< যাত্রাপুস্তক 33 >

1 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের কাছে দিব্যি করে যে দেশ তাদের বংশকে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেই দেশে যাও, তুমি মিশর থেকে যে লোকেদেরকে বের করে এনেছ, তাদের সঙ্গে এখান থেকে চলে যাও। 2 আমি তোমার আগে আগে এক দূত পাঠিয়ে দেবো এবং কনানীয়, ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়কে দূর করে দেব। 3 যে দেশে দুধ ও মধু প্রবাহিত হয়, সেই দেশে যাও; কিন্তু আমি তোমার সাথে যাব না, কারণ তুমি একগুঁয়ে জাতি; হয়তো পথের মধ্যেই তোমাকে হত্যা করি।” 4 এই অশুভ বাক্য শুনে লোকেরা শোক করল, কেউ গায়ে কোনো গয়না পরল না। 5 সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদের এই কথা বল, ‘তোমরা একগুঁয়ে জাতি, এক নিমেষের জন্য তোমাদের মধ্যে গেলে আমি তোমাদেরকে হত্যা করতে পারি; তোমরা এখন নিজেদের গা থেই কে গয়না দূর কর, তাতে জানতে পারব, তোমাদের জন্য আমার কি করা কর্তব্য’।” 6 তখন ইস্রায়েল সন্তানরা হোরেব পর্বত থেকে যাত্রাপথে নিজেদের সমস্ত গয়না দূর করল। 7 আর মোশি তাঁবু নিয়ে শিবিরের বাইরে ও শিবির থেকে দূরে স্থাপন করলেন এবং সেই তাঁবুর নাম সমাগম তাঁবু রাখলেন; আর সদাপ্রভুর খোঁজকারী প্রত্যেক জন শিবিরের বাইরে থাকা সেই সমাগম তাঁবুর কাছে যেত। 8 আর মোশি যখন বের হয়ে সেই তাঁবুর কাছে যেতেন, তখন সমস্ত লোক উঠে প্রত্যেকে নিজেদের তাঁবুর দরজায় দাঁড়াত এবং যতক্ষণ মোশি ঐ তাঁবুতে প্রবেশ না করতেন, ততক্ষণ তাঁর পিছনের দিকে তাকিয়ে থাকত। 9 আর মোশি তাঁবুতে প্রবেশ করার পর মেঘস্তম্ভ নেমে তাঁবুর দরজায় অবস্থান করত এবং সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে আলাপ করতেন। 10 ১০ সমস্ত লোক তাঁবুর দরজায় অবস্থিত মেঘস্তম্ভ দেখত ও সমস্ত লোক উঠে প্রত্যেকে নিজেদের তাঁবুর দরজায় থেকে প্রণাম করত। 11 ১১ আর মানুষ যেমন বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করে, সেইভাবে সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে সামনা সামনি হয়ে আলাপ করতেন। পরে মোশি শিবিরে ফিরে আসতেন, কিন্তু নূনের ছেলে যিহোশূয় নামে তাঁর যুবক পরিচারক তাঁবুর মধ্যে থেকে বাইরে যেতেন না। 12 ১২ আর মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “দেখ, তুমি আমাকে বলছ, ‘এই লোকেদেরকে নিয়ে যাও’, কিন্তু আমার সঙ্গী করে যাকে পাঠাবে, তাঁর পরিচয় আমাকে দাও নি; তুমি বলেছ, ‘আমি তোমাকে নামে জানি এবং তুমি আমার কাছে অনুগ্রহ পেয়েছ।’ 13 ১৩ ভাল, আমি যদি তোমার কাছে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে অনুরোধ করি, আমি যেন তোমাকে জেনে তোমার কাছে অনুগ্রহ পাই, এই জন্য আমাকে তোমার সমস্ত পথ জানাও এবং এই জাতি যে তোমার প্রজা, এটা বিবেচনা কর।” 14 ১৪ তখন তিনি তাঁকে বললেন, “আমার উপস্থিতি তোমার সঙ্গে থাকবে এবং আমি তোমাকে বিশ্রাম দেবো।” 15 ১৫ তাতে তিনি তাঁকে বললেন, “তোমার উপস্থিতি যদি সঙ্গে না থাকে, তবে এখান থেকে আমাদেরকে নিয়ে যেও না। 16 ১৬ কারণ আমি ও তোমার এই প্রজারা যে তোমার কাছে অনুগ্রহ পেয়েছি, এটা কিভাবে জানা যাবে? আমাদের সঙ্গে তোমার যাওয়ার মাধ্যমে কি নয়? তার মাধ্যমেই আমি ও তোমার প্রজারা পৃথিবীর অন্য সমস্ত জাতি থেকে আলাদা।” 17 ১৭ পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এই যে কথা তুমি বললে, সেটাও আমি করব, কারণ তুমি আমার চোখে অনুগ্রহ পেয়েছ এবং আমি তোমার নামে তোমাকে জানি।” 18 ১৮ তখন তিনি বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি আমাকে তোমার মহিমা দেখতে দাও।” 19 ১৯ ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমার সামনে দিয়ে আমার সমস্ত ভালো বিষয় গমন করাবো ও তোমার সামনে সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করব; আর আমি যাকে দয়া করি, তাকে দয়া করব ও যার প্রতি করুণা করি, তার প্রতি করুণা করব।” 20 ২০ আরও বললেন, “তুমি আমার মুখ দেখতে পাবে না, কারণ মানুষ আমাকে দেখলে বাঁচতে পারে না।” 21 ২১ সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, আমার কাছে একটি জায়গা আছে; তুমি ঐ পাথরের উপরে দাঁড়াবে। 22 ২২ তাতে তোমার কাছ দিয়ে আমার মহিমা যাওয়ার দিনের আমি তোমাকে শিলার এক ফাটলের মধ্যে রাখব ও আমার যাওয়ার শেষ পর্যন্ত হাত দিয়ে তোমাকে ঢেকে রাখব; 23 ২৩ পরে আমি হাত তুললে তুমি আমার পিছন দিক দেখতে পাবে, কিন্তু আমার মুখ দেখতে পাওয়া যাবে না।”

< যাত্রাপুস্তক 33 >