< যাকোব 3 >
1 ১ হে আমার ভাইয়েরা, অনেকে শিক্ষক হয়ো না; কারণ, তোমরা জান যে, অন্যদের থেকে আমরা যারা শিক্ষক ভারী বিচার হবে।
আমার ভাইবোনেরা, তোমরা অনেকেই শিক্ষক হতে চেয়ো না, কারণ তোমরা জানো যে, আমরা যারা শিক্ষা দিই, আমাদের আরও কঠোরভাবে বিচার করা হবে।
2 ২ আমরা সকলে অনেকভাবে হোঁচট খাই। যদি কেউ বাক্যে হোঁচট না খায়, তবে সে খাঁটি মানুষ, পুরো শরীরকেই সংযত রাখতে সমর্থ।
আমরা সকলেই বিভিন্নভাবে ভুল করি। কেউ যদি তার কথাবার্তায় কখনও ভুল না করে, তাহলে সে সিদ্ধপুরুষ, সে তার সমস্ত শরীর বশে রাখতে সমর্থ।
3 ৩ ঘোড়ারা যেন আমাদের বাধ্য হয়, সেইজন্য আমরা যদি তাদের মুখে বল্গা দিই, তবে তাদের পুরো শরীরও চালনা করতে পারি।
ঘোড়াকে বশে রাখার জন্য যখন আমরা তাদের মুখে লাগাম পরাই, তখন আমরা তার সমস্ত শরীরকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
4 ৪ আর দেখ, জাহাজগুলিও খুব বড় এবং প্রচন্ড বাতাসে চলে, তা সত্বেও সে সেগুলিকে খুব ছোটো হালের মাধ্যমে নাবিকের মনের ইচ্ছা যে দিকে চায়, সেই দিকে চালাতে পারে।
কিংবা উদাহরণস্বরূপ, জাহাজের কথাই ধরো। যদিও সেগুলি অনেক বড়ো ও প্রবল বাতাসে চলে, তবুও নাবিক একটি ছোটো হালের সাহায্যে যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়।
5 ৫ সেইভাবে জিভও ছোটো অঙ্গ বটে, কিন্তু বড় অহঙ্কারের কথা বলে। দেখ, কেমন ছোট আগুনের ফুলকি কেমন বৃহৎ বন জ্বালিয়ে দেয়!
একইভাবে, জিভ শরীরের একটি ছোটো অঙ্গ, কিন্তু তা মহা দম্ভের সব কথা বলে থাকে। ভেবে দেখো, সামান্য একটি আগুনের ফুলকি কীভাবে মহা অরণ্যকে জ্বালিয়ে দেয়!
6 ৬ জিভও আগুনের মত; আমাদের সব অঙ্গের মধ্যে জিভ হল অধর্ম্মের জগত; এবং নিজে নরকের আগুনে জ্বলে উঠে সে গোটা দেহকেই নষ্ট করে এবং জীবন নষ্ট করে দেয়। (Geenna )
সেরকম, জিভও যেন এক আগুন, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে অধর্মের এক জগতের মতো রয়েছে। সমগ্র ব্যক্তিসত্তাকে তা কলুষিত করে, তার সমগ্র জীবনচক্রে আগুন জ্বালায় এবং সে নিজেও নরকের আগুনে জ্বলে। (Geenna )
7 ৭ পশু ও পাখি, সরীসৃপের ও সমুদ্রচর জন্তুর সমস্ত স্বভাবকে মানুষের স্বভাবের মাধ্যমে দমন করতে পারা যায় ও দমন করতে পারে এবং পেরেছে;
সব ধরনের পশুপাখি, সরীসৃপ ও সামুদ্রিক প্রাণীকে বশ করা যায় ও মানুষ তাদের বশ করেছে,
8 ৮ কিন্তু জিভকে দমন করতে কোন মানুষের ক্ষমতা নেই; ওটা অশান্ত খারাপ বিষয় এবং মৃত্যুজনক বিষে ভরা।
কিন্তু জিভকে কেউই বশ করতে পারে না। এ এক অশান্ত মন্দতা ও প্রাণঘাতী বিষে পূর্ণ।
9 ৯ ওর মাধ্যমেই আমরা প্রভু পিতার প্রশংসা করি, আবার ওর মাধমেই ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্টি মানুষদেরকে অভিশাপ দিই।
এই জিভ দিয়েই আমরা আমাদের প্রভু ও পিতার গৌরব করি, আবার এ দিয়েই আমরা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট সব মানুষকে অভিশাপ দিই।
10 ১০ একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ বের হয়। হে আমার ভাইয়েরা, এ সব এমন হওয়া উচিত নয়।
একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ বের হয়ে আসে। আমার ভাইবোনেরা, এরকম হওয়া উচিত নয়।
11 ১১ একই উৎস থেকে কি মিষ্টি ও তেতো দু-ধরনের জল বের হয়?
একই উৎস থেকে কি মিষ্টি জল ও লবণাক্ত জল, উভয়ই প্রবাহিত হতে পারে?
12 ১২ হে আমার ভাইয়েরা, ডুমুরগাছে কি জলপাই, দ্রাক্ষালতায় কি ডুমুরফল হতে পারে? তেমনি নোনা জলের উত্স মিষ্টি জল দিতে পারে না।
আমার ভাইবোনেরা, ডুমুর গাছে কি জলপাই, কিংবা দ্রাক্ষালতায় কি ডুমুর উৎপন্ন হতে পারে? তেমনই লবণাক্ত জলের উৎস মিষ্টি জল দিতে পারে না।
13 ১৩ তোমাদের মধ্যে জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান কে? সে ভালো আচরণের মাধ্যমে জ্ঞানের নম্রতায় নিজের কাজ দেখিয়ে দিক।
তোমাদের মধ্যে কে জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান? সে জ্ঞানের মাধ্যমে আসা সৎ জীবন ও নম্রতায় করা কাজকর্মের দ্বারা তা প্রমাণ করুক।
14 ১৪ কিন্তু তোমাদের হৃদয়ে যদি তিক্ত ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রাখ, তবে সত্যের বিরুদ্ধে গর্ব কোরো না ও মিথ্যা বোলো না।
কিন্তু তোমরা যদি তোমাদের অন্তরে তিক্ত ঈর্ষা ও স্বার্থকেন্দ্রিক উচ্চাশা পোষণ করো, তার জন্য গর্বপ্রকাশ কোরো না বা সত্যকে অস্বীকার কোরো না।
15 ১৫ সেই জ্ঞান এমন নয়, যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে, বরং তা পার্থিব, আত্মিক নয় ও ভূতগ্রস্থ।
এ ধরনের “জ্ঞান” স্বর্গ থেকে নেমে আসে না। তা পার্থিব, সাংসারিক ও শয়তানসুলভ।
16 ১৬ কারণ যেখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা, সেখানে অস্থিরতা ও সমস্ত খারাপ কাজ থাকে।
কারণ যেখানে তোমাদের মধ্যে ঈর্ষা ও স্বার্থকেন্দ্রিক উচ্চাশা আছে, সেখানেই তোমরা দেখবে বিশৃঙ্খলা ও সব ধরনের মন্দ অভ্যাস।
17 ১৭ কিন্তু যে জ্ঞান স্বর্গ থেকে আসে, তা প্রথমে শুদ্ধ, পরে শান্তিপ্রিয়, নম্র, আন্তরিক, দয়া ও ভালো ভালো ফলে ভরা, পক্ষপাতহীন ও কপটতাহীন।
কিন্তু স্বর্গ থেকে যে জ্ঞান আসে, প্রথমত তা বিশুদ্ধ, তারপরে তা শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, অনুগত, করুণায় ও উৎকৃষ্ট ফলে পূর্ণ, পক্ষপাতশূন্য ও অকপট।
18 ১৮ আর যারা শান্তি স্থাপন করে, তারা শান্তির বীজ বোনে ও ধার্মিকতার ফসল কাটে।
আর যারা শান্তি স্থাপনের জন্য শান্তিতে বীজবপন করে, তারা ধার্মিকতার ফসল উৎপন্ন করবে।