গণনার বই 13
সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
2 ২ “আমি ইস্রায়েল সন্তানদের যে কনান দেশ দেব, তুমি সেটা পরীক্ষা করার জন্য কয়েক জন ব্যক্তিকে পাঠাও। তাদের পূর্বপুরুষদের প্রত্যেক বংশের মধ্যে থেকে একজন করে লোক পাঠাও। প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের মধ্যে শাসনকর্ত্তা হবে।”
“আমি ইস্রায়েলীদের যে দেশ দিতে চাই, সেই কনানের ভূমি নিরীক্ষণ করতে কয়েকজন ব্যক্তিকে পাঠাও। প্রত্যেক পিতৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ থেকে একজন করে পাঠাও।”
3 ৩ সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে মোশি পারণ মরুভূমি থেকে তাদেরকে পাঠালেন। তাঁরা সবাই ইস্রায়েল সন্তানদের শাসনকর্ত্তা ছিলেন।
অতএব মোশি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে, তাদের পারণ প্রান্তর থেকে পাঠালেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ইস্রায়েলীদের নেতা ছিলেন।
এই তাঁদের নাম: রূবেণ গোষ্ঠী থেকে সক্কুরের ছেলে শম্মূয়;
শিমিয়োন গোষ্ঠী থেকে হোরির ছেলে শাফট;
যিহূদা গোষ্ঠী থেকে যিফূন্নির ছেলে কালেব;
ইষাখর গোষ্ঠী থেকে যোষেফের ছেলে যিগাল;
ইফ্রয়িম গোষ্ঠী থেকে নূনের ছেলে হোশেয়;
বিন্যামীন গোষ্ঠী থেকে রাফূর ছেলে পল্টি;
সবূলূন গোষ্ঠী থেকে সোদির ছেলে গদ্দীয়েল;
মনঃশি (যোষেফের একটি গোষ্ঠী) গোষ্ঠী থেকে সূষির ছেলে গদ্দি;
দান গোষ্ঠী থেকে গমল্লির ছেলে অম্মীয়েল;
আশের গোষ্ঠী থেকে মীখায়েলের ছেলে সথুর;
নপ্তালি গোষ্ঠী থেকে বপ্সির ছেলে নহ্বি;
গাদ গোষ্ঠী থেকে মাখির ছেলে গ্যূয়েল।
16 ১৬ মোশি যাদেরকে দেশ পরীক্ষা করতে পাঠালেন, এইগুলি সেই লোকেদের নাম। আর মোশি নূনের ছেলে হোশেয়ের নাম যিহোশূয় রাখলেন।
মোশি যে ব্যক্তিদের দেশ নিরীক্ষণ করতে পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের নামগুলি এই। (মোশি নূনের ছেলে হোশেয়ের নাম রাখলেন যিহোশূয়।)
17 ১৭ কনান দেশ পরীক্ষা করতে পাঠাবার দিনের মোশি তাদেরকে বললেন, নেগেভ থেকে চলে যাও এবং পাহাড়ী অঞ্চলে গিয়ে ওঠ।
কনান নিরীক্ষণ করতে পাঠানোর সময় মোশি তাঁদের বললেন, “নেগেভের মধ্য দিয়ে উঠে পার্বত্য অঞ্চলে গমন করবে।
লক্ষ্য করবে, সেই দেশ কী রকম, সেখানকার লোকেরা দুর্বল না শক্তিশালী। তারা সংখ্যায় অল্প না বেশি।
19 ১৯ এবং তারা যে দেশে বাস করে সে দেশ কেমন, ভাল কি মন্দ? যে সব শহরে বাস করে, সেগুলি কি রকম? তারা কি শিবির পছন্দ করে নাকি শক্তিশালী শহর?
কোন ধরনের ভূমিতে তারা বসবাস করে? তা কী ভালো না মন্দ? কোন ধরনের নগরে তাদের নিবাস? সেগুলি প্রাচীর বিহীন না সুরক্ষিত?
20 ২০ সেখানকার জমি কেমন দেখ, ফসল চাষের জন্য উর্বর কিনা এবং সেখানে গাছ আছে কি না। আর তোমরা সাহসী হও এবং সেই দেশের কিছু ফল সঙ্গে করে এনো। তখন প্রথম আঙ্গুর পাকার দিন ছিল।
মাটিই বা কী রকম? উর্বর না সাধারণ? বৃক্ষসমন্বিত না বৃক্ষবিহীন? আপ্রাণ চেষ্টা কোরো, সেই দেশের কিছু ফল নিয়ে আসতে।” (তখন আঙুর পাকার সময় ছিল।)
অতএব তাঁরা উঠে গেলেন এবং সীন মরুভূমি থেকে রহোব পর্যন্ত, লেবো-হমাৎ অভিমুখে ভ্রমণ করলেন।
22 ২২ তাঁরা নেগেভ থেকে চলে গিয়ে হিব্রোণে উপস্থিত হলেন। সেখানে অহীমান, শেশয় ও তল্ময়, অনাকের এই তিন সন্তান ছিল। মিশরের সোয়নের গড়ে উঠার সাত বছর আগে হিব্রোণ গড়ে ওঠে।
তাঁরা নেগেভ হয়ে নিরীক্ষণ করে হিব্রোণে এলেন। সেখানে অহীমান, শেশয়, ও তল্ময় নামবিশিষ্ট, অনাকের তিনজন উত্তরাধিকারী বসবাস করত। (মিশরে সোয়ন নির্মিত হওয়ার সাত বছর আগে হিব্রোণ নির্মিত হয়েছিল।)
23 ২৩ যখন তাঁরা ইষ্কোল উপত্যকাতে পৌঁছালেন, তাঁরা সেখানে এক গোছা আঙ্গুরের একটি শাখা কাটলেন। তাঁরা সেটা একটি লাঠিতে করে দুজন বহন করলেন। তাঁরা কতকগুলি ডালিম ও ডুমুরফলও সঙ্গে করে আনলেন।
যখন তাঁরা ইষ্কোল উপত্যকায় উপস্থিত হলেন, তাঁরা দ্রাক্ষার গুচ্ছ সমন্বিত একটি শাখা কাটলেন। দুজন ব্যক্তি, একটি দণ্ডের দ্বারা সেই দ্রাক্ষাগুচ্ছ এবং কিছু বেদানা ও ডুমুর বহন করে আনলেন।
24 ২৪ ইস্রায়েল সন্তানেরা ঐখানে সেই আঙ্গুরের গোছা কেটেছিলেন, তাই সেই উপত্যকা ইষ্কোল [থলুয়া] নামে পরিচিত হল।
যেহেতু দ্রাক্ষাগুচ্ছ ইস্রায়েলীরা কেটে এনেছিল, তাই সেই স্থানের নাম হল, ইষ্কোল উপত্যকা।
চল্লিশ দিনের শেষে, তাঁরা দেশ নিরীক্ষণ করে ফিরে এলেন।
26 ২৬ পরে তাঁরা এসে পারণ মরুপ্রান্তের কাদেশ নামক স্থানে মোশির ও হারোণের এবং ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীর কাছে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে ও সমস্ত মণ্ডলীকে সংবাদ দিলেন এবং সেই দেশের ফল তাদেরকে দেখালেন।
পারণ প্রান্তরে, কাদেশে তাঁরা মোশি, হারোণ এবং সমস্ত ইস্রায়েলীদের কাছে ফিরে এলেন। সেখানে তাঁরা, তাঁদের এবং সমস্ত সম্প্রদায়কে দেশ নিরীক্ষণের বিশদ বিবরণ দিলেন ও সেই দেশের ফল তাদের দেখালেন।
27 ২৭ তাঁরা মোশিকে বললেন, “আপনি আমাদেরকে যে দেশে পাঠিয়ে ছিলেন, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম; দেশটিতে সত্যিই দুধ ও মধু প্রবাহিত হয়; আর এই দেখুন, তার ফল।
তাঁরা মোশিকে বর্ণনা দিয়ে বললেন, “আপনি যে দেশে আমাদের পাঠিয়েছিলেন, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। সেই দেশ অবশ্যই দুধ ও মধু প্রবাহী! এই ফলগুলি, সেই দেশের।
28 ২৮ যাই হোক, সেখানকার লোকেরা যারা তাদের বাড়ি তৈরী করে, তারা বলবান ও সেখানকার শহরগুলি দেওয়ালে ঘেরা ও খুব বড়। সেখানে আমরা অনাকের সন্তানদেরকেও দেখেছি।
কিন্তু যারা সেখানে বসবাস করে, তারা বলিষ্ঠ, তাদের নগরগুলি সুরক্ষিত এবং বড়ো বড়ো। আমরা সেখানে অনাকের উত্তরসূরীদেরও দেখেছি।
29 ২৯ নেগেভে অমালেকরা বাস করে। পাহাড়ী অঞ্চলে হিত্তীয়, যিবূষীয় ও ইমোরীয়েরা বাস করে। মহা সমুদ্রের কাছে ও যর্দ্দনের তীরে কনানীয়েরা বাস করে।”
নেগেভে অমালেকীয়েরা বসবাস করে; হিত্তীয়, যিবূষীয়, ইমোরীয়েরা পার্বত্য অঞ্চলে এবং কনানীয়েরা সমুদ্রের কাছে ও জর্ডন উপকূলে বসবাস করে।”
30 ৩০ তখন কালেব মোশির সাক্ষাৎে লোকদেরকে উত্সাহ করার জন্য বললেন, “এস, আমরা একেবারে উঠে গিয়ে দেশ অধিকার করি; কারণ আমরা সেটা জয় করতে সমর্থ।”
তখন কালেব, মোশির সামনে তাঁদের শান্ত করে বলল, “আমাদের উচিত, উঠে গিয়ে সেই দেশ অধিকার করা, কারণ সেই শক্তি আমাদের অবশ্যই আছে।”
31 ৩১ কিন্তু যে ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁরা বললেন, “আমরা সেই লোকদের বিরুদ্ধে যেতে সমর্থ নই, কারণ আমাদের থেকে তারা বলবান।”
যে ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁরা বললেন, “আমরা ওই ব্যক্তিদের আক্রমণ করতে পারি না; তারা আমাদের থেকেও বেশি শক্তিশালী।”
32 ৩২ এই ভাবে তারা যে দেশ পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন, ইস্রায়েল সন্তানদের সাক্ষাৎে সেই দেশের সম্মন্ধে নিরুত্সাহ করে বললেন, “আমরা যে দেশ পরীক্ষা করতে স্থানে স্থানে গিয়েছিলাম, সে দেশ তার অধিবাসীদেরকে গ্রাস করে এবং তার মধ্যে আমরা যত লোককে দেখেছি, তারা সবাই অনেক বেশি উচ্চতার।
তাঁরা যে দেশ নিরীক্ষণ করে এসেছিলেন, সেই দেশ সম্পর্কে ইস্রায়েলীদের মধ্যে বিরূপ সংবাদ ছড়াল। তাঁরা বললেন, “যে দেশ আমরা নিরীক্ষণ করেছি সেই দেশ নিজের অধিবাসীদের গ্রাস করে। যে সমস্ত লোককে সেখানে আমরা দেখেছি তারা সবাই বৃহদাকার।
33 ৩৩ সেখানে আমরা নেফিলিমকে দেখলাম-অনাকের সন্তান নেফিলিমের থেকে এসেছে। তাদেরকে দেখে আমরা নিজেদের চোখে ফড়িঙ্গের মত এবং তাদের চোখেও সেই রকম হলাম।”
আমরা নেফিলীমদেরও সেখানে দেখেছি। (অনাকের উত্তরসূরিদের আগমন নেফিলিম থেকে) আমরা নিজেদের দৃষ্টিতে, সেই সঙ্গে তাদের দৃষ্টিতেও, ফড়িং-এর মতো প্রতিপন্ন হয়েছি।”
