< আদিপুস্তক 35 >

1 পরে ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “তুমি উঠ, বৈথেলে গিয়ে সে জায়গায় বাস কর এবং তোমার ভাই এষৌর সামনে থেকে তোমার পালানোর দিনের যে ঈশ্বর তোমাকে দেখা দিয়েছিলেন, তার উদ্দেশ্যে সেই জায়গায় যজ্ঞবেদি তৈরী কর।”
তখন ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “বেথেলে চলে যাও ও সেখানেই বসবাস করো, এবং সেখানে সেই ঈশ্বরের উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করো, যিনি তোমার কাছে সেই সময় আবির্ভূত হলেন, যখন তুমি তোমার দাদা এষৌর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলে।”
2 তখন যাকোব নিজের আত্মীয় ও সঙ্গী লোক সবাইকে বললেন, “তোমাদের কাছে যে সব ইতর দেবতা আছে, তাদেরকে দূর কর এবং শুদ্ধ হও ও অন্য বস্ত্র পর।
অতএব যাকোব তাঁর পরিবারের লোকজনদের ও তাঁর সঙ্গে আরও যারা ছিলেন, তাদের বললেন, “তোমাদের কাছে যে বিজাতীয় দেবতারা আছে, তাদের থেকে নিষ্কৃতি লাভ করো এবং নিজেদের শুচিশুদ্ধ করো ও তোমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ বদলে ফেলো।
3 আর এস, আমরা উঠে বৈথেলে যাই; যে ঈশ্বর আমার সঙ্কটের দিনের আমাকে প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন এবং আমার যাত্রাপথে সঙ্গে ছিলেন, তাঁর উদ্দেশ্যে আমি সেই জায়গায় এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করব।”
পরে এসো, আমরা সবাই মিলে সেই বেথেলে উঠে যাই, যেখানে সেই ঈশ্বরের উদ্দেশে আমি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করব, যিনি আমার দুঃখের দিনে আমাকে উত্তর দিয়েছিলেন ও আমি যেখানেই গিয়েছি, তিনি আমার সহায় হয়েছেন।”
4 তাতে তারা নিজেদের দেবমূর্তি ও কানের দুল সব যাকোবকে দিল এবং তিনি ঐ সব শিখিমের কাছাকাছি এলা গাছের তলায় পুঁতে রাখলেন।
অতএব তারা, তাদের কাছে যেসব বিজাতীয় দেবতাগুলি ছিল, সেগুলি ও তাদের কানের দুলগুলি যাকোবকে দিলেন, এবং যাকোব সেগুলি শিখিমে ওক গাছের তলায় পুঁতে দিলেন।
5 পরে তাঁরা সেখান থেকে যাত্রা করলেন। তখন চারদিকের নগরসমূহে ঈশ্বর থেকে ভয় উপস্থিত হল, তাই সেখানকার লোকেরা যাকোবের ছেলেদের পিছনে গেল না।
পরে তাঁরা রওনা দিলেন, এবং ঈশ্বরের আতঙ্ক এমনভাবে তাঁদের চারপাশের ছোটোখাটো সব নগরের উপর নেমে এল যে কেউই তাঁদের পশ্চাদ্ধাবন করেনি।
6 পরে যাকোব ও তাঁর সঙ্গীরা সবাই কনান দেশের লূসে অর্থাৎ বৈথেলে উপস্থিত হলেন।
যাকোব ও তাঁর সব সঙ্গীসাথী কনান দেশের লূসে (অথবা, বেথেলে) এলেন।
7 সেখানে তিনি এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে সেই জায়গার নাম এল-বৈথেল [বৈথেলের ঈশ্বর] রাখলেন; কারণ ভাইয়ের সামনে থেকে তার পালাবার দিন ঈশ্বর সেই জায়গায় তাকে দর্শন দিয়েছিলেন
সেখানে তিনি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করেছিলেন, এবং তিনি সেই স্থানটির নাম রাখলেন এল্-বেথেল, কারণ যখন তিনি তাঁর দাদার কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানেই ঈশ্বর নিজেকে তাঁর কাছে প্রকাশিত করলেন।
8 আর রিবিকার দবোরা নামের ধাত্রীর মৃত্যু হল এবং বৈথেলের নীচে অবস্থিত অলোন গাছের তলায় তার কবর হল এবং সেই জায়গার নাম অলোন-বাখুৎ [ক্রন্দন গাছ] হল।
তখন রিবিকার সেবিকা দবোরা মারা গেল এবং তাকে বেথেলের বাইরের দিকে একটি ওক গাছের তলায় কবর দেওয়া হল। তাই সেই স্থানটির নাম রাখা হল অলোন্-বাখুৎ।
9 পদ্দন-অরাম থেকে যাকোব ফিরে আসলে ঈশ্বর তাঁকে আবার দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করলেন।
পদ্দন-আরাম থেকে ফিরে আসার পর, ঈশ্বর আবার যাকোবের কাছে আবির্ভূত হলেন ও তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
10 ১০ ফলে ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমার নাম যাকোব; লোকে তোমাকে আর যাকোব বলবে না, তোমার নাম ইস্রায়েল হবে;” আর তিনি তাঁর নাম ইস্রায়েল রাখলেন।
ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমার নাম যাকোব, কিন্তু তোমাকে আর যাকোব বলে ডাকা হবে না; তোমার নাম হবে ইস্রায়েল।” অতএব তিনি তাঁর নাম রাখলেন ইস্রায়েল।
11 ১১ ঈশ্বর তাঁকে আরো বললেন, “আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি প্রজাবান ও বহুবংশ হও; তোমার থেকে এক জাতি, এমন কি, জাতিসমাজ সৃষ্টি হবে, আর তোমার থেকে রাজারা সৃষ্টি হবে।
আর ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর; ফলপ্রসূ হও এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি পাও। তোমার মধ্যে থেকে এক জাতি ও এক জাতি-সমাজ উৎপন্ন হবে, এবং তোমার বংশধরদের মধ্যে অনেকেই রাজা হবে।
12 ১২ আর আমি অব্রাহামকে ও ইসহাককে যে দেশ দান করেছি, সেই দেশ তোমাকে ও তোমার ভাবী বংশকে দেব।”
যে দেশটি আমি অব্রাহাম ও ইস্‌হাককে দিয়েছিলাম তা আমি তোমাকেও দেব, এবং তোমার পরে এই দেশটি আমি তোমার বংশধরদেরও দেব।”
13 ১৩ সেই জায়গায় তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে চলে গেলেন।
পরে ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে সেই স্থানে উঠে গেলেন, যেখানে তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
14 ১৪ আর যাকোব সেই কথাবার্তার জায়গায় এক স্তম্ভ, পাথরের স্তম্ভ, স্থাপন করে তার উপরে পানীয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন ও তেল ঢেলে দিলেন।
ঈশ্বর যে স্থানটিতে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন, সেখানে তিনি পাথরের একটি স্তম্ভ খাড়া করলেন এবং সেটির উপর তিনি এক পেয়-নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন; তিনি সেটির উপর তেলও ঢেলে দিলেন।
15 ১৫ এবং যে জায়গায় ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে কথা বললেন, যাকোব সেই জায়গার নাম বৈথেল রাখলেন।
যে স্থানটিতে ঈশ্বর যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন, তিনি সেটির নাম রাখলেন বেথেল।
16 ১৬ পরে তাঁরা বৈথেল থেকে চলে গেলেন, আর ইফ্রাথে উপস্থিত হবার অল্প পথ বাকি থাকতে রাহেলের প্রসব বেদনা হল এবং তাঁর প্রসব করতে বড় কষ্ট হল।
পরে তাঁরা বেথেল ছেড়ে এগিয়ে গেলেন। যখন তাঁরা ইফ্রাথ থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন, তখন রাহেলের প্রসবযন্ত্রণা শুরু হল ও তিনি খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন।
17 ১৭ আর প্রসব ব্যথা কঠিন হলে ধাত্রী তাকে বলল, “ভয় কর না, কারণ এবারও তোমার ছেলে হবে।”
আর সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে যখন তাঁর খুব অসুবিধা হচ্ছিল তখন তাঁর ধাত্রী তাঁকে বলল, “আপনি নিরাশ হবেন না, আপনি আরও এক ছেলের জন্ম দিয়েছেন।”
18 ১৮ পরে তার মৃত্যু হল, আর প্রাণ চলে যাবার দিনের তিনি ছেলের নাম বিনোনী [আমার কষ্টের ছেলে] রাখলেন, কিন্তু তার বাবা তার নাম বিন্যামীন [ডান হাতের ছেলে] রাখলেন
শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে করতে তিনি তাঁর ছেলের নাম রাখলেন বিনোনী—কারণ তিনি মারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু তার বাবা তার নাম রাখলেন বিন্যামীন।
19 ১৯ এই ভাবে রাহেলের মৃত্যু হল এবং ইফ্রাথ অর্থাৎ বৈৎলেহমের পথের পাশে তার কবর হল।
অতএব রাহেল মারা গেলেন ও তাঁকে ইফ্রাথে (অথবা, বেথলেহেমে) যাওয়ার পথেই কবর দেওয়া হল।
20 ২০ পরে যাকোব তার কবরের ওপরে এক স্তম্ভ স্থাপন করলেন, রাহেলের সেই কবর স্তম্ভ আজও আছে।
তাঁর সমাধির উপর যাকোব একটি স্তম্ভ খাড়া করলেন, এবং আজও পর্যন্ত সেই স্তম্ভটি রাহেলের কবররূপে চিহ্নিত হয়ে আছে।
21 ২১ পরে ইস্রায়েল সেখান থেকে যাত্রা করলেন এবং মিগদল-এদরের ওপাশে তাঁবু স্থাপন করলেন।
ইস্রায়েল আরও আগে এগিয়ে গেলেন এবং মিগদল-এদোর পার করে তাঁর তাঁবু খাটালেন।
22 ২২ সেই দেশে ইস্রায়েলের বসবাসের দিনের রুবেন গিয়ে নিজের বাবার বিলহা নামে উপপত্নীর সঙ্গে শয়ন করল এবং ইস্রায়েল তা শুনতে পেলেন।
ইস্রায়েল যখন সেই অঞ্চলে বসবাস করছিলেন, রূবেণ তাঁর বাবার উপপত্নী বিলহার কাছে গিয়ে তাঁর সাথে শুয়েছিলেন, এবং ইস্রায়েল তা শুনতে পেলেন। যাকোবের বারোটি ছেলে ছিল:
23 ২৩ লেয়ার ছেলে; যাকোবের বড় ছেলে রুবেন এবং শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন।
লেয়ার ছেলেরা: যাকোবের বড়ো ছেলে রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন।
24 ২৪ রাহেলের ছেলে; যোষেফ ও বিন্যামীন।
রাহেলের ছেলেরা: যোষেফ ও বিন্যামীন,
25 ২৫ রাহেলের দাসী বিলহার ছেলে; দান ও নপ্তালি।
রাহেলের দাসী বিলহার ছেলেরা: দান ও নপ্তালি।
26 ২৬ লেয়ার দাসী সিল্পার ছেলে; গাদ ও আশের। এরা যাকোবের ছেলে, পদ্দন-অরামে জন্মায়।
লেয়ার দাসী সিল্পার ছেলেরা: গাদ ও আশের। এরাই যাকোবের সেই ছেলেরা, পদ্দন-আরামে যারা তাঁর ঔরসে জন্মেছিল।
27 ২৭ পরে কিরিয়থর্ব্বের অর্থাৎ হিব্রোণের কাছাকাছি মম্রি নামক যে জায়গায় অব্রাহাম ও ইসহাক বাস করেছিলেন, সেই জায়গায় যাকোব নিজের বাবা ইসহাকের কাছে উপস্থিত হলেন।
কিরিয়ৎ-অর্বের (অথবা, হিব্রোণের) কাছাকাছি অবস্থিত সেই মম্রিতে যাকোব ঘরে তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে এলেন, যেখানে অব্রাহাম ও ইস্‌হাক বসবাস করতেন।
28 ২৮ ইসহাকের বয়স একশো আশী বছর হয়েছিল।
ইস্‌হাক 180 বছর বেঁচেছিলেন।
29 ২৯ পরে ইসহাক বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হয়ে প্রাণত্যাগ করে নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে একত্রিত হলেন এবং তাঁর ছেলে এষৌ ও যাকোব তাঁর কবর দিলেন।
পরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন ও মারা গেলেন এবং তিনি বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ূ অবস্থায় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে মিলিত হলেন। আর তাঁর ছেলে এষৌ ও যাকোব তাঁকে কবর দিলেন।

< আদিপুস্তক 35 >