< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 4 >

1 এহূদের মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যেটা মন্দ, আবার তাই করল।
এহূদ মারা যাওয়ার পর ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করল।
2 তাতে সদাপ্রভু হাৎসোরে রাজত্বকারী কনানরাজ যাবীনের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করলেন। জাতিগণের হরোশৎ-নিবাসী (হরোহীম) সীষরা তাঁর সেনাপতি ছিলেন।
তাই সদাপ্রভু তাদের কনানের রাজা সেই যাবীনের হাতে সমর্পণ করে দিলেন, যিনি হাৎসোরে রাজত্ব করতেন। তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতি সীষরা হরোশৎ-হগ্গোয়ীমের অধিবাসী ছিলেন।
3 আর ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল, কারণ সীষরার কাছে নয়শো লোহার রথ ছিল এবং তিনি কুড়ি বছর পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের উপর ভীষণ নির্যাতন করেছিলেন।
যেহেতু তাঁর কাছে 900-টি লৌহরথ ছিল এবং তিনি কুড়ি বছর ধরে ইস্রায়েলীদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালিয়েছিলেন, তাই ইস্রায়েলীরা সাহায্য পাওয়ার আশায় সদাপ্রভুর কাছে কেঁদেছিল।
4 লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা এক জন ভাববাদিন বন্দিনী ছিলেন, সেইদিনের তিনি ইস্রায়েলের বিচার করতেন।
সেই সময় লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা—একজন মহিলা ভাববাদী, ইস্রায়েলীদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
5 দবোরা পর্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে রামার ও বৈথেলের মধ্যে অবস্থিত খেজুর গাছের নীচে বসতেন এবং ইস্রায়েলীয়রা বিচারের জন্য তাঁর কাছে আসত।
ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশে রামা ও বেথেলের মাঝখানে অবস্থিত দবোরার খেজুর গাছের তলায় বসে তিনি বিচারকাজ চালাতেন, এবং ইস্রায়েলীরা তাদের দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তির জন্য সেখানে তাঁর কাছে যেত।
6 তিনি লোক পাঠিয়ে কেদশ নপ্তালি থেকে অবীনোয়মের পুত্র বারককে ডেকে আনলেন। তিনি তাকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে কি এই আজ্ঞা করেননি, নপ্তালি ও সবূলূন দেশ থেকে দশ হাজার লোককে তাবোর পর্বতে নিয়ে যাও;
তিনি কেদশ-নপ্তালি থেকে অবীনোয়মের ছেলে বারককে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমাকে এই আদেশ দিয়েছেন: ‘যাও, নপ্তালি ও সবূলূন গোষ্ঠীভুক্ত 10,000 লোক সঙ্গে নাও এবং তাবোর পর্বত পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব দিয়ে যাও।
7 তাতে আমি যাবীনের সেনাপতি সীষরাকে এবং তার রথ সকল ও লোকদেরকে নিয়ে কীশোন নদীর কাছে তোমার সঙ্গে দেখা করব এবং তাকে তোমার হাতে সমর্পণ করব।”
আমি যাবীনের সৈন্যদলের সেনাপতি সীষরাকে এবং তার রথ ও তার সৈন্যবাহিনীকে কীশোন নদীর কাছে পরিচালনা দিয়ে নিয়ে যাব এবং তাকে তোমার হাতে সমর্পণ করব।’”
8 তখন বারক তাকে বললেন, “তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও, তবে আমি যাব; কিন্তু তুমি যদি আমার সঙ্গে না যাও, আমি যাব না।”
বারক তাঁকে বললেন, “আপনি যদি আমার সঙ্গে যান, তবেই আমি যাব; কিন্তু আপনি যদি আমার সঙ্গে না যান, তবে আমি যাব না।”
9 দবোরা বললেন, “আমি অবশ্য তোমার সঙ্গে যাব, যদিও তোমার এই যাত্রায় সুনাম হবে না, কারণ সদাপ্রভু সীষরাকে একটি স্ত্রীলোকের শক্তির কাছে পরাজিত করবেন।” পরে দবোরা উঠলেন এবং বারকের সঙ্গে কেদশে গেলেন।
“আমি নিশ্চয় তোমার সঙ্গে যাব,” দবোরা বললেন। “কিন্তু এ যাত্রায় তুমি সম্মান লাভ করবে না, কারণ সদাপ্রভু সীষরাকে একজন স্ত্রীলোকের হাতে সমর্পণ করবেন।” অতএব দবোরা বারকের সঙ্গে কেদশে চলে গেলেন।
10 ১০ পরে বারক কেদশে সবূলূন ও নপ্তালির লোকদেরকে ডাকলেন; আর দশহাজার লোক তাঁর পিছন পিছন গেল এবং দবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
বারক সেখানে সবূলূন ও নপ্তালি গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের ডেকে পাঠালেন, এবং 10,000 লোক তাঁর নেতৃত্বাধীন হয়ে তাঁর সঙ্গে গেল। দবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
11 ১১ ঐ দিনের কেনীয় হেবর কেনীয়দের থেকে, মোশির সম্বন্ধে হোববের সন্তানদের থেকে আলাদা হয়ে কেদশের কাছাকাছি সানন্নীমস্থ এলোন গাছ পর্যন্ত তাঁবু খাঁটালেন।
ইত্যবসরে মোশির শ্যালক, কেনীয় হেবর হোববের বংশধর অন্যান্য কেনীয়দের থেকে পৃথক হয়ে কেদশের নিকটবর্তী সানন্নীমের বিশাল সেই গাছটির কাছে তাঁর তাঁবু খাটিয়েছিলেন।
12 ১২ যখন তারা সীষরাকে বলল যে, “অবীনোয়মের ছেলে বারক তাবোর পর্বতে উঠেছে।”
সীষরাকে যখন বলা হল যে অবীনোয়মের ছেলে বারক তাবোর পর্বতে উঠেছে,
13 ১৩ তখন সীষরা নিজের সব রথ অর্থাৎ নয়শো লোহার রথ এবং নিজের সৈন্যদেরকে একত্র ডেকে হরোশৎ থেকে কীশোন নদীর কাছে গেলেন।
তখন সীষরা হরোশৎ-হাগ্গোয়ীম থেকে তাঁর সব লোকজনকে ও তাঁর 900-টি লৌহরথ কীশোন নদীতীরে ডেকে আনালেন।
14 ১৪ দবোরা বারককে বললেন, “যাও, কারণ আজই সদাপ্রভু তোমার হাতে সীষরাকে সমর্পণ করেছেন; সদাপ্রভু কি তোমার আগে আগে যাননি?” তখন বারক তাঁর অনুগামী দশহাজার লোককে সঙ্গে নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নামলেন।
তখন দবোরা বারককে বললেন, “যাও! সদাপ্রভু আজই তোমার হাতে সীষরাকে সমর্পণ করেছেন। সদাপ্রভু কি তোমার অগ্রগামী হননি?” অতএব বারক তাঁর 10,000 জন অনুচরকে সঙ্গে নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এলেন।
15 ১৫ সদাপ্রভু সীষরার সব রথ ও তার সৈন্যদের বিভ্রান্ত করলেন এবং বারকের লোকেরা তাদেরকে আক্রমণ করল এবং সীষরা রথ থেকে নেমে দৌড়াতে লাগল।
বারক এগিয়ে যেতে না যেতেই সদাপ্রভু সীষরাকে এবং তাঁর সব রথ ও সৈন্যবাহিনীকে তরোয়ালের আঘাতে ছত্রভঙ্গ করে দিলেন, এবং সীষরা তাঁর রথ থেকে নেমে পায়ে হেঁটে পালিয়ে গেলেন।
16 ১৬ কিন্তু বারকের লোকেরা হরোৎ পর্যন্ত তাঁর রথসমূহের ও সৈন্যদের পিছনে ধাওয়া করল আর সীষরার সব সৈন্যদের খড়গ দিয়ে হত্যা করল, এক জনও বেঁচে থাকল না।
বারক হরোশৎ-হাগ্গোয়ীম পর্যন্ত সেইসব রথ ও সৈন্যদলের পশ্চাদ্ধাবন করলেন এবং সীষরার সৈন্যবাহিনী তরোয়াল দ্বারা পতিত হল; একজনও অবশিষ্ট রইল না।
17 ১৭ কিন্তু সীষরা দৌড়ে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাঁবুর দিকে গেলেন; কারণ হাৎসোরের যাবীন রাজাতে ও কেনীয় হেবরের বংশে তখন শান্তি ছিল।
এদিকে, সীষরা পায়ে হেঁটে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাঁবুর কাছে পালিয়ে গেলেন, কারণ হাৎসোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে কেনীয় হেবরের পরিবারের এক মৈত্রীর সম্পর্ক ছিল।
18 ১৮ আর যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করতে বাইরে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, ফিরে আসুন, আমার এখানে আসুন, ভয় পাবেন না।” তাই তিনি তাঁর দিকে ফিরে এলেন এবং তাঁবুর মধ্যে গেলেন আর সেই স্ত্রী এক কম্বল দিয়ে তাঁকে ঢেকে দিলেন।
যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে এসে তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, ভিতরে আসুন। ভয় পাবেন না।” অতএব সীষরা যায়েলের তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, এবং তিনি একটি কম্বল দিয়ে সীষরাকে ঢেকে দিলেন।
19 ১৯ সে তাঁকে বললেন, “দয়া করে আমাকে এক গ্লাস পানীয় জল দিন, কারণ আমি পিপাসিত।” তিনি একটি দুধের থলি খুলে পান করতে দিলেন তারপর তাকে আবার ঢেকে দিলেন।
“আমার পিপাসা পেয়েছে,” সীষরা বললেন। “দয়া করে আমাকে একটু জল দাও।” যায়েল তখন দুধ-ভর্তি একটি মশক খুলে তাঁকে খানিকটা দুধ পান করতে দিলেন, এবং আবার তাঁকে ঢেকে দিলেন।
20 ২০ তিনি তাঁকে বললেন, “তুমি তাঁবুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাক; যদি কেউ এসে জিজ্ঞাসা করে, এখানে কি কেউ আছে? তবে বোলো, কেউ নেই।”
“তুমি তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকো,” তিনি যায়েলকে বললেন। “কেউ যদি এসে তোমায় জিজ্ঞাসা করে, ‘এখানে কি কেউ আছে?’ তবে বোলো, ‘না, কেউ নেই।’”
21 ২১ পরে হেবরের স্ত্রী যায়েল তাঁবুর এক খোঁটা নিলেন ও মুগুর হাতে করে ধীরে ধীরে তাঁর কাছে গেলেন, কারণ সে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল তাঁর কানে ওই খোঁটা ঢুকিয়ে দিলেন এবং তাকে মাটিতে ফেলে দিলেন আর সে মারা গেল।
কিন্তু হেবরের স্ত্রী যায়েল একটি তাঁবু-খুটা ও একটি হাতুড়ি তুলে নিয়ে নিঃশব্দে তাঁর কাছে গেলেন। ক্লান্ত সীষরা গভীর ঘুমে নিদ্রাগত হয়ে পড়েছিলেন। যায়েল সেই খুঁটিটি সীষরার রগে এমনভাবে বিঁধিয়ে দিলেন যে সেটি মাটিতে গেঁথে গেল, ও তিনি মারা গেলেন।
22 ২২ বারক সীষরাকে তাড়া করে যাচ্ছিলেন; তখন যায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এসে বললেন, “এস, তুমি যার খোঁজ করছ, সেই মানুষকে আমি তোমাকে দেখাই,” তাই তিনি তাঁর সঙ্গে তাঁবুর ভিতরে গেল, আর, সীষরা মরে পড়ে আছেন ও তাঁর কানে খোঁটা বিদ্ধ রয়েছে।
ঠিক তখনই বারক সীষরার পশ্চাদ্ধাবন করতে করতে সেখানে উপস্থিত হলেন এবং যায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে গেলেন। “আসুন,” যায়েল বললেন, “আপনি যে লোকটির খোঁজ করছেন, তাকে আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।” অতএব বারক তাঁর সঙ্গে তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, এবং সেখানে সীষরা রগে তাঁবু-খুটা বিদ্ধ অবস্থায় মরে পড়েছিলেন।
23 ২৩ এই ভাবে ঈশ্বর সেদিন কনান-রাজ যাবীনকে ইস্রায়েলীয়দের সামনে পরাজিত করলেন।
সেদিন ঈশ্বর কনানের রাজা যাবীনকে ইস্রায়েলীদের সামনে অবনমিত করলেন।
24 ২৪ আর ইস্রায়েলীয়রা যে পর্যন্ত কনান-রাজ যাবীনকে ধ্বংস না করল, সে পর্যন্ত কনান-রাজ যাবীনের বিরূদ্ধে তারা আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠল।
আর ইস্রায়েলীরা কনানের রাজা যাবীনকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত তাদের হাত তাঁর বিরুদ্ধে ক্রমাগত কঠোর থেকে কঠোরতর হতেই থাকল।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 4 >