< ইব্রীয় 7 >

1 সেই যে মল্কীষেদক, যিনি শালেমের রাজা ও মহান ঈশ্বরের যাজক ছিলেন, অব্রাহাম যখন রাজাদের পরাজিত করে ফিরে আসেন, তিনি তখন তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলেন, ও তাঁকে আশীর্বাদ করলেন,
এই মল্কীষেদক ছিলেন শালেমের রাজা ও পরাৎপর ঈশ্বরের যাজক। অব্রাহাম যখন রাজন্যবর্গকে পরাস্ত করে ফিরে আসছিলেন, সেই সময় তিনি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন
2 এবং অব্রাহাম তাঁকে সব কিছুর দশমাংশ দিলেন। তাঁর নাম “মল্কীষেদক” মানে ধার্মিক রাজা, এবং শালেমের রাজা অর্থাৎ শান্তির রাজা;
এবং অব্রাহাম তাঁর সর্বস্বের এক-দশমাংশ তাঁকে দান করেছিলেন। প্রথমত, তাঁর নামের অর্থ, “ধার্মিকতার রাজা,” আর পরে, “শালেমের রাজা,” এর অর্থ, “শান্তিরাজ।”
3 তাঁর বাবা নেই, মা নেই, পূর্বপুরুষ নেই, দিনের শুরু কি জীবনের শেষ নেই; তিনি ঈশ্বরের পুত্রের মতো; তিনি চিরকালই যাজক থাকেন।
পিতামাতা ছাড়া ও বংশপরিচয় ছাড়া, জীবনের সূচনা বা সমাপ্তি ছাড়াই, ঈশ্বরের পুত্রের মতো তিনি চিরকালের জন্য যাজক হয়েছেন।
4 বিবেচনা করে দেখ, তিনি কেমন মহান, আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম যুদ্ধের ভালো ভালো লুটের জিনিস নিয়ে দশমাংশ দান করেছিলেন।
শুধু ভেবে দেখো, তিনি কত মহান ছিলেন: এমনকি পিতৃপুরুষ অব্রাহাম তাঁকে লুট করা দ্রব্যসামগ্রীর এক-দশমাংশ দান করেছিলেন।
5 আর প্রকৃত পক্ষে লেবির বংশধরদের মধ্যে যারা যাজক হলেন, তারা আইন অনুসারে তাদের ভাই ইস্রায়েলীয়দের কাছ থেকে দশমাংশ সংগ্রহ করার আদেশ পেয়েছে, যদিও তারা অব্রাহামের বংশধর;
এখন বিধান অনুসারে, লেবির বংশধরেরা, যারা যাজক হয়, তারা প্রজাসাধারণের, অর্থাৎ তাদের ভাইদের কাছ থেকে এক-দশমাংশ সংগ্রহ করার বিধি লাভ করেছে, যদিও তারা ছিল অব্রাহামেরই বংশধর।
6 কিন্তু মল্কীষেদক, লেবীয়দের বংশধর নয়, তিনি অব্রাহামের থেকে দশমাংশ নিয়েছিলেন এবং সেই প্রতিজ্ঞার অধিকারীকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
যাই হোক, এই ব্যক্তি লেবির বংশধররূপে নির্দিষ্ট না হলেও, তিনি অব্রাহামের কাছ থেকে এক-দশমাংশ সংগ্রহ করেছিলেন এবং বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিপ্রাপ্ত অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
7 কোনো আত্মত্যাগী যে ক্ষুদ্রতর ব্যক্তি বৃহত্তর ব্যক্তির মাধ্যমে আশীর্বাদিত হয়।
নিঃসন্দেহে, সাধারণ ব্যক্তি মহৎ ব্যক্তির কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করে।
8 আবার এখানে মানুষেরা যারা দশমাংশ পায় তারা এক দিন মারা যাবে, কিন্তু ওখানে যে অব্রাহামের দশমাংশ গ্রহণ করেছিল, তাঁর বিষয়ে বলা হয়েছে যে, তিনি জীবনবিশিষ্ট।
এক অর্থে, মরণশীল মানুষের দ্বারা দশমাংশ সংগৃহীত হয়; কিন্তু অন্য অর্থে, যিনি জীবিত আছেন বলে ঘোষিত হয়েছিলেন তাঁর দ্বারাই হয়।
9 আবার এরকম বলা যেতে পারে যে, অব্রাহামের মাধ্যমে দশমাংশগ্রাহী লেবি দশমাংশ দিয়েছেন,
কেউ এমন কথাও বলতে পারে যে, যিনি দশমাংশ সংগ্রহ করেন সেই লেবি অব্রাহামের মাধ্যমেই দশমাংশ দিয়েছিলেন,
10 ১০ কারণ লেবি ছিল তাঁর পূর্বপুরুষ অব্রাহামের বংশ সম্মন্ধীয়, যখন মল্কীষেদক অব্রাহামের সাথে দেখা করেন।
কারণ মল্কীষেদক যখন অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন লেবি তাঁর পিতৃপুরুষের কটিতে বিদ্যমান ছিলেন।
11 ১১ এখন যদি লেবীয় যাজকত্বের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা সম্ভব হতে পারত সেই যাজকত্বের অধীনেই তো লোকেরা নিয়ম পেয়েছিল তবে আরো কি প্রয়োজন ছিল যে, মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে অন্য যাজক উঠবেন এবং তাঁকে হারোণের নাম অনুসারে অভিহিত করা হবে না?
লেবীয় যাজকত্বের মাধ্যমে যদি পূর্ণতা অর্জন করা যেত—কারণ এরই ভিত্তিতে লোকদের কাছে বিধিবিধান দেওয়া হয়েছিল—তাহলে হারোণের রীতি অনুযায়ী নয়, কিন্তু মল্কীষেদকের রীতি অনুযায়ী কেন আরও একজন যাজকের প্রয়োজন হল?
12 ১২ যাজকত্ব যখন পরিবর্তন হয়, তখন নিয়মেরও অবশ্যই পরিবর্তন হয়।
কারণ যাজকত্বের পরিবর্তন হলে বিধানেরও পরিবর্তন হওয়া আবশ্যক।
13 ১৩ এ সব কথা যার উদ্দেশ্যে বলা যায়, তিনি তো অন্য বংশের, সেই বংশের মধ্যে কেউ কখনো যজ্ঞবেদির পরিচর্য্যা করে নি।
যাঁর সম্পর্কে এসব বিষয় উক্ত হয়েছে, তিনি ভিন্ন গোষ্ঠীভুক্ত এবং সেই গোষ্ঠীর কেউ কখনও যজ্ঞবেদির পরিচর্যা করেনি।
14 ১৪ এখন এটা সুস্পষ্ট যে আমাদের প্রভু যিহূদা বংশ থেকে অবতীর্ণ হয়েছেন, সেই বংশের বিষয়ে মোশি যাজকদের বিষয়ে কিছুই বলেননি।
একথা স্পষ্ট যে, আমাদের প্রভু যিহূদা বংশের। এবং এই বংশের যে কেউ যাজক হবে সে সম্পর্কে মোশি কিছুই বলেননি।
15 ১৫ এবং আমরা যে কথা বলেছিলাম তা আরও পরিষ্কার হয় যখন মল্কীষেদকের মতো আর একজন যাজক ওঠেন।
মল্কীষেদকের মতো অন্য একজন যাজকের আবির্ভাব হলে আমাদের কথা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে,
16 ১৬ এই নতুন যাজক যিনি দেহের নিয়ম অনুযায়ী আসেননি, কিন্তু পরিবর্তে অবিনশ্বর জীবনের শক্তি অনুযায়ী হয়েছেন।
যিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের মতো বিধানের উপরে ভিত্তি করে নয়, কিন্তু এক অবিনশ্বর জীবনের শক্তিতে যাজক হয়েছিলেন।
17 ১৭ তাঁর বিষয়ে শাস্ত্রের সাক্ষ্য এই বলে: “তুমিই মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে অনন্তকালীন যাজক।” (aiōn g165)
কারণ ঘোষণা করা হয়েছে: “মল্কীষেদকের রীতি অনুযায়ী তুমিই চিরকালীন যাজক।” (aiōn g165)
18 ১৮ পুরানো আদেশ সরানো হল কারণ এটি দুর্বল ও অকার্যকারী হয়ে পড়েছিল।
পূর্বেকার বিধান নিষ্ফল ও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ায়, তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে
19 ১৯ কারণ নিয়ম কিছুই সম্পূর্ণ করতে পারেনা। কিন্তু এখানে এমন এক শ্রেষ্ঠ প্রত্যাশা ভবিষ্যতের জন্য আনা হয়েছে যার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হতে পারি।
(কারণ বিধানের দ্বারা কিছুই পূর্ণতা লাভ করেনি), বরং এক মহত্তর প্রত্যাশা উপস্থিত হয়েছে, যার দ্বারা আমরা ঈশ্বরের সান্নিধ্যে আসতে পারি।
20 ২০ এবং এই শ্রেষ্ঠ প্রত্যাশা বিনা শপথে হয়নি, অন্য যাজকেরা তো কোনো নতুন নিয়মই গ্রহণ করে নি।
আবার শপথ ছাড়া কিন্তু এরকম হয়নি! অন্যেরা কোনো শপথ ছাড়াই যাজক হয়েছেন,
21 ২১ কিন্তু ঈশ্বর শপথ গ্রহণ করেছিলেন যখন তিনি যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন, “প্রভু এই নতুন নিয়ম করলেন এবং তিনি মন পরিবর্তন করবেন না: ‘তুমিই অনন্তকালীন যাজক।’” (aiōn g165)
তিনি কিন্তু শপথ সহ যাজক হয়েছিলেন, যখন ঈশ্বর তাঁকে বলেছিলেন, “প্রভু এই শপথ করেছেন, তাঁর সংকল্পের পরিবর্তন হবে না; ‘তুমিই চিরকালীন যাজক।’” (aiōn g165)
22 ২২ অতএব যীশু এই কারণে নতুন নিয়মের জামিনদার হয়েছেন।
এই শপথের জন্য যীশু এক উৎকৃষ্টতর নিয়মের প্রতিভূ হয়েছেন।
23 ২৩ প্রকৃত পক্ষে, মৃত্যু যাজককে চিরকাল পরিচর্য্যা করতে প্রতিরোধ করে। এই কারণে সেখানে অনেক যাজক, এক জনের পর অন্যজন।
পুরোনো প্রথায় এরকম অনেক যাজকই ছিলেন, যারা মৃত্যুর জন্য তাদের পদে চিরকাল থেকে যেতে পারেননি,
24 ২৪ কিন্তু তিনি যদি অনন্তকাল থাকেন, তবে তাঁর যাজকত্ব অপরিবর্তনীয়। (aiōn g165)
কিন্তু যীশু চিরজীবী বলে তাঁর যাজকত্বও চিরস্থায়ী। (aiōn g165)
25 ২৫ এই জন্য তিনি সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করতে সক্ষম যারা তাঁর মাধ্যম দিয়ে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হয়, কারণ তিনি তাদের জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ করতে সর্বদা জীবিত আছেন।
তাই তাঁর মাধ্যমে যারা ঈশ্বরের কাছে আসে, তাদের তিনি সম্পূর্ণভাবে পরিত্রাণ করতে সমর্থ, কারণ তাদের পক্ষে মিনতি করার জন্য তিনি সবসময়ই জীবিত আছেন।
26 ২৬ আমাদের জন্য এমন এক মহাযাজক প্রয়োজন ছিল, যিনি নিস্পাপ, অনিন্দনীয়, পবিত্র, পাপীদের থেকে পৃথক এবং স্বর্গ থেকে সর্বোচ্চ।
এইরকম একজন মহাযাজক আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেন, যিনি পবিত্র, অনিন্দনীয়, বিশুদ্ধ, পাপীদের থেকে পৃথকীকৃত এবং সমস্ত স্বর্গলোকের ঊর্ধ্বে উন্নীত।
27 ২৭ ঐ মহাযাজকদের মত প্রতিদিন বলিদান উত্সর্গ করা প্রয়োজন নেই, প্রথমে নিজের পাপের জন্য এবং পরে লোকদের জন্য। তিনি এটি সবার জন্য একেবারে সম্পূর্ণ করেছেন, যখন তিনি নিজেকে উত্সর্গ করেছেন।
অন্যান্য মহাযাজকের মতো, প্রথমত নিজের জন্য ও পরে সব মানুষের পাপের জন্য, দিনের পর দিন তাঁর বিভিন্ন বলি উৎসর্গ করার প্রয়োজন নেই, কারণ তাদের সব পাপের জন্য তিনি নিজেকে একবারই বলিরূপে উৎসর্গ করেছেন।
28 ২৮ কারণ নিয়ম যে মহাযাজকদের নিযুক্ত করে তারা দুর্বলতাযুক্ত মানুষ, কিন্তু বাক্যের শপথ, যা নিয়মের পরে আসে এবং ঈশ্বরের পুত্রকে নিযুক্ত করে, যিনি যুগে যুগে নিখুঁত। (aiōn g165)
কারণ বিধান যাদের মহাযাজকরূপে নিযুক্ত করে, তারা দুর্বল। কিন্তু বিধান প্রতিষ্ঠা করার পরবর্তীকালে শপথের দ্বারা যিনি নিযুক্ত হয়েছেন তিনি “পুত্র,” সর্বকালের সিদ্ধপুরুষ। (aiōn g165)

< ইব্রীয় 7 >