< মথি 14 >

1 সেই দিন হেরোদ রাজা যীশুর বার্তা শুনতে পেলেন,
সেই সময়ে শাসনকর্তা হেরোদ যীশুর সম্মন্ধে শুনে
2 আর নিজের দাসদেরকে বললেন, ইনি সেই বাপ্তিষ্মদাতা যোহন; তিনি মৃতদের মধ্যে থেকে উঠেছেন, আর সেইজন্য এইসব অলৌকিক কাজ সব করতে পারছেন।
তাঁর পরিচারকদের বললেন, “ইনি সেই বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, যিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছেন! সেই কারণে এইসব অলৌকিক ক্ষমতা তাঁর মধ্যে রয়েছে।”
3 কারণ হেরোদ নিজের ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়াকে বিয়ে করেছিলেন এবং তার জন্য যোহনকে ধরে বেঁধে কারাগারে রেখেছিলেন;
কারণ হেরোদ, তাঁর ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্য যোহনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন ও তাঁকে কারাগারে বন্দি করেছিলেন।
4 কারণ যোহন তাঁকে বলেছিলেন, ওকে রাখা আপনার উচিত নয়।
কারণ যোহন তাঁকে ক্রমাগত বলতেন, “আপনার পক্ষে হেরোদিয়াকে রাখা ন্যায়সংগত নয়।”
5 ফলে তিনি তাঁকে হত্যা করতে ইচ্ছা করলেও লোকদেরকে ভয় করতেন, কারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মানত।
হেরোদ যোহনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় পেতেন কারণ তারা তাকে ভাববাদী বলে মনে করত।
6 কিন্তু হেরোদের জন্মদিন এলো, হেরোদিয়ার মেয়ে সভার মধ্যে নেচে হেরোদকে সন্তুষ্ট করল।
হেরোদের জন্মদিনে হেরোদিয়ার মেয়ে সকলের জন্য নৃত্য করে হেরোদকে এমন সন্তুষ্ট করল যে,
7 এই জন্য তিনি শপথ করে বললেন, “তুমি যা চাইবে, তাই তোমাকে দেব।”
তিনি শপথ করে বললেন সেই মেয়ে যা চাইবে, তাই তিনি তাকে দেবেন।
8 তখন সে নিজের মায়ের পরামর্শ অনুসারে বলল, “যোহন বাপ্তিষ্মদাতার মাথা থালায় করে আমাকে দিন।”
তার মায়ের প্ররোচনায়, সে তখন বলল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের মাথা আমাকে থালায় করে এনে দিন।”
9 এতে রাজা দুঃখিত হলেন, কিন্তু নিজের শপথের কারণে এবং যারা তাঁর সঙ্গে ভোজে বসেছিল, তাদের কারণে, তা দিতে আজ্ঞা করলেন,
এতে রাজা হেরোদ মর্মাহত হলেন, কিন্তু তাঁর নিজের শপথের জন্য ও যাঁরা তাঁর সঙ্গে ভোজসভায় বসেছিলেন তাঁদের জন্য তিনি তাঁর অনুরোধ রক্ষার আদেশ দিলেন।
10 ১০ তিনি লোক পাঠিয়ে কারাগারে যোহনের মাথা কাটালেন।
তিনি কারাগারে লোক পাঠিয়ে যোহনের মাথা কাটালেন।
11 ১১ আর তাঁর মাথাটি একখানা থালায় করে এনে সেই মেয়েকে দেওয়া হল; আর সে তা মায়ের কাছে নিয়ে গেল।
তাঁর মাথা একটি থালায় করে এনে সেই মেয়েকে দেওয়া হল। সে তার মায়ের কাছে তা নিয়ে গেল।
12 ১২ পরে তাঁর শিষ্যরা এসে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে তাঁর কবর দিল এবং যীশুর কাছে এসে তাঁকে খবর দিল।
পরে যোহনের শিষ্যেরা এসে তাঁর শরীর নিয়ে গেল ও কবর দিল। তারপর তারা গিয়ে যীশুকে সেই সংবাদ দিল।
13 ১৩ যীশু তা শুনে সেখান থেকে নৌকায় করে একা এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন; আর লোক সবাই তা শুনে নানা শহর থেকে এসে হাঁটা পথে তাঁর অনুসরণ করল।
সেই ঘটনার সংবাদ শুনে যীশু নৌকায় একান্তে এক নির্জন স্থানে গেলেন। একথা শুনতে পেয়ে অনেক লোক বিভিন্ন নগর থেকে পায়ে হেঁটে তাঁকে অনুসরণ করল।
14 ১৪ তখন যীশু নৌকা থেকে বের হয়ে অনেক লোক দেখে তাদের জন্য করুণাবিষ্ট হলেন এবং তাদের অসুস্থ লোকদেরকে সুস্থ করলেন।
তীরে নেমে যীশু যখন অনেক লোককে দেখতে পেলেন, তিনি তাদের প্রতি করুণায় পূর্ণ হলেন ও তাদের মধ্যে অসুস্থ লোকদের সুস্থ করলেন।
15 ১৫ পরে সন্ধ্যা হলে শিষ্যরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, এ জায়গা নির্জন, বেলাও হয়ে গিয়েছে; লোকদেরকে বিদায় করুন, যেন ওরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের নিজেদের জন্য খাবার কিনে নেয়।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, শিষ্যেরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “এ এক নির্জন স্থান, আর ইতিমধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আপনি সবাইকে বিদায় দিন, যেন তারা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য কিছু খাবার কিনতে পারে।”
16 ১৬ যীশু তাঁদের বললেন, ওদের যাবার প্রয়োজন নেই, তোমরাই ওদেরকে কিছু খাবার দাও।
যীশু উত্তর দিলেন, “ওদের যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরাই ওদের কিছু খেতে দাও।”
17 ১৭ তাঁরা তাঁকে বললেন, আমাদের এখানে শুধুমাত্র পাঁচটি রুটি ও দুটী মাছ আছে।
তারা উত্তর দিলেন, “এখানে আমাদের কাছে কেবলমাত্র পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ আছে।”
18 ১৮ তিনি বললেন, সেগুলি এখানে আমার কাছে আন।
তিনি বললেন, “ওগুলি আমার কাছে নিয়ে এসো।”
19 ১৯ পরে তিনি লোক সবাইকে ঘাসের উপরে বসতে আদেশ করলেন; আর সেই পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন এবং রুটি ভেঙে শিষ্যদের দিলেন, শিষ্যেরা লোকদেরকে দিলেন।
আর তিনি লোকদের ঘাসের উপরে বসার জন্য নির্দেশ দিলেন। সেই পাঁচটি রুটি ও দুটি মাছ নিয়ে যীশু স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ধন্যবাদ দিলেন ও রুটিগুলিকে ভাঙলেন। তারপর তিনি সেগুলি শিষ্যদের দিলেন ও শিষ্যেরা লোকদের দিলেন।
20 ২০ তাতে সবাই খেল এবং সন্তুষ্ট হল এবং শিষ্যরা অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া জড়ো করে পূর্ণ বারো ঝুড়ি তুলে নিলেন।
তারা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। আর শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে বারো ঝুড়ি পূর্ণ করলেন।
21 ২১ যারা খাবার খেয়েছিল, তারা স্ত্রী ও শিশু ছাড়া অনুমান পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল।
যারা খাবার খেয়েছিল, তাদের সংখ্যা ছিল নারী ও শিশু বাদ দিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ।
22 ২২ আর যীশু তখনই শিষ্যদের বলে দিলেন, যেন তাঁরা নৌকায় উঠে তাঁর আগে অন্য পারে যান, আর সেই দিন তিনি লোকদেরকে বিদায় করে দেন।
পর মুহূর্তেই যীশু শিষ্যদের নৌকায় তুলে দিয়ে তাঁর যাওয়ার আগেই সাগরের অপর পারে তাঁদের চলে যেতে বললেন, ইতিমধ্যে তিনি সকলকে বিদায় দিলেন।
23 ২৩ পরে তিনি লোকদেরকে বিদায় করে নির্জনে প্রার্থনা করবার জন্য পাহাড়ে চলে গেলেন। যখন সন্ধ্যা হল, তিনি সেই জায়গায় একা থাকলেন।
তাদের বিদায় করার পর তিনি একা প্রার্থনা করার জন্য এক পর্বতের উপরে উঠলেন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তিনি সেখানে একাই ছিলেন।
24 ২৪ তখন নৌকাটি ডাঙা থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে পড়েছিল, ঢেউয়ে টলমল করছিল, কারণ হাওয়া তাদের বিপরীত দিক থেকে বইছিল।
কিন্তু নৌকাখানি তখন তীর থেকে বেশ খানিকটা দূরে চলে গিয়েছিল। বাতাস প্রতিকূলে বইছিল তাই নৌকা ঢেউয়ে টলোমলো করছিল।
25 ২৫ পরে প্রায় শেষ রাত্রিতে যীশু সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে তাঁদের কাছে আসলেন।
রাত্রির চতুর্থ প্রহরে যীশু সাগরের উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে শিষ্যদের কাছে গেলেন।
26 ২৬ তখন শিষ্যেরা তাঁকে সমুদ্রের উপর দিয়ে হাঁটতে দেখে ভয় পেয়ে বললেন, “এ যে ভূত!” আর তাঁরা ভয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন।
শিষ্যেরা তাঁকে সাগরের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে দেখে ভীষণ ভয় পেলেন। তাঁরা বললেন, “এ এক ভূত!” আর তাঁরা ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন।
27 ২৭ কিন্তু যীশু সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন, তাঁদেরকে বললেন, সাহস কর, এখানে আমি, ভয় করো না।
কিন্তু যীশু তক্ষুনি তাঁদের বললেন, “সাহস করো! এ আমি। ভয় পেয়ো না।”
28 ২৮ তখন পিতর উত্তর করে তাঁকে বললেন, হে প্রভু, যদি আপনি হন, তবে আমাকে জলের উপর দিয়ে আপনার কাছে যেতে আজ্ঞা করুন।
পিতর উত্তর দিলেন, “প্রভু, যদি আপনিই হন, তাহলে আমাকেও জলের উপর দিয়ে আপনার কাছে হেঁটে আসতে বলুন।”
29 ২৯ তিনি বললেন, এস; তাতে পিতর নৌকা থেকে নেমে জলের উপর দিয়ে হেঁটে যীশুর কাছে চললেন।
তিনি বললেন, “এসো।” তখন পিতর নৌকা থেকে নেমে জলের উপর দিয়ে হেঁটে যীশুর দিকে চললেন।
30 ৩০ কিন্তু বাতাস দেখে তিনি ভয় পেলেন এবং ডুবে যেতে যেতে চিৎকার করে ডেকে বললেন, হে প্রভু, আমায় উদ্ধার করুন।
কিন্তু যখন তিনি বাতাসের দিকে দৃষ্টি দিলেন, তিনি ভয় পেলেন ও ডুবতে লাগলেন। তিনি চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, আমাকে রক্ষা করুন!”
31 ৩১ তখনই যীশু হাত বাড়িয়ে তাঁকে ধরলেন, আর তাঁকে বললেন, হে অল্প বিশ্বাসী, কেন সন্দেহ করলে?
সঙ্গে সঙ্গে যীশু তাঁর হাত বাড়িয়ে তাঁকে ধরে ফেললেন ও বললেন, “অল্পবিশ্বাসী তুমি, কেন তুমি সন্দেহ করলে?”
32 ৩২ পরে তাঁরা নৌকায় উঠলেন, আর বাতাস থেমে গেল।
আর তাঁরা যখন নৌকায় উঠলেন তখন বাতাস থেমে গেল।
33 ৩৩ আর যাঁরা নৌকায় ছিলেন, তাঁরা এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, সত্যই আপনি ঈশ্বরের পুত্র।
তখন যাঁরা নৌকায় ছিলেন, তাঁরা তাঁকে প্রণাম করলেন, বললেন, “সত্যি, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র।”
34 ৩৪ পরে তাঁরা পার হয়ে গিনেষরৎ প্রদেশের এসে নৌকা ভূমিতে লাগালেন।
তাঁরা সাগরের অপর পারে গিয়ে গিনেষরৎ প্রদেশে নৌকা থেকে নামলেন।
35 ৩৫ সেখানকার লোকেরা যীশুকে চিনতে পেরেছিলেন, তখন তারা চারদিকে সেই দেশের সব জায়গায় খবর পাঠাল এবং যত অসুস্থ লোক ছিল, সবাইকে তাঁর কাছে আনল;
সেখানকার লোকেরা যখন তাঁকে চিনতে পারল তারা চতুর্দিকে খবর পাঠাল। লোকেরা সব অসুস্থ ব্যক্তিদের তাঁর কাছে নিয়ে এল,
36 ৩৬ আর তাঁকে মিনতি করল, যেন ওরা তাঁর পোশাকের ঝালর একটু ছুঁতে পারে; আর যত লোক তাঁকে ছুঁলো, সবাই সুস্থ হল।
আর তাঁর কাছে মিনতি করল, যেন অসুস্থরা কেবলমাত্র তাঁর পোশাকের আঁচলটুকু স্পর্শ করতে পারে। আর যারাই তাঁকে স্পর্শ করল তারা সকলে সুস্থ হল।

< মথি 14 >