< যিশাইয় ভাববাদীর বই 38 >

1 সেই দিনের হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার দিন হয়েছিল। তাই আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় তার কাছে গিয়ে বললেন এবং তাকে বললেন, “সদাপ্রভু বলছেন, তোমার ঘরে ব্যবস্থা করে রাখো, কারণ তুমি মারা যাবে, ভাল হবে না।”
সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তা মৃত্যুজনক হয়ে গেল। আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: তুমি বাড়ির সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক করে রাখো, কারণ তুমি মরতে চলেছ; তুমি আর সেরে উঠবে না।”
2 তারপর হিষ্কিয় দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন,
3 সে বলেছিল, “সদাপ্রভু, বিনয় করি, তুমি মনে করে দেখ, আমি তোমার সামনে কেমন বিশ্বস্তভাবে ও সমস্ত হৃদয়ে দিয়ে চলেছি তোমার চোখে যা ঠিক তা করেছি” এবং এই বলে হিষ্কিয় খুব জোরে কাঁদতে লাগলেন।
“হে সদাপ্রভু, স্মরণ করো, আমি কীভাবে তোমার সামনে বিশ্বস্ততায় ও সম্পূর্ণ হৃদয়ে ভক্তি প্রকাশ করেছি। তোমার দৃষ্টিতে যা কিছু মঙ্গলজনক, আমি তাই করেছি।” এই বলে হিষ্কিয় অত্যন্ত রোদন করতে লাগলেন।
4 তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য যিশাইয়ের কাছে উপস্হিত হল,
তখন সদাপ্রভুর বাণী যিশাইয়ের কাছে উপস্থিত হল:
5 তুমি যাও হিষ্কিয়কে বল, আমার লোকেদের নেতা, তোমার পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলছেন, আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি এবং তোমার চোখের জল দেখেছি; দেখ, আমি তোমার জীবনে আরও পনেরো বছর যোগ করব।
“তুমি ফিরে গিয়ে হিষ্কিয়কে এই কথা বলো, ‘সদাপ্রভু, তোমার পিতৃপুরুষ দাউদের ঈশ্বর এই কথা বলেন, আমি তোমার প্রার্থনা শ্রবণ করেছি ও তোমার অশ্রু দেখেছি; আমি তোমার জীবনের আয়ুর সঙ্গে আরও পনেরো বছর যোগ করব।
6 অশূরীয়ার রাজার হাত থেকে আমি তোমাকে ও এই শহরকে উদ্ধার করব এবং শহরটার উদ্ধারের ব্যবস্থা করব।
এছাড়াও আমি তোমাকে ও এই নগরটিকে আসিরীয় রাজার হাত থেকে উদ্ধার করব। আমি এই নগরকে রক্ষা করব।
7 এবং আমি যে কাজ করব তার প্রমাণস্বরূপ চিহ্ন হল এই: সদাপ্রভু যা বলেছেন তা আমি করব।
“‘সদাপ্রভু যা কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পূর্ণ করার জন্য এই হবে সদাপ্রভুর চিহ্নস্বরূপ:
8 দেখো, আমি আহসের সিঁড়ির উপরে দশ ধাপ পিছনে ছায়া দেবো। তাই ছায়াটি পিছিয়ে গিয়েছিল দশটি সিঁড়িতে।
আহসের সিড়িতে সূর্যের ছায়া যতটা নেমে গিয়েছে, আমি তার থেকে দশ ধাপ সেই ছায়া পিছনে ফিরিয়ে দেব।’” তাই সূর্যের আলো যতটা নেমেছিল, তার থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে গেল।
9 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় তাঁর অসুস্থতা থেকে যখন সুস্থ হবার পরে প্রার্থনায় যা লিখেছিলেন:
যিহূদার রাজা হিষ্কিয় তাঁর অসুস্থতা ও রোগনিরাময়ের পরে যা লিখেছিলেন, তা হল এই:
10 ১০ আমি বলেছিলাম, আমি বললাম যে আমার জীবনের মাঝখান দিয়ে আমি পাতালের দরজা দিয়ে যাব; আর আমার বাকি বছরগুলো থেকে কি আমাকে সেখানে পাঠানো হবে। (Sheol h7585)
আমি বললাম, “আমার জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সময়ে আমাকে কি অবশ্যই মৃত্যুর দুয়ারগুলির মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং আমার আয়ুষ্কালের অবশিষ্ট সময় থেকে বঞ্চিত হতে হবে?” (Sheol h7585)
11 ১১ আমি বলেছিলাম যে, জীবিতদের দেশে আমি সদাপ্রভুকে আর দেখতে পাব না; এই অস্থায়ী জগতে মানবজাতি বা বিশ্ববাসীর বাসিন্দার আর আমি দেখতে পাব না।
আমি বললাম, “আমি সদাপ্রভুকে আর দেখতে পাব না, জীবিতদের দেশে সদাপ্রভুকে দেখতে পাব না; আমি আর মানবকুলকে দেখতে পাব না, কিংবা যারা এই জগতে বসবাস করে, তাদের সঙ্গে থাকব না।
12 ১২ মেষপালকের তাঁবুতে আমার প্রাণ সরে যায় এবং আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। তাঁতীদের মত করে আমার জীবন ঘূর্ণিত হয়েছে। তুমি কাঁটা থেকে আমাকে কেটে ফেলছ। রাতের মধ্যে তুমি আমাকে শেষ করে দেবে।
আমার কাছ থেকে আমার আবাস মেষশাবকের তাঁবুর মতো তুলে নিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁতির মতো আমি আমার জীবন গুটিয়ে ফেলেছি এবং তিনি তাঁত থেকে আমাকে ছিন্ন করেছেন; দিনে ও রাতে তুমি আমার জীবন শেষ করেছ।
13 ১৩ সকাল না হওয়া পর্যন্ত আমি চিৎকার করে উঠলাম; সিংহের মত তিনি আমার সমস্ত হাড় ভেঙে ফেলবে এবং দিনের মধ্যে তুমি আমার জীবন শেষ করছ।
আমি প্রভাত পর্যন্ত ধৈর্যসহ অপেক্ষা করেছি, কিন্তু সিংহের মতোই তিনি আমার হাড়গুলি চূর্ণ করেছেন; দিনে ও রাতে তুমি আমার জীবন শেষ করেছ।
14 ১৪ ঘুঘুর মত আমি কাতর স্বরে ডাকতে লাগলাম। উপর দিকে তাকাতে আমার চোখ দুর্বল হয়ে পড়ল। প্রভু, আমি কষ্ট পাচ্ছি, তুমি আমার সাহায্য কর।
আমি ফিঙে বা সারসের মতো চিঁ চিঁ শব্দ করেছি, আমি বিলাপকারী ঘুঘুর মতোই বিলাপ করেছি। আকাশমণ্ডলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আমার চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হল। আমি উপদ্রুত হয়েছি; ও প্রভু, তুমি আমার সাহায্যের জন্য এসো!”
15 ১৫ আমি কি বলব? তিনি আমার সাথে কথা বলেছেন এবং নিজেই এটা করছে। আমার প্রাণের এই যন্ত্রণার জন্য আমি জীবনের বাকি সব বছরগুলো নম্র হয়ে চলব।
কিন্তু আমার কী বলার আছে? তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তিনি স্বয়ং এ কাজ করেছেন। আমার প্রাণের এই নিদারুণ যন্ত্রণার জন্য আমার সমস্ত জীবনকাল আমি নতনম্র হয়ে চলব।
16 ১৬ প্রভু, তোমরা যে দুঃখ প্রকাশ করছ তা আমার পক্ষে ভাল; আমার জীবন আমার কাছে ফিরে আসতে পারে; তুমি আমার জীবন এবং স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করেছ।
প্রভু, এই সমস্ত বিষয়ের জন্যই মানুষ বাঁচে; আবার আমার আত্মাও সেগুলির মধ্যে জীবন খুঁজে পায়। তুমি আমার স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিয়েছ এবং আমাকে বাঁচতে দিয়েছ।
17 ১৭ আমার সুবিধার জন্য দুঃখের অভিজ্ঞতা ভোগ করেছি, কিন্তু ধ্বংসের গর্ত থেকে তোমার ভালবাসায় তুমি আমাকে উদ্ধার করেছ। কারণ আমার সব পাপ তুমি পিছনে ফেলে দিয়েছ।
নিশ্চিতরূপে এ ছিল আমার উপকারের জন্য যে আমি এ ধরনের মর্মযন্ত্রণা ভোগ করেছি। ধ্বংসের গহ্বর থেকে তুমি তোমার ভালোবাসায় আমাকে রক্ষা করেছ; আমার সমস্ত পাপ নিয়ে তুমি তোমার পিছন দিকে ফেলে দিয়েছ।
18 ১৮ কারণ পাতাল তোমার ধন্যবাদ দিতে পারে না; আর মৃত্যুও তোমার প্রশংসা করতে পারে না। যারা গর্তে নামে তারা তোমার বিশ্বাসযোগ্যতার আশা করতে পারে না। (Sheol h7585)
কারণ কবর তোমার প্রশংসা করতে পারে না, মৃত্যু করতে পারে না তোমার স্তব; যারা সেই গহ্বরে নেমে যায়, তারা তোমার বিশ্বস্ততার প্রত্যাশা করতে পারে না। (Sheol h7585)
19 ১৯ কেবল জীবিতেরা, জীবিতেরাই তোমার প্রশংসা করে যেমন আজ আমি করছি; বাবা তার ছেলেদের তোমার বিশ্বাসযোগ্যতার কথা বলবে।
জীবন্ত, কেবলমাত্র জীবন্ত লোকেরাই তোমার প্রশংসা করবে, যেমন আজ আমি তোমার প্রশংসা করছি; বাবারা তাদের সন্তানদের তোমার বিশ্বস্ততার কথা বলেন।
20 ২০ সদাপ্রভু আমাকে রক্ষা করেছেন এবং সেইজন্য আমাদের জীবনের সমস্ত দিন গুলোতে সদাপ্রভুর ঘরে তারের বাজনার সাথে আমরা গান গাইব। সমস্ত দিন আমি সদাপ্রভুর ঘরে থাকবো।
সদাপ্রভু আমাকে রক্ষা করবেন, আমরা জীবনের সমস্ত দিন সদাপ্রভুর মন্দিরে তারের বাদ্যযন্ত্রে গান গাইব।
21 ২১ এখন যিশাইয় বলেছিলেন, “ডুমুর দিয়ে একটা প্রলেপ তৈরী করে তার ফোড়ার উপর লাগিয়ে দিলে তিনি সুস্থ হবেন।”
যিশাইয় বলেছিলেন, “ডুমুরফল ছেঁচে একটি প্রলেপ তৈরি করে সেই ফোঁড়ার উপরে লাগাতে, তাহলে তিনি আরোগ্য লাভ করবেন।”
22 ২২ হিষ্কিয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমি যে সদাপ্রভুর ঘরে উঠবো তার চিহ্ন কি?”
হিষ্কিয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমি যে সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে যাব, তার চিহ্ন কী?”

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 38 >