< হবককূক ভাববাদীর বই 3 >

1 হবক্-কূক ভাববাদীর প্রার্থনা। স্বর, শিগিয়োনোৎ।
ভাববাদী হবক্‌কূকের প্রার্থনা। স্বর, শিগিয়োনোৎ
2 হে সদাপ্রভু, আমি তোমার বিবরণ শুনে ভয় পেলাম; হে সদাপ্রভু, আমাদের দিনের সেইগুলো তুমি আবার কর, আমাদের দিন তুমি সেইগুলি দেখাও; ক্রোধের দিন তুমি মমতা করবার কথা ভুলে যেও না।
হে সদাপ্রভু, আমি তোমার খ্যাতি শুনেছি; আমি তোমার আশ্চর্য কাজে সম্ভ্রমে দাঁড়িয়ে আছি, হে সদাপ্রভু। আমাদের দিনে এই সবের পুনরাবৃত্তি করো, আমাদের সময়ে তা প্রকাশিত করো; তোমার ক্রোধে করুণা স্মরণ করো।
3 ঈশ্বর তৈমন থেকে আসছেন, পারণ পর্বত থেকে পবিত্রতম আসছেন। আকাশমণ্ডল তাঁর মহিমায় ছেয়ে যায়, পৃথিবী তাঁর প্রশংসায় পরিপূর্ণ। শেলা।
ঈশ্বর তৈমন থেকে এসেছেন, পবিত্রতম এসেছেন পারণ পর্বত থেকে। স্বর্গ তার মহিমায় আচ্ছাদিত আর পৃথিবী তার প্রশংসায় পরিপূর্ণ।
4 তার উজ্জ্বলতা সূর্য্যের মতোই, তাঁর হাত থেকে আলো বার হয়; ঐ স্থানে তাঁর শক্তি লুকানো আছে।
তাঁর প্রভা সূর্যোদয়ের মতো; তাঁর হাত থেকে আলোকরশ্মি নির্গত হয়, যেখানে তাঁর শক্তি লুকিয়ে ছিল।
5 তাঁর আগে আগে মহামারী চলে, তাঁর পিছনে পিছনে চলছে প্লেগ রোগ।
মহামারি তাঁর সামনে গেল; সংক্রামক ব্যাধি তার পথ অনুসরণ করল।
6 তিনি দাঁড়ালেন এবং পৃথিবীকে পরিমাণ করলেন, তিনি তাকালেন এবং জাতিদেরকে ভয়ে চমকিয়ে দিলেন! এছাড়া অনন্তকাল স্থায়ী পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ করল এবং চিরস্থায়ী পাহাড় সব নত হল! তার পথ চিরস্থায়ী
তিনি দাঁড়ালেন এবং পৃথিবী নাড়িয়ে দিলেন; তিনি দৃষ্টিপাত করলেন এবং সমগ্র জাতিদের কাঁপিয়ে দিলেন। তিনি প্রাচীন পর্বতসকল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন এবং পুরাতন পাহাড় ধ্বংস করেন; কিন্তু তিনি অনন্তকালস্থায়ী।
7 আমি দেখলাম, কূশনের লোকগুলো শোকের মধ্যে, আর দেখলাম মিদিয়নের বাসিন্দারা কাঁপছে।
আমি দেখলাম কুশানের তাঁবুসকল দৈন্য, মিদিয়নের ঘরবাড়ি দুর্দশায় পূর্ণ।
8 সদাপ্রভু কি নদ নদীগুলোর প্রতি রাগ করেছেন? তোমার ক্রোধ কি নদ নদীগুলির উপরে পরেছে? সমুদ্রের প্রতি কি তুমি ভীষণভাবে বিরক্ত হয়েছ? সেইজন্যই কি, তুমি তোমার ঘোড়াগুলোতে চরে বেড়াচ্ছ, আর পরিত্রানের রথগুলোতে চরে বেড়াচ্ছ?
হে সদাপ্রভু, তুমি কি নদনদীর প্রতি ক্রুদ্ধ ছিলে? তোমার ক্রোধ কি জলধারার প্রতি? তুমি কি সমুদ্রের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করেছ যখন তুমি তোমার ঘোড়ায় চড়লে এবং বিজয় রথে জয়লাভ করলে?
9 তোমার ধনুক তুমি তুলে নিলে, তোমার বাক্য অনুসারে শাস্তি দেবার জন্য লাঠি গুলো শপথ করেছে। তুমি পৃথিবীকে ভাগ করে দিলে নদী দিয়ে।
তুমি নিজের ধনুক অনাবৃত করলে, আর অনেক তির দাবি করলে। তুমি নদীর দ্বারা পৃথিবী ভাগ করেছ;
10 ১০ পাহাড় পর্বত তোমাকে দেখে কেঁপে উঠল, প্রচণ্ড জলরাশি বয়ে গেল, গভীর জল গর্জন করে উঠল, আর তার ঢেউগুলো উপরে তুলল।
পর্বতমালা তোমাকে দেখল ও ভয়ে কাঁপল। প্রচণ্ড জলরাশি প্রবাহিত হল; গভীর সমুদ্র গর্জে উঠল আর নিজের ঢেউ উত্তোলন করল।
11 ১১ আকাশে সূর্য্য ও চাঁদ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল, যখন তোমার দ্রুতগামী তীরের ঝলকানি এবং বিদ্যুতের মত তোমার বর্শার চমক দেখল।
সূর্য ও চন্দ্র আকাশে স্থির হয়ে রইল যখন তোমার উজ্জ্বল তির উড়ল, এবং তোমার বজ্ররূপ বর্শা ঝলক দিল।
12 ১২ তুমি ক্রোধে পৃথিবীর মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেলে, আর অসন্তোষে জাতিদের পায়ে মাড়ালে।
ক্রোধে তুমি পৃথিবীতে অগ্রবর্তী হলে এবং কোপে তুমি জাতিগণকে মাড়িয়ে দিলে।
13 ১৩ তুমি যাত্রা করলে, তোমার অভিষিক্ত লোককে রক্ষা করতে, উদ্ধারের জন্য তুমি দুষ্টুদের নেতাকে আঘাত করলে, তার দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিলে।
তুমি তোমার প্রজাগণের উদ্ধারের জন্য বাইরে গেলে, তোমার অভিষিক্ত-জনের উদ্ধারের জন্য। তুমি দুষ্টদেশের রাজাকে ধ্বংস করলে, তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত তাকে অনাবৃত করলে।
14 ১৪ যখন তার যোদ্ধারা আমাদের ছড়িয়ে দেবার জন্য ভীষণভাবে আক্রমণ করল, তখন তারা তাদের মতই আনন্দ করছিল যারা গোপনে তার দুঃখীদের গ্রাস করে আনন্দ পায়। তুমি তাদের নেতাকে তারই বর্শা দিয়ে বিঁধলে।
তুমি তার বর্শা দিয়ে তার নিজের মাথা বিদ্ধ করলে যখন তার যোদ্ধারা আমাদের ছিন্নভিন্ন করতে ঘূর্ণিবায়ুর মতো আক্রমণ করেছিল, গ্রাস করার অপেক্ষায় উল্লসিত ছিল হতভাগ্য যারা লুকিয়ে ছিল।
15 ১৫ তুমি নিজের ঘোড়া নিয়ে সমুদ্র দিয়ে গেলে। সেই মহাজলরাশি তোলপাড় করলে।
তোমার ঘোড়াদের দিয়ে তুমি সমুদ্র মাড়িয়ে গেলে, আর মহা জলরাশিকে তোলপাড় করলে।
16 ১৬ আমি শুনলাম ও আমার অন্তর কেঁপে উঠল, সেই শব্দে আমার ঠোঁটও কেঁপে উঠল, আমার হারে পচন প্রবেশ করল, আমার নিজের স্থানে কেঁপে উঠলাম, কারণ আমাকে সঙ্কটের দিনের ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করব, যখন সেই সমস্ত লোকদের উপরে কষ্ট নেমে আসবে যারা আমাদের অত্যাচার করেছে।
আমি শুনলাম এবং আমার হৃদয় কাঁপল, শব্দ শুনে আমার ঠোঁট কাঁপল; আমার শরীরের হাড়গুলি ক্ষয় হতে শুরু করল, এবং আমার পা কাঁপতে লাগল। তবুও আমি সেই বিপত্তির দিনের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করব যেদিন বিপত্তি আমাদের আক্রমণকারী জাতির উপরে নেমে আসবে।
17 ১৭ যদিও ডুমুরগাছে ফুল হবে না, আঙ্গুরগাছে ফল ধরবে না, যদিও জিতবৃক্ষে ফল ধরবে না ও ক্ষেত্রে খাদ্যর জন্য কোন শস্য হবে না, খোঁয়াড়ে মেষপাল থাকবে না, গোয়ালে গরু থাকবে না;
যদিও ডুমুর গাছে কুঁড়ি ধরবে না এবং আঙুর লতায় কোনো আঙুর ধরবে না, যদিও জলপাই গাছ ফলহীন হবে এবং ক্ষেতে খাবারের জন্য শস্য ধরবে না, যদিও মেষের খোঁয়াড়ে কোনো মেষ থাকবে না এবং গোয়ালঘরে গবাদি পশুরা থাকবে না,
18 ১৮ তবুও আমি সদাপ্রভুকে নিয়ে আনন্দ করব, আমার উদ্ধারকর্তা সদাপ্রভুতে উল্লাসিত হব।
তবুও আমি সদাপ্রভুতে আনন্দ করব, আমার ঈশ্বর উদ্ধারকর্তায় উল্লসিত হব।
19 ১৯ প্রভু সদাপ্রভুই আমার শক্তি, তিনি আমার পা হরিণের পায়ের মত করেন, তিনি আমাকে উঁচুঁ উঁচু জায়গায় যাবার ক্ষমতা দেন। প্রধান বাদ্যকরের জন্য; আমার তারযুক্ত যন্ত্রে।
সার্বভৌম সদাপ্রভুই আমার শক্তি; তিনি আমার পা হরিণীর পায়ের মতো করেন, তিনি আমাকে উচ্চ স্থানে চলতে ক্ষমতা দেন।

< হবককূক ভাববাদীর বই 3 >