< লুক 7 >

1 লোকদের কাছে নিজের সমস্ত কথা শেষ করে তিনি কফরনাহূমে প্রবেশ করলেন।
যীশু সকলের সামনে এই সমস্ত কথা বলার পর কফরনাহূমে ফিরে গেলেন।
2 সেখানে একজন শতপতির একটি দাস ছিল যে অসুস্থ হয়ে মরবার মত হয়েছিল, সে তাঁর খুবই প্রিয় ছিল।
সেখানে এক শত-সেনাপতির দাস, যে ছিল তাঁর প্রিয়পাত্র, রোগে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল।
3 তিনি যীশুর সংবাদ শুনে ইহূদিদের কয়েক জন প্রাচীনকে তাঁর কাছে অনুরোধ করার জন্য পাঠালেন, যেন তিনি এসে তাঁর দাসকে মরার থেকে রক্ষা করুন।
শত-সেনাপতি যীশুর কথা শুনেছিলেন। তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের কয়েকজন প্রাচীনকে যীশুর কাছে পাঠিয়ে অনুরোধ জানালেন, তিনি যেন এসে তাঁর দাসকে সুস্থ করেন।
4 তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করে বলতে লাগলেন, “আপনি যেন তাঁর জন্য এই কাজ করেন, তিনি এর যোগ্য,”
তাঁরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে কাতর মিনতি জানালেন, “এই ব্যক্তি আপনার সাহায্য পাওয়ার যোগ্য,
5 কারণ তিনি আমাদের জাতিকে ভালবাসেন, আর আমাদের সমাজঘর তিনি তৈরি করে দিয়েছেন।
কারণ তিনি আমাদের জাতিকে ভালোবাসেন, আর আমাদের সমাজভবনটি নির্মাণ করে দিয়েছেন।”
6 যীশু তাঁদের সঙ্গে গেলেন, আর তিনি বাড়ির কাছাকাছি আসতেই শতপতি কয়েক জন বন্ধুদের দিয়ে তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, নিজেকে কষ্ট দেবেন না; কারণ আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার ছাদের নীচে আসেন;
তাই যীশু তাঁদের সঙ্গে গেলেন। যীশু শত-সেনাপতির বাড়ির কাছাকাছি এলে, তিনি তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে যীশুর কাছে বলে পাঠালেন, “প্রভু, আপনি নিজে কষ্ট করবেন না। আপনি আমার বাড়িতে আসবেন আমি এমন যোগ্য নই।
7 সেজন্য আমাকেও আপনার কাছে আসার যোগ্য বলে মনে হলো না; আপনি শুধু মুখে বলুন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হবে।
তাই আমি নিজেকেও আপনার কাছে যাওয়ার যোগ্য মনে করিনি। আপনি কেবলমাত্র মুখে বলুন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হবে।
8 কারণ আমিও অন্যের ক্ষমতার অধীনে নিযুক্ত লোক, আবার সেনাগণ আমার অধীনে; আর আমি তাদের এক জনকে, যাও বললে সে যায় এবং অন্যকে এস বললে সে আসে, আর আমার দাসকে এই কাজ কর বললে সে তা করে।
কারণ আমিও কর্তৃত্বের অধীন একজন মানুষ এবং সৈন্যরা আমার অধীন। আমি তাদের একজনকে ‘যাও’ বললে সে যায়, অপরজনকে ‘এসো’ বললে সে আসে, আবার আমার দাসকে ‘এই কাজটি করো,’ বললে সে তা করে।”
9 এই কথা শুনে যীশু তাঁর বিষয়ে আশ্চর্য্য হলেন এবং যে লোকেরা তাঁর পিছনে আসছিল, তিনি তাদের দিকে ফিরে বললেন, “আমি তোমাদের বলছি, ইস্রায়েলের মধ্যে এত বড় বিশ্বাস কখনো দেখতে পাইনি।”
একথা শুনে যীশু তার সম্পর্কে চমৎকৃত হলেন। তাঁকে যারা অনুসরণ করছিলেন তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “আমি তোমাদের বলছি, ইস্রায়েলের মধ্যেও আমি এমন প্রগাঢ় বিশ্বাস দেখতে পাইনি।”
10 ১০ পরে যাঁদের পাঠান হয়েছিল, তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়ে সেই দাসকে সুস্থ দেখতে পেলেন।
তখন যে লোকদের তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখলেন, দাসটি সুস্থ হয়ে উঠেছে।
11 ১১ কিছু দিন পরে তিনি নায়িন নামে এক শহরে গেলেন এবং তাঁর শিষ্যেরা ও অনেক লোক তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল।
এর কিছুকাল পরেই যীশু নায়িন নামে এক নগরে গেলেন। তাঁর শিষ্যেরা ও বিস্তর লোক তাঁর সঙ্গী হল।
12 ১২ যখন তিনি সেই শহরের ফটকের কাছে এলেন, তখন দেখতে পেলেন, লোকেরা একটি মৃত মানুষকে বয়ে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল; সে তার মায়ের একমাত্র ছেলে এবং সেই মা বিধবা ছিলেন; আর শহরের অনেক লোক তার সঙ্গে ছিল।
তিনি নগরদ্বারের কাছে এসে পৌঁছালেন। তখন দেখলেন, লোকেরা এক মৃত ব্যক্তিকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার মা ছিল বিধবা এবং সে ছিল তার একমাত্র পুত্র। নগরের বিস্তর লোক তাদের সঙ্গে ছিল।
13 ১৩ তাকে দেখে প্রভুর খুবই করুণা হল এবং তাকে বললেন, “কেঁদো না।”
তাকে দেখে প্রভুর হৃদয় তার প্রতি করুণায় ভরে উঠল। তিনি তাকে বললেন, “কেঁদো না।”
14 ১৪ পরে তিনি কাছে গিয়ে খাট স্পর্শ করলেন; আর যারা বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা দাঁড়াল। তিনি বললেন, “হে যুবক, তোমাকে বলছি ওঠো।”
তারপর তিনি এগিয়ে গিয়ে শবদেহ রাখা খাট স্পর্শ করলেন। আর যারা বাহক তারা দাঁড়িয়ে পড়ল। তিনি বললেন, “ওহে যুবক, আমি তোমাকে বলছি, তুমি ওঠো!”
15 ১৫ তাতে সেই মরা মানুষটি উঠে বসল এবং কথা বলতে লাগলো; পরে তিনি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন।
মৃত মানুষটি উঠে বসে কথা বলতে লাগল। যীশু তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন।
16 ১৬ তখন সবাই ভয় পেল এবং ঈশ্বরের গৌরব করে বলতে লাগল, আমাদের মধ্যে একজন মহান ভাববাদী এসেছেন, আর ঈশ্বর নিজের প্রজাদের সাহায্য করেছেন।
এই দেখে তারা সকলে ভয়ে ও ভক্তিতে অভিভূত হল, ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল এবং তারা বলতে লাগল, “আমাদের মধ্যে এক মহান ভাববাদীর উদয় হয়েছে। ঈশ্বর তাঁর প্রজাদের সাহায্য করতে এসেছেন।”
17 ১৭ পরে সমস্ত যিহূদীয়াতে এবং আশেপাশের সমস্ত অঞ্চলে যীশুর বিষয়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়ল।
যীশুর এই কীর্তির কথা যিহূদিয়ার সর্বত্র এবং সন্নিহিত অঞ্চলগুলিতে ছড়িয়ে পড়ল।
18 ১৮ আর যোহনের শিষ্যরা তাঁকে এই সমস্ত বিষয়ে সংবাদ দিল।
যোহনের শিষ্যেরা এই সমস্ত কথা তাঁকে জানাল।
19 ১৯ তাতে যোহন নিজের দুজন শিষ্যকে ডাকলেন ও তাদের প্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করতে পাঠালেন, যাঁর আগমন হবে, সেই ব্যক্তি কি আপনি? না, আমরা অন্য কারও অপেক্ষায় থাকব?
তিনি তাদের দুজনকে ডেকে প্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করতে পাঠালেন, “যাঁর আসার কথা ছিল আপনিই কি তিনি না আমরা অন্য কারও প্রতীক্ষায় থাকব?”
20 ২০ পরে সেই দুই ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহন আমাদের আপনার কাছে এই কথা বলে পাঠিয়েছেন, যাঁর আগমন হবে, সেই ব্যক্তি কি আপনি? না, আমরা অন্য কারও অপেক্ষায় থাকব?”
তারা যখন যীশুর কাছে এল, তারা বলল, “বাপ্তিষ্মদাতা যোহন আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছেন, ‘যে মশীহের আবির্ভাবের কথা ছিল, সে কি আপনি, না আমরা অন্য কারও প্রতীক্ষায় থাকব?’”
21 ২১ সে দিন তিনি অনেক লোককে রোগ, ব্যাধি ও মন্দ আত্মা থেকে সুস্থ করলেন এবং অনেক অন্ধের চোখ ভাল করে দিলেন।
ঠিক সেই সময়ে যীশু বহু রোগগ্রস্ত, পীড়িত ও মন্দ-আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করছিলেন; বহু অন্ধকেও দৃষ্টিশক্তি দান করছিলেন।
22 ২২ পরে তিনি সেই দুই জন দূতকে এই উত্তর দিলেন, “তোমরা যাও এবং যা শুনেছ ও দেখেছ, সেই খবর যোহনকে দাও; অন্ধরা দেখতে পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠ রুগীরা শুদ্ধ হচ্ছে ও বধিরেরা শুনতে পাচ্ছে, মৃতেরা জীবিত হচ্ছে, গরিবদের কাছে সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে।
তাই তিনি সেই বার্তাবহদের উত্তর দিলেন, “তোমরা যা দেখলে, যা শুনলে, ফিরে গিয়ে সেসব যোহনকে জানাও। যারা অন্ধ তারা দৃষ্টি পাচ্ছে, যারা খোঁড়া তারা চলতে পারছে, যারা কুষ্ঠরোগী তারা শুচিশুদ্ধ হচ্ছে, যারা কালা তারা শুনতে পাচ্ছে, যারা মৃত তারা উত্থাপিত হচ্ছে ও যারা দরিদ্র তাদের কাছে সুসমাচার প্রচারিত হচ্ছে।
23 ২৩ আর ধন্য সেই ব্যক্তি, যে আমাকে গ্রহণ করতে বাধা পায় না।”
আর ধন্য সেই ব্যক্তি যে আমার কারণে বাধা পায় না।”
24 ২৪ যোহনের দূতেরা চলে যাওয়ার পর যীশু জনতাকে যোহনের বিষয়ে বলতে লাগলেন, “তোমরা মরূপ্রান্তে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি বাতাসে দুলছে এমন একটি নল?
যোহনের বার্তাবাহকেরা চলে গেলে, যীশু সকলের কাছে যোহনের সম্পর্কে বলতে লাগলেন, “তোমরা মরুপ্রান্তরে কী দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দুলছে এমন কোনো নলখাগড়া?
25 ২৫ তবে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি সুন্দর পোষাক পরা কোনও লোককে? দেখ, যারা দামী পোষাক পরে এবং ভোগবিলাসে এবং সম্মানের সহিত জীবন যাপন করে, তারা রাজবাড়িতে থাকে।
তা না হলে, তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? মোলায়েম পোশাক পরা কোনো মানুষকে? তা নয়, যারা মূল্যবান পোশাক পরে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করে, তারা তো রাজপ্রাসাদে থাকে।
26 ২৬ তবে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি একজন ভাববাদীকে দেখবার জন্য? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি ভাববাদী থেকেও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে।
কিন্তু তোমরা কী দেখতে গিয়েছিলে? কোনো ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলি, ভাববাদীর চেয়েও মহত্তর একজনকে।
27 ২৭ ইনি সেই ব্যক্তি,” যাঁর বিষয়ে লেখা আছে, “দেখ আমি আমার দূতকে তোমার আগে পাঠাব, সে তোমার আগে তোমার রাস্তা তৈরী করবে।
ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে লেখা আছে: “‘আমি আমার বার্তাবাহককে তোমার আগে পাঠাব, যে তোমার আগে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে।’
28 ২৮ আমি তোমাদের বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভে যারা জন্ম গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে যোহন থেকে মহান কেউই নেই; তবুও ঈশ্বরের রাজ্যে সবথেকে ছোট যে ব্যক্তি, সে তাঁর থেকে মহান।”
আমি তোমাদের বলছি, নারীর গর্ভে জন্মেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে যোহনের চেয়ে মহান আর কেউই নেই; তবুও ঈশ্বরের রাজ্যে যে নগণ্যতম সেও তাঁর চেয়ে মহান।”
29 ২৯ আর সমস্ত লোক ও কর আদায়কারীরা যারা যোহনের বাপ্তিষ্মের বাপ্তাইজিত হয়েছে এই কথা শুনে তারা ঈশ্বরকে ধার্মিক বলে স্বীকার করল;
সব লোক, এমনকি, কর আদায়কারীরাও, যীশুর শিক্ষা শুনে ঈশ্বরের পথকে সঠিক বলে স্বীকার করল, কারণ তারা বুঝতে পারল, যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম নিয়ে তারা ভুল করেনি।
30 ৩০ কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার গুরুরা যারা যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম নেয়নি তারা নিজেদের বিষয়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করল।
কিন্তু ফরিশীরা ও শাস্ত্রবিদরা তাদের বিষয়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনা অগ্রাহ্য করল, কারণ তারা যোহনের কাছে বাপ্তিষ্ম গ্রহণ করেনি।
31 ৩১ অতএব আমি কার সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? তারা কি রকম?
“তাহলে, কার সঙ্গে আমি এই প্রজন্মের লোকদের তুলনা করতে পারি? তারা কাদের মতো?
32 ৩২ তারা এমন ছোট বালকের মতো, যারা বাজারে বসে একজন অন্য এক জনকে ডেকে বলল, আমরা তোমাদের কাছে বাঁশী বাজালাম, তোমরা নাচলে না; এবং আমরা দুঃখ প্রকাশ করলাম, তোমরা কাঁদলে না;
তারা সেইসব ছেলেমেয়ের মতো, যারা হাটেবাজারে বসে পরস্পরকে সম্বোধন করে বলে, “‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, কিন্তু তোমরা নৃত্য করলে না; আমরা শোকগাথা গাইলাম, কিন্তু তোমরা বিলাপ করলে না।’
33 ৩৩ কারণ বাপ্তিষ্মদাতা যোহন এসে রুটি খান না, আঙ্গুর রসও পান করেন না, আর তোমরা বল, সে ভূতগ্রস্ত।
বাপ্তিষ্মদাতা যোহন এসে রুটি খেলেন না বা দ্রাক্ষারস পান করলেন না, কিন্তু তোমরা বললে, ‘তিনি ভূতগ্রস্ত।’
34 ৩৪ মনুষ্যপুত্র এসে ভোজন পান করেন, আর তোমরা বল, ঐ দেখ, একজন পেটুক ও মাতাল, কর আদায়কারীদের ও পাপীদের বন্ধু।
মনুষ্যপুত্র এলেন, খাওয়াদাওয়া করলেন, কিন্তু তোমরা বললে, ‘এই দেখো একজন পেটুক ও মদ্যপ, কর আদায়কারী ও পাপীদের বন্ধু।’
35 ৩৫ কিন্তু প্রজ্ঞা তার সমস্ত সন্তানের মাধ্যমেই নির্দোষ বলে প্রমাণিত হলেন।
কিন্তু প্রজ্ঞা তার অনুসরণকারীদের আচরণের দ্বারাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়।”
36 ৩৬ আর ফরীশীদের মধ্যে একজন যীশুকে তার সঙ্গে ভোজন করতে নিমন্ত্রণ করল। তাতে তিনি সেই ফরীশীর বাড়িতে গিয়ে ভোজনে বসলেন।
আর একজন ফরিশী আহার করার জন্য যীশুকে নিমন্ত্রণ করল। যীশু তার বাড়িতে গেলেন এবং খাবারের সময় আসনে হেলান দিয়ে বসলেন।
37 ৩৭ আর দেখ, সেই শহরে এক পাপী স্ত্রীলোক ছিল; সে যখন জানতে পারল, তিনি সেই ফরীশীর বাড়িতে খেতে বসেছেন, তখন একটি শ্বেত পাথরের পাত্রে সুগন্ধি তেল নিয়ে আসল
সেই নগরে একজন পাপীষ্ঠা নারী ছিল। যীশু ফরিশীর বাড়িতে খাবার খাচ্ছেন শুনে, সে একটি শ্বেতস্ফটিকের পাত্রে সুগন্ধি তেল নিয়ে এল।
38 ৩৮ এবং পিছন দিকে তাঁর পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে কেঁদে কেঁদে সে চোখের জলে তাঁর পা ভেজাতে লাগল এবং তার মাথার চুল দিয়ে পা মুছিয়ে দিল, আর তাঁর পায়ে চুমু দিয়ে সেই সুগন্ধি তেলে অভিষেক করতে লাগল।
সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে চোখের জলে তাঁর পা-দুটি ভিজিয়ে দিতে লাগল। তারপর সে তার চুল দিয়ে তাঁর পা দুটিকে মুছিয়ে দিয়ে চুম্বন করল এবং সেই সুগন্ধি তেল ঢেলে দিল।
39 ৩৯ এই দেখে, যে ফরীশী তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিল, সে মনে মনে বলল, এ যদি ভাববাদী হত, তবে নিশ্চয় জানতে পারত, একে যে স্পর্শ করছে, সে কে এবং কি ধরনের স্ত্রীলোক, কারণ সে পাপী।
এই ঘটনা দেখে আমন্ত্রণকর্তা ফরিশী মনে মনে ভাবল, “এই লোকটি যদি ভাববাদী হত, তাহলে বুঝতে পারত, কে তাঁকে স্পর্শ করছে এবং সে কী প্রকৃতির নারী! সে তো এক পাপীষ্ঠা!”
40 ৪০ তখন যীশু উত্তরে তাকে বললেন, “শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।” সে বলল, “গুরু বলুন।”
যীশু তাকে উত্তর দিলেন, “শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।” শিমোন বলল, “গুরুমহাশয়, বলুন।”
41 ৪১ এক মহাজনের কাছে দুজন ঋণী ছিল; এক জনের পাঁচশো দিনারী ঋণ ছিল, আর একজন পঞ্চাশ।
“এক মহাজনের কাছে দুজন ব্যক্তি ঋণ নিয়েছিল। একজন নিয়েছিল পাঁচশো দিনার, অন্যজন পঞ্চাশ দিনার।
42 ৪২ তাদের শোধ করার ক্ষমতা না থাকার জন্য তিনি দুজনকেই ক্ষমা করলেন। তাদের মধ্যে কে তাঁকে বেশি ভালবাসবে?
তাদের কারোরই সেই পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না, তাই তিনি দুজনেরই ঋণ মকুব করে দিলেন। এখন তাদের মধ্যে কে তাঁকে বেশি ভালোবাসবে?”
43 ৪৩ শিমোন বলল, “আমার মনে হয়, যার বেশি ঋণ ক্ষমা করা হয়েছিল, সেই।” তিনি বললেন, “ঠিক বিচার করেছ।”
শিমোন উত্তর দিল, “আমার মনে হয়, যার বেশি ঋণ মকুব করা হয়েছিল, সেই।” যীশু বললেন, “তুমি যথার্থ বিচার করেছ।”
44 ৪৪ আর তিনি সেই স্ত্রীলোকটীর দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, “এই স্ত্রীলোকটীকে দেখছ? আমি তোমার বাড়িতে প্রবেশ করলাম, তুমি আমার পা ধোয়ার জল দিলে না, কিন্তু এই স্ত্রীলোকটী চোখের জলে আমার পা ভিজিয়েছে ও নিজের চুল দিয়ে পা মুছিয়ে দিয়েছে।
তারপর তিনি সেই নারীর দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, “তুমি এই স্ত্রীলোককে দেখতে পাচ্ছ, আমি তোমার বাড়িতে প্রবেশ করলাম, অথচ তুমি আমাকে পা-ধোওয়ার জল দিলে না। কিন্তু ও তার চোখের জলে আমার পা ভিজিয়ে দিল, আর তার চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল।
45 ৪৫ তুমি আমাকে চুমু দিলে না, কিন্তু আমি ভিতরে আসার পর থেকে, এ আমার পায়ে চুমু দিয়েই চলেছে, থামেনি।
তুমি আমাকে একবারও চুম্বন করলে না, কিন্তু আমি এই বাড়িতে প্রবেশ করার সময় থেকেই এই নারী আমার পা-দুখানি চুম্বন করা থেকে বিরত হয়নি।
46 ৪৬ তুমি তেল দিয়ে আমার মাথা অভিষেক করলে না, কিন্তু এ সুগন্ধি জিনিস আমার পায়ে মাখিয়েছে।
তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না, কিন্তু ও আমার পায়ে সুগন্ধি তেল ঢেলে অভিষেক করল।
47 ৪৭ তাই, তোমাকে বলছি, এর বেশি পাপ থাকলেও, তার ক্ষমা হয়েছে; কারণ সে বেশি ভালবেসেছে; কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্প ভালবাসে।
তাই আমি তোমাকে বলছি, যেহেতু তার অজস্র পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, সে আমাকে বেশি ভালোবেসেছে। কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্পই ভালোবাসে।”
48 ৪৮ পরে তিনি সেই স্ত্রীলোককে বললেন, তোমার সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়েছে।”
তারপর যীশু সেই নারীকে বললেন, “তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হয়েছে।”
49 ৪৯ তখন যারা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিল, তারা মনে মনে বলতে লাগল, “এ কে যে পাপও ক্ষমা করে?”
অন্য অতিথিরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল “ইনি কে, যে পাপও ক্ষমা করেন?”
50 ৫০ কিন্তু তিনি সেই মহিলাটিকে বললেন, “তোমার বিশ্বাস তোমাকে উদ্ধার করেছে শান্তিতে চলে যাও।”
যীশু সেই নারীকে বললেন, “তোমার বিশ্বাসই তোমাকে পরিত্রাণ দিয়েছে, শান্তিতে চলে যাও।”

< লুক 7 >