উপর বিশ্বাস রাখত; তারা তোমাকে বিশ্বাস করত এবং তুমি তাদের উদ্ধার করতে।
আমাদের পূর্বপুরুষেরা তোমাতে আস্থা রেখেছিলেন; তাঁরা আস্থা রেখেছিলেন, আর তুমি তাঁদের উদ্ধার করেছিলে।
5 তারা তোমার কাছে কাঁদলে, তারা উদ্ধার পেত। তারা তোমার উপরে নির্ভর করে, হতাশ হয়নি।
তোমার কাছেই তাঁরা কেঁদেছিলেন ও পরিত্রাণ পেয়েছিলেন; তোমার উপরেই তাঁরা নির্ভর করেছিলেন আর তাঁরা লজ্জিত হননি।
6 কিন্তু আমি একটি কীট, মানুষ না, মানুষের কাছে অবমাননার বিষয় এবং লোকেদের দ্বারা তুচ্ছ।
কিন্তু আমি মানুষ নই, একটি কীটমাত্র, সব মানুষের কাছে আমি অবজ্ঞা ও ঘৃণার পাত্র।
7 যারা আমাকে দেখে তারা আমাকে উপহাস করে; তারা আমাকে পরিহাস করে; তারা আমার সম্পর্কে শোনে ও তাদের মাথা নাড়ায়।
যারা আমায় দেখে, তারা উপহাস করে; তারা অপমান করে, ও মাথা নেড়ে বলে,
8 তারা বলে, “সে সদাপ্রভুুর উপর বিশ্বাস করে; সদাপ্রভুু তাকে উদ্ধার করুন। তিনি তাকে রক্ষা করুন, কারণ তিনি তার মধ্যেই আনন্দিত।”
“সে সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করে, অতএব, সদাপ্রভুই তাকে রক্ষা করুন। যদি সদাপ্রভু তাকে এতই ভালোবাসেন, তবে তিনিই ওকে উদ্ধার করুন।”
9 কারণ তুমি আমাকে গর্ভ থেকে বের করে এনেছ; আমি যখন আমার মায়ের স্তন পান করছিলাম, তখন তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করেছিলে।
তবুও তুমি আমার মাতৃগর্ভ থেকে আমাকে নিরাপদে এনেছ; এমনকি যখন আমি মায়ের বুকে ছিলাম, তখন তুমি আমায় তোমার প্রতি বিশ্বাস করতে সাহায্য করেছ।
10 ১০ গর্ভ থেকে আমি তোমার উপর নিক্ষিপ্ত হয়েছিলাম; আমি আমার মায়ের গর্ভে ছিলাম তখন থেকেই তুমিই আমার ঈশ্বর!
জন্ম থেকে আমি তোমার হাতেই সমর্পিত হয়েছি; মাতৃগর্ভ থেকেই তুমি আমার ঈশ্বর রয়েছ।
11 ১১ আমার কাছ থেকে দূরে থেকো না, কারণ বিপদ প্রায় উপস্হিত; সাহায্য করার কেউ নেই।
আমার কাছ থেকে তুমি এত দূরে থেকো না, কারণ বিপদ আসন্ন আর কেউ আমাকে সাহায্য করার নেই।
12 ১২ অনেক ষাঁড় আমাকে ঘিরে ধরেছে; বাশনের শক্তিশালী ষাঁড় আমাকে ঘিরে ধরেছে।
আমার শত্রুরা আমাকে বলদের পালের মতো ঘিরে ধরেছে; বাশনের শক্তিশালী বলদগুলি আমার চারপাশে রয়েছে।
13 ১৩ তারা আমার বিরুদ্ধে তাদের মুখ খুলে হ্যাঁ করে, যেমনভাবে গর্জনকারী সিংহ তার শিকার গ্রাস করার জন্য করে।
গর্জনকারী সিংহ যেমন শিকার ছিঁড়ে খায় তেমনই তারা আমার দিকে মুখ হাঁ করে রয়েছে।
14 ১৪ আমাকে জলের মত ঢালা হয়েছে এবং আমার সমস্ত হাড় স্হানচ্যুত হয়েছে। আমার হৃদয় মোমের মত হয়েছে; তা আমার ভেতরের অংশের মধ্যে গলে গিয়েছে।
আমাকে জলের মতো ঢেলে দেওয়া হচ্ছে, এবং আমার সব হাড় জোড়া থেকে খুলে যাচ্ছে। আমার হৃদয় মোমের মতো; যা আমার অন্তরে গলে গেছে।
15 ১৫ আমার শক্তি মাটির পাত্রের একটি টুকরো মত শুকিয়ে গেছে; আমার জিভ আমার মুখের তালুতে লেগে যাচ্ছে। তুমি আমাকে মৃত্যুর ধূলোকণার মধ্যে রেখেছ।
রোদে পোড়া মাটির মতো আমার শক্তি শুকিয়ে গেছে, এবং আমার জিভ মুখের মধ্যে তালুতে লেগে রয়েছে; তুমি আমাকে মৃত্যুর জন্য ধুলোতে শুইয়ে দিয়েছ।
16 ১৬ কারণ কুকুরেরা আমাকে ঘিরেছে; অন্যায়কারীদের দল আমাকে ঘিরে আছে; তারা আমার হাত এবং পা বিদ্ধ করেছে।
আমার শত্রুরা কুকুরের মতো আমাকে ঘিরে ধরেছে, দুর্বৃত্তের দল চারিদিকে বেষ্টন করেছে, ওরা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করেছে।
17 ১৭ আমি আমার সব হাড়গুলি গুনতে পারি; তারা আমার দিকে দৃষ্টি করে তাকিয়ে আছে;
আমি আমার সব হাড় গুনতে পারি; লোকেরা আমার দিকে দেখে ও কৌতুকের দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।
18 ১৮ তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল, তারা আমার কাপড়ের জন্য গুলিবাঁট করে।
তারা আমার পোশাক তাদের মধ্যে ভাগ করে নেয় আর আমার আচ্ছাদনের জন্য গুটিকাপাতের দান ফেলে।
19 ১৯ হে সদাপ্রভুু; দূরে থেকো না, আমার শক্তি! আমায় দ্রুত সাহায্য কর।
কিন্তু তুমি, হে সদাপ্রভু, আমার কাছ থেকে দূরে থেকো না, তুমি আমার শক্তি, আমাকে সাহায্য করতে তাড়াতাড়ি এসো।
20 ২০ তলোয়ার থেকে আমার প্রাণকে ও আমার মহামূল্য জীবনকে কুকুরদের হাত থেকে উদ্ধার কর।
আমাকে তরোয়ালের আঘাত থেকে বাঁচাও, এই কুকুরগুলির কবল থেকে আমার মূল্যবান জীবন উদ্ধার করো।
21 ২১ সিংহের মুখ থেকে আমাকে বাঁচাও, বন্য ষাঁড়ের শিং থেকে আমাকে উদ্ধার কর।
সিংহের মুখ থেকে আমাকে উদ্ধার করো; বন্য ষাঁড়ের শিং থেকে আমাকে রক্ষা করো।
22 ২২ আমি আমার ভাইদের কাছে তোমার নাম ঘোষণা করব; মণ্ডলীর মধ্যে আমি তোমার প্রশংসা করব।
তোমার নাম আমি আমার লোকেদের কাছে প্রচার করব, সভার মাঝে আমি তোমার জয়গান গাইব।
23 ২৩ তোমরা যারা সদাপ্রভুুকে ভয় কর, তাঁর প্রশংসা কর! যাকোবের সমস্ত পূর্বপুরুষেরা, তাঁকে সম্মান করো! তাঁকে ভয়ের কর, ইস্রায়েলের সমস্ত বংশধরেরা!
তোমরা যারা সদাপ্রভুকে সম্ভ্রম করো, তাঁর প্রশংসা করো! যাকোবের বংশধর সকল, তাঁর সম্মান করো! ইস্রায়েলের বংশধর সকল, তাঁকে শ্রদ্ধা করো।
24 ২৪ কারণ তিনি দুঃখী ব্যক্তির দুঃখভোগের প্রতি অবজ্ঞা বা ঘৃণা করেন না; সদাপ্রভুু তার থেকে তাঁর মুখ লুকান না; যখন একটি দুঃখী লোক তাঁর কাছে কাঁদে, তখন তিনি শোনেন।
কারণ তিনি পীড়িতদের যন্ত্রণা অবজ্ঞা বা ঘৃণা করেননি; তিনি তাদের কাছ থেকে তাঁর মুখ লুকাননি কিন্তু তাদের সাহায্যের কান্না শুনেছেন।
25 ২৫ মহাসমাজ মধ্যে আমার প্রশংসা তোমার কাছ থেকে আসে; যারা তাঁকে ভয় করে আমি তাদের সামনে আমার প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করব।
মহাসমাবেশে আমি তোমার প্রশংসা করব; যারা তোমার আরাধনা করে তাদের উপস্থিতিতে আমি আমার শপথ পূরণ করব।
26 ২৬ নিপীড়িতরা ভোজন করবে এবং সন্তুষ্ট হবে; তাদের সদাপ্রভুুকে খোঁজ করে তারা তাঁর প্রশংসা করবে। তোমাদের হৃদয় চিরকাল জীবিত থাকুক।
যারা দরিদ্র তারা ভোজন করবে ও তৃপ্ত হবে; যারা সদাপ্রভুর অন্বেষণ করে তারা তাঁর জয়গান করবে, তাদের হৃদয় চিরস্থায়ী আনন্দে উল্লসিত হবে।
27 ২৭ পৃথিবীর সমস্ত লোক স্মরণ করবে এবং সদাপ্রভুুর কাছে ফিরে যাবে; সমস্ত জাতিদের পরিবার তাঁর সামনে উপুড় হয়ে প্রণাম করবে।
পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ সদাপ্রভুকে স্মরণ করবে ও তাঁর দিকে ফিরবে, এবং জাতিদের সব পরিবার তাঁর সামনে নতজানু হবে,
28 ২৮ কারণ রাজত্ব সদাপ্রভুুই; তিনি জাতিদের উপর শাসনকর্ত্তা।
কারণ আধিপত্য সদাপ্রভুরই আর তিনি জাতিদের উপর শাসন করেন।
29 ২৯ পৃথিবীর সমস্ত সমৃদ্ধ লোক আরাধনা করবে; ধূলোতে নেমে আসা সমস্ত লোক ও যারা তাদের নিজেদের প্রাণ রক্ষা করতে পারে না তারাও তাঁর সামনে নতজানু হবে।
পৃথিবীর ধনীরা সবাই ভোজন করবে ও তাঁর আরাধনা করবে; যাদের জীবন ধুলোতে শেষ হবে তারা সবাই তাঁর সামনে নতজানু হবে— তারা যারা নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়ে রাখতে পারে না।
30 ৩০ একটি প্রজন্ম আসবে তাঁর সেবা করবে; তারা প্রভুর পরবর্তী প্রজন্মকে বলবে।
বংশধরেরা তাঁর সেবা করবে; আগামী প্রজন্মকে বলা হবে সদাপ্রভুর কথা।
31 ৩১ তারা আসবে এবং তাঁর ধার্মিকতার কথা বলবে; তিনি কি করেছেন তা তারা এমন লোকদের বলবে যারা এখনো জন্ম গ্রহণ করে নি।
তারা তাঁর ধার্মিকতা প্রচার করবে, যারা অজাত তাদের উদ্দেশে ঘোষণা করা হবে: তিনি এই কাজ করেছেন!

< গীতসংহিতা 22 >