< যাকোব 1 >

1 ঈশ্বরও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস যাকোব, নানা দেশে ছিন্নভিন্ন বারো বংশকে এই চিঠি লিখছি। মঙ্গল হোক।
ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, আমি যাকোব, বিভিন্ন দেশে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকা ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর উদ্দেশে: শুভেচ্ছা।
2 হে আমার ভাইয়েরা, তোমরা যখন নানা রকম পরীক্ষায় পড়, তখন এই সব কিছুকে আনন্দের বিষয় বলে মনে করো;
হে আমার ভাইবোনেরা, যখনই তোমরা বিভিন্ন প্রকারের পরীক্ষার সম্মুখীন হও, সেগুলিকে নির্মল আনন্দের বিষয় বলে মনে করো,
3 কারণ জেনে রাখো যে, তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষার সফলতা সহ্য উত্পন্ন করে।
কারণ তোমরা জানো যে, তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা ধৈর্য উৎপন্ন করে।
4 আর সেই সহ্য যেন নিজের কাজকে সম্পূর্ণ করে, যেন তোমরা পরিপক্ক ও সম্পূর্ণ হও, কোন বিষয়ে যেন তোমাদের অভাব না থাকে।
ধৈর্যকে অবশ্যই তার কাজ শেষ করতে হবে, যেন তোমরা পরিপক্ব ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারো, কোনো বিষয়ের অভাব তোমাদের না থাকে।
5 যদি তোমাদের কারো জ্ঞানের অভাব হয়, তবে সে যেন ঈশ্বরের কাছে চায়; তিনি সবাই কে উদারতার সঙ্গে দিয়ে থাকেন, তিরস্কার করেন না; ঈশ্বর তাকে দেবেন।
তোমাদের কারও যদি প্রজ্ঞার অভাব থাকে, সে ঈশ্বরের কাছে তা চাইবে, যিনি কোনও ত্রুটি না ধরে উদারভাবে সকলকে দান করে থাকেন, আর তাকে তা দেওয়া হবে।
6 কিন্তু সে যেন সন্দেহ না করে কিন্তু বিশ্বাসের সঙ্গে চায়; কারণ যে সন্দেহ করে, সে ঝড়ো হাওয়ায় বয়ে আসা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো চঞ্চল।
কিন্তু চাওয়ার সময় তাকে বিশ্বাস করতে হবে, সে যেন সন্দেহ না করে। কারণ যে সন্দেহ করে, সে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো, বাতাসে তাড়িত ও উৎক্ষিপ্ত।
7 সেই ব্যক্তি যে প্রভুর কাছে কিছু পাবে এমন আশা না করুক;
সেই ব্যক্তি এমন মনে না করুক যে, সে প্রভুর কাছ থেকে কিছু পাবে।
8 কারণ সে দুমনা লোক, নিজের সব কাজেই চঞ্চল।
সে দ্বিমনা ব্যক্তি, তার সমস্ত কাজে কোনো স্থিরতা নেই।
9 দরিদ্র ভাই তার উচ্চ পদের জন্য গর্ব বোধ করুক।
যে ভাইবোনেরা খুব সাধারণ পরিস্থিতিতে আছে, সে তার উঁচু অবস্থানের জন্য গর্ববোধ করুক।
10 ১০ আর যে ধনী সে তার দিন তার জন্য গর্ব বোধ করুক, কারণ সে বুনো ফুলের মতোই ঝরে পড়ে যাবে।
কিন্তু যে ধনী, সে তার থেকে নিচু অবস্থানের জন্য গর্বিত হোক, কারণ সে বুনোফুলের মতো হারিয়ে যাবে।
11 ১১ যেমন, সূর্য্য যখন প্রখর তাপের সঙ্গে ওঠে তখন, গাছ শুকিয়ে যায় ও তার ফুল ঝরে পড়ে এবং তার রূপের লাবণ্য নষ্ট হয়ে যায়; তেমনি ধনী ব্যক্তিও তার সমস্ত কাজের মধ্যে দিয়ে ফুলের মতোই ঝরে পড়বে।
কারণ সূর্য প্রখর তাপ নিয়ে উদিত হয় ও গাছপালা শুকিয়ে যায়; তার ফুল ঝরে যায় ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়। একইভাবে, ধনী ব্যক্তি তার কর্মব্যস্ততা সত্ত্বেও ম্লান হয়ে যাবে।
12 ১২ ধন্য সেই ব্যক্তি, যে পরীক্ষা সহ্য করে; কারণ পরীক্ষায় সফল হলে পর সে জীবনমুকুট পাবে, তা প্রভু তাদেরকেই দিতে প্রতিজ্ঞা করেছেন, যারা তাকে প্রেম করেন।
ধন্য সেই ব্যক্তি, যে পরীক্ষার মধ্যেও ধৈর্য ধরে, কারণ পরীক্ষা সহ্য করলে সে জীবনমুকুট লাভ করবে, যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ঈশ্বর তাদের দিয়েছেন, যারা তাঁকে ভালোবাসে।
13 ১৩ প্রলোভনের দিনের কেউ না বলুক, ঈশ্বর আমাকে প্রলোভিত করছেন; কারণ মন্দ বিষয় দিয়ে ঈশ্বরকে প্রলোভিত করা যায় না, আর তিনি কাউকেই প্রলোভিত করেন না;
প্রলোভনে পড়লে কেউ যেন না বলে, “ঈশ্বর আমাকে প্রলুব্ধ করেছেন।” কারণ মন্দ বিষয়ের দ্বারা ঈশ্বরকে প্রলুব্ধ করা যায় না, আবার তিনিও কাউকে প্রলুব্ধ করেন না।
14 ১৪ কিন্তু প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের নিজের মন্দ কামনার মাধ্যমে আকৃষ্ট ও প্ররোচিত হয়ে প্রলোভিত হয়।
কিন্তু প্রত্যেক মানুষ তার নিজের কামনাবাসনার দ্বারা আকর্ষিত হয়ে প্রলোভনে পড়ে ও কুপথে চালিত হয়।
15 ১৫ পরে কামনা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পরিপক্ক হয়ে মৃত্যুকে জন্ম দেয়।
পরে, সেই কামনা পূর্ণগর্ভ হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যু প্রসব করে।
16 ১৬ হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা, ভ্রান্ত হয়ো না।
আমার প্রিয় ভাইবোনেরা, ভ্রান্ত হোয়ো না।
17 ১৭ সমস্ত উত্তম উপহার এবং সমস্ত সিদ্ধ উপহার স্বর্গ থেকে আসে, সেই আলোর পিতার কাছ থেকে নেমে আসে। ছায়া যেমন একস্থান থেকে আর একস্থানে পরিবর্তন হয় তেমনি তাঁর পরিবর্তন হয় না।
সমস্ত উৎকৃষ্ট ও নিখুঁত দান ঊর্ধ্বলোক থেকে, আকাশের জ্যোতিষ্কমণ্ডলীর সেই পিতা থেকে আসে। তিনি কখনও পরিবর্তন হন না বা ছায়ার মতো সরে যান না।
18 ১৮ ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সত্যের বাক্য দিয়ে আমাদেরকে জীবন দিয়েছেন, যেন আমরা তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে প্রথম ফলের মতো হই।
তিনি আমাদের মনোনীত করে সত্যের বাক্য দ্বারা আমাদের জন্ম দিয়েছেন, যেন তাঁর সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে আমরা এক প্রকার প্রথম ফসলরূপে গণ্য হতে পারি।
19 ১৯ হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা, তোমরা এটা জানো। কিন্তু তোমাদের প্রত্যেকে অবশ্যই কথা শোনার জন্য প্রস্তুত থাক, কম কথা বলো, খুব তাড়াতাড়ি রেগে যেও না,
আমার প্রিয় ভাইবোনেরা, তোমরা এ বিষয়ে মনোনিবেশ করো: প্রত্যেকেই শুনতে আগ্রহী হও ও কথা বলায় ধীর হও এবং ক্রোধে ধীর হও।
20 ২০ কারণ যখন কোনো ব্যক্তি রেগে যায় সে ঈশ্বরের ইচ্ছা অর্থাৎ ধার্ম্মিকতা অনুযায়ী কাজ করে না।
কারণ মানুষের ক্রোধ ঈশ্বরের কাঙ্ক্ষিত ধর্মময় জীবনের বিকাশ ঘটাতে পারে না।
21 ২১ অতএব, তোমরা সমস্ত অপবিত্রতা ও মন্দতা ত্যাগ করে, নম্র ভাবে সেই বাক্য যা তোমাদের মধ্যে রোপণ করা হয়েছে তা গ্রহণ কর, যা তোমাদের প্রাণের উদ্ধার করতে সক্ষম।
সেই কারণে, তোমাদের জীবনের সমস্ত নৈতিক কলুষতা ও মন্দতা থেকে মুক্ত হও ও তোমাদের মধ্যে বপন করা সেই বচনকে নতনম্ররূপে গ্রহণ করো, যা তোমাদের পরিত্রাণ সাধন করতে পারে।
22 ২২ আর বাক্যর কার্য্যকারী হও, নিজেদের ঠকিয়ে শুধু বাক্যের শ্রোতা হয়ো না।
বাক্যের কেবল শ্রোতা হোয়ো না ও নিজেদের প্রতারিত কোরো না। বাক্য যা বলে, তা করো।
23 ২৩ কারণ যে শুধু বাক্য শোনে, কিন্তু সেইমতো কাজ না করে, সে এমন ব্যক্তির তুল্য, যে আয়নায় নিজের স্বাভাবিক মুখ দেখে;
যে বাক্য শোনে অথচ তার নির্দেশ পালন করে না, সে এমন মানুষের মতো যে আয়নায় তার মুখ দেখে,
24 ২৪ কারণ সে নিজেকে আয়নায় দেখে, চলে গেল, আর সে কেমন লোক, তা তখনই ভুলে গেল।
নিজেকে দেখার পর সে চলে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গেই ভুলে যায়, সে দেখতে কেমন।
25 ২৫ কিন্তু যে কেউ মনোযোগের সঙ্গে স্বাধীনতার নিখুঁত ব্যবস্থায় দৃষ্টিপাত করে ও তাতে মনযোগ দেয় এবং ভুলে যাওয়ার জন্য শ্রোতা না হয়ে সেই বাক্য অনুযায়ী কাজ করে, সে নিজের কাজে ধন্য হবে।
কিন্তু যে নিখুঁত বিধানের প্রতি আগ্রহভরে দৃষ্টি দেয়, যা স্বাধীনতা প্রদান করে ও যা শুনেছে তা ভুলে না গিয়ে নিরন্তর তা পালন করতে থাকে, সে সবকাজেই আশীর্বাদ পাবে।
26 ২৬ যে ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক বলে মনে করে, আর নিজের জিভকে বল্গা দিয়ে বশে না রাখে, কিন্তু নিজের হৃদয়কে ঠকায়, তার ধার্মিকতার কোনো মূল্য নেই।
কেউ যদি নিজেকে ধার্মিক বলে মনে করে, কিন্তু নিজের জিভকে লাগাম দিয়ে বশে না রাখে, সে নিজের সঙ্গে নিজেই প্রতারণা করে এবং তার ধর্ম অসার।
27 ২৭ দুঃখের দিনের অনাথদের ও বিধবাদের দেখাশোনা করা এবং জগত থেকে নিজেকে ত্রূটিহীন ভাবে রক্ষা করাই পিতা ঈশ্বরের কাছে পবিত্র ও শুদ্ধ ধর্ম।
পিতা ঈশ্বরের কাছে বিশুদ্ধ ও নির্দোষরূপে গ্রহণযোগ্য ধর্ম হল এই: অনাথ ও বিধবাদের দুঃখকষ্টে তত্ত্বাবধান করা এবং সাংসারিক কলুষতা থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

< যাকোব 1 >