< লুক 17 >

1 যীশু তার শিষ্যদের আরও বললেন, “পাপের প্রলোভন আসবে না, এমন হতে পারে না; কিন্তু ধিক তাকে, যার মাধ্যমে তা আসে!
যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “পাপের প্রলোভন নিশ্চিতভাবে আসবে, কিন্তু ধিক্ তাকে, যার মাধ্যমে সেসব আসবে।
2 এই ছোটদের মধ্যে এক জনকে যদি কেউ পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তার গলায় ভারী পাথর বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া বরং তার পক্ষে ভালো।
যে এই ক্ষুদ্রজনেদের একজনকেও পাপে প্রলোভিত করে, তার গলায় জাঁতা বেঁধে তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করাই বরং তার পক্ষে ভালো।
3 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান থাক। তোমার ভাই যদি পাপ করে, তাকে ধমক দাও; আর সে যদি সেই অন্যায় থেকে মন ফেরায় তবে তাকে ক্ষমা কর।
তাই নিজেদের সম্পর্কে সতর্ক থেকো। “তোমার ভাই পাপ করলে তাকে তিরস্কার কোরো এবং সে অনুতপ্ত হলে, তাকে ক্ষমা কোরো।
4 আর যদি সে এক দিনের র মধ্যে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবার তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, আমি এই অন্যায় থেকে মন ফেরালাম, তবে তাকে ক্ষমা কর।”
সে যদি দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে এবং সাতবারই ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তাহলেও তাকে ক্ষমা কোরো।”
5 আর প্রেরিতরা প্রভুকে বললেন, “আমাদের বিশ্বাস বাড়িয়ে দিন।”
প্রেরিতশিষ্যেরা প্রভুকে বললেন, “আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করুন।”
6 প্রভু বললেন, “একটি সরষে দানার মত বিশ্বাস যদি তোমাদের থাকে, তবে, তুমি শিকড়শুদ্ধ উঠে গিয়ে নিজে সমুদ্রে পুঁতে যাও একথা তুঁত গাছটিকে বললে ও তোমাদের কথা মানবে।”
তিনি বললেন, “যদি তোমাদের সর্ষে বীজের মতো অতি সামান্য বিশ্বাস থাকে, তাহলে এই তুঁত গাছটিকে তোমরা বলতে পারো, ‘যাও, সমূলে উপড়ে দিয়ে সমুদ্রে রোপিত হও,’ তাহলে সেরকমই হবে।
7 আর তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যার দাস হাল বয়ে কিংবা ভেড়া চরিয়ে মাঠ থেকে এলে সে তাকে বলবে, “তুমি এখনই এসে খেতে বস?
“মনে করো, তোমাদের কোনো একজনের এক দাস আছে। সে চাষবাস বা মেষপালের তত্ত্বাবধান করে। সে মাঠ থেকে ফিরে এলে তার মনিব কি তাকে বলবে, ‘এখন এসে খেতে বসো’?
8 বরং তাকে কি বলবে না, আমি কি খাব, তার আয়োজন কর এবং আমি যতক্ষণ খাওয়া দাওয়া করি, ততক্ষণ কোমর বেঁধে আমার সেবাযত্ন কর, তারপর তুমি খাওয়া দাওয়া করবে?
বরং, সে কি তাকে বলবেন না, ‘আমার খাবারের আয়োজন করো; আমি যতক্ষণ খাওয়াদাওয়া করব, আমার সেবাযত্ন করার জন্য প্রস্তুত থাকো, তারপর তুমি খাওয়াদাওয়া করতে পারো’?
9 সেই দাস আদেশ পালন করল বলে সে কি তার ধন্যবাদ করে?
তার কথামতো কাজ করার জন্য তিনি কি সেই দাসকে ধন্যবাদ দেবেন?
10 ১০ সেইভাবে সব আদেশ পালন করলে পর তোমারও বোলো আমার অযোগ্য দাস, যা করতে বাধ্য ছিলাম, তাই করলাম।”
সেরকমই, তোমাদের যা করতে বলা হয়েছিল, তার সবকিছু পালন করার পর তোমরাও বোলো, ‘আমরা অযোগ্য দাস, যা করতে বাধ্য ছিলাম শুধুমাত্র তাই করেছি।’”
11 ১১ যিরুশালেমে যাবার দিনের তিনি শমরিয়া ও গালীল দেশের মধ্যে দিয়ে গেলেন।
জেরুশালেমের দিকে যাওয়ার সময় যীশু শমরিয়া ও গালীল প্রদেশের মধ্যবর্তী সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিলেন।
12 ১২ তিনি কোনো এক গ্রামে ঢুকছেন, এমন দিনের দশ জন কুষ্ঠরোগী তাঁর সামনে পড়ল, তারা দূরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল,
তিনি যখন একটি গ্রামে প্রবেশ করছেন, দশজন কুষ্ঠরোগী তাঁর কাছে এল। তারা দূরে দাঁড়িয়ে রইল
13 ১৩ “যীশু, নাথ, আমাদের দয়া করুন!”
এবং উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে বলল, “যীশু, প্রভু, আমাদের প্রতি দয়া করুন!”
14 ১৪ তাহাদের দেখে তিনি বললেন, “যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও। যেতে যেতে তারা শুদ্ধ হল।”
তাদের দেখে তিনি বললেন, “যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও।” আর যেতে যেতেই তারা শুচিশুদ্ধ হয়ে গেল।
15 ১৫ তখন তাদের একজন নিজেকে সুস্থ দেখে চিৎকার করে ঈশ্বরের গৌরব করতে করতে ফিরে এলো,
তাদের মধ্যে একজন যখন দেখল, সে সুস্থ হয়ে গেছে, সে ফিরে এসে উচ্চকণ্ঠে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল।
16 ১৬ এবং যীশুর পায়ের উপর উপুড় হয়ে তাঁর ধন্যবাদ করতে লাগল; সেই ব্যক্তি শমরীয়।
সে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাল। সে ছিল একজন শমরীয়।
17 ১৭ যীশু উত্তর করে বললেন, “দশ জন কি শুদ্ধ সুস্থ হয়নি? তবে সেই নয় জন কোথায়?
যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “দশজনই কি শুচিশুদ্ধ হয়নি? অন্য নয়জন কোথায়?
18 ১৮ ঈশ্বরের গৌরব করবার জন্য ফিরে এসেছে, এই অন্য জাতির লোকটি ছাড়া এমন কাউকেও কি পাওয়া গেল না?”
ফিরে এসে ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এই বিদেশি ছাড়া আর কাউকে কি পাওয়া গেল না?”
19 ১৯ পরে তিনি তাকে বললেন, “উঠ এবং যাও, তোমার বিশ্বাস তোমাকে সুস্থ করেছে।”
তারপর তিনি তাকে বললেন, “ওঠো, চলে যাও। তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে।”
20 ২০ ফরীশীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “ঈশ্বরের রাজ্য কখন আসবে?” তিনি উত্তর করে তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য চিহ্নের সাথে আসে না;
এক সময় ফরিশীরা ঈশ্বরের রাজ্যের আগমনকাল সম্বন্ধে জানতে চাইল। যীশু উত্তর দিলেন, “সতর্ক দৃষ্টি রাখলেই যে ঈশ্বরের রাজ্যের আগমন দেখতে পাওয়া যাবে, তেমন নয়।
21 ২১ আর লোকে বলবে না, দেখ, এই জায়গায়! ঐ জায়গায়! কারণ দেখ, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের মধ্যেই আছে।”
লোকেরা বলবেও না, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এখানে’ বা ‘ওখানে,’ কারণ ঈশ্বরের রাজ্য বিরাজ করছে তোমাদের মধ্যেই।”
22 ২২ আর তিনি শিষ্যদের বললেন, “এমন দিন আসবে, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রের রাজত্বের দিনের র এক দিন দেখতে ইচ্ছা করবে, কিন্তু দেখতে পাবে না।
তারপর তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এমন এক সময় আসছে, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রের রাজত্বের একটি দিন দেখার আকাঙ্ক্ষা করবে, কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাবে না।
23 ২৩ তখন লোকেরা তোমাদের বলবে, দেখ, ঐ জায়গায়! দেখ, এই জায়গায়! যেও না, তাদের পিছনে পিছনে যেও না।
লোকেরা তোমাদের বলবে, ‘ওই যে, তিনি ওখানে’ অথবা ‘এখানে!’ তোমরা তাদের পিছনে ছুটে বেড়িয়ো না।
24 ২৪ কারণ বিদ্যুৎ যেমন আকাশের নীচে এক দিক থেকে চমকালে, আকাশের নীচে অন্য দিক পর্যন্ত আলোকিত হয়, মনুষ্যপুত্র নিজের দিনের সেরূপ হবেন।
কারণ বিদ্যুৎ রেখা যেমন আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে উদ্ভাসিত হয়ে আকাশকে আলোকিত করে, তেমনই মনুষ্যপুত্রও তাঁর দিনে হবেন।
25 ২৫ কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখভোগ করতে এবং এই দিনের র লোকরা তাঁকে অগ্রাহ্য করবে।
কিন্তু প্রথমে তাঁকে অবশ্যই বহু যন্ত্রণাভোগ করতে হবে এবং এই প্রজন্মের মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে হবে।
26 ২৬ আর নোহের দিনের যেমন হয়েছিল, মনুষ্যপুত্রের দিনের ও তেমনি হবে।
“নোহের সময় যেমন ঘটেছিল, মনুষ্যপুত্রের সময়েও সেরকম হবে।
27 ২৭ লোকে খাওয়া দাওয়া করত, বিবাহ করত, বিবাহিতা হত, যে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে প্রবেশ করলেন, আর জলপ্লাবন এসে সবাইকে ধ্বংস করল।
নোহ জাহাজে প্রবেশ করা পর্যন্ত লোকেরা খাওয়াদাওয়া করত, বিবাহ করত ও তাদের বিবাহ দেওয়া হত। তারপর মহাপ্লাবন এসে তাদের সবাইকে ধ্বংস করে দিল।
28 ২৮ সেইভাবে লোটের দিনের যেমন হয়েছিল লোকে খাওয়া দাওয়া, কেনাবেচা, গাছ লাগানো ও বাড়ি তৈরী করত;
“লোটের সময়েও একই ঘটনা ঘটেছিল। লোকেরা খাওয়াদাওয়া করছিল, কেনাবেচা, কৃষিকাজ ও গৃহ নির্মাণে ব্যস্ত ছিল।
29 ২৯ কিন্তু যেদিন লোট সদোম থেকে বাইরে গেলেন, সেই দিন আকাশ থেকে আগুনও গন্ধকের বৃষ্টি পড়ে সবাইকে ধ্বংস করল
কিন্তু লোট যেদিন সদোম ত্যাগ করলেন, সেদিন আকাশ থেকে আগুন ও গন্ধকের বৃষ্টি নেমে তাদের সবাইকে ধ্বংস করে দিল।
30 ৩০ মনুষ্যপুত্র যেদিন প্রকাশিত হবেন, সে দিনের ও এই রকমই হবে।
“মনুষ্যপুত্র যেদিন প্রকাশিত হবেন, সেদিনও ঠিক এরকমই হবে।
31 ৩১ সেই দিন যে কেউ ছাদের উপরে থাকবে, আর তার জিনিসপত্র ঘরে থাকবে, সে তা নেবার জন্য নীচে না নামুক; আর তেমনি যে কেউ মাঠে থাকবে, সেও ফিরে না আসুক।
সেদিন ছাদের উপরে যে থাকবে, সে যেন ঘরের ভিতরে জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য নিচে নেমে না আসে। সেরকমই, মাঠে যে থাকবে, সে যেন কোনোকিছু নেওয়ার জন্য ফিরে না যায়।
32 ৩২ লোটের স্ত্রীর কথা মনে কর।
লোটের স্ত্রীর কথা মনে করো!
33 ৩৩ যে কেউ নিজের প্রাণ লাভ করতে চেষ্টা করে, সে তা হারাবে; আর যে কেউ প্রাণ হারায়, সে তা বাঁচাবে।
যে নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে; আবার যে তার জীবন হারায়, সে তা রক্ষা করবে।
34 ৩৪ আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রিতে দুজন এক বিছানায় থাকবে, তাদের মধ্যে থেকে এক জনকে নেওয়া হবে এবং অন্য জনকে ফেলে যাওয়া হবে।
আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রে একই বিছানায় দুজন শুয়ে থাকবে; তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।
35 ৩৫ দুটি স্ত্রীলোক একসাথে যাঁতা পিষবে; তাদের মধ্যে থেকে এক জনকে নেওয়া হবে এবং অন্য জনকে ফেলে যাওয়া হবে।”
দুজন মহিলা একসঙ্গে জাঁতা পেষণ করবে; একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।
36 ৩৬ তখন তারা উত্তর করে তাঁকে বললেন,
দুজন মাঠে থাকবে; একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্যজনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।”
37 ৩৭ “হে প্রভু, কোথায়?” তিনি তাদের বললেন, “যেখানে মৃতদেহ, সেখানেই শকুন জড়ো হয়।”
তারা জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় প্রভু?” তিনি বললেন, “যেখানে মৃতদেহ, শকুনের ঝাঁক সেখানেই জড়ো হবে।”

< লুক 17 >