< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 9 >

1 পরে যিরুব্বালের ছেলে অবীমেলক শিখিমে নিজের মায়ের আত্মীয়দের কাছে গিয়ে তাদেরকে এবং নিজের মায়ের পিতৃকুলের সব গোষ্ঠীকে এই কথা বলল; নিবেদন করি,
যিরুব্বায়ালের ছেলে অবীমেলক শিখিমে তার মামাদের কাছে গিয়ে তাদের এবং তার মায়ের গোষ্ঠীভুক্ত সব লোকজনকে বলল,
2 তোমরা শিখিমে সব বাড়ির লোকেদের এই কথা বল, তোমাদের পক্ষে ভাল কি? তোমাদের ওপরে যিরুব্বালের সব ছেলের অর্থাৎ সত্তর জনের কর্তৃত্ব ভাল, না এক জনের কর্তৃত্ব ভাল? আর এটাও মনে কর, আমি তোমাদের অস্থি ও তোমাদের মাংস।
“তোমরা শিখিমের সব নাগরিককে জিজ্ঞাসা করো, ‘তোমাদের পক্ষে কোনটি ভালো: তোমাদের উপরে যিরুব্বায়ালের সত্তরজন ছেলের কর্তৃত্ব করা, না শুধু একজনের?’ মনে রেখো, আমি তোমাদের রক্তমাংসের আত্মীয়।”
3 আর তাঁর মাতার আত্মীয়েরা তাঁর পক্ষে শিখিমের সব বাড়ির লোকেদের ঐ সব কথা বললে অবীমেলকের অনুগামী হতে তাদের মনে ইচ্ছা হল; কারণ তারা বলল, উনি আমাদের আত্মীয়।
তার মায়ের আত্মীয়েরা তার এই কথাগুলি শিখিমের লোকদের কাছে বলাতে তারা অবীমেলকের অনুগামী হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল, কারণ তারা বলল, “উনি তো আমাদের আত্মীয়।”
4 আর তারা বাল্‌-বরীতের মন্দির থেকে তাঁকে সত্তর [থান] রূপা দিল; তাতে অবীমেলক অসার ও উৎশৃঙ্খল লোকদেরকে ঐ রূপার বেতন দিলে তারা তাঁর অনুগামী হল।
তারা বায়াল-বরীতের মন্দির থেকে সত্তর শেকল রুপো এনে অবীমেলককে উপহার দিল, এবং অবীমেলক বেপরোয়া ও নীচমনা কিছু লোককে ভাড়া করার জন্য সেই রুপো ব্যবহার করল, ও তারা তার অনুগামী হল।
5 পরে সে অফ্রায় বাবার বাড়িতে গিয়ে নিজের ভাইদেরকে অর্থাৎ যিরুব্বালের সত্তর জন ছেলেকে এক পাথরের ওপরে হত্যা করল; কেবল যিরুব্বালের ছোট ছেলে যোথম লুকিয়ে থাকাতে বেঁচে গেল।
সে অফ্রায় তার বাবার ঘরে গিয়ে যিরুব্বায়ালের ছেলেদের, তার সত্তরজন ভাইকে একটি পাষাণ-পাথরের উপরে হত্যা করল। কিন্তু যিরুব্বায়ালের ছোটো ছেলে যোথম লুকিয়ে পালিয়েছিলেন।
6 পরে শিখিমের সব বাড়ির লোক এবং মিল্লোর সব লোক জড়ো হয়ে শিখিমস্থ স্তম্ভের এলোন গাছের কাছে গিয়ে অবীমেলককে রাজা করল।
পরে শিখিম ও বেথ-মিল্লোর সব নাগরিক শিখিমের সেই বিশাল গাছটির পাশে অবস্থিত স্তম্ভের কাছে একত্রিত হয়ে অবীমেলককে রাজপদে অভিষিক্ত করল।
7 আর লোকেরা যোথমকে এই সংবাদ দিলে সে গিয়ে গরিষীম পর্বতের চূড়াতে দাঁড়িয়ে জোরে চিত্কার করে ডেকে তাদেরকে বলল, হে শিখিমের বাড়ির লোক সকল, আমার কথা শোনো, শুনলে ঈশ্বর তোমাদের কথা শুনবেন।
যোথম একথা শুনতে পেয়ে গরিষীম পর্বতের চূড়ায় গিয়ে উঠলেন এবং চিৎকার করে তাদের বললেন, “হে শিখিমের নাগরিকেরা, তোমরা আমার কথা শোনো, যেন ঈশ্বরও তোমাদের কথা শোনেন।
8 একবার বৃক্ষেরা নিজেদের উপরে অভিষেক করার জন্য রাজার খোঁজে গেল। তারা জিতবৃক্ষকে বলল, তুমি আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
একদিন গাছেরা তাদের জন্য একজন রাজাকে অভিষিক্ত করতে গেল। তারা জলপাই গাছকে বলল, ‘তুমি আমাদের রাজা হও।’
9 জিতবৃক্ষ তাদেরকে বলল, আমার যে তেলের জন্য ঈশ্বর ও মানুষেরা আমার গৌরব করেন, তা ত্যাগ করে আমি কি বৃক্ষদের ওপরে দুলতে থাকব?
“কিন্তু জলপাই গাছ তাদের বলল, ‘আমার যে তেল দ্বারা দেবতা ও মানুষেরা সম্মানিত হয়, তা ত্যাগ করে আমি কি গাছদের উপর দুলতে থাকব?’
10 ১০ পরে বৃক্ষরা ডুমুরবৃক্ষকে বলল, তুমি এসে আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
“তারপর, গাছেরা ডুমুর গাছকে বলল, ‘এসো, তুমি আমাদের রাজা হও।’
11 ১১ ডুমুরবৃক্ষ তাদেরকে বলল, আমি কি নিজের মিষ্টতা ও উত্তম ফল ত্যাগ করে বৃক্ষদের উপরে দুলতে থাকবে?
“কিন্তু ডুমুর গাছ উত্তর দিল, ‘আমি কি গাছেদের উপর দুলবার জন্য আমার ভালো ও মিষ্টি ফল উৎপন্ন করা ছেড়ে দেব?’
12 ১২ পরে বৃক্ষরা আঙ্গুর গাছকে বলল, তুমি এসে আমাদের ওপরে রাজত্ব কর।
“গাছেরা তখন দ্রাক্ষালতাকে বলল, ‘তুমি এসে আমাদের উপর রাজত্ব করো।’
13 ১৩ দ্রাক্ষালতা তাদেরকে বলল, আমার যে রস ঈশ্বরকে ও মানুষদেরকে খুশি করে, তা ত্যাগ করে আমি কি বৃক্ষদের ওপরে দুলতে থাকবে?
“কিন্তু দ্রাক্ষালতা বলল, ‘আমার যে দ্রাক্ষারস মানুষ ও দেবতাদের আমোদিত করে, তা উৎপন্ন না করে, আমি কি গাছেদের উপর দুলবো?’
14 ১৪ পরে সমস্ত বৃক্ষ কাঁটাযুক্ত বৃক্ষকে বলল, তুমি এসে আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
“শেষে সব গাছ কাঁটাঝোপকে বলল, ‘তুমি এসো, আমাদের রাজা হও।’
15 ১৫ কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ সেই বৃক্ষদেরকে বলল, তোমরা যদি নিজেদের ওপরে সত্যিই আমাকে রাজা বলে অভিষেক কর, তবে এসে আমার ছায়ার শরণ নাও, তবে এই কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ থেকে আগুন বের হয়ে লিবানোনের এরস বৃক্ষদেরকে পুড়িয়ে দিক।
“কাঁটাঝোপ গাছেদের বলল, ‘তোমরা যদি সত্যিই আমাকে তোমাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করতে চাও, তবে এসো ও আমার ছায়ায় আশ্রয় নাও; কিন্তু যদি না নাও, তবে এই কাঁটাঝোপ থেকে আগুন বের হয়ে এসে লেবাননের দেবদারু গাছগুলিকে গ্রাস করুক।’
16 ১৬ এখন অবীমেলককে রাজা করাতে তোমরা যদি সত্য ও যথার্থ আচরণ করে থাক এবং যদি যিরুব্বালের ও তাঁর কুলের প্রতি ভালো আচরণ করে থাক, ও তাঁর হাতের উপকারানুসারে তাঁর প্রতি ব্যবহার করে থাক;
“অবীমেলককে রাজা করে তোমরা কি সম্মানজনক ও যথার্থ আচরণ করেছ? তোমরা কি যিরুব্বায়াল ও তাঁর পরিবারের প্রতি সদাচরণ করেছ? তোমাদের এই ব্যবহার কি তাঁর প্রাপ্য ছিল?
17 ১৭ কারণ আমার বাবা তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, ও প্রাণপণ চেষ্টা করে মিদিয়নের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করেছিলেন;
মনে রেখো যে আমার বাবা তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মিদিয়নীয়দের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করেছিলেন।
18 ১৮ কিন্তু তোমরা আজ আমার পিতৃকুলের বিরুদ্ধে উঠে এক পাথরের ওপরে তার সত্তর জন ছেলেকে হত্যা করলে, ও তাঁর দাসীর ছেলে অবীমেলককে নিজেদের ভাই বলে শিকিমের নেতাদের ওপরে রাজা করলে;
কিন্তু আজ তোমরা আমার বাবার পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছো। একটিই পাথরের উপরে তোমরা তাঁর সত্তরজন ছেলেকে হত্যা করেছ এবং তাঁর ক্রীতদাসীর ছেলে অবীমেলককে শিখিমের নাগরিকদের উপরে রাজা করেছ, যেহেতু সে তোমাদের আত্মীয়।
19 ১৯ আজ যদি তোমরা যিরুব্বালের ও তাঁর কুলের প্রতি সত্য ও যথার্থ আচরণ করে থাক, তবে অবীমেলকের বিষয়ে আনন্দ কর এবং সেও তোমাদের বিষয় আনন্দ করুন।
অতএব তোমরা কি আজ যিরুব্বায়াল ও তাঁর পরিবারের প্রতি সম্মানজনক ও যথার্থ আচরণ করেছ? যদি তা করে থাকো, তবে অবীমেলককে নিয়ে তোমরা আনন্দ করো, এবং সেও তোমাদের নিয়ে আনন্দ করুক!
20 ২০ কিন্তু তা যদি না হয়, তবে অবীমেলক থেকে আগুন বেরিয়ে শিখিমের লোকদেরকে ও মিল্লোর লোকদেরকে পুড়িয়ে দিক; আবার শিখিমের লোকদের থেকে মিল্লোর লোকদের থেকে আগুন বের হয়ে অবীমেলককে পুড়িয়ে দিক।
কিন্তু যদি তা না করে থাকো, তবে অবীমেলকের কাছ থেকে আগুন বের হয়ে আসুক এবং তোমাদের, ও শিখিম ও বেথ-মিল্লোর নাগরিকদের গ্রাস করুক, এবং তোমাদের ও শিখিম ও বেথ-মিল্লোর নাগরিকদের কাছ থেকেও আগুন বের হয়ে আসুক ও অবীমেলককে গ্রাস করুক!”
21 ২১ পরে যোথম দৌড়িয়ে পালিয়ে গেল, সে বেরে গেল এবং তার ভাই অবীমেলকের ভয়ে সেই জায়গায় বাস করল।
পরে যোথম পালিয়ে গেলেন ও বেরে পৌঁছালেন এবং সেখানেই বসবাস করতে লাগলেন যেহেতু তিনি তাঁর ভাই অবীমেলককে ভয় পেয়েছিলেন।
22 ২২ অবীমেলক ইস্রায়েলের উপরে তিন বছর কর্তৃত্ব করল।
অবীমেলক ইস্রায়েলীদের উপর তিন বছর রাজত্ব করার পর,
23 ২৩ পরে ঈশ্বর অবীমেলকের ও শিখিমের লোকদের মধ্যে এক মন্দ আত্মা পাঠালেন, তাতে শিখিমের লোকেরা অবীমেলকের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করল;
ঈশ্বর অবীমেলক ও শিখিমের নাগরিকদের মধ্যে এমন শত্রুতা উৎপন্ন করলেন যে তারা অবীমেলকের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করল।
24 ২৪ যেন যিরুব্বালের সত্তরটি ছেলের প্রতি করা অত্যাচারের প্রতিফল ঘটে এবং তাদেরকে হত্যা করেছিল যে তাদের ভাই অবীমেলক, তার ওপরে এবং ভাই হত্যায় যারা তাকে সাহায্য করেছিল, সেই শিখিমস্থ লোকদের ওপরে ঐ রক্তপাতের অপরাধে অপরাধী হয়।
ঈশ্বর এরকমটি করলেন যেন যিরুব্বায়ালের সত্তরজন ছেলের বিরুদ্ধে সম্পন্ন অপরাধের, তাদের রক্তপাতের দায় তাদের ভাই অবীমেলক এবং শিখিমের সেই নাগরিকদের উপর বর্তায়, যারা তার ভাইদের হত্যা করার সময় তাকে সাহায্য করেছিল।
25 ২৫ আর শিখিমের লোকেরা তার জন্য কোন কোন পর্বতশৃঙ্গে গোপনে লোক বসিয়ে গেল, সবারই দ্রব্যাদি তারা লুট করল; আর অবীমেলক তার সংবাদ পেল।
অবীমেলকের বিরুদ্ধাচরণ করে শিখিমের নাগরিকরা পর্বতের চূড়ায় চূড়ায় গোপনে লোকদের ঘাঁটি গেড়ে বসিয়ে দিল এবং সেখান দিয়ে যাওয়া প্রত্যেকের সবকিছু তারা লুট করতে লাগল। আর এই খবরটি অবীমেলককে জানানো হল।
26 ২৬ পরে এবদের ছেলে গাল নিজের ভাইদেরকে সঙ্গে নিয়ে শিখিমে আসল; আর শিখিমের লোকেরা তাকে বিশ্বাস করল।
এদিকে এবদের ছেলে গাল তার আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে শিখিমের দিকে এগিয়ে গেল, এবং সেখানকার নাগরিকরা তার উপর আস্থা স্থাপন করল।
27 ২৭ আর তারা বের হয়ে নিজের নিজের দ্রাক্ষাক্ষেত্রে ফল তুলল ও তা মাড়াই করল এবং উৎসব করল, আর নিজেদের দেবতার মন্দিরে গিয়ে ভোজন পান করে অবীমেলককে অভিশাপ দিল।
ক্ষেতে গিয়ে দ্রাক্ষাফল সংগ্রহ করার ও সেগুলি মাড়াই করার পরে তারা তাদের দেবতার মন্দিরে উৎসব উদ্‌যাপন করল। ভোজনপান করতে করতে তারা অবীমেলককে অভিশাপ দিল।
28 ২৮ আর এবদের ছেলে গাল বলল, অবীমেলক কে, সে শিখিমীয় কে, যে আমরা তার দাসত্ব করব? সে কি যিরুব্বালের ছেলে না? সবূল কি তার সেনাপতি না? তোমরা বরং শিখিমের বাবা হমোরের লোকদের দাসত্ব কর;
পরে এবদের ছেলে গাল বলল, “অবীমেলক কে, আর আমরা শিখিমীয়রা কেন তার বশ্যতাস্বীকার করব? সে কি যিরুব্বায়ালের ছেলে নয় ও সবূল কি তার সহকারী নয়? শিখিমের বাবা হমোরের পরিবারের সেবা করো! আমরা কেন অবীমেলকের সেবা করব?
29 ২৯ আমরা ওর দাসত্ব কেন স্বীকার করব? আহা, এই সব লোক আমার অধিকারে এলে আমি অবীমেলককে দূর করে দিই। পরে সে অবীমেলকের উদ্দেশ্যে বলল, তুমি দলবল বৃদ্ধি করে বের হয়ে এস দেখি।
যদি শুধু এই লোকেরা আমার নিয়ন্ত্রণাধীন থাকত! তবে আমি তার হাত থেকে রেহাই পেতাম। আমি অবীমেলককে বলতাম, ‘তোমার সমগ্র সৈন্যবাহিনীকে ডেকে আনো!’”
30 ৩০ এবদের ছেলে গালের সেই কথা নগরের কর্তা সবূল শুনে সে ক্রোধে প্রজ্বলিত হয়ে উঠল;
এবদের ছেলে গাল কী বলেছিল, তা যখন নগরাধ্যক্ষ সবূল শুনতে পেল, তখন সে ভীষণ ক্রুদ্ধ হল।
31 ৩১ আর সে কৌশল করে অবীমেলকের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, দেখুন, এবদের ছেলে গাল ও তার ভাইরা শিখিমে এসেছে; আর দেখুন, তারা আপনার বিরুদ্ধে নগরে কুকথা বলছে।
গোপনে সে অবীমেলকের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, “এবদের ছেলে গাল ও তার আত্মীয়েরা শিখিমে এসেছে এবং তারা আপনার বিরুদ্ধে নগরের লোকদের উত্তেজিত করে তুলছে।
32 ৩২ অতএব আপনি ও আপনার সঙ্গে যে সব লোক আছে, আপনারা রাতে উঠে গিয়ে মাঠে লুকিয়ে থাকুন।
তাই এখন, রাতের বেলায় আপনাকে ও আপনার লোকজনদের আসতে হবে ও ক্ষেতে লুকিয়ে অপেক্ষা করতে হবে।
33 ৩৩ পরে ভোরবেলায় সূর্য্যোদয় হওয়ামাত্র আপনি উঠে নগর আক্রমণ করবেন; আর দেখুন, সে ও তার সঙ্গী লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে বের হবে, তখন আপনার হাত যা করতে পারবে, তা করবেন।
সকালে সূর্যোদয়ের সময় নগরের বিরুদ্ধে আপনারা এগিয়ে যাবেন। যখন গাল ও তার লোকজন আপনাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে আসবে, তখন তাদের আক্রমণ করার যে সুযোগ পাবেন তার সদব্যবহার করবেন।”
34 ৩৪ পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গী সমস্ত লোক রাত্রিতে উঠে চারটে দল ভাগ হয়ে শিখিমের বিরুদ্ধে লুকিয়ে থাকল।
অতএব অবীমেলক ও তার সব সৈন্যসামন্ত রাতের বেলায় উঠে চার দলে বিভক্ত হয়ে শিখিমের কাছে লুকিয়ে থাকল।
35 ৩৫ আর এবদের ছেলে গাল বাইরে গিয়ে নগরের দরজার প্রবেশের মুখে দাঁড়াল; পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গী লোকেরা গোপন জায়গা থেকে উঠল।
এদিকে অবীমেলক ও তার সৈন্যসামন্ত যখন তাদের গোপন আস্তানা থেকে বের হয়ে আসছিল ঠিক তখনই এবদের ছেলে গাল বাইরে বেরিয়ে নগরের প্রবেশদ্বারে এসে দাঁড়িয়ে গেল।
36 ৩৬ আর গাল সেই লোকদেরকে দেখে সবূলকে বলল, দেখ, পর্বতশৃঙ্গ থেকে লোকসকল নেমে আসছে। সবূল তাকে বলল, তুমি মানুষের ভুল পথের পর্বতের ছায়া দেখছ।
গাল যখন তাদের দেখল, তখন সে সবূলকে বলল, “দেখো, পর্বত-চূড়াগুলি থেকে লোকেরা নেমে আসছে!” সবূল উত্তর দিল, “তুমি পর্বতের ছায়াকে মানুষ বলে মনে করে ভুল করছ।”
37 ৩৭ পরে গাল আবার বলল, দেখ, উচ্চ দেশ থেকে লোকসকল নেমে আসছে এবং গণকদের এলোন বৃক্ষের পথ দিয়ে এক দল আসছে।
কিন্তু গাল আবার বলে উঠল: “দেখো, পাহাড়ের মাঝখান থেকে লোকেরা নিচে নেমে আসছে, এবং গণকদের গাছের দিক থেকেও একদল লোক চলে আসছে।”
38 ৩৮ সবূল তাকে বলল, কোথায় এখন তোমার সেই মুখ, যে মুখে বলেছিলে, অবীমেলক কে যে আমরা তার দাসত্ব স্বীকার করি? তুমি যে লোকদেরকে তুচ্ছ করেছিলে, ওরা কি সেই লোক না? এখন যাও, বের হয়ে ওর সঙ্গে যুদ্ধ কর।
তখন সবূল তাকে বলল, “তোমার হামবড়াইমার্কা কথাবার্তা এখন কোথায় গেল, তুমিই তো বলেছিলে, ‘অবীমেলক কে যে আমাদের তার নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে?’ এই লোকদেরই কি তুমি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করোনি? যাও, ও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো!”
39 ৩৯ পরে গাল শিখিমের লোকদের আগে আগে বেরিয়ে য়ে গিয়ে অবীমেলকের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
অতএব গাল শিখিমের নাগরিকদের নেতৃত্ব দিল এবং অবীমেলকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
40 ৪০ তাতে অবীমেলক তাকে তাড়া করল ও সে তার সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং প্রবেশ দ্বারের জায়গা পর্যন্ত অনেক লোক আহত হয়ে পড়ল।
অবীমেলক নগরের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত তাকে তাড়া করে গেল, এবং পালানোর সময় তাদের মধ্যে অনেকেই নিহত হল।
41 ৪১ পরে অবীমেলক অরূমায় থাকল এবং সবূল গালকে ও তার ভাইদেরকে তাড়িয়ে দিল, তারা আর শিখিমে বাস করতে পারল না।
পরে অবীমেলক অরূমায় গিয়ে বসবাস করল, এবং সবূল গাল ও তার দলবলকে শিখিম থেকে তাড়িয়ে দিল।
42 ৪২ পর দিন লোকেরা বের হয়ে মাঠে যাচ্ছিল, আর অবীমেলক তার সংবাদ পেল।
পরদিন শিখিমের লোকেরা ক্ষেতে বের হয়ে গেল, ও এই খবরটি অবীমেলকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল।
43 ৪৩ সে লোকদেরকে নিয়ে তিনটে দল করে মাঠের মধ্যে লুকিয়ে থাকল; পরে সে চেয়ে দেখল, আর দেখ, লোকেরা নগর থেকে বের হয়ে আসছিল; তখন সে তাদের বিরুদ্ধে উঠে তাদেরকে আঘাত করল।
অতএব সে তার লোকজনদের নিয়ে, তাদের তিনটি দলে বিভক্ত করে ক্ষেতে গোপনে ঘাঁটি গেড়ে থাকল। সে যখন দেখল যে লোকেরা নগর থেকে বেরিয়ে আসছে, তখন সে তাদের আক্রমণ করার জন্য উঠে পড়ল।
44 ৪৪ পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গীদল সকল তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে নগর-দ্বার-প্রবেশের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকল এবং দুটি দল মাঠের সব লোককে আক্রমণ করে আঘাত করল।
অবীমেলক এবং তার সঙ্গে থাকা দলবল, তাড়াতাড়ি সামনে এগিয়ে গিয়ে নগরের প্রবেশদ্বারের কাছে নিজেদের অবস্থান নিল। তখন দুটি দল ক্ষেতে থাকা লোকদের আক্রমণ করে তাদের হত্যা করল।
45 ৪৫ আর অবীমেলক সেই সব দিন ঐ নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল; আর নগর অধিকার করে সেখানকার লোকদেরকে হত্যা করল এবং নগর সমভূমি করে তার ওপরে লবণ ছড়িয়ে দিল।
সারাটি দিন ধরে ততক্ষণ অবীমেলক সেই নগরের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে গেল যতক্ষণ না সে সেটি দখল করে সেখানকার সব লোককে বধ করল। পরে সে নগরটি ধ্বংস করে সেটির উপর লবণ ছড়িয়ে দিল।
46 ৪৬ পরে শিখিমের দূর্গে অবস্থিত লোকেরা সব এই কথা শুনে এল্‌-বরীৎএর দূর্গে এক গৃহে প্রবেশ করল।
এই খবর শুনে, শিখিমের মিনারের নাগরিকেরা এল্-বরীতের মন্দিরের দুর্গে প্রবেশ করল।
47 ৪৭ পরে শিখিমের দূর্গে অবস্থিত সব গৃহস্থ জড়ো হয়েছে, এই কথা অবীমেলক শুনল।
অবীমেলক যখন শুনল যে তারা সেখানে সমবেত হয়েছে,
48 ৪৮ তখন অবীমেলক ও তার সঙ্গীরা সকলে সল্‌মোন পর্বতে উঠল। আর অবীমেলক কুঠার হাতে নিয়েছিল; সে বৃক্ষ থেকে একটা ডাল কেটে নিয়ে নিজের কাঁধে রাখল এবং নিজের সঙ্গী লোকদেরকে বলল, তোমরা আমাকে যা করতে দেখলে, তাড়াতাড়ি সেরকম কর।
তখন সে এবং তার সব লোকজন সল্‌মন পর্বতে উঠে গেল। সে একটি কুড়ুল নিয়ে গাছের কয়েকটি ডালপালা কেটে, সেগুলি তার কাঁধে তুলে নিল। তার সঙ্গে থাকা লোকদের সে আদেশ দিল, “তাড়াতাড়ি করো! আমাকে যা করতে দেখছ, তোমরাও তাই করো!”
49 ৪৯ তাতে সব লোক প্রত্যেকে এক একটা ডাল কেটে নিয়ে অবীমেলকের পিছন পিছন চলল; পরে সেই সমস্ত ডাল ঐ উঁচু বাড়ীর গায়ে রেখে সেই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল; এই ভাবে শিখিমের দুর্গে অবস্থিত সমস্ত লোকও মারা গেল; তারা স্ত্রী ও পুরুষ অনুমান হাজার লোক ছিল।
অতএব সব লোকজন গাছের ডালপালাগুলি কেটে নিয়ে অবীমেলকের অনুগামী হল। দুর্গের চারপাশে তারা সেই ডালপালাগুলি স্তূপাকারে রেখে তাতে আগুন ধরিয়ে দিল আর লোকজন তখনও সেই দুর্গের ভিতরেই ছিল। অতএব শিখিমের দুর্গের ভিতরে থাকা সব লোকজন, প্রায় 1,000 জন নারী-পুরুষও মারা গেল।
50 ৫০ পরে অবীমেলক তেবেসে চলে গেল, ও তেবেসের বিরুদ্ধে শিবির তৈরী করে তা দখল করল।
এরপর অবীমেলক তেবেসে গেল এবং সেটি অবরুদ্ধ করে তা দখল করে নিল।
51 ৫১ কিন্তু ঐ নগরের মধ্যে এক শক্তিশালী দূর্গ ছিল, অতএব সমস্ত পুরুষ ও স্ত্রী এবং নগরের সমস্ত লোকেরা পালিয়ে তার মধ্যে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দূর্গের ছাদের ওপরে উঠল।
সেই নগরের মধ্যে, অবশ্য, একটি মজবুত দুর্গ ছিল। সব নারী-পুরুষ—নগরের সব লোকজন—পালিয়ে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নিল। তারা ভিতর থেকে নিজেদের তালাবন্ধ করে দুর্গের ছাদে উঠে গেল।
52 ৫২ পরে অবীমেলক সেই দূর্গের কাছে গিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল এবং তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবার জন্য দূর্গের দরজা পর্যন্ত গেল।
অবীমেলক দুর্গের কাছে গিয়ে সেটি আক্রমণ করল। কিন্তু যেই না সে দুর্গে আগুন লাগানোর জন্য দুর্গ-দুয়ারের দিকে গেল,
53 ৫৩ তখন একটি স্ত্রীলোক যাঁতার উপরের পাথরটি নিয়ে অবীমেলকের মাথার ওপরে ছুঁড়ে তার মাথার খুলি ভেঙে দিল।
একজন স্ত্রীলোক তার মাথায় জাঁতা-পাথরের উপরের এক পাটি ফেলে দিল এবং তার মাথার খুলি ফাটিয়ে দিল।
54 ৫৪ তাতে সে তাড়াতাড়ি নিজের অস্ত্রবাহক যুবককে ডেকে বলল, তুমি তরোয়াল বের করে আমাকে হত্যা কর; যদি লোকে আমার বিষয়ে বলে, একটা স্ত্রীলোক ওকে হত্যা করেছে। তখন সেই যুবক তাকে বিদ্ধ করলে সে মরে গেল।
তখন অবীমেলক তাড়াতাড়ি তার অস্ত্র-বহনকারীকে ডেকে বলল, “তুমি তরোয়াল টেনে বের করো ও আমাকে হত্যা করো, যেন তারা বলতে না পারে যে, ‘একজন স্ত্রীলোক তাকে হত্যা করেছে।’” অতএব তার দাস তাকে বিদ্ধ করল, ও সে মারা গেল।
55 ৫৫ পরে অবীমেলক মারা গিয়েছে দেখে ইস্রায়েলীয়রা প্রত্যেকে নিজের নিজের জায়গায় চলে গেল।
ইস্রায়েলীরা যখন দেখল যে অবীমেলক মারা গিয়েছে, তখন তারা স্বদেশে ফিরে গেল।
56 ৫৬ এই ভাবে অবীমেলক নিজের সত্তর জন ভাইকে হত্যা করে নিজের বাবার বিরুদ্ধে যে দুষ্কর্ম্ম করেছিল, ঈশ্বর তার সঠিক শাস্তি তাকে দিলেন;
এইভাবে ঈশ্বর অবীমেলকের সেই দুষ্টতার প্রতিফল তাকে দিলেন, যা সে তার সত্তরজন ভাইকে হত্যা করার মাধ্যমে তার বাবার প্রতি করেছিল।
57 ৫৭ আবার শিখিমের লোকদের মাথায় ঈশ্বর তাদের সমস্ত দুষ্কর্ম্মের প্রতিফল দিলেন; তাতে যিরুব্বালের ছেলে যোথমের অভিশাপ তাদের ওপরে পড়ল।
আবার শিখিমের লোকদের সব দুষ্টতার প্রতিফলও ঈশ্বর তাদের দিলেন। যিরুব্বায়ালের ছেলে যোথমের অভিশাপ তাদের উপরে বর্তালো।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 9 >