< যিশাইয় ভাববাদীর বই 63 >

1 উনি কে যিনি ইদোম থেকে আসছেন, বস্রা থেকে লাল রঙের পোশাক পরে আসছেন? উনি কে যিনি রাজকীয় পোশাকে মহাশক্তিতে, দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে আসছেন? এ আমি, ন্যায়ভাবে কথা বলি এবং আমি মহাশক্তিতে উদ্ধার করি।
ইদোম থেকে আসছেন, উনি কে? বস্রা থেকে রক্তরঞ্জিত পোশাক পরে আসছেন, কে তিনি? বাহারি পোশাক পরিহিত, ইনি কে? কে তিনি আপন শক্তির পূর্ণতায় এগিয়ে আসছেন? “এ আমি, যিনি ধর্মশীলতায় কথা বলেন, যিনি পরিত্রাণ সাধন করার জন্য শক্তিশালী।”
2 আপনার পোশাক লাল কেন এবং কেন তাদের দেখতে আঙ্গুর মাড়াই করার পোশাকের মত?
আপনার পোশাক রক্তরাঙা কেন, দ্রাক্ষামাড়াইকারী লোকদের মতো কেন?
3 আমি একাই আঙ্গুর মাড়াই করেছি এবং জাতিদের মধ্যে কেউ আমার সঙ্গে যোগ দেয় নি। আমি রাগে তাদের পেশাই করেছি ও ভীষণ ক্রোধে তাদের পায়ে মাড়িয়েছি৷ তাদের রক্তের ছিটা আমার পোশাকে লেগেছে এবং আমার সমস্ত কাপড়ে দাগ লেগেছে।
“দ্রাক্ষামাড়াই কুণ্ডে আমি একাই দ্রাক্ষা দলন করেছি; সমস্ত জাতির মধ্য থেকে একজনও আমার সঙ্গে ছিল না। আমি ক্রোধে তাদের পদদলিত করেছি, মহাকোপে তাদের মর্দন করেছি; তাদের রক্তের ছিটে আমার পোশাকে লেগেছে, আমার সমস্ত পরিচ্ছদ আমি কলঙ্কিত করেছি।
4 কারণ আমি এখন প্রতিশোধের দিনের র দিকে তাকিয়ে আছি এবং আমার মুক্ত করার দিন এসে গেছে।
কারণ প্রতিশোধের দিন আমার মনে ছিল, আর আমার মুক্তিদানের বছর এসে পড়েছে।
5 আমি চেয়ে দেখলাম এবং সাহায্যকারী কাউকে পেলাম না৷ আমি আশ্চর্য্য হলাম যে সেখানে সাহায্য করার কেউ ছিলনা, কিন্তু আমার নিজের বাহুই আমার জন্য বিজয় এনে দিয়েছে এবং আমার ক্রোধই আমাকে উৎসাহ দিয়েছে।
আমি চেয়ে দেখলাম, কিন্তু আমাকে সাহায্য করার জন্য কেউ নেই, আমি বিস্মিত হলাম যে কেউ আমাকে সমর্থন করেনি; তাই আমার নিজেরই হাত আমার জন্য পরিত্রাণ সাধন করল, আমার নিজের ক্রোধই আমাকে তুলে ধরল।
6 আমি লোকদের রাগে পায়ে মাড়ালাম এবং আমার ক্রোধে তাদের মাতালের মত করে দিলাম এবং মাটিতে তাদের রক্ত ঢেলে দিলাম।
আমি ক্রোধে সব জাতিকে পদদলিত করলাম; আমার কোপবশে আমি তাদের মত্ত করলাম আর তাদের রক্ত মাটিতে ঢেলে দিলাম।”
7 আমি সদাপ্রভুর নিয়মের বিশ্বস্ততার বিভিন্ন কাজের কথা ও সদাপ্রভুর সমস্ত প্রশংসার যোগ্য কাজের কথা বলব। সদাপ্রভু আমাদের জন্য যা করেছেন আমি সেই সমস্ত বিষয়ে এবং ইস্রায়েল কুলের প্রতি তাঁর যে মহান ভালবাসা তার কথা বলব। তিনি এই সহানুভূতি তাঁর দয়ার এবং নিয়মের বিশ্বস্ততার বিভিন্ন কাজের জন্য আমাদের দেখিয়েছেন।
আমি সদাপ্রভুর বিভিন্ন করুণার কীর্তন করব, প্রশংসা করব তাঁর বহু কীর্তির কথা, তিনি আমাদের জন্য যা কিছু করেছেন, তার জন্য, হ্যাঁ, তিনি ইস্রায়েল কুলের জন্য বহু উৎকৃষ্ট কাজ করেছেন, তাঁর মহা করুণা ও বহুবিধ দয়ার গুণে করেছেন।
8 কারণ তিনি বলেছেন, “অবশ্যই তারা আমার লোক, তারা এমন সন্তান যারা অবিশ্বস্ত নয়।” তিনি তাদের উদ্ধারকর্তা হলেন।
তিনি বলেছেন, “অবশ্যই তারা আমার প্রজা, তারা এমন সন্তান, যারা মিথ্যা আচরণ করবে না”; এভাবেই তিনি তাদের পরিত্রাতা হলেন।
9 তাদের সব দুঃখে, তিনিও দুঃখিত হলেন এবং তাঁর উপস্থিতিতে যে স্বর্গদূতরা থাকে তারা তাদের উদ্ধার করলেন। তাঁর ভালবাসা ও দয়ায় তিনি তাদের রক্ষা করলেন; প্রাচীনকাল থেকেই তিনি তাদের তুলে ধরেছিলেন ও তাদের বহন করেছিলেন।
তাদের সমস্ত দুর্দশায় তিনি নিজেও দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁর সান্নিধ্যে থাকা স্বর্গদূত তাদের রক্ষা করল। তাঁর ভালোবাসা ও করুণাগুণে তিনি তাদের মুক্ত করলেন; পুরাকালের সেই দিনগুলিতে তিনি কোলে তুলে তাদের বহন করতেন।
10 ১০ কিন্তু তারা বিদ্রোহ করল এবং তাঁর পবিত্র আত্মাকে দুঃখ দিল। সেইজন্য তিনি তাদের শত্রু হলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
তবুও তারা বিদ্রোহী হল ও তাঁর পবিত্র আত্মাকে দুঃখ দিল। তাই তিনি মুখ ফিরিয়ে তাদের শত্রু হলেন, আর তিনি স্বয়ং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
11 ১১ তাঁর লোকেরা পুরানো দিনের র মোশি কথা চিন্তা করল। তারা বলল, “ঈশ্বর, যিনি তাঁর লোকদের ভেড়ার রক্ষকদের সঙ্গে করে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে বের করে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি কোথায়? যিনি তাদের মধ্যে পবিত্র আত্মা দিয়েছিলেন তিনি কোথায়?
তারপর তাঁর প্রজারা পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করল, মোশি ও তাঁর প্রজাদের সময়কাল— তিনি কোথায়, যিনি সমুদ্রের মধ্য দিয়ে তাদের উত্তীর্ণ করেছিলেন, তাঁর পালের এক রক্ষকের দ্বারা? তিনি কোথায়, যিনি তাদের মধ্যে তাঁর পবিত্র আত্মাকে স্থাপন করেছিলেন?
12 ১২ যিনি মোশির ডান হাতের সঙ্গে তাঁর মহিমান্বিত শক্তিকে যেতে দিয়েছেন এবং তাঁর নামকে চিরস্থায়ী করার জন্য তাদের সামনে জলকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন, সেই ঈশ্বর কোথায়?
যিনি তাঁর পরাক্রমের মহিমাময় বাহু মোশির ডান হাতরূপে প্রেরণ করেছিলেন, যিনি তাদের সামনে জলরাশিকে বিভক্ত করেছিলেন যেন নিজের জন্য চিরস্থায়ী খ্যাতি লাভ করতে পারেন?
13 ১৩ যিনি তাদেরকে গভীর জলের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই ঈশ্বর কোথায়? যেমনভাবে সমান জায়গায় ঘোড়া দৌড়ায় তেমন তারাও হোঁচট খায় নি।
খোলা মাঠে ধাবমান অশ্বের মতো, কে সমুদ্রের গভীরে তাদের চালিত করল? তাদের মধ্যে কেউই হোঁচট খায়নি।
14 ১৪ যেমনভাবে পশুপাল উপত্যকায় নেমে যায়, তেমন ভাবে সদাপ্রভুর আত্মা তাদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন। তোমার নামকে প্রশংসনীয় করার জন্য তোমার লোকদের পরিচালনা করেছিলেন।”
পশুপাল যেমন সমভূমিতে নেমে যায়, সদাপ্রভুর আত্মা তেমনই তাদের বিশ্রাম দিলেন। তুমি এভাবেই তোমার প্রজাদের পথ প্রদর্শন করেছিলে, যেন তুমি নিজের জন্য এক মহিমান্বিত নাম স্থাপন করতে পারো।
15 ১৫ স্বর্গ থেকে, তোমার পবিত্র ও গৌরবময় বাসস্থান থেকে তুমি নিচে তাকিয়ে দেখ। তোমার আগ্রহ ও তোমার শক্তিপূর্ণ কাজ কোথায়? তোমার দয়া ও মমতার কাজ আমাদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
তুমি স্বর্গ থেকে নিচে তাকাও ও দেখো, তোমার উন্নত, পবিত্র ও মহিমাপূর্ণ সিংহাসন থেকে দেখো। তোমার সেই উদ্যম ও তোমার পরাক্রম কোথায়? তোমার কোমলতা ও সহানুভূতি আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে রেখেছ।
16 ১৬ কারণ তুমি আমাদের পিতা। যদিও অব্রাহাম আমাদের জানেন না এবং ইস্রায়েল আমাদের স্বীকার করেন না, তবুও সদাপ্রভু, তুমিই আমাদের পিতা; “আমাদের মুক্তিদাতা,” প্রাচীনকাল থেকেই এই তোমার নাম।
কিন্তু তুমি আমাদের বাবা, যদিও অব্রাহাম আমাদের জানেন না, কিংবা ইস্রায়েল আমাদের স্বীকার করে না; তুমি সদাপ্রভু, তুমিই আমাদের বাবা, পুরাকাল থেকে আমাদের মুক্তিদাতা, এই তোমার নাম।
17 ১৭ হে সদাপ্রভু, তোমার পথ ছেড়ে কেন আমাদের ভ্রান্ত হতে দিচ্ছ এবং যেন আমরা তোমার বাধ্য না হই তাই আমাদের হৃদয়কে কেন কঠিন করছ? তোমার দাসদের জন্য এবং যে গোষ্ঠীগুলো তোমার অধিকার তাদের জন্য ফিরে এস।
হে সদাপ্রভু, কেন তুমি তোমার পথ ছেড়ে আমাদের যেতে দিচ্ছ? কেন তোমার হৃদয় কঠিন করছ, যেন আমরা তোমাকে সম্ভ্রম না করি? তুমি ফিরে এসো তোমার দাসদের অনুরোধে, তোমার অধিকারস্বরূপ গোষ্ঠীসমূহের কারণে।
18 ১৮ তোমার লোকেরা পবিত্র জায়গা অল্প দিনের জন্য ভোগ করেছিল, কিন্তু আমাদের শত্রুরা সেটা পায়ে মাড়িয়েছে।
অল্প সময়ের জন্য তোমার প্রজারা তোমার পবিত্রস্থান অধিকারে রেখেছিল, কিন্তু এখন আমাদের শত্রুরা তোমার পবিত্রধাম পদদলিত করেছে।
19 ১৯ তুমি যাদের উপর কখনও কর্তৃত্ব কর নি, আমরা তারা যাদের কখনও তোমার নামে ডাকা হয়নি, আমরা তাদের মত হয়েছি।
প্রাচীনকাল থেকে আমরা তোমারই; কিন্তু আমরা হয়েছি তাদের মতো, যাদের উপরে তুমি কখনও শাসন করোনি, তাদের মতো, যাদের কখনও তোমার নামে ডাকা হয়নি।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 63 >