< আদিপুস্তক 2 >

1 এই ভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে অবস্থিত স ব জিনিস তৈরী করা শেষ হল।
এইভাবে আকাশমণ্ডল এবং পৃথিবী ও সেখানকার সবকিছু সৃষ্টির কাজ সম্পূর্ণ হল।
2 পরে সপ্তম দিনের ঈশ্বর তাঁর কাজকে শেষ করলেন, সেই সপ্তম দিনের নিজের করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।
সপ্তম দিনে এসে ঈশ্বর তাঁর সব কাজকর্ম সমাপ্ত করলেন; তাই সপ্তম দিনে তিনি তাঁর সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।
3 আর ঈশ্বর সেই সপ্তম দিন কে আশীর্বাদ করে পবিত্র করলেন, কারণ সেই দিনের ঈশ্বর নিজের সৃষ্টি ও তৈরী করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।
আর ঈশ্বর সপ্তম দিনকে আশীর্বাদ করে সেটিকে পবিত্র করলেন, কারণ এই দিনেই তিনি তাঁর সব সৃষ্টিকর্ম সম্পূর্ণ করে বিশ্রাম নিয়েছিলেন।
4 সৃষ্টিকালে যে দিন সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করলেন, তখনকার আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টির বৃত্তান্ত এই।
আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী যখন সৃষ্টি হল, সদাপ্রভু ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল তৈরি করলেন তখন তার বর্ণনা এইরকম হল।
5 সেই দিনের পৃথিবীর ভূমিতে কোন ফসল উত্পন্ন হত না, আর ভূমিতে কোন ওষধি উৎপন্ন হত না, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি বর্ষণ করেননি, আর ভূমিতে কৃষিকাজ করতে মানুষ ছিল না।
আর তখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে কোনও গাছপালা উৎপন্ন হয়নি এবং কোনও চারাগাছ তখনও গজিয়ে ওঠেনি, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠাননি, এবং জমিতে চাষ করার জন্য সেখানে কোনও মানুষও ছিল না,
6 আর পৃথিবী থেকে কুয়াশা ঝর্ণা উঠে গিয়ে সমস্ত পৃথিবীকে জলসিক্ত করল।
কিন্তু পৃথিবী থেকে জলধারা উঠে এল ও জমির সমগ্র বহির্ভাগ জলসিক্ত করে তুলল।
7 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মৃত্তিকার ধূলোতে আদমকে [অর্থাৎ মানুষকে] তৈরী করলেন এবং তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন; তাতে মানুষ সজীব প্রাণী হল।
সদাপ্রভু ঈশ্বর জমির ধুলো থেকে মানুষকে গড়ে তুললেন এবং তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু ভরে দিলেন, এবং সেই মানুষ এক জীবিত প্রাণী হয়ে গেল।
8 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে, এদনে, এক বাগান তৈরী করলেন এবং সেই জায়গায় নিজের জন্য ঐ মানুষকে রাখলেন।
এমতাবস্থায় সদাপ্রভু ঈশ্বর এদনে, পূর্বদিকে একটি বাগান তৈরি করলেন; এবং সেখানে তিনি তাঁর হাতে গড়া মানুষটিকে রাখলেন।
9 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর ভূমি থেকে সর্বজাতীয় সুদৃশ্য ও সুখাদ্য-দায়ক গাছ এবং সেই বাগানের মাঝখানে জীবনগাছ ও সদসদ-জ্ঞানদায়ক গাছ সৃষ্টি করলেন।
আর সদাপ্রভু ঈশ্বর ভূমিতে সব ধরনের গাছপালা জন্মাতে দিলেন—যেসব গাছপালা দেখতে ভালো লাগে এবং খাদ্যরূপেও যেগুলি ভালো। বাগানের মাঝখানে জীবনদায়ী গাছ এবং ভালোমন্দের জ্ঞানদায়ী গাছ ছিল।
10 ১০ আর বাগানে জল সেচনের জন্য এদন থেকে এক নদী বের হল, ওটা সেখান থেকে চারটি মুখে ভাগ হল।
এদন থেকে একটি নদী প্রবাহিত হয়ে বাগানটি জলসেচিত করে তুলল; সেখান থেকে এটি চার ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল।
11 ১১ প্রথম নদীর নাম পিশোন; এটা সমস্ত হবীলা দেশের চারপাশ থেকে বয়ে যায়,
প্রথমটির নাম পীশোন; এটি সমগ্র সেই হবীলা দেশ জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে, যেখানে সোনা পাওয়া যায়।
12 ১২ সেখানে সোনা পাওয়া যায়, আর সেই দেশের সোনা উত্তম এবং সেই জায়গায় মোতী ও গোমেদকমনি জন্মে।
(সেই দেশের সোনা খুব উন্নত মানের; আর সেখানে সুগন্ধি ধুনো এবং স্ফটিকমণিও পাওয়া যায়)
13 ১৩ দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন; এটা সমস্ত ইথিওপিয়া দেশ বেষ্টন করে।
দ্বিতীয় নদীটির নাম গীহোন, এটি সমগ্র কূশ দেশ জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে।
14 ১৪ তৃতীয় নদীর নাম হিদ্দেকল, এটা অশূর দেশের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে। চতুর্থ নদী ফরাৎ।
তৃতীয় নদীটির নাম টাইগ্রিস; এটি আসিরিয়ার পূর্বদিক ঘেঁসে বয়ে গিয়েছে। চতুর্থ নদীটি হল ইউফ্রেটিস।
15 ১৫ পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে নিয়ে এদনের বাগানে কৃষিকাজ ও দেখাশোনার জন্য সেখানে রাখলেন।
সদাপ্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে নিয়ে এদন বাগানে কাজ করার এবং সেটির যত্ন নেওয়ার জন্য তাকে সেখানে রাখলেন।
16 ১৬ আর সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে এই আদেশ দিলেন, “তুমি এই বাগানের সব গাছের ফল নিজের ইচ্ছায় খাও;
আর সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে আদেশ দিলেন, “বাগানের যে কোনো গাছের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে তুমি স্বাধীন;
17 ১৭ কিন্তু সদসদ-জ্ঞানদায়ক যে গাছ, তার ফল খেও না, কারণ যে দিন তার ফল খাবে, সেই দিন মরবেই মরবে।”
কিন্তু ভালোমন্দের জ্ঞানদায়ী গাছের ফল তুমি অবশ্যই খেয়ো না। যদি সেই গাছের ফল খাও, তবে তুমি নিশ্চয় মারা যাবে।”
18 ১৮ আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তার জন্য তার মতো সহকারিণী তৈরী করি।”
সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের একা থাকা ভালো নয়। আমি তার উপযুক্ত এক সহকারিণী তৈরি করব।”
19 ১৯ আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে সকল বন্য পশু ও আকাশের সব পাখি তৈরী করলেন; পরে আদম তাদের কি কি নাম রাখবেন, তা জানতে সেই সবাইকে তাঁর কাছে আনলেন, তাতে আদম যে সজীব প্রাণীর যে নাম রাখলেন, তার সেই নাম হল।
এখন সদাপ্রভু ঈশ্বর সব বন্যপশুকে ও আকাশের সব পাখিকে মাটি দিয়ে তৈরি করলেন। সেই মানুষটি তাদের কী নাম দেয় তা দেখার জন্য ঈশ্বর তাদের তাঁর কাছে আনলেন; আর সেই মানুষটি প্রত্যেকটি জীবন্ত প্রাণীকে যে যে নাম দিলেন, তার নাম ঠিক তাই হল।
20 ২০ আদম যাবতীয় পশুপাল, পাখির ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখলেন, কিন্তু মানুষের জন্য তাঁর মতো সহকারিণী পাওয়া গেল না।
অতএব সেই মানুষটি সব গৃহপালিত পশুর, আকাশের পাখিদের এবং সব বন্যপশুর নামকরণ করলেন। কিন্তু আদমের জন্য উপযুক্ত কোনও সহকারিণী পাওয়া যায়নি।
21 ২১ পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে গভীর ঘুমে মগ্ন করলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন; আর তিনি তাঁর একখানা পাঁজর নিয়ে মাংস দিয়ে সেই স্থান পূরণ করলেন।
অতএব সদাপ্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়তে দিলেন; এবং যখন তিনি ঘুমাচ্ছিলেন, তখন ঈশ্বর সেই মানুষটির পাঁজরের একটি হাড় বের করে নিয়ে তাঁর সেই স্থানটি মাংস দিয়ে ভরাট করে দিলেন।
22 ২২ সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম থেকে পাওয়া সেই পাঁজরে এক স্ত্রী সৃষ্টি করলেন ও তাঁকে আদমের কাছে আনলেন।
পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটির পাঁজরের যে হাড়টি বের করলেন, তা দিয়ে এক নারী তৈরি করলেন, এবং ঈশ্বর তাঁকে সেই মানুষটির কাছে আনলেন।
23 ২৩ তখন আদম বললেন, “এবার [হয়েছে]; ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস; এর নাম নারী হবে, কারণ ইনি মানুষ থেকে গৃহীত হয়েছেন।”
মানুষটি বললেন, “এখন এই আমার অস্থির অস্থি ও আমার মাংসের মাংস; এর নাম হবে ‘নারী,’ কারণ একে নর থেকে নেওয়া হয়েছে।”
24 ২৪ এই কারণ মানুষ নিজের বাবা মাকে ত্যাগ করে নিজের স্ত্রীতে আসক্ত হবে এবং তারা একাঙ্গ হবে।
এই কারণে একজন পুরুষ তার পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করে, তার স্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হবে ও সেই দুজন একাঙ্গ হবে।
25 ২৫ ঐ দিনের আদম ও তাঁর স্ত্রী উভয়ে উলঙ্গ থাকতেন, আর তাঁদের লজ্জা বোধ ছিল না।
সেই পুরুষ ও তাঁর স্ত্রী, দুজনেই নগ্ন ছিলেন, আর তাদের কোনো লজ্জাবোধও ছিল না।

< আদিপুস্তক 2 >