< যিরমিয়ের বই 37 >

1 এখন যিহোয়াকীমের ছেলে কনিয়ের জায়গায় যোশিয়ের ছেলে সিদিকিয় রাজত্ব করতে লাগলেন, বাবিলের রাজা নবূখদনিৎসর যোশিয়ের ছেলে সিদিকিয়কে যিহূদার রাজা করলেন।
ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার, যোশিয়ের পুত্র সিদিকিয়কে যিহূদার রাজা করেন। তিনি যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াখীনের স্থানে রাজত্ব করেন।
2 কিন্তু সিদিকিয়, তাঁর দাসেরা, দেশের লোকেরা ভাববাদী যিরমিয়ের মধ্যে দিয়ে বলা সদাপ্রভু বাক্য শুনত না।
তিনি, তাঁর পরিচারকেরা বা দেশের অন্য কোনো লোক, ভাববাদী যিরমিয়ের মাধ্যমে কথিত সদাপ্রভুর বাক্যের প্রতি কোনো মনোযোগ দেননি।
3 তাই রাজা সিদিকিয় শেলিমিয়ের ছেলে যিহূখল ও মাসেয়ের ছেলে যাজক সফনিয়কে এই বার্তা দিয়ে যিরমিয়ের কাছে পাঠালেন। তারা বললেন, “আমাদের জন্য আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন।”
তবুও, রাজা সিদিকিয়, শেলেমিয়ের পুত্র যিহূখলকে, মাসেয়ের পুত্র যাজক সফনিয়কে, এই বার্তা দিয়ে ভাববাদী যিরমিয়ের কাছে প্রেরণ করলেন: “অনুগ্রহ করে আপনি, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন।”
4 এখন যিরমিয় আসছিলেন ও লোকদের মধ্যে যাচ্ছিলেন, কারণ তিনি তখন কারাগারে ছিলেন না।
সেই সময় যিরমিয় লোকদের কাছে যাওয়া-আসার জন্য মুক্ত ছিলেন, কারণ তখনও পর্যন্ত তিনি কারাগারে বদ্ধ হননি।
5 ফরৌণের সৈন্যদল মিশর থেকে বের হয়েছিল এবং কলদীয়েরা, যারা যিরূশালেম ঘেরাও করেছিল, তারা তাদের যিরূশালেম ছেড়ে যাবার খবর শুনল।
ফরৌণের সৈন্যদল মিশর থেকে সমরাভিযানে বের হয়েছে, জেরুশালেম অবরোধকারী ব্যাবিলনীয়েরা যখন এই কথা শুনল, তারা জেরুশালেম ছেড়ে চলে গেল।
6 তখন সদাপ্রভুর বাক্য যিরমিয় ভাববাদীর কাছে এল এবং বলল,
তারপর, ভাববাদী যিরমিয়ের কাছে সদাপ্রভুর বাক্য উপস্থিত হল:
7 সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন, যিহূদার রাজা, যে তোমাকে আমার কাছে জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছে, তাকে বল, দেখ, ফরৌণের যে সৈন্যদল তোমাদের সাহায্যের জন্য বের হয়ে এসেছে, তারা মিশরে নিজেদের দেশে ফিরে যাবে।
“সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা বলেন: যে আমার কাছে অনুসন্ধান করতে পাঠিয়েছে, সেই যিহূদার রাজাকে তুমি বলো, ‘ফরৌণের যে সৈন্যদল তোমাকে সাহায্য করার জন্য সমরাভিযান করেছে, তারা তাদের স্বদেশ মিশরে ফিরে যাবে।
8 কলদীয়েরা ফিরে আসবে। তারা এই শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, দখল করবে ও পুড়িয়ে দেবে।
তারপর ব্যাবিলনীয়েরা ফিরে আসবে এবং এই নগর আক্রমণ করবে; তারা এই নগর অধিকার করে আগুনে পুড়িয়ে দেবে।’
9 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এই কথা ভেবে নিজেদের ঠকিয়ো না যে, কলদীয়েরা অবশ্যই তোমাদের ছেড়ে চলে যাবে। কারণ তারা যাবে না।
“সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এই কথা বলে নিজেদের ঠকিয়ো না, ‘ব্যাবিলনীয়েরা নিশ্চয়ই আমাদের ছেড়ে চলে যাবে।’ না, তারা যাবে না!
10 ১০ এমনকি যদি তোমরা কলদীয় সৈন্যদের আক্রমণ কর, যারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে, যাতে কেবলমাত্র আহত লোকেরা তাদের তাঁবুতে পড়ে থাকে; তারা উঠবে ও এই শহর পুড়িয়ে দেবে।
যদিও তোমরা সমস্ত ব্যাবিলনীয় সৈন্যদলকে পরাস্ত করতে, যারা তোমাদের আক্রমণ করছে এবং কেবলমাত্র আহত লোকেরা তাদের শিবিরে অবস্থান করত, তবুও তারাই বের হয়ে এসে এই নগর পুড়িয়ে দিত।”
11 ১১ কলদীয়দের সৈন্যদল যখন ফরৌণের সৈন্যদলের ভয়ে যিরূশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিল,
ফরৌণের সৈন্যদলের কারণে ব্যাবিলনীয় সৈন্যেরা জেরুশালেম ছেড়ে চলে গেলে পর,
12 ১২ তখন যিরমিয় বিন্যামীন প্রদেশে যাবার ও সেখানে লোকেদের মধ্যে তাঁর সম্পত্তির ভাগ নেবার জন্য যিরূশালেম থেকে চলে গেলেন।
যিরমিয় নগর ত্যাগ করে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত এলাকায় তাঁর সম্পত্তির দখল নেওয়ার জন্য সেখানকার লোকদের কাছে রওনা হলেন।
13 ১৩ কিন্তু যখন তিনি বিন্যামীন ফটকে পৌঁছালেন, তখন যিরিয় নামে পাহারাদারদের সেনাপতি যিরমিয়কে ধরে বলল, “তুমি কলদীয়দের পক্ষে যাচ্ছ।” এই যিরিয় ছিল শেলিমিয়ের ছেলে, শেলিমিয় হনানিয়ের ছেলে।
কিন্তু যখন তিনি বিন্যামীন-দ্বারে পৌঁছালেন, তখন হনানিয়ের পুত্র, শেলিমিয়ের পুত্র, রক্ষীদলের সেনাপতি যিরিয় তাঁকে গ্রেপ্তার করলেন এবং বললেন, “আপনি ব্যাবিলনীয়দের পক্ষে যোগ দিতে যাচ্ছেন!”
14 ১৪ যিরমিয় বললেন, “এ মিথ্যা কথা, আমি কলদীয়দের পক্ষে যাচ্ছি না।” তবুও যিরিয় তাঁর কথা না শুনে তাঁকে ধরে শাসনকর্ত্তাদের কাছে নিয়ে গেল।
যিরমিয় বললেন, “সেই কথা সত্যি নয়। আমি ব্যাবিলনীয়দের পক্ষে যোগ দিতে যাচ্ছি না।” কিন্তু যিরিয় তাঁর কথা শুনতে চাইলেন না; পরিবর্তে, তিনি যিরমিয়কে গ্রেপ্তার করে রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেলেন।
15 ১৫ সেই শাসনকর্তারা যিরমিয়ের উপর রেগে গিয়ে তাঁকে মারধর করল এবং লেখক যোনাথনের বাড়িতে তাঁকে রাখল; কারণ তাঁরা সেটাকে কারাগার বানিয়েছিল।
তারা যিরমিয়ের প্রতি ক্রুদ্ধ হল। তারা তাঁকে প্রহার করে সচিব যোনাথনের গৃহে কারাবন্দি করল। তারা সেই গৃহকে কারাগারে পরিণত করেছিল।
16 ১৬ সেই কারাগারে মাটির নীচের একটি কুঠরীতে যিরমিয়কে রাখা হল, যেখানে তিনি অনেক দিন ছিলেন।
যিরমিয়কে এক ভূগর্ভস্থ অন্ধকূপে রাখা হল। সেখানে তিনি অনেক দিন থাকলেন।
17 ১৭ তারপর রাজা সিদিকিয় লোক পাঠালেন, যে তাঁকে রাজবাড়ীতে নিয়ে এল। এই বাড়িতে, রাজা গোপনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভুর কোন বাক্য আছে কি?” উত্তরে যিরমিয় বললেন, “আছে,” এবং আরও বললেন, “আপনি বাবিলের রাজার হাতে সমর্পিত হবেন।”
তারপর, রাজা সিদিকিয় লোক পাঠিয়ে তাঁকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে এলেন। সেখানে তিনি তাঁকে গোপনে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভুর কাছ থেকে কোনো বাক্য আছে কি?” যিরমিয় উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আপনি ব্যাবিলনের রাজার হাতে সমর্পিত হবেন।”
18 ১৮ তারপর যিরমিয় রাজা সিদিকিয়কে বললেন, “আমি আপনার বিরুদ্ধে, আপনার দাসেদের বিরুদ্ধে, কিংবা আপনার এই লোকদের বিরুদ্ধে কি দোষ করেছি যে, আপনারা আমাকে কারাগারে রেখেছেন?
তারপর যিরমিয়, রাজা সিদিকিয়কে বললেন, “আমি আপনার বা আপনার কর্মচারীদের বা এই লোকদের বিরুদ্ধে কী অপরাধ করেছি যে, আপনি আমাকে কারারুদ্ধ করেছেন?
19 ১৯ যারা আপনাদের কাছে এই ভাববাণী বলত যে, ‘বাবিলের রাজা আপনাদের বা এই দেশের বিরুদ্ধে আসবে না’, আপনাদের সেই ভাববাদীরা কোথায়?
আপনার সেই ভাববাদীরা কোথায়, যারা ভাব বাক্য করেছিল, ‘ব্যাবিলনের রাজা আপনাকে বা এই দেশকে আক্রমণ করবেন না’?
20 ২০ কিন্তু এখন, হে আমার প্রভু মহারাজ! দয়া করে শুনুন। আপনার কাছে আমার এই অনুরোধ, আপনি আমাকে লেখক যোনাথনের বাড়িতে ফেরত পাঠাবেন না, নাহলে আমি সেখানে মরে যাব।”
কিন্তু এখন, আমার প্রভু রাজা, আপনি দয়া করে শুনুন। আপনার কাছে আমাকে এই অনুরোধ রাখতে দিন, আপনি আমাকে সচিব যোনাথনের গৃহে আর ফেরত পাঠাবেন না, নইলে আমি সেখানে মারা পড়ব।”
21 ২১ তখন রাজা সিদিকিয় একটি আদেশ দিলেন। তাঁর দাসেরা যিরমিয়কে পাহারাদারদের উঠানে রাখলো। যে পর্যন্ত না শহরের সমস্ত রুটি শেষ হল, ততদিন পর্যন্ত প্রতিদিন রুটিওয়ালাদের রাস্তা থেকে তাঁকে একটি করে রুটি দিত। তাই যিরমিয় পাহারাদারদের উঠানে থাকলেন।
রাজা সিদিকিয় তখন আদেশ দিলেন, যিরমিয়কে রক্ষীদের প্রাঙ্গণে রাখার জন্য এবং বললেন, তাকে যেন রুটিওয়ালাদের সরণি থেকে প্রতিদিন রুটি দেওয়া হয়, যতক্ষণ না নগর থেকে সমস্ত রুটি শেষ হয়। এইভাবে যিরমিয় রক্ষীদের প্রাঙ্গণে থেকে গেলেন।

< যিরমিয়ের বই 37 >