< যিশাইয় ভাববাদীর বই 26 >

1 সেই দিন যিহূদা দেশে এই গীত গান করা হবে; আমাদের এক মজবুত শহর আছে; তিনি পরিত্রাণকে দেয়াল ও বেড়ার মত করবেন।
সেদিন যিহূদার দেশে এই গীত গাওয়া হবে: আমাদের আছে এক দৃঢ় নগর; আমরা ঈশ্বরের পরিত্রাণস্বরূপ প্রাচীর ও প্রাকার-বেষ্টিত আছি।
2 তোমার প্রধান দরজা সব খোল, বিশ্বস্ততা-পালনকারী ধার্মিক জাতি প্রবেশ করবে।
এর তোরণদ্বারগুলি তোমরা খুলে দাও যেন সেই ধার্মিক জাতি এর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে, সেই জাতি, যারা বিশ্বাস রক্ষা করেছে।
3 যার মন তোমার সুস্থির, তুমি তাকে শান্তিতে, শান্তিতেই রাখবে, কারণ তোমাতেই তার নির্ভর।
তাকে তুমি পূর্ণ শান্তিতেই রাখবে, যার মন সুস্থির, কারণ সে তোমার উপরে নির্ভর করে।
4 তোমরা সবদিন সদাপ্রভুতে নির্ভর কর; কারণ সদাপ্রভু যিহোবাই চিরস্থায়ী পাথর।
তোমরা চিরকাল সদাপ্রভুর উপরে নির্ভর করো, কারণ সদাপ্রভু, সেই সদাপ্রভুই হলেন শাশ্বত শৈল।
5 কারণ তিনি ওপরের লোকদেরকে, উন্নত শহরকে, অবনত করেছেন; তিনি তা অবনত করেন অবনত করে ধ্বংস করেন, ধূলোয় মিশিয়ে দেন।
যারা উচ্চ স্থানে বসবাস করে, তিনি তাদের অবনত করেন, তিনি উঁচুতে থাকা সেই নগরীকে নামিয়ে আনেন; তিনি তাকে ধরাশায়ী করেন, এমনকি, তাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন।
6 লোকদের পা–দুঃখীদের পা ও গরিবদের পদক্ষেপ–তা পদদলিত করবে।
অত্যাচারী ব্যক্তিদের পা, দরিদ্রদের পদক্ষেপ সেই নগরকে পদদলিত করছে।
7 ধার্ম্মিকের পথ ধার্ম্মিকতায়, তুমি ধার্ম্মিকের মার্গ সব সমান করে সোজা করেছ।
ধার্মিক ব্যক্তির পথ সমতল পথ; ও ন্যায়বান ব্যক্তি, তুমি ধার্মিকের পথ মসৃণ করো।
8 হ্যাঁ, আমরা তোমার শাসন পথেই, হে সদাপ্রভু, তোমার অপেক্ষায় আছি; আমাদের প্রাণ তোমার নামের ও তোমার স্মরণ চিহ্নের অপেক্ষা করে।
হ্যাঁ সদাপ্রভু, তোমার বিচারের বিধানগুলি পালনের জন্য আমরা অপেক্ষা করে আছি; তোমার নাম ও সুখ্যাতিই আমাদের মনের আকাঙ্ক্ষা।
9 রাতে আমি প্রাণের সঙ্গে তোমার অপেক্ষা করেছি; হ্যাঁ, সযত্নে আমার হৃদয় দিয়ে তোমার খোঁজ করব, কারণ পৃথিবীতে তোমার শাসন প্রচলিত হলে, পৃথিবীর লোকেরা ধার্মিকতার বিষয়ে শিখবে।
রাত্রে আমার প্রাণ তোমার জন্য আকুল হয়; সকালে আমার আত্মা তোমার অপেক্ষা করে। তোমার ন্যায়বিচার যখন পৃথিবীর উপরে নেমে আসে, জগতের লোকেরা তখন ধার্মিকতা শিক্ষা করে।
10 ১০ দুষ্ট লোক দয়া পেলেও ধার্ম্মিকতা শেখে না; সরলতার দেশে সে অন্যায় করে, সদাপ্রভুর মহিমা দেখে না।
যদিও দুষ্টদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শিত হয়, তারা ধার্মিকতা শিক্ষা করে না; এমনকি, সততার দেশেও তারা মন্দ কর্ম করে যায় এবং সদাপ্রভুর মাহাত্ম্যকে মর্যাদা দেয় না।
11 ১১ হে সদাপ্রভু, তোমার হাত উঠেছে, তবু তারা দেখেনি; কিন্তু তারা লোকদের জন্যে তোমার উদ্যোগ দেখবে ও লজ্জা পাবে, হ্যাঁ, আগুন তোমার বিপক্ষদেরকে পুড়িয়ে দেবে।
হে সদাপ্রভু, তোমার হাত উত্তোলিত হয়েছে, কিন্তু তারা তা দেখতে পায় না। তোমার প্রজাদের জন্য তারা তোমার উদ্যম দেখুক ও লজ্জিত হোক; তোমার শত্রুদের জন্য সংরক্ষিত আগুন তাদের গ্রাস করুক।
12 ১২ হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের জন্য শান্তি নির্ধারণ করবে, কারণ আমাদের সমস্ত কাজই তুমি আমাদের জন্য করে আসছ।
হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠিত করো; আমরা যা কিছু করতে পেরেছি, সবই তুমি আমাদের জন্য করেছ।
13 ১৩ হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি ছাড়া অন্য প্রভুরা আমাদের ওপরে শাসন করেছিল; কিন্তু শুধু তোমারই সাহায্যে আমরা তোমার নামের গান করব।
হে সদাপ্রভু, আমাদের ঈশ্বর, তুমি ছাড়া অন্য প্রভুরা আমাদের শাসন করেছে, কিন্তু আমরা কেবলমাত্র তোমার নামকেই সম্মান করি।
14 ১৪ মৃতেরা আর জীবিত হবে না, প্রেতরা আর উঠবে না; এই জন্য তুমি প্রতিফল দিয়ে ওদেরকে ধ্বংস করেছ, তাদের প্রত্যেক স্মৃতি ধ্বংস করেছ।
তারা তো এখন মৃত, তারা আর জীবিত নেই; ওই মৃত আত্মাগুলি আর উত্থিত হবে না। তুমি তাদের শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করেছ; তুমি তাদের সমস্ত স্মৃতি লোপ করেছ।
15 ১৫ তুমি এই জাতির বৃদ্ধি করেছ, হে সদাপ্রভু, তুমি এই জাতির বৃদ্ধি করেছ; তুমি মহিমান্বিত হয়েছ, তুমি দেশের সব সীমা বিস্তার করেছ।
হে সদাপ্রভু, তুমি এই জাতিকে বর্ধিত করেছ, তুমি এই জাতিকে বর্ধিত করেছ। তুমি নিজের জন্য গৌরব অর্জন করেছ, তুমি দেশের চারদিকের সীমানা বর্ধিত করেছ।
16 ১৬ হে সদাপ্রভু, বিপদের দিনের লোকেরা তোমার অপেক্ষায় ছিল, তোমার থেকে শাস্তি পাবার দিনের নিচু গলায় অনুরোধ করত।
হে সদাপ্রভু, তারা তাদের দুর্দশায় তোমার কাছে এসেছিল; তুমি যখন তাদের শাস্তি দিয়েছিলে, তারা ফিসফিস করে কোনো প্রার্থনাও করতে পারেনি।
17 ১৭ গর্ভবতী স্ত্রী আগত প্রসবের দিনের ব্যথা খেতে খেতে যেমন কাঁদে, হে সদাপ্রভু, আমরা তোমার সামনে তার মত হয়েছি।
আসন্নপ্রসবা নারী শিশু জন্ম দেওয়ার সময় যেমন ব্যথায় মোচড় খায় ও ক্রন্দন করে, তোমার সামনে, হে সদাপ্রভু, আমরাও তেমনই করেছি।
18 ১৮ আমরা গর্ভবতী হয়েছি, আমরা ব্যথা খেয়েছি. যেন বায়ু প্রসব করেছি; আমাদের দ্বারা দেশে পরিত্রান সম্পন্ন হয়নি।
আমরা গর্ভধারণ করেছি, আমরা ব্যথায় আর্তনাদ করেছি, কিন্তু আমরা যেন বাতাস প্রসব করেছি। আমরা পৃথিবীর কাছে পরিত্রাণ আনয়ন করিনি, আমরা জগতের লোকদের কাছে জীবনও আনতে পারিনি।
19 ১৯ তোমার মৃতেরা জীবিত হবে, আমার মৃতদেহগুলি উঠবে; হে ধূলো-নিবাসীরা, তোমরা জেগে ওঠো, আনন্দের গান কর; কারণ তোমার শিশির আলোর শিশিরের মত এবং ভূমি প্রেতদেরকে জন্ম দেবে।
হে সদাপ্রভু, কিন্তু তোমার মৃত লোকেরা জীবন পাবে; তাদের শরীর উত্থিত হবে। তোমরা যারা ধুলিতে বসবাস করো, তোমরা জেগে ওঠো ও আনন্দে চিৎকার করো। তোমাদের শিশির সকালের শিশিরের মতো; কিন্তু পৃথিবী তার মৃতদের প্রসব করবে।
20 ২০ হে আমার জাতি, চল, তোমার ঘরে ঢোক, তোমার দরজা সব বন্ধ কর; অল্পদিনের র জন্য লুকিয়ে থাক, যে পর্যন্ত ক্রোধ না শেষ হয়।
আমার প্রজারা, তোমরা যাও, তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করো এবং তোমাদের পিছনে দরজা বন্ধ করো; যতক্ষণ না তাঁর ক্রোধ অতিক্রান্ত হয়, তোমরা একটু সময় নিজেদের লুকিয়ে রাখো।
21 ২১ কারণ দেখ, সদাপ্রভু নিজের জায়গা থেকে চলে যাচ্ছেন, পৃথিবী-নিবাসীদের অপরাধের প্রতিফল দেবার জন্য; পৃথিবী নিজের ওপর পতিত রক্ত প্রকাশ করবে, নিজের নিহতদেরকে আর ঢেকে রাখবে না।
দেখো, জগতের লোকদের পাপের জন্য শাস্তি দিতে সদাপ্রভু নিজের আবাস থেকে বেরিয়ে আসছেন। পৃথিবী তার উপরে সংঘটিত রক্তপাতের কথা প্রকাশ করবে, তার মধ্যে নিহত লোকেদের সে আর আচ্ছন্ন রাখবে না।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 26 >