< গণনার বই 14 >

1 সেই রাত্রিতে সমস্ত মণ্ডলী খুব চিত্কার করল এবং কাঁদলো। 2 ইস্রায়েল সন্তানরা সবাই মোশি ও হারোণের বিপরীতে সমালোচনা করল। সমস্ত মণ্ডলী তাদেরকে বলল, “হায় হায়, আমরা কেন এই মরুপ্রান্তের চেয়ে মিশর দেশে মারা যাই নি? 3 সদাপ্রভু আমাদেরকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করতে এ দেশে কেন আনলেন? আমাদের স্ত্রী ও বালকরা তো বিনষ্ট হবে। মিশরে ফিরে যাওয়া কি আমাদের জন্য ভাল নয়?” 4 তারা পরস্পর বলাবলি করল, “এস, আমরা অন্য এক জনকে শাসনকর্ত্তা করে মিশরে ফিরে যাই।” 5 তাতে মোশি ও হারোণ ইস্রায়েল সন্তানদের মণ্ডলীর সমস্ত সমাজের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন। 6 যারা দেশ পরীক্ষা করে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে নূনের ছেলে যিহোশূয় ও যিফূন্নির ছেলে কালেব নিজেদের পোশাক ছিঁড়লেন। 7 তাঁরা ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীকে বললেন, “আমরা যে দেশ পরীক্ষা করতে গিয়েছিলাম, সেটি খুব ভালো দেশ। 8 সদাপ্রভু যদি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন, তবে তিনি আমাদেরকে সেই দেশে প্রবেশ করাবেন ও সেই দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশ আমাদেরকে দেবেন। 9 কিন্তু তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যেও না ও সে দেশের লোকেদেরকে ভয় কোরো না। কারণ তাদের খাবারের মতই সহজে গ্রাস করব। তাদের আশ্রয় তাদের উপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে, কারণ সদাপ্রভু আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছেন। তাদেরকে ভয় কোরো না।” 10 ১০ কিন্তু সমস্ত মণ্ডলী সেই দুজনকে পাথরের আঘাতে হত্যা করতে বলল। তখন সমাগম তাঁবুতে সমস্ত ইস্রায়েলের লোকেদের মধ্যে সদাপ্রভুর মহিমা প্রকাশিত হল। 11 ১১ সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এই লোকেরা আর কতকাল আমাকে অবজ্ঞা করবে? আমি এদের মধ্যে যেসব চিহ্ন কাজ করেছি, তা দেখেও এরা কতকাল আমার প্রতি বিশ্বাস করতে ব্যর্থ থাকবে? 12 ১২ আমি মহামারী দিয়ে এদেরকে আঘাত করব, এদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করব এবং তোমাকেই এদের থেকে বড় ও শক্তিশালী জাতি করব।” 13 ১৩ তাতে মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “সেটা করলে মিশরীয়েরা তা শুনবে, কারণ তাদেরই মধ্যে থেকে তুমি নিজের শক্তি দিয়ে এই লোকেদেরকে এনেছ। 14 ১৪ তারা এই দেশবাসী লোকেদেরও এটা বলবে। তারা শুনেছে যে, তুমি, সদাপ্রভু এই লোকেদের সঙ্গে থাক, কারণ তুমি, সদাপ্রভু মুখোমুখী দর্শন দাও, আর তোমার মেঘ এদের উপরে অবস্থান করছে এবং তুমি দিনের র বেলা মেঘস্তম্ভে ও রাতে অগ্নিস্তম্ভে থেকে এদের আগে আগে যাচ্ছ। 15 ১৫ এখন যদি তুমি এই লোকেদেরকে একটি ব্যক্তির মত হত্যা কর, তবে ঐ যে জাতিরা তোমার সুনাম শুনেছে, তারা বলবে, 16 ১৬ ‘সদাপ্রভু এই লোকেদেরকে যে দেশ দিতে শপথ করেছিলেন, সেই দেশে তাদেরকে দিতে পারেননি; এই জন্য মরুপ্রান্তে তাদেরকে হত্যা করলেন’। 17 ১৭ এখন, আমি তোমার কাছে অনুরোধ করি, তোমার মহান শক্তি ব্যবহার কর। যেমন তুমি বলেছ, 18 ১৮ ‘সদাপ্রভু ক্রোধে ধীর ও দয়াতে মহান এবং অধর্ম্মের ও অপরাধের ক্ষমাকারী, তবুও অবশ্যই পাপের শাস্তি দেন, তিনি তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত সন্তানদের উপরে পূর্বপুরুষের অপরাধের শাস্তি দেন’। 19 ১৯ অনুরোধ করি, তোমার দয়ার মহত্ত্ব অনুসারে এবং মিশর দেশ থেকে এ পর্যন্ত এই লোকেদেরকে যেমন ক্ষমা কর, সেইমত এই লোকেদের অপরাধ ক্ষমা কর।” 20 ২০ তখন সদাপ্রভু বললেন, “তোমার বাক্য অনুসারে আমি ক্ষমা করলাম। 21 ২১ সত্যিই আমি জীবন্ত এবং সমস্ত পৃথিবী সদাপ্রভুর মহিমায় পরিপূর্ণ হবে, 22 ২২ তাই যত লোক আমার মহিমা এবং মিশরে ও মরুপ্রান্তে করা আমার সমস্ত চিহ্ন কাজ দেখেছে, তবুও এই দশ বার আমার পরীক্ষা করেছে ও আমার কথা শোনেনি; 23 ২৩ আমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয়ে শপথ করেছি, তারা সেই দেশ দেখতে পাবে না; যারা আমাকে অবজ্ঞা করেছে, তাদের মধ্যে কেউই তা দেখতে পাবে না। 24 ২৪ কিন্তু আমার দাস কালেবের অন্তরে অন্য আত্মা ছিল এবং সে সম্পূর্ণভাবে আমার অনুগত হয়ে চলেছে, এই জন্য সে যে দেশে গিয়েছিল, সে দেশে আমি তাকে প্রবেশ করাব ও তার বংশ সেটা অধিকার করবে। 25 ২৫ (অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা উপত্যকায় বাস করছে।) কাল তোমরা ফিরে সূফসাগরের পথ দিয়ে মরুপ্রান্তে যাও।” 26 ২৬ সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, 27 ২৭ “আমার বিরুদ্ধে মন্দ মণ্ডলীর আমি আর কতকাল সহ্য করব যারা আমার সমালোচনা করে? ইস্রায়েল সন্তানরা আমার বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগ করে, তা আমি শুনেছি। 28 ২৮ তুমি তাদেরকে বল, ‘সদাপ্রভু বলেন, আমি জীবন্ত, আমার কানের কাছে তোমরা যা বলেছ, তাই আমি তোমাদের প্রতি করব; 29 ২৯ এই মরুপ্রান্তে তোমাদের মৃতদেহ পড়ে থাকবে; তোমাদের সম্পূর্ণ সংখ্যা অনুসারে গণনা করা কুড়ি বছর ও তার থেকে বয়সী তোমরা যে সমস্ত লোক আমার বিপরীতে বচসা করেছ, 30 ৩০ আমি তোমাদেরকে যে দেশে বাস করাব বলে হাত তুলেছিলাম, সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করবে না, শুধু যিফূন্নির ছেলে কালেব ও নূনের ছেলে যিহোশূয় প্রবেশ করবে। 31 ৩১ কিন্তু তোমরা তোমাদের যে বালকদের বিষয়ে বলেছিলে, তারা বিনষ্ট হবে, তাদেরকে আমি সেখানে প্রবেশ করাব ও তোমরা যে দেশ অগ্রাহ্য করেছ, তারা তার পরিচয় পাবে। 32 ৩২ কিন্তু তোমাদের মৃতদেহ এই মরুপ্রান্তে পড়ে থাকবে। 33 ৩৩ তোমাদের সন্তানরা চল্লিশ বছর এই মরুপ্রান্তে পশু চরাবে এবং এই মরুপ্রান্তে তোমাদের মৃতদেহের সংখ্যা যে পর্যন্ত সম্পূর্ণ না হয়, সে পর্যন্ত তারা তোমাদের ব্যভিচারের ফল ভোগ করবে। 34 ৩৪ তোমরা যে চল্লিশ দিন দেশ পরীক্ষা করেছ, সেই দিনের র সংখ্যা অনুসারে চল্লিশ বছর, এক এক দিনের র জন্য এক এক বছর, তোমরা তোমাদের অপরাধ বহন করবে, আর আমার শত্রুতা কেমন, তা তোমরা জানবে’। 35 ৩৫ আমি, সদাপ্রভু, বলেছি, আমার বিপরীতে চক্রান্তকারী এই সমস্ত মন্দ মণ্ডলীর প্রতি আমি এইসব অবশ্যই করব; এই মরুপ্রান্তে তারা শেষ হবে, এখানেই তারা মারা যাবে।” 36 ৩৬ আর দেশ পরীক্ষা করতে মোশি যে লোকেদেরকে পাঠিয়েছিলেন, যারা ফিরে এসে ঐ দেশের বদনাম করে তার বিরুদ্ধে সমস্ত মণ্ডলীকে দিয়ে অভিযোগ করিয়েছিল, 37 ৩৭ দেশের বদনামকারী সেই ব্যক্তিরা সদাপ্রভুর সামনে মহামারীতে মারা গেল। 38 ৩৮ যে ব্যক্তিরা পরীক্ষা করতে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে শুধু নূনের ছেলে যিহোশূয় ও যিফূন্নির ছেলে কালেব জীবিত থাকলেন। 39 ৩৯ যখন মোশি সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানকে সেই কথা বললেন, লোকেরা খুব শোক করল। 40 ৪০ তারা ভোরে উঠে পর্বতের চূড়ায় উঠতে উদ্যত হয়ে বলল, “দেখ, আমরা এখানে, সদাপ্রভু যে স্থানের কথা বলেছেন, আমরা সেই স্থানে যাই, কারণ আমরা পাপ করেছি।” 41 ৪১ কিন্তু মোশি বললেন, “এখন সদাপ্রভুর আদেশ কেন অমান্য করছ? তোমরা সফল হবে না। 42 ৪২ তোমরা যেও না, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের মধ্যে নেই, তাই গেলে তোমরা শত্রুদের কাছে পরাজিত হবে। 43 ৪৩ কারণ অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা সে স্থানে তোমাদের সামনে আছে; তোমরা তরোয়ালের আঘাতে মারা যাবে, কারণ তোমরা সদাপ্রভুর অনুসরণ করা থেকে পিছু ফিরেছ, তাই সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে থাকবেন না।” 44 ৪৪ কিন্তু তারা দুঃসাহসী হয়ে পর্বতের চূড়ায় উঠতে লাগল; কিন্তু সদাপ্রভুর সাক্ষ্য-সিন্দুক ও মোশি শিবির ত্যাগ করলেন না। 45 ৪৫ তখন ঐ পর্বতবাসী অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা নেমে এসে তাদেরকে আঘাত করল ও হর্মা পর্যন্ত তাদেরকে তাড়িয়ে দিল।

< গণনার বই 14 >