< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 34 >

1 তারপর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল
সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
2 মানুষের সন্তান, তুমি ইস্রায়েলের পালকদের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল, তাদেরকে ভাববাণী বল, সেই পালকদেরকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ইস্রায়েলের সেই পালকদেরকে ধিক, পালকদের কি উচিত নয় মেষদেরকে পালন করা?।
“হে মানবসন্তান, ইস্রায়েলের পালকদের বিরুদ্ধে তুমি ভাববাণী বলো; ভবিষ্যদ্‌বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ধিক্ ইস্রায়েলের সেই পালকদের যারা শুধু নিজেদেরই দেখাশোনা করে! মেষপালের দেখাশোনা করা কি পালকের কর্তব্য নয়?
3 তোমার মেদ খাও এবং মেষলোমের পোশাক পর, পুষ্ট মেষ বলিদান করো কিন্তু মেষদেরকে পালন কর না।
তোমরা তো দই খাও, পশম দিয়ে কাপড় বানিয়ে পর এবং বাছাই করা মেষ বলিদান করো, কিন্তু মেষদের যত্ন নাও না।
4 তোমার দুর্বলদের সবল কর না, পীড়িতের চিকিৎসা কর নি, ভাঙা ক্ষত বাঁধনি, দূরের মানুষকে ফিরিয়ে আন নি, হারানের খোঁজ কর নি, কিন্তু শক্তি ও উপদ্রব করে তাদের শাসন করেছ।
তোমরা দুর্বলদের সবল করোনি, অসুস্থদের সুস্থ করোনি, আহতদের ক্ষত বেঁধে দাওনি। যারা বিপথে গেছে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসোনি কিংবা যারা হারিয়ে গেছে তাদের খোঁজ করোনি। তোমরা তাদের কড়া ও নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছ।
5 তারপর পালকের অভাবে মেষরা ছিন্নভিন্ন হয়েছে; তারা বন্য পশু সকলের খাদ্য হয়েছে, তারপর ছিন্নভিন্ন হয়েছ।
তারা ছড়িয়ে পড়েছে কারণ তাদের পালক নেই আর ছড়িয়ে পড়ার দরুন তারা বন্যপশুদের খাবার হয়েছে।
6 আমার মেষেরা সব পর্বতে ও সব উচ্চ গিরির ওপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে; সব ভূতলে আমার মেষেরা ছিন্নভিন্ন হয়েছে; তাদের খোঁজার কেউ নেই।
আমার মেষেরা সমস্ত পাহাড় ও উচ্চ গিরির উপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং তাদের খোঁজ করেনি।
7 তাই, পালকেরা, সদাপ্রভুর বাক্য শোন।
“‘অতএব, হে পালকেরা, সদাপ্রভুর কথা শোনো।
8 “প্রভু সদাপ্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য”, “কারণ আমার পাল লুটদ্রব্য হয়েছে এবং আমার মেষের মাঠের সব পশুদের খাদ্য হবে; (কারণ সেখানে কোনো মেষ পালক ছিল না এবং কোনো পালক আমার পালকে চাইতনা কিন্তু পালকেরা নিজেদের পাহারা দিত এবং আমার পালকে পালন করত না)”
সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি, পালকের অভাবে আমার পাল লুটের জিনিস হয়েছে এবং বন্যপশুর খাবার হয়েছে, আর যেহেতু আমার পালকেরা আমার পালের খোঁজ করেনি বরং তারা নিজেদেরই দেখাশোনা করেছে আমার পালের যত্ন নেয়নি,
9 তাই, পালকরা শোন, তোমার সদাপ্রভুর বাক্য শোন।
অতএব, হে পালকেরা, সদাপ্রভুর কথা শোনো:
10 ১০ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, দেখ, আমি সেই পালকদের বিরুদ্ধে; আমি তাদের হাত থেকে আমার মেষদেরকে আদায় করব। তারপর তাদেরকে মেষপালকের কাজ থেকে বরখাস্ত করব, সেই পালকেরা আর নিজেদেরকে পালন করবে না; আর আমি আপন মেষদেরকে তাদের মুখ থেকে উদ্ধার করব, যাতে আমার পাল আর তাদের খাদ্য হবে না
সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি পালকদের বিপক্ষে এবং আমার পালের জন্য তাদের কাছ থেকে হিসেব নেব। আমি তাদের পালের দেখাশোনা করা থেকে সরিয়ে দেব যেন পালকেরা আর নিজেদের জন্য খাবার না পায়। আমিই আমার পালকে তাদের গ্রাস থেকে উদ্ধার করব, এবং তাদের খাবার হতে দেব না।
11 ১১ কারণ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, দেখ, আমি, নিজে মেষদের খোঁজ করব, তাদেরকে দেখাশোনা করব।
“‘কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি নিজেই আমার মেষদের খুঁজব এবং তাদের যত্ন নেব।
12 ১২ পালক ছিন্নভিন্ন মেষদের মধ্যে থাকবার দিনের নিজের পাল খুঁজে বের করে এবং যে সব জায়গায় তারা মেঘাছন্ন অন্ধকার দিনের ছিন্নভিন্ন হয়েছে, সে সব জায়গা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করব।
পালক যেমন তার ছড়িয়ে পড়া পালের খোঁজ করে যখন সে তাদের সঙ্গে থাকে তেমনি আমি আমার মেষকে খুঁজব। মেঘ ও অন্ধকারের দিনে তারা যেসব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে আমি সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করব।
13 ১৩ তারপর আমি জাতিদের মধ্য থেকে বের করে আনব, দেশ থেকে জড়ো করব এবং তাদের তোমার ভূমিতে আনব। ইস্রায়েলের পর্বতসমূহের ওপরে, জল প্রবাহগুলর কাছে এবং দেশের সব জায়গায় তাদেরকে চরাব।
আমি তাদের জাতিগণের মধ্যে থেকে বের করে আনব ও বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করব এবং আমি তাদের নিজের দেশে নিয়ে আসব। আমি তাদের ইস্রায়েলের পাহাড়ে, গিরিখাতে এবং দেশের সব বসতিস্থানগুলিতে চরাব।
14 ১৪ আমি উত্তম চরানিতে তাদেরকে চরাব এবং ইস্রায়েলের উঁচুঁ পর্বতে একমাত্র চরানোর জায়গা করব, তারা সুন্দর চরানোর প্রচুর জায়গায় শুয়ে থাকবে, তারা ইস্রায়েলের পর্বতে চরবে।
তাদের আমি ভালো চরানিতে চরাব, এবং ইস্রায়েলের পাহাড়গুলি তাদের চরানিস্থান হবে। ভালো চরানিতে তারা শোবে, এবং তারা ইস্রায়েলের পাহাড়ে ভালো চরানিতে খাবে।
15 ১৫ আমি নিজে মেষদেরকে চরাব এবং আমি তাদেরকে শোয়াব এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
আমিই নিজের মেষদের চরাব এবং তাদের শোয়াব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।
16 ১৬ আমি হারানোদের খোঁজ করব, দূরে চলে যাওয়াদের ফিরিয়ে আনব ভাঙা মেষদের ক্ষত বাঁধব ও পীড়িতকে আরোগ্য দেবো এবং হৃষ্ট পুষ্ট ও শক্তিশালী সংহার করব; আমি বিচারমতে তাদেরকে পালন করব।
যারা হারিয়ে গেছে তাদের আমি খোঁজ করব এবং যারা বিপথে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনব। আমি আহতদের ক্ষত বেঁধে দেব এবং দুর্বলদের বলযুক্ত করব, কিন্তু মোটাসোটা ও বলবানদের ধ্বংস করব। আমি ন্যায়বিচারে সেই পালের যত্ন নেব।
17 ১৭ এবং তুমি, আমার মেষপাল, (প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন) দেখ, আমি মেষ, আবার মেষদের ও ছাগলদের মধ্যে বিচার করব।
“‘আর তোমাদের বিষয়, হে আমার পাল, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি ভালো ও খারাপ মেষদের মধ্যে বিচার করব, আবার মেষ ও ছাগলের মধ্যে বিচার করব।
18 ১৮ এটা কি তোমাদের কাছে তুচ্ছ বিষয় মনে হয় যে ভালো চরানিতে চরাচ্ছ, যাতে নিজেদের পদতলে দলিত করছ বাকি ঘাস? অথবা পরিষ্কার জল পান করছ, তুমি পা দিয়ে নদীর জল কাদা করছো
তোমাদের পক্ষে ভালো চারণভূমিতে খাওয়া কি যথেষ্ট নয়? আবার বাকি ঘাসগুলিও পা দিয়ে মাড়াতে হবে? তোমাদের পক্ষে পরিষ্কার জল খাওয়া কি যথেষ্ট নয়? আবার বাকি জলও কি পা দিয়ে ঘোলা করতে হবে?
19 ১৯ কিন্তু আমার মেষগনের অবস্থা এই, যেখানে তুমি পা দিয়ে দলন করেছ; তোমার পা দিয়ে যা কাদা করেছ, তারা তাই পান করে।
তোমরা পা দিয়ে যা মাড়িয়েছ এবং যে জল ঘোলা করেছ তাই কি আমার মেষগুলিকে খেতে হবে?
20 ২০ তাই প্রভু সদাপ্রভু তাদেরকে এ কথা বলেন, দেখ, আমি, নিজে মোটা মেষের ও রোগা মেষের মধ্যে বিচার করব।
“‘অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু তাদের এই কথা বলেন, দেখো, আমি নিজেই মোটা আর রোগা মেষের মধ্যে বিচার করব।
21 ২১ তোমার পাশ ও কাঁধ দিয়ে দুর্বল কে ঠেলছ, শিং দিয়ে গোঁতাচ্ছ যতক্ষণ না দেশ থেকে ছিন্নভিন্ন হয়।
যেহেতু তোমরা দেহ এবং কাঁধ দিয়ে তাদের ঠেলছ, শিং দিয়ে দুর্বলদের গুঁতিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছ,
22 ২২ তাই আমি আমার মেষপালকে রক্ষা করব, তারা আর লুটদ্রব্য হবে না এবং আমি মেষ ও মেষের মধ্যে বিচার করব।
আমি আমার পালকে রক্ষা করব, এবং তারা আর লুটের জিনিস হবে না। আমি এক মেষের সঙ্গে আরেক মেষের বিচার করব।
23 ২৩ আমি তাদের ওপরে একমাত্র পালককে ওঠাবো তিনি তাদের পালক হবেন।
আমি তাদের উপর এক পালককে নিযুক্ত করব, আমার দাস দাউদকে, যে তাদের পালন করবে; সে তাদেরকে চরাবে এবং তাদের পালক হবে।
24 ২৪ আমি সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর হব এবং আমার দাস দায়ূদ তাদের অধ্যক্ষ হবেন; আমি সদাপ্রভু এটা বললাম।
আমি সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর হব, এবং আমার দাস দাউদ তাদের মধ্যে শাসনকর্তা হবে, আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি।
25 ২৫ তারপর আমি তাদের পক্ষে শান্তির নিয়ম স্থির করব ও হিংস্র পশুদেরকে দেশ থেকে তাড়াবো তাতে তারা নির্ভয়ে প্রান্তরে বাস করবে ও বনে ঘুমাবে।
“‘আমি তাদের সঙ্গে শান্তির এক বিধান স্থাপন করব এবং দেশ থেকে হিংস্র পশুদের শেষ করব যেন তারা নিরাপদে প্রান্তরে বাস করতে পারে এবং বনে ঘুমাতে পারে।
26 ২৬ আমি তাদেরকে ও গিরির চারদিকের পরিসীমাকে আশীর্বাদ করব, ঠিকদিনের জলধারা বইয়ে দেবো,
আমি তাদের এবং আমার পাহাড়ের চারপাশের জায়গাগুলিকে আশীর্বাদ করব। আমি ঠিক সময়ে বৃষ্টি পাঠাব; সেখানে আশীর্বাদের ধারা বর্ষাবে।
27 ২৭ তারপর ক্ষেতের গাছ ফল উৎপন্ন করবে ও ভূমি শস্য দেবে এবং আমার মেষ নির্ভয়ে স্বদেশে থাকবে, তাতে তারা জানবে যে, আমি সদাপ্রভু, যখন আমি তাদের দাসত্ব ভেঙে ফেলব এবং যারা তাদেরকে দাসত্ব করিয়েছে, তাদের হাত থেকে উদ্ধার করবো।
মাঠের গাছে গাছে ফল ধরবে এবং মাটি ফসল দেবে; লোকেরা তাদের জায়গায় নিরাপদে থাকবে। তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু, যখন আমি তাদের জোয়ালের খিল ভেঙে ফেলব এবং যারা তাদের দাসত্ব করাচ্ছে তাদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করব।
28 ২৮ তারা আর জাতিদেরর লুটদ্রব্য হবে না এবং বন্য পশুরা তাদেরকে আর গ্রাস করবে না; কিন্তু তারা নির্ভয়ে বাস করবে, কেউ তাদেরকে ভয় দেখাবে না।
তারা আর জাতিগণের লুটের জিনিস হবে না কিংবা বন্যপশুরা তাদের খেয়ে ফেলবে না। তারা নিরাপদে বাস করবে আর কেউ তাদের ভয় দেখাবে না।
29 ২৯ কারণ আমি তাদের জন্য শান্তির বাগান তৈরী করব; যাতে তারা দেশের মধ্যে ক্ষুধায় তাদের সংহার আর হবে না এবং তারা জাতিদের করা অপমান আর ভোগ করবে না।
আমি তাদের উর্বর জমি দেব, আর দেশের মধ্যে তারা দুর্ভিক্ষের হাতে পড়বে না কিংবা অন্যান্য দেশের অসম্মানের পাত্র হবে না।
30 ৩০ তারপর তারা জানবে যে, আমি সদাপ্রভু, তাদের ঈশ্বর, তাদের সঙ্গে ও তারা আমার প্রজা ইস্রায়েল-কুল, এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
তখন তারা জানবে যে আমি, সদাপ্রভু তাদের ঈশ্বর, তাদের সহবর্তী এবং তারা, ইস্রায়েল কুল, আমার প্রজা, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
31 ৩১ তোমার আমার মেষ, আমার চরানির মেষ; আমার লোক, আমি তোমাদের ঈশ্বর হব; এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
তোমরা আমার মেষ, আমার চরাণির মেষ এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’”

< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 34 >