< মার্ক 8 >

1 সেই দিন এক দিন যখন আবার অনেক লোকের ভিড় হল এবং তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না, তখন তিনি নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন,
সেই দিনগুলিতে আবার অনেক লোকের ভিড় হল। কিন্তু তাদের কাছে খাওয়ার কিছু ছিল না। যীশু তাই তাঁর শিষ্যদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন,
2 এই লোকদের জন্য আমার করুণা হচ্ছে; কারণ এরা আজ তিন দিন আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাবার কিছুই নেই।
“এই লোকদের প্রতি আমার করুণা হচ্ছে; এরা তিন দিন ধরে আমার সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাওয়ার জন্য কিছুই নেই।
3 আর আমি যদি এদেরকে না খাইয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিই, তবে এরা পথে হয়তো অজ্ঞান হয়ে পড়বে; আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ বহু দূর থেকে এসেছে।
আমি যদি এদের ক্ষুধার্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠিয়ে দিই, তাহলে এরা পথেই অজ্ঞান হয়ে পড়বে। কারণ এদের মধ্যে কেউ কেউ বহুদূর থেকে এসেছে।”
4 তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিয়ে বললেন, এই নির্জন জায়গায় এই সব লোকদের খাবারের জন্য কোথা থেকে এত রুটি পাবো?
তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “কিন্তু এই জনহীন প্রান্তরে ওদের তৃপ্ত করার মতো কে এত রুটি জোগাড় করবে?”
5 তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে কয়টি রুটি আছে? তারা বললেন সাতটি।
যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কাছে কতগুলি রুটি আছে?” তাঁরা উত্তর দিলেন, “সাতটি।”
6 পরে তিনি লোকদের জমিতে বসতে নির্দেশ দিলেন এবং সেই সাতখানা রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে ভাঙলেন এবং লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের দিতে লাগলেন; আর শিষ্যরা লোকদের দিলেন।
তিনি সবাইকে মাটির উপরে বসার আদেশ দিলেন। তিনি সেই সাতটি রুটি নিলেন ও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেগুলি ভাঙলেন ও লোকদের পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের দিতে লাগলেন। তাঁরা তাই করলেন।
7 তাঁদের কাছে কয়েকটি ছোট ছোট মাছও ছিল, তিনি ধন্যবাদ দিয়ে সেগুলিও লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের বললেন।
তাঁদের কাছে কয়েকটি ছোটো মাছও ছিল। তিনি সেগুলির জন্যও ধন্যবাদ দিয়ে পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের বললেন।
8 তাতে লোকেরা পেট ভরে খেল এবং সন্তুষ্ট হলো; পরে শিষ্যরা পড়ে থাকা অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া জড়ো করে পুরোপুরি সাত ঝুড়ি ভর্তি করে তুলে নিলেন।
লোকেরা খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। পরে শিষ্যেরা অবশিষ্ট রুটির টুকরো সংগ্রহ করে সাতটি ঝুড়ি পূর্ণ করলেন।
9 লোক ছিল কমবেশ চার হাজার; পরে তিনি তাদের পাঠিয়ে দিলেন।
সেখানে উপস্থিত পুরুষদের সংখ্যা ছিল প্রায় চার হাজার। পরে তিনি তাঁদের বিদায় দিয়ে
10 ১০ আর তখনই তিনি শিষ্যদের সঙ্গে নৌকায় উঠে দলমনুথা অঞ্চলে গেলেন।
তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নৌকায় বসলেন ও দলমনুথা প্রদেশে চলে গেলেন।
11 ১১ তারপরে ফরীশীরা বাইরে এসে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে লাগল, পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে আকাশ থেকে এক চিহ্ন দেখতে চাইল।
ফরিশীরা এসে যীশুকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে লাগল। তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য তারা এক স্বর্গীয় নিদর্শন দেখতে চাইল।
12 ১২ তখন তিনি আত্মায় গভীর নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, এই দিনের লোকেরা কেন চিহ্নের খোঁজ করে? আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই লোকদের কোন চিহ্ন দেখান হবে না।
তিনি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে বললেন, “এই প্রজন্মের লোকেরা কেন অলৌকিক নিদর্শন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, ওদের কোনো নিদর্শন দেখানো হবে না।”
13 ১৩ পরে তিনি তাদেরকে ছেড়ে আবার নৌকায় উঠে অন্য পারে চলে গেলেন।
তারপর তিনি তাদের ত্যাগ করে নৌকায় উঠলেন ও অপর পারে চলে গেলেন।
14 ১৪ আর শিষ্যরা রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন, নৌকায় তাঁদের কাছে কেবল একটি ছাড়া আর রুটি ছিল না।
শিষ্যেরা রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। নৌকায় তাঁদের সঙ্গে কেবলমাত্র একটি রুটি ছাড়া আর কোনো রুটি ছিল না।
15 ১৫ পরে তিনি তাদেরকে আজ্ঞা দিয়ে বললেন, তোমরা ফরীশীদের তাড়ীর বিষয়ে ও হেরোদের খামিরের বিষয়ে সতর্ক থেকো।
যীশু তাঁদের সতর্ক করে দিলেন, “সাবধান, হেরোদ ও ফরিশীদের খামির থেকে সতর্ক থেকো।”
16 ১৬ তাতে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে তর্ক করে বলতে লাগলেন, আমাদের কাছে রুটি নেই বলে উনি এই কথা বলছেন।
এ বিষয়ে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে বললেন, “এর কারণ হল, আমাদের কাছে কোনো রুটি নেই।”
17 ১৭ তা বুঝতে পেরে যীশু তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের রুটি নেই বলে কেন তর্ক করছ? তোমরা কি এখনও কিছু জানতে পারছ না? তোমাদের মন কি কঠিন হয়ে গেছে?
তাঁদের আলোচনার বিষয় অবহিত ছিলেন বলে যীশু তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “রুটি নেই বলে তোমরা তর্কবিতর্ক করছ কেন? তোমরা কি এখনও কিছু দেখতে বা বুঝতে পারছ না? তোমাদের মন কি কঠোর হয়ে গেছে?
18 ১৮ তোমাদের চোখ থাকতেও কি দেখতে পাও না? কান থাকতেও কি শুনতে পাও না? আর মনেও কি পড়ে না?
তোমরা কি চোখ থাকতেও দেখতে পাচ্ছ না, কান থাকতেও শুনতে পাচ্ছ না?
19 ১৯ আমি যখন পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি ভেঙে দিয়েছিলাম, তখন তোমরা কত ঝুড়ি গুঁড়াগাঁড়া ভরে তুলে নিয়েছিলে? তারা বললেন, বারো ঝুড়ি।
আমি যখন পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচটি রুটি ভেঙেছিলাম, তোমরা কত ঝুড়ি রুটির টুকরো তুলে নিয়েছিলে?” তাঁরা উত্তর দিলেন, “বারো ঝুড়ি।”
20 ২০ আর যখন চার হাজার লোকের মধ্যে সাত খানা রুটি ভেঙে দিয়েছিলাম, তখন কত ঝুড়ি গুঁড়াগাঁড়ায় ভরে তুলে নিয়েছিলে?
“আর যখন আমি চার হাজার লোকের জন্য সাতটি রুটি ভেঙেছিলাম, তোমরা কত ঝুড়ি রুটির টুকরো তুলে নিয়েছিলে?” উত্তরে তাঁরা বললেন, “সাত ঝুড়ি।”
21 ২১ তিনি তাঁদের বললেন, তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?
তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?”
22 ২২ তাঁরা বৈৎসৈদাতে আসলেন; আর লোকেরা একজন অন্ধকে তাঁর কাছে এনে তাঁকে কাকুতি মিনতি করল, যেন তিনি তাঁকে ছুলেন।
তাঁরা বেথসৈদায় উপস্থিত হলে কয়েকজন লোক এক দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকে নিয়ে এল ও তাকে স্পর্শ করার জন্য যীশুকে অনুরোধ করল।
23 ২৩ তিনি সেই অন্ধ মানুষটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন; পরে তার চোখে থুথু দিয়ে ও তার উপরে হাত রেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিছু দেখতে পাচ্ছ?
তিনি সেই দৃষ্টিহীন ব্যক্তির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন। যীশু তার দুই চোখে থুতু দিয়ে তার উপর হাত রাখলেন। যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কিছু দেখতে পাচ্ছ কি?”
24 ২৪ সে চোখ তুলে চাইল ও বলল, মানুষ দেখছি, গাছের মতন হেঁটে বেড়াচ্ছে।
সে চোখ তুলে চাইল ও বলল, “আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি, তারা দেখতে গাছের মতো, ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
25 ২৫ তখন তিনি তার চোখের উপর আবার হাত দিলেন, তাতে সে দেখবার শক্তি ফিরে পেল ও সুস্থ হল, পরিষ্কার ভাবে সব দেখতে লাগলো।
যীশু আর একবার তার চোখে হাত রাখলেন। তখন তার দৃষ্টি স্থির হল। আরোগ্য লাভ করে সে সবকিছু স্পষ্ট দেখতে লাগল।
26 ২৬ পরে তিনি তাকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন এবং বললেন, এই গ্রামে আর ঢুকবে না।
যীশু তাকে সোজা বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন ও বললেন, “তুমি এই গ্রামে যেয়ো না।”
27 ২৭ পরে যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সেখানে গিয়ে কৈসরিয়ার ফিলিপী শহরে আসে পাশের গ্রামে গেলেন। আর পথে তিনি নিজের শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে?”
যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা কৈসরিয়া-ফিলিপী অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে পরিভ্রমণ করতে লাগলেন। পথে তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, লোকেরা এ সম্পর্কে কী বলে?”
28 ২৮ তাঁরা তাঁকে বললেন, অনেকে বলে, আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।
তাঁরা উত্তর দিলেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন, অন্যেরা বলে এলিয়, আর কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে কোনও একজন।”
29 ২৯ তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিন্তু তোমরা কি বল? আমি কে? পিতর উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, আপনি সেই খ্রীষ্ট।
“কিন্তু তোমরা কী বলো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী বলো, আমি কে?” পিতর উত্তর দিলেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট।”
30 ৩০ তখন তিনি তাঁর কথা কাউকে বলতে তাঁদেরকে কঠিনভাবে বারণ করে দিলেন।
যীশু তাঁর সম্পর্কে কাউকে কিছু না বলার জন্য তাঁদের সতর্ক করে দিলেন।
31 ৩১ পরে তিনি শিষ্যদের এই বলে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মনুষ্যপুত্রকে অনেক দুঃখ সহ্য করতে হবে। প্রাচীনরা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকেরা আমাকে অগ্রাহ্য করবে, তাকে মেরে ফেলা হবে, আর তৃতীয় দিনের মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠব।
তারপর তিনি তাঁদের শিক্ষা দিতে গিয়ে একথা বললেন যে, মনুষ্যপুত্রকে বিভিন্ন বিষয়ে দুঃখভোগ করতে হবে; প্রাচীনবর্গ, মহাযাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবেন। তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তিন দিন পরে তাঁর পুনরুত্থান হবে।
32 ৩২ এই কথা তিনি পরিষ্কার ভাবে বললেন। তাতে পিতর তাঁকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে ধমক দিয়ে বলতে লাগলেন।
তিনি এ বিষয়ে স্পষ্টরূপে কথা বললেন, কিন্তু পিতর তাঁকে এক পাশে নিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন।
33 ৩৩ কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে নিজের শিষ্যদের দিকে তাকিয়ে পিতরকে ধমক দিলেন এবং বললেন, আমার সামনে থেকে দূর হও শয়তান; কারণ যা ঈশ্বরের, তা নয় কিন্তু যা মানুষের তাই তুমি তোমার মনে ভাবছ।
কিন্তু যীশু যখন ফিরে শিষ্যদের দিকে তাকালেন, তিনি পিতরকে তিরস্কার করলেন। তিনি বললেন, “দূর হও শয়তান! তোমার মনে ঈশ্বরের বিষয়গুলি নেই, কেবল মানুষের বিষয়ই আছে।”
34 ৩৪ পরে তিনি নিজ শিষ্যদের সঙ্গে লোকদেরকেও ডেকে বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক, নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমাকে অনুসরণ করুক।
তারপর তিনি শিষ্যদের সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও তাঁর কাছে ডাকলেন ও বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে।
35 ৩৫ কারণ যে কেউ নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে; কিন্তু যে কেউ আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজে প্রাণ হারায়, সে তা রক্ষা করবে।”
কারণ যে তার জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে, কিন্তু যে তার জীবন আমার ও সুসমাচারের জন্য হারায়, সে তা রক্ষা করবে।
36 ৩৬ মানুষ যদি সমস্ত জগত লাভ করে নিজ প্রাণ হারায়, তবে তার কি লাভ হবে?
বস্তুত, কোনো মানুষ যদি সমস্ত জগতের অধিকার লাভ করে ও তার প্রাণ হারায়, তাহলে তার কী লাভ হবে?
37 ৩৭ কিংবা মানুষ নিজের প্রাণের বদলে কি দিতে পারে?
কিংবা, নিজের প্রাণের পরিবর্তে মানুষ আর কী দিতে পারে?
38 ৩৮ কারণ যে কেউ এই কালের ব্যভিচারী ও পাপী লোকদের মধ্যে আমাকেও আমার বাক্যকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করে, মনুষ্যপুত্র তাকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করবেন, যখন তিনি পবিত্র দূতদের সঙ্গে নিজের প্রতাপে মহিমায় আসবেন।
এই ব্যভিচারী ও পাপিষ্ঠ প্রজন্মের মধ্যে কেউ যদি আমাকে ও আমার বাক্যকে লজ্জার বিষয় বলে মনে করে, মনুষ্যপুত্রও যখন পবিত্র দূতবাহিনীর সঙ্গে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনিও তাকে লজ্জার পাত্র বলে মনে করবেন।”

< মার্ক 8 >