< যিশাইয় ভাববাদীর বই 24 >

1 দেখ, সদাপ্রভু পৃথিবীকে একেবারে খালি করতে ও ধ্বংস করতে যাচ্ছেন। এর ওপরের অংশ নষ্ট করছেন এবং তার বাসিন্দাদের ছড়িয়ে ফেলছেন।
দেখো, সদাপ্রভু পৃথিবীকে পরিত্যক্ত করে তা ধ্বংস করতে চলেছেন; তিনি ভূপৃষ্ঠ ধ্বংস করে এবং তার অধিবাসীদের ছিন্নভিন্ন করবেন,
2 সেই দিন পুরোহিত ও সাধারণ লোকদের, প্রভু ও চাকরের, কর্ত্রী ও দাসীর, ক্রেতার ও বিক্রেতার, যে ধার করে ও যে ধার দেয় তাদের এবং ঋণী ও ঋণদাতার সবাই একই রকম হবে।
সবার অবস্থা একইরকম হবে যাজকদের ও সাধারণ লোকদের, মনিব ও দাসদের, কর্ত্রী ও দাসীর, বিক্রয়কারী ও ক্রেতার, ঋণগ্রহীতার ও ঋণদাতার, উত্তমর্ণ ও অধমর্ণ, সকলের।
3 পৃথিবী সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এবং সম্পূর্ণ টুকরো হবে; কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
পৃথিবী সম্পূর্ণ জন পরিত্যক্ত হবে ও সম্পূর্ণরূপে লুন্ঠিত হবে। সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
4 পৃথিবী শোকার্ত ও নিস্তেজ হল; জগৎ বিবর্ণ ও নিস্তেজ হল এবং পৃথিবীর বিশিষ্ট লোকেরা ম্লান হল।
পৃথিবী শুকিয়ে যাবে ও নিস্তেজ হবে, জগৎ অবসাদগ্রস্ত হয়ে নিস্তেজ হবে, পৃথিবীর মহিমান্বিত ব্যক্তিরা অবসন্ন হবে।
5 পৃথিবীকে তার নিবাসীরা দূষিত করে ফেলেছে। তারা আইন-কানুন অমান্য করেছে; তারা নিয়ম লঙ্ঘন করেছে আর চিরস্থায়ী নিয়ম ভেঙ্গেছে।
পৃথিবী তার অধিবাসীদের দ্বারা কলুষিত হয়েছে; তারা বিধান অমান্য করেছে, তারা বিধিবিধান লঙ্ঘন করে চিরস্থায়ী চুক্তির অবমাননা করেছে।
6 সেইজন্য একটা অভিশাপ পৃথিবীকে গ্রাস করল; তার লোকেরা দোষী হল। সেইজন্য পৃথিবীর বাসিন্দাদের পুড়িয়ে ফেলা হল এবং খুব কম লোকই বেঁচে আছে।
সেই কারণে, এক অভিশাপ পৃথিবীকে গ্রাস করেছে; এর লোকেরা অবশ্য তাদের অপরাধ বহন করবে। তাই পৃথিবীর অধিবাসীরা দগ্ধ হয়, অতি অল্প মানুষই বেঁচে থাকে।
7 নতুন আঙ্গুর রস শুকিয়ে গিয়েছে ও আঙ্গুর লতা বিবর্ণ হবে; সব সুখী হৃদয় গভীর আর্তনাদ করবে।
নতুন দ্রাক্ষারস শুকিয়ে যায় ও দ্রাক্ষালতা নিস্তেজ হয়; আমোদ-আহ্লাদকারী সকলে আর্তনাদ করে।
8 খঞ্জনির ফুর্তি, উল্লাসকারীদের কোলাহল শেষ হল, আর বীণার আনন্দ-গান সব থেমে গেল।
খঞ্জনির উচ্চশব্দ শান্ত হয়ে গেছে, ফূর্তিবাজদের হৈ হট্টগোল স্তব্ধ হয়েছে, আনন্দমুখর বীণার রব শোনা যায় না।
9 তারা আর গান করে করে আঙ্গুর রস খাবে না; যারা এটা পান করে তাদের মদ তেতো লাগবে।
আর তারা গান গেয়ে সুরা পান করে না, পানকারীদের মুখে সুরা তেঁতো লাগে।
10 ১০ বিশৃঙ্খলার শহর ভেঙে ফেলা হয়েছে। সমস্ত বাড়ী-ঘর বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং খালি হয়ে গিয়েছে।
ধ্বংসিত নগরটি জনশূন্য পড়ে আছে; প্রত্যেকটি গৃহের দুয়ারের প্রবেশপথে দরজা লাগানো আছে।
11 ১১ রাস্তায় আঙ্গুর-রসের জন্য চিৎকার হয়। সমস্ত আনন্দ অন্ধকার হল, আর পৃথিবী থেকে সব আমোদ-আহ্লাদ উধাও হয়ে গেল।
পথে পথে তারা সুরার জন্য চিৎকার করে; সমস্ত আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়, পৃথিবী থেকে সমস্ত হৈ-হল্লা দূর হয়ে গেছে।
12 ১২ শহরে ধ্বংস বাকি থাকল এবং তার দরজা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাবে।
নগর ধ্বংসস্তূপ হয়ে পড়ে আছে, এর তোরণদ্বারগুলি টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে আছে।
13 ১৩ জিত গাছ ঝাড়ার মতো, যেমন ফল সংগ্রহের পরে আঙ্গুর ফল বাছার মত হয় পৃথিবীর জাতিগুলোর অবস্থা তেমনই হবে।
পৃথিবীতে ও জাতিসমূহের মধ্যে এরকমই ঘটনা ঘটবে, যেমন, যখন কোনো জলপাই গাছ ঝাড়ার পরে হয় কিংবা দ্রাক্ষাচয়নের পরে কিছু ফল অবশিষ্ট পড়ে থাকে।
14 ১৪ তারা চিৎকার করবে ও আনন্দে গান গাইবে। তারা সদাপ্রভুর মহিমার জন্য সমুদ্র থেকে চিত্কার করবে।
তারা তাদের কণ্ঠস্বর উচ্চগ্রামে তোলে, তারা আনন্দে চিৎকার করে; পশ্চিমদিক থেকে তারা সদাপ্রভুর মহিমাকীর্তন করবে।
15 ১৫ সেইজন্য পূর্ব দিকের লোকেরা সদাপ্রভুর গৌরব করুক এবং সমুদ্রের দ্বীপের লোকেরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করুক।
সেই কারণে, পূর্বদিকের লোকেরা সদাপ্রভুর মহিমা করুক; সমুদ্রের দ্বীপগুলির মধ্যে, তারা সদাপ্রভুর, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামের প্রশংসা করুক।
16 ১৬ পৃথিবীর শেষ সীমা থেকে আমরা এই গান শুনেছি, “ধার্ম্মিকের জন্য শোভা” কিন্তু আমি বললাম, “হায়! আমি দুর্বল হচ্ছি, আমি দুর্বল হচ্ছি, ধিক আমাকে। কারণ বিশ্বাসঘাতকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে; হ্যাঁ, বিশ্বাসঘাতকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”
পৃথিবীর প্রান্তসীমা থেকে আমরা গানের শব্দ শুনছি: “সেই ধার্মিক ব্যক্তির মহিমা হোক।” কিন্তু আমি বললাম, “আমি ক্ষয়ে যাচ্ছি, আমি ক্ষয়ে যাচ্ছি, ধিক্ আমাকে! বিশ্বাসঘাতকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করছে! হ্যাঁ, বিশ্বাসঘাতকেরা নিদারুণ বিশ্বাসঘাতকতা করছে!”
17 ১৭ হে পৃথিবী নিবাসী, ভয়, গর্ত ও ফাঁদ তোমার ওপরে আসছে।
ওহে পৃথিবীর জনগণ, সন্ত্রাস, গর্ত ও ফাঁদ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
18 ১৮ যে কেউ ভয়ের জনশ্রুতিতে পালিয়ে বাঁচবে, সে খাদে পর্বে; কারণ উপরের জানালা সব খুলে গেল ও পৃথিবীর ভিত্তিমূল সব কেঁপে গেল।
সন্ত্রাসের চিৎকারে যে পলায়ন করবে, সে কোনো গর্তে পতিত হবে; আর যে কেউ গর্ত থেকে উঠে আসে, সে ফাঁদে ধৃত হবে। ঊর্ধ্বাকাশের জলধির উৎস সকল মুক্ত হয়েছে, পৃথিবীর ভিত্তিমূলগুলি কেঁপে উঠছে।
19 ১৯ পৃথিবী বিদীর্ণ হল, বিদীর্ণ হল; পৃথিবী ফেটে গেল, ফেটে গেল; পৃথিবী বিচলিত হল, বিচলিত হল।
পৃথিবী ভগ্ন হয়েছে, পৃথিবী ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে, পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে প্রকম্পিত হয়েছে।
20 ২০ পৃথিবী মত্ত লোকের মত টলবে কুঁড়েঘরের মতো দুলবে; নিজের অধর্ম্মের ভারে ভারগ্রস্ত হবে, পরে যাবে আর উঠতে পারবে না।
পৃথিবী যেন কোনো মাতালের মতো টলোমলো করছে, প্রবল বাতাসে যেমন কুঁড়ে ঘর, এ তেমনই দোদুল্যমান হচ্ছে; এর বিদ্রোহের মাত্রা এতই গুরুভার যে, এর পতন হবে আর কখনও উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
21 ২১ সেই দিন সদাপ্রভু উপরে ওপরের সৈন্যদল ও পৃথিবীর রাজাদের প্রতিফল দেবেন
সেদিন সদাপ্রভু, ঊর্ধ্বস্থ আকাশমণ্ডলের সমস্ত পরাক্রমকে ও নিচে পৃথিবীর সমস্ত রাজাকে দণ্ড দেবেন।
22 ২২ তাতে তারা কূপে জড়ো হওয়া বন্দীদের মত হবে এবং কারাগারে বদ্ধ হবে, পরে অনেক দিন গেলে পর তাদের সন্ধান নেওয়া হবে।
অন্ধকূপে যেমন বন্দিদের আবদ্ধ রাখা হয়, তাদেরও তেমনই একত্র করে রাখা হবে; তাদের কারাগারে রুদ্ধ করে রাখা হবে, আর অনেক দিন পরে তাদের মুক্ত করা হবে।
23 ২৩ আর চাঁদ লজ্জিত ও সূর্য্য অপমানিত হবে, কারণ বাহিনীদের সদাপ্রভু সিয়োন পর্বতে ও যিরুশালেমে রাজত্ব করবেন এবং তাঁর প্রাচীনদের সামনে প্রতাপ থাকবে।
তখন চাঁদ মলিন হবে, সূর্য লজ্জিত হবে; কারণ সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু রাজত্ব করবেন সিয়োন পর্বতে ও জেরুশালেমে এবং তার প্রাচীনদের সাক্ষাতে—মহান মহিমার সঙ্গে।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 24 >