< যিরমিয়ের বই 8 >

1 সদাপ্রভু বলেন, সেই দিনের তারা যিহূদার রাজার হাড়, উঁচু পদের কর্মচারীদের হাড়, যাজকের হাড় ও ভাববাদীদের হাড় এবং যিরূশালেমের লোকদের হাড় তাদের কবর থেকে তুলে ফেলবে।
“‘সদাপ্রভু বলেন, সেই সময় যিহূদার রাজা ও রাজকর্মচারীদের হাড়, যাজক ও ভাববাদীদের হাড় এবং জেরুশালেমের লোকদের হাড়, তাদের কবর থেকে অপসারিত করা হবে।
2 তখন তারা সেগুলিকে সূর্য্য, চাঁদ ও আকাশের সমস্ত তারার আলোয় ছড়িয়ে দেবে, কারণ এই সমস্ত বিষয়গুলি, যা তারা অনুসরণ ও সেবা করত, তারা তাদের পিছনে যেত, তাদের কাছে চাইতো এবং তারা ভজনা করত। তাদের জড়ো করা হবে না বা কবরও দেওয়া হবে না। সেগুলি গোবরের মত পৃথিবীর উপর পড়ে থাকবে।
সেগুলি সূর্য, চাঁদ ও আকাশের সেইসব তারার সাক্ষাতে খোলা পড়ে থাকবে, যাদের তারা ভালোবাসত ও সেবা করত, যাদের অনুসারী হয়ে তারা তাদের সঙ্গে পরামর্শ করত ও উপাসনা করত। সেই হাড়গুলি আর একত্র সংগ্রহ করা হবে না বা কবর দেওয়া হবে না, কিন্তু আবর্জনার মতো মাটিতে পড়ে থাকবে।
3 প্রত্যেক অবশিষ্ট জায়গায় যেখানে আমি তাদের তাড়িয়ে দেব, সেখানে এই দুষ্ট জাতির জীবিত লোকেরা জীবনের থেকে মরণকেই পছন্দ করবে। এটি বাহিনীগনের সদাপ্রভুর ঘোষণা।
বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি যেখানেই তাদের নির্বাসিত করি, সেখানে এই মন্দ জাতির অবশিষ্ট জীবিত লোকেরা জীবনের চেয়ে মৃত্যুই বেশি পছন্দ করবে।’
4 তাই তাদের বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, কেউ পড়ে গেলে কি আর ওঠে না? কেউ বিপথে গেলে কি ফিরে আসে না?
“তাদের বলো, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “‘মানুষ যখন পড়ে যায়, তখন তারা কি ওঠে না? কোনো মানুষ বিপথগামী হলে, সে কি ফিরে আসে না?
5 তবে কেন যিরূশালেমের এই লোকেরা চিরকালীন অবিশ্বস্ততায় বিপথে গেছে? তারা বিশ্বাসঘাতকতা ধরে রাখে এবং তারা অনুতাপ করতে অস্বীকার করে।
তাহলে কেন এসব লোক বিপথে গিয়েছে? কেন জেরুশালেম সবসময় বিপথগামী হয়? তারা ছলনার বাক্যকে আঁকড়ে ধরে, তারা ফিরে আসতে চায় না।
6 আমি মন দিয়ে শুনেছি, কিন্তু তারা সঠিক কথা বলে নি, কেউ তার দুষ্টতার জন্য দুঃখিত হয়নি, কেউ বলে নি, আমি কি করলাম! তারা সবাই তাদের ইচ্ছামত চলে, যেমন ঘোড়া দৌড়ে যুদ্ধে যায়।
আমি মনোযোগ দিয়ে শুনেছি, কিন্তু সঠিক বিষয় কি, তারা তা বলে না। কেউই তার দুষ্টতার জন্য অনুতাপ করে না, বলে, “আমি কী করেছি?” অশ্ব যেমন যুদ্ধের জন্য দৌড়ায়, তারা সবাই তেমনই নিজের নিজের পথে যায়।
7 এমনকি আকাশের সারস পাখীও সঠিক দিন জানে, আর ঘুঘু, চাতক ও শালিক পাখীও তাদের চলে যাবার সঠিক দিন জানে, কিন্তু আমার প্রজারা আমার নিয়ম জানে না।
এমনকি, আকাশের সারসও তার নির্ধারিত সময় জানে, এবং ঘুঘু, ফিঙে ও ময়না তাদের গমনকাল রক্ষা করে। কিন্তু আমার প্রজারা জানে না তাদের সদাপ্রভুর বিধিনিয়ম।
8 তোমরা কেন বল, আমরা জ্ঞানী এবং সদাপ্রভুর ব্যবস্থা আমাদের সঙ্গে আছে? বাস্তবে দেখ, ব্যবস্থার শিক্ষকদের ছলনার কলম ছলনা সৃষ্টি করেছে।
“‘তোমরা কীভাবে বলো, “আমরা জ্ঞানবান, কারণ আমাদের কাছে আছে সদাপ্রভুর বিধান,” যখন শাস্ত্রবিদদের মিথ্যা লেখনী, তা মিথ্যা করে লিখেছে?
9 জ্ঞানী লোকেরা লজ্জিত হবে। তারা আতঙ্কিত হল ও ফাঁদে ধরা পড়ল। দেখ! তারা সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করে, তাহলে তাদের জ্ঞান কি কাজে লাগবে?
জ্ঞানবানেরা লজ্জিত হবে; তারা হতাশ হয়ে ফাঁদে ধরা পড়বে। তারা যেহেতু সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করেছে, তাহলে তাদের কী ধরনের প্রজ্ঞা আছে?
10 ১০ সেইজন্য তাদের স্ত্রীদের আমি অন্য লোকদের দেব এবং তাদের ক্ষেত অন্য লোকেদের দেব, যারা তাদের শাসন করে। কারণ ছোট থেকে বড় সবাই খুব লোভী! ভাববাদী থেকে যাজক সবাই ছলনা করে।
সেই কারণে, আমি তাদের স্ত্রীদের নিয়ে অন্য লোকদের দেব, তাদের খেতগুলি নতুন সব মালিককে দেব। নগণ্যতম জন থেকে মহান ব্যক্তি পর্যন্ত, সকলেই লোভ-লালসায় লিপ্ত; ভাববাদী ও যাজকেরা সব এক রকম, তারা সকলেই প্রতারণার অনুশীলন করে।
11 ১১ আর তারা আমার প্রজার মেয়ের ক্ষত এমনভাবে চিকিৎসা করেছে যেন সেটা একটি সামান্য বিষয় ছিল। তারা বলে শান্তি, শান্তি, কিন্তু সেখানে শান্তি নেই।
তারা আমার প্রজাদের ক্ষত এভাবে নিরাময় করে, যেন তা একটুও ক্ষতিকর নয়। যখন কোনো শান্তি নেই, তখন “শান্তি, শান্তি,” বলে তারা আশ্বাস দেয়।
12 ১২ তারা যখন জঘন্য কাজ করত তারা কি তার জন্য লজ্জিত? তারা লজ্জিত হয়নি; তাদের কোনো নম্রতা নেই। সেইজন্য তারা তাদের শাস্তি দিনের পতিত হবে, সেই সমস্ত লোকদের সঙ্গে যারা আগেই পতিত হয়েছে। তাদের বিপর্যয় ঘটবে, সদাপ্রভু বলেন।
তাদের এই জঘন্য আচরণের জন্য তারা কি লজ্জিত? না, তাদের কোনও লজ্জা নেই; লজ্জাবনত হতে তারা জানেই না। তাই, পতিতদের মধ্যে তারাও পতিত হবে; আমি যখন তাদের শাস্তি দিই, তখন তাদেরও ভূপতিত করব, সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
13 ১৩ আমি তাদের সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলব, সদাপ্রভু বলেন যখন আমি সেগুলোকে সংগ্রহ করব। আঙ্গুর লতায় আঙ্গুর থাকবে না, কিংবা ডুমুর গাছে ডুমুর থাকবে না। পাতা শুকিয়ে যাবে এবং আমি তাদের যা দিয়েছি তাও চলে যাবে।
“‘আমি তাদের সব শস্য শেষ করে দেব, সদাপ্রভু এই কথা বলেন। তাদের দ্রাক্ষালতায় কোনো আঙুর থাকবে না। ডুমুর গাছে থাকবে না কোনো ডুমুর, তাদের পাতাগুলি শুকিয়ে যাবে। আমি যা কিছু তাদের দিয়েছিলাম, সব তাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেব।’”
14 ১৪ আমরা কেন এখানে বসে আছি? চল, আমরা সুরক্ষিত শহরে যাই এবং সেখানে মৃত্যুতে নীরব হই, কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের নীরব করবেন। তিনি আমাদের জন্য বিষাক্ত পানীয় দেবেন, কারণ আমরা তাঁর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।
কেন আমরা এখানে বসে আছি? এসো, সবাই একত্র হই! এসো আমরা সুরক্ষিত নগরগুলিতে পালিয়ে যাই এবং সেখানে ধ্বংস হই! কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের ধ্বংস হওয়ার জন্য নিরূপণ করেছেন এবং আমাদের পান করার জন্য বিষাক্ত জল দিয়েছেন, কারণ আমরা তাঁর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।
15 ১৫ আমরা শান্তির আশা করছি, কিন্তু সেখানে কোন মঙ্গল হবে না। আমরা সুস্থ হবার আশা করছি, কিন্তু দেখ, সেখানে ভয়ঙ্কর কিছু হবে।
আমরা শান্তির আশা করলাম কিন্তু কোনো মঙ্গল হল না, আমরা রোগনিরাময়ের অপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু কেবলমাত্র আতঙ্কের সম্মুখীন হলাম।
16 ১৬ দান শহর থেকে শত্রুদের ঘোড়ার ডাকের শব্দ শোনা যাচ্ছে; তাদের ঘোড়াগুলির ডাকে সমস্ত পৃথিবী কাঁপছে। কারণ তারা আসবে এবং সেই দেশ, তার মধ্যে থাকা সব কিছু, শহর ও সেখানে বসবাসকারীদের সবাইকে তারা গিলে ফেলবে।
দান অঞ্চল থেকে শত্রুদের অশ্বের নাসারব শোনা যাচ্ছে; তাদের অশ্বগুলির হ্রেষারবে সমস্ত দেশ কম্পিত হচ্ছে। এই দেশ ও এর ভিতরের সবকিছু, এই নগর ও এর মধ্যে বসবাসকারী সবাইকে, তারা গ্রাস করার জন্য এসেছে।
17 ১৭ কারণ দেখ, আমি তোমাদের মধ্যে সাপ পাঠাচ্ছি, সেই সাপেরা কোন মন্ত্র মানবে না। তারা তোমাদের কামড়াবে, এটি সদাপ্রভুর ঘোষণা।
“দেখো, আমি তোমাদের মধ্যে বিষধর সাপ প্রেরণ করব, সেই কালসাপগুলিকে মন্ত্রমুগ্ধ করা যাবে না, আর তারা তোমাদের দংশন করবে,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
18 ১৮ আমার দুঃখের শেষ নেই এবং আমার হৃদয় অসুস্থ।
আমার দুঃখ নিরাময়ের ঊর্ধ্বে, আমার অন্তর ভগ্নচূর্ণ হয়েছে।
19 ১৯ দেখ! দূর দেশ থেকে আমার প্রজার মেয়েদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে, সদাপ্রভু কি সিয়োনে নেই? তার রাজা কি তার সঙ্গে নেই? কেন তারা তাদের ক্ষোদিত মূর্ত্তি ও পরজাতীয় অপদার্থ মূর্তিগুলি দিয়ে কেন আমাকে বিরক্ত করে তুলেছে?
এক দূরবর্তী দেশ থেকে আমার প্রজাদের কান্না শ্রবণ করো: “সদাপ্রভু কি সিয়োনে নেই? তার রাজা কি আর সেখানে থাকেন না?” “তাদের দেবমূর্তিগুলির দ্বারা, তাদের সেই অসার বিজাতীয় দেবপ্রতিমাগুলির দ্বারা, তারা কেন আমার ক্রোধের উদ্রেক করেছে?”
20 ২০ ফসল কাটবার দিন চলে গেল, গরম কালও শেষ হয়ে গেল, কিন্তু আমরা উদ্ধার পাই নি।
“শস্যচয়নের কাল অতীত হয়েছে, গ্রীষ্মকাল শেষ হয়েছে, কিন্তু আমাদের উদ্ধারলাভ হয়নি।”
21 ২১ আমি আমার প্রজার মেয়েদের আঘাতে আঘাত পেয়েছি। আমি ভয়ঙ্কর জিনিসে শোক করছি যা তার প্রতি হয়েছে; আমি আতঙ্কিত।
আমার জাতির লোকেরা যেহেতু চূর্ণ হয়েছে, আমিও চূর্ণ হয়েছি; আমি শোক করি, আতঙ্ক আমাকে ঘিরে ধরেছে।
22 ২২ গিলিয়দে কি কোন ওষুধ নেই? সেখানে কি কোন ডাক্তার নেই? আমার প্রজার মেয়ে কেন সুস্থ হয়নি?
গিলিয়দে কি কোনো ব্যথার মলম নেই? সেখানে কি কোনো চিকিৎসক নেই? তাহলে কেন আমার জাতির লোকেদের ক্ষত নিরাময় হয় না?

< যিরমিয়ের বই 8 >