যোহন 6
এর কিছুদিন পর, যীশু গালীল সাগরের (অর্থাৎ, টাইবেরিয়াস সাগরের) দূরবর্তী তীরে, লম্বালম্বি ভাবে পার হলেন।
2 ২ আর বহু মানুষ তাঁর পিছনে পিছনে যেতে লাগল, কারণ তিনি অসুস্থদের উপরে যে সব চিহ্ন-কাজ করতেন সে সব তারা দেখত।
অসুস্থদের ক্ষেত্রে তিনি যে চিহ্নকাজ সাধন করেছিলেন, তার পরিচয় পেয়ে অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল।
যীশু তখন শিষ্যদের নিয়ে এক পর্বতে উঠলেন ও তাঁদের নিয়ে সেখানে বসলেন।
তখন ইহুদিদের নিস্তারপর্ব উৎসবের সময় এসে গিয়েছিল।
5 ৫ যখন যীশু তাকালেন এবং দেখলেন যে বহু মানুষ তাঁর কাছে আসছে তখন তিনি ফিলিপকে বললেন, এদের খাবারের জন্য আমরা কোথায় রুটি কিনতে যাব?
যীশু চোখ তুলে অনেক লোককে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ফিলিপকে বললেন, “এসব লোককে খাওয়াবার জন্য আমরা কোথা থেকে রুটি কিনব।”
তিনি তাঁকে শুধু পরীক্ষা করার জন্যই একথা জিজ্ঞাসা করলেন, কারণ তিনি যে কি করবেন সে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই মনস্থির করে ফেলেছিলেন।
7 ৭ ফিলিপ তাঁকে উত্তর দিলেন, ওদের জন্য দুশো দিন দিনের রুটি ও যথেষ্ট নয় যে, প্রত্যেকে এমনকি অল্প করে পাবে।
ফিলিপ তাঁকে উত্তর দিলেন, “প্রত্যেকের মুখে কিছু খাবার দেওয়ার জন্য আট মাসের বেতনের বিনিময়ে কেনা রুটিও পর্যাপ্ত হবে না।”
তাঁর অপর একজন শিষ্য, শিমোন পিতরের ভাই, আন্দ্রিয়কে বললেন,
9 ৯ এখানে একটি বালক আছে যার কাছে যবের পাঁচটি রুটি এবং দুটী মাছ আছে কিন্তু এত মানুষের মধ্যে এইগুলি দিয়ে কি হবে?
“এখানে একটি ছেলের কাছে যবের পাঁচটি ছোটো রুটি ও দুটি ছোটো মাছ আছে। কিন্তু এত লোকের মধ্যে ওতে কী হবে?”
10 ১০ যীশু বললেন, “লোকদের বসিয়ে দাও।” সেই জায়গায় অনেক ঘাস ছিল। সুতরাং পুরুষেরা বসে গেল, সংখ্যায় প্রায় পাঁচ হাজার লোক হবে।
যীশু বললেন, “লোকদের বসিয়ে দাও।” সেখানে প্রচুর ঘাস ছিল এবং প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ বসে পড়ল।
11 ১১ তখন যীশু সেই রুটি কয়টি নিলেন এবং ধন্যবাদ দিয়ে যারা বসেছিল তাদেরকে ভাগ করে দিলেন; সেইভাবে মাছ কয়টিও তারা যতটা চেয়েছিল ততটা দিলেন।
তখন যীশু রুটিগুলি নিয়ে ধন্যবাদ দিলেন এবং যারা বসেছিলেন তাদের মধ্যে চাহিদামতো ভাগ করে দিলেন। মাছগুলি নিয়েও তিনি তাই করলেন।
12 ১২ আর তারা তৃপ্ত করে খাবার পর তিনি নিজের শিষ্যদের বললেন, অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া সব জড়ো কর, যেন কিছুই নষ্ট না হয়।
সকলে তৃপ্তি করে খাওয়ার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “অবশিষ্ট রুটির টুকরোগুলি এক জায়গায় জড়ো করো। কোনো কিছুই যেন নষ্ট না হয়।”
13 ১৩ সুতরাং তাঁরা জড়ো করলেন এবং ঐ পাঁচটি যবের রুটি গুঁড়াগাঁড়ায় সেই মানুষদের খাবার পর যা বেঁচেছিল তাতে বারো ঝুড়ি ভরলেন।
তাই তাঁরা সেই পাঁচটি যবের রুটির অবশিষ্ট অংশ সংগ্রহ করলেন। লোকদের খাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া রুটির টুকরোগুলি দিয়ে তাঁরা বারোটি ঝুড়ি পূর্ণ করলেন।
14 ১৪ তখন সেই মানুষেরা তাঁর আশ্চর্য্য কাজ দেখে বলতে লাগল, ইনি সত্যই সেই ভাববাদী যাঁর পৃথিবীতে আসার কথা আছে।
যীশুর করা এই চিহ্নকাজ দেখে লোকেরা বলতে লাগল, “পৃথিবীতে যাঁর আসার কথা, ইনি নিশ্চয়ই সেই ভাববাদী।”
15 ১৫ যখন যীশু বুঝতে পারলেন যে, তারা এসে রাজা করবার জন্য জোর করে তাঁকে ধরতে আসছে, তাই তিনি আবার নিজে একাই পর্বতে চলে গেলেন।
যীশু বুঝতে পারলেন যে লোকেরা তাঁকে জোর করে রাজা করতে চায়, তখন তিনি নিজে একটি পাহাড়ে চলে গেলেন।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তাঁর শিষ্যেরা সাগরের তীরে নেমে গেলেন।
17 ১৭ তারা একটি নৌকায় উঠলেন এবং সমুদ্রের অপর পারে কফরনাহূমের দিকে চলতে লাগলেন। সে দিন অন্ধকার হয়ে এসেছিল এবং যীশু তখনও তাঁদের কাছে আসেননি।
সেখানে একটি নৌকায় উঠে তাঁরা সাগর পার হয়ে কফরনাহূমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। সেই সময় অন্ধকার নেমে এলেও যীশু তখনও তাঁদের কাছে ফিরে আসেননি।
প্রবল বাতাস বইছিল এবং জলরাশি উত্তাল হয়ে উঠেছিল।
19 ১৯ এই ভাবে যখন শিষ্যেরা দেড় বা দুই ক্রোশ বয়ে গেলেন তাঁরা যীশুকে দেখতে পেলেন যে তিনি সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে নৌকার কাছে আসছেন এতে তাঁরা ভয় পেলেন।
তাঁরা নৌকা বেয়ে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার এগিয়ে যাওয়ার পর যীশুকে জলের উপর দিয়ে হেঁটে নৌকার দিকে আসতে দেখলেন। তাঁরা ভয় পেলেন।
কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “এ আমি, ভয় পেয়ো না।”
21 ২১ তখন তাঁরা তাঁকে নৌকায় নিতে রাজি হলেন এবং তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তক্ষনি সেই ডাঙা জায়গায় পৌঁছে গেল।
তখন তাঁরা যীশুকে নৌকায় তুলতে আগ্রহী হলেন এবং তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তাঁদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেল।
22 ২২ পরের দিন, সাগরের অপর পারে যেখানে মানুষের দল দাঁড়িয়েছিল তারা দেখেছিল যে সেখানে একটি ছাড়া আর কোনো নৌকা নেই এবং যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই নৌকায় ওঠেন নি কেবল তাঁর শিষ্যেরা চলে গিয়েছিলেন।
পরদিন, সাগরের অপর তীরে যারা থেকে গিয়েছিল, তারা বুঝতে পারল যে, আগের দিন সেখানে একটি নৌকা ছাড়া আর অন্য নৌকা ছিল না। যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই নৌকায় ওঠেননি, বরং শিষ্যেরা নিজেরাই চলে গিয়েছিলেন।
23 ২৩ যদিও সেখানে কিছু নৌকা ছিল যা তিবিরিয়া থেকে এসেছিল যেখানে প্রভু ধন্যবাদ দেবার পর মানুষেরা রুটি খেয়েছিল।
প্রভুর ধন্যবাদ দেওয়ার পর লোকেরা যেখানে রুটি খেয়েছিল, টাইবেরিয়াস থেকে কয়েকটি নৌকা তখন সেই স্থানে এসে পৌঁছাল।
24 ২৪ যখন মানুষের দল দেখল যে, না যীশু না শিষ্যেরা কেউই সেখানে নেই, তখন তারা সেই সব নৌকায় চড়ে যীশুর খোঁজ করতে কফরনাহূমে গেল।
যীশু বা তাঁর শিষ্যদের কেউই সেখানে নেই বুঝতে পেরে সকলে নৌকায় উঠে যীশুর সন্ধানে কফরনাহূমে গেল।
সাগরের অপর পারে যীশুকে দেখতে পেয়ে তারা জিজ্ঞাসা করল, “রব্বি, আপনি কখন এখানে এলেন?”
26 ২৬ যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, বললেন, সত্য সত্যই, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা আশ্চর্য্য কাজ দেখেছ বলে আমার খোঁজ করছ তা নয় কিন্তু সেই রুটি খেয়েছিলে ও তৃপ্ত হয়েছিলে বলে।
যীশু উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা চিহ্নকাজ দেখেছিলে বলে যে আমার অন্বেষণ করছ, তা নয়, কিন্তু রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলে বলেই তোমরা আমার অন্বেষণ করছ।
27 ২৭ যে খাবার নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য কাজ করো না, কিন্তু সেই খাবারের জন্য কাজ কর যেটা অনন্ত জীবন পর্যন্ত থাকে যা মনুষ্যপুত্র তোমাদের দেবেন, কারণ পিতা ঈশ্বর কেবল তাঁকেই মুদ্রাঙ্কিত করেছেন। (aiōnios g166)
যে খাদ্য নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য নয়, বরং অনন্ত জীবনব্যাপী স্থায়ী খাদ্যের জন্য তোমরা পরিশ্রম করো। মনুষ্যপুত্রই তোমাদের সেই খাদ্য দান করবেন। পিতা ঈশ্বর তাঁকেই মুদ্রাঙ্কিত করেছেন।” (aiōnios g166)
তারা তখন জিজ্ঞাসা করল, “ঈশ্বরের কাজ করতে হলে আমাদের কী করতে হবে?”
যীশু উত্তর দিলেন, “ঈশ্বরের কাজ হল এই: তিনি যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো।”
30 ৩০ সুতরাং তারা তাঁকে বলল, আপনি এমনকি আশ্চর্য্য কাজ করবেন যা দেখে আমরা আপনাকে বিশ্বাস করব? আপনি কি করবেন?
অতএব, তারা জিজ্ঞাসা করল, “আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি, এমন কী অলৌকিক চিহ্নকাজ আপনি আমাদের দেখাবেন? আপনি কী করবেন?
31 ৩১ আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরূপ্রান্তে গিয়ে মান্না খেয়েছিলেন, যেমন লেখা আছে, “তিনি খাবার জন্য তাদেরকে স্বর্গ থেকে রুটি দিলেন।”
‘তিনি খাবারের জন্য স্বর্গ থেকে তাদের খাদ্য দিয়েছিলেন,’ শাস্ত্রে লিখিত এই বচন অনুসারে, আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না আহার করেছিলেন।”
32 ৩২ যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদেরকে বলছি, মোশি তোমাদেরকে স্বর্গ থেকে তো সেই রুটি দেননি, কিন্তু আমার পিতাই তোমাদের কে স্বর্গ থেকে প্রকৃত রুটি দিচ্ছেন।
যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, মোশি স্বর্গ থেকে তোমাদের সেই খাদ্য দেননি, বরং আমার পিতাই স্বর্গ থেকে প্রকৃত খাদ্য দান করেন।
কারণ যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসে জগৎকে জীবন দান করেন, তিনিই ঈশ্বরীয় খাদ্য।”
তারা বলল, “প্রভু, এখন থেকে সেই খাদ্যই আমাদের দিন।”
35 ৩৫ যীশু তাদের বললেন, আমিই হলাম সেই জীবনের রুটি। যে আমার কাছে আসে তার আর খিদে হবে না এবং যে আমার উপর বিশ্বাস করে তার আর কখনো পিপাসা পাবে না।
যীশু তখন ঘোষণা করলেন, “আমিই সেই জীবন-খাদ্য। যে আমার কাছে আসে, সে কখনও ক্ষুধার্ত হবে না এবং যে আমাকে বিশ্বাস করে, সে কোনোদিনই পিপাসিত হবে না।
কিন্তু আমি যেমন তোমাদের বলেছি, তোমরা আমাকে দেখেছ অথচ এখনও পর্যন্ত আমাকে বিশ্বাস করোনি।
37 ৩৭ পিতা যে সব আমাকে দেন সে সব আমার কাছেই আসবে এবং যে আমার কাছে আসবে তাকে আমি কোন ভাবেই বাইরে ফেলে দেবো না।
পিতা যাদের আমাকে দেন, তাদের সবাই আমার কাছে আসবে, আর যে আমার কাছে আসে, তাকে আমি কখনও তাড়িয়ে দেব না।
38 ৩৮ কারণ আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি আমার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য নয় কিন্তু তাঁরই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
কারণ আমার ইচ্ছা পূরণের জন্য আমি স্বর্গ থেকে আসিনি, আমি এসেছি যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা পূরণের জন্য।
39 ৩৯ এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা হলো যে তিনি আমাকে যে যাদের দিয়েছেন, তার কিছুই যেন না হারাই, কিন্তু শেষ দিনের যেন তাদের জীবিত করে তুলি।
আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা এই যে, তিনি যাদের আমাকে দিয়েছেন, আমি যেন তাদের একজনকেও না হারাই, কিন্তু শেষের দিনে তাদের মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করি।
40 ৪০ কারণ আমার পিতার ইচ্ছা হলো, যে কেউ পুত্রকে দেখে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে সে যেন অনন্ত জীবন পায় এবং আমিই তাকে শেষ দিনের জীবিত করব। (aiōnios g166)
কারণ আমার পিতার ইচ্ছা এই, পুত্রের দিকে যে দৃষ্টিপাত করে তাঁকে বিশ্বাস করে, সে যেন অনন্ত জীবন লাভ করে। আর শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব।” (aiōnios g166)
41 ৪১ তখন ইহূদি নেতারা তাঁর সম্পর্কে বকবক করতে লাগল, কারণ তিনি বলেছিলেন, “আমিই সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে।”
একথায় ইহুদিরা তাঁর বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল, কারণ তিনি বলেছিলেন, “আমিই সেই খাদ্য, যা স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছে।”
42 ৪২ তারা বলল, এ যোষেফের পুত্র সেই যীশু নয় কি, যার পিতা মাতাকে আমরা জানি? এখন সে কেমন করে বলে, আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি?
তারা বলল, “এ কি যোষেফের পুত্র যীশু নয়, যার বাবা-মা আমাদের পরিচিত? তাহলে কী করে ও এখন বলছে, ‘আমি স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছি’?”
প্রত্যুত্তরে যীশু বললেন, “তোমরা নিজেদের মধ্যে অসন্তোষ দেখিয়ো না।
44 ৪৪ কেউ আমার কাছে আসতে পারবে না যতক্ষণ না পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন ও তিনি আকর্ষণ করছেন, আর আমি তাকে শেষ দিনের জীবিত করে তুলবো।
পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আকর্ষণ না করলে কেউ আমার কাছে আসতে পারে না, আর শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব।
45 ৪৫ ভাববাদীদের বইতে লেখা আছে, “তারা সবাই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা পাবে।” যে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে, সেই আমার কাছে আসে।
ভাববাদীদের গ্রন্থে লেখা আছে, ‘তারা সবাই ঈশ্বরের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করবে।’ পিতার কথায় যে কর্ণপাত করে এবং তাঁর কাছে শিক্ষা লাভ করে, সে আমার কাছে আসে।
ঈশ্বরের কাছ থেকে যিনি এসেছেন, তিনি ব্যতীত আর কেউ পিতার দর্শন লাভ করেনি, একমাত্র তিনিই পিতাকে দর্শন করেছেন।
আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে। (aiōnios g166)
আমিই সেই জীবন-খাদ্য।
তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না আহার করেছিল, তবুও তাদের মৃত্যু হয়েছিল।
কিন্তু এখানে স্বর্গ থেকে আগত সেই খাদ্য রয়েছে, কোনো মানুষ তা গ্রহণ করলে তার মৃত্যু হবে না।
51 ৫১ আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। কেউ যদি এই রুটি র কিছুটা খায় তবে সে চিরকাল জীবিত থাকবে। আমি যে রুটি দেব সেটা আমার মাংস, পৃথিবীর মানুষের জীবনের জন্য। (aiōn g165)
আমিই স্বর্গ থেকে নেমে আসা সেই জীবন-খাদ্য। যদি কেউ এই খাদ্যগ্রহণ করে, সে চিরজীবী হবে। আমার মাংসই এই খাদ্য, যা জগতের জীবন লাভের জন্য আমি দান করব।” (aiōn g165)
52 ৫২ ইহূদিরা খুব রেগে গেল ও একে অপরের সঙ্গে তর্ক করে বলতে লাগলো, কেমন করে ইনি আমাদেরকে খাবার জন্য নিজের মাংস দেবে?
তখন ইহুদিরা নিজেদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু করল, “এই লোকটি কীভাবে আমাদের খাওয়ার জন্য তাঁর মাংস দান করতে পারে?”
53 ৫৩ যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা মনুষ্যপুত্রের মাংস খাবে ও তাঁর রক্ত পান করবে তোমাদের নিজেদের জীবন পাবে না।
যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা যদি মনুষ্যপুত্রের মাংস ভোজন এবং তাঁর রক্ত পান না করো, তোমাদের মধ্যে জীবন নেই।
54 ৫৪ যে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং আমি তাকে শেষ দিনের জীবিত করব। (aiōnios g166)
যে আমার মাংস ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে অনন্ত জীবন লাভ করেছে এবং শেষের দিনে আমি তাকে উত্থাপিত করব। (aiōnios g166)
কারণ আমার মাংসই প্রকৃত খাদ্য এবং আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়।
যে আমার মাংস ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে আমার মধ্যে থাকে, আর আমি তার মধ্যে থাকি।
57 ৫৭ যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন এবং পিতার জন্যই আমি বেঁচে আছি, ঠিক সেইভাবে যে কেউ আমাকে খায়, সেও আমার মাধ্যমে জীবিত থাকবে।
জীবন্ত পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন এবং আমি যেমন পিতারই জন্য জীবনধারণ করি, আমাকে যে ভোজন করে, সেও তেমনই আমার জন্য জীবনধারণ করবে।
58 ৫৮ এই হলো সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে, পূর্বপুরুষেরা যেমন খেয়েছিল এবং মরেছিল সেই রকম নয়। এই রুটি যে খাবে সে চিরকাল বেঁচে থাকবে। (aiōn g165)
এই সেই খাদ্য যা স্বর্গলোক থেকে নেমে এসেছে। তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মান্না ভোজন করেছিল, তাদের মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু যে এই খাদ্য ভোজন করে, সে চিরকাল জীবিত থাকবে।” (aiōn g165)
কফরনাহূমের সমাজভবনে শিক্ষা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বললেন।
একথা শুনে তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে বললেন, “এ এক কঠিন শিক্ষা। এই শিক্ষা কে গ্রহণ করতে পারে?”
61 ৬১ তাঁর শিষ্যেরা এই নিয়ে তর্ক করছে যীশু তা নিজে অন্তরে জানতে পেরে তাদের বললেন, “এই কথায় কি তোমরা বিরক্ত হচ্ছ?”
শিষ্যেরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে, জানতে পেরে যীশু তাদের বললেন, “একথায় কি তোমরা আঘাত পেলে?
তাহলে, মনুষ্যপুত্র আগে যে স্থানে ছিলেন সেই স্থানে উন্নীত হতে দেখলে কী বলবে?
63 ৬৩ পবিত্র আত্মা জীবন দেন, মাংস কিছু উপকার দেয় না। আমি তোমাদের যে সব কথা বলেছি তা হলো আত্মা এবং জীবন।
পবিত্র আত্মাই জীবন দান করেন, মাংস কিছু উপকারী নয়। তোমাদের কাছে আমি যেসব কথা বলেছি সেই বাক্যই আত্মা এবং জীবন।
64 ৬৪ এখনও তোমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বিশ্বাস করে না। কারণ যীশু প্রথম থেকে জানতেন কারা বিশ্বাস করে না এবং কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে।
কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে, যারা বিশ্বাস করে না।” কারণ প্রথম থেকেই যীশু জানতেন, তাদের মধ্যে কে তাঁকে বিশ্বাস করবে না এবং কে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।
65 ৬৫ তিনি বললেন, এই জন্য আমি তোমাদেরকে বলেছি, যতক্ষণ না পিতার কাছ থেকে ক্ষমতা দেওয়া হয়, কেউ আমার কাছে আসতে পারে না।
তিনি বলে চললেন, “এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, পিতার কাছ থেকে সামর্থ্য লাভ না করলে, কেউ আমার কাছে আসতে পারে না।”
সেই সময় থেকে বহু শিষ্য ফিরে গেল এবং তারা আর তাঁকে অনুসরণ করল না।
তখন যীশু সেই বারোজন শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরাও কি আমাকে ছেড়ে যেতে চাও?”
68 ৬৮ শিমোন পিতর তাঁকে উত্তর দিলেন, প্রভু, কার কাছে আমরা যাব? আপনার কাছে অনন্ত জীবনের বাক্য আছে; (aiōnios g166)
শিমোন পিতর তাঁকে উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা কার কাছে যাব? আপনার কাছেই আছে অনন্ত জীবনের বাক্য। (aiōnios g166)
আমরা বিশ্বাস করি এবং জানি যে, আপনিই ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি।”
70 ৭০ যীশু তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের এই যে বারো জনকে কি আমি মনোনীত করে নিই নি? এবং তোমাদের মধ্যে একজন শয়তান আছে।
যীশু তখন বললেন, “তোমাদের এই বারোজনকে কি আমি মনোনীত করিনি? তবুও তোমাদের মধ্যে একজন হচ্ছে এক দিয়াবল।”
71 ৭১ এই কথা তিনি ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের পুত্র যিহূদার সমন্ধে বললেন, কারণ সে সেই বারো জনের মধ্যে একজন ছিল যে তাঁকে বেইমানি করে ধরিয়ে দেবে।
(একথার দ্বারা তিনি শিমোন ইষ্কারিয়োৎ-এর পুত্র যিহূদার বিষয়ে ইঙ্গিত করলেন। সে বারোজন শিষ্যের অন্যতম হলেও পরবর্তীকালে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।)
