< যাত্রাপুস্তক 13 >

1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
2 “ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে উভয়ই মানুষ হোক কিংবা পশু হোক, গর্ভে জন্মানো গর্ভজাত সব প্রথম ফল আমার উদ্দেশ্যে পবিত্র কর; তা সব আমারই।”
“প্রত্যেকটি প্রথমজাত পুরুষকে আমার উদ্দেশে পবিত্র করো। মানুষ হোক কি পশু, ইস্রায়েলীদের মধ্যে প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম সন্তানটি আমার।”
3 আর মোশি তাদেরকে বললেন, এই দিন মনে রেখো, যে দিনের তোমরা মিশরের দাসত্বের ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিলে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে সেখান থেকে তোমাদের বের করে আনলেন; কোনো খামিরযুক্ত খাবার খাওয়া হবে না।
তখন মোশি লোকদের বললেন, “যেদিন তোমরা মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে, সেদিনটির স্মরণার্থে এদিন উৎসব পালন করো, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমাদের সেখান থেকে বের করে এনেছেন। খামিরযুক্ত কোনো কিছু খেয়ো না।
4 আবীব মাসের এই দিনের তোমরা বের হলে।
আজ, আবীব মাসে, তোমরা বের হয়ে যাচ্ছ।
5 আর কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়ের যে দেশ তোমাকে দিতে সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে যখন তিনি তোমাকে নিয়ে যাবেন, তখন তুমি এই মাসে এই সেবার অনুষ্ঠান করবে।
সদাপ্রভু যখন তোমাকে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয়, ও যিবূষীয়দের দেশে—যে দেশটি তিনি তোমাকে দেওয়ার বিষয়ে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, দুধ ও মধু প্রবাহিত সেই দেশে—নিয়ে আসবেন, তখন এই মাসে তোমাকে এই পর্বটি পালন করতে হবে:
6 সাত দিন খামির বিহীন রুটি খেও ও সপ্তম দিনের সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসব কোরো।
সাত দিন ধরে তুমি খামিরবিহীন রুটি খেয়ো এবং সপ্তম দিনে সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি উৎসবের আয়োজন কোরো।
7 সেই সাত দিন খামির বিহীন রুটি খেতে হবে, তোমার কাছে খামিরযুক্ত খাবার দেখা না যাক, তোমার সমস্ত সীমানার মধ্যে খামির দেখা না যাক।
সেই সাত দিন যাবৎ তুমি খামিরবিহীন রুটি খেয়ো; খামিরযুক্ত কোনো কিছু যেন তোমার কাছে দেখা না যায়, বা তোমার সীমানার মধ্যেও যেন কোথাও কোনও খামির দেখা না যায়।
8 সেই দিনের তুমি তোমার ছেলেকে এটা জানিও, মিশর থেকে আমার বেরিয়ে আসার দিনের সদাপ্রভু আমার প্রতি যা করলেন, এটা সেই জন্য।
সেদিন তুমি তোমার সন্তানকে বোলো, ‘আমি যখন মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিলাম তখন সদাপ্রভু আমার জন্য যা করেছিলেন, সেজন্যই আমি এরকম করছি।’
9 আর এটা চিহ্নের জন্য তোমার হাতে ও স্মরণের জন্য তোমার কপালে থাকবে; যেন সদাপ্রভুর ব্যবস্থা তোমার মুখে থাকে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে মিশর থেকে তোমাকে বের করেছেন।
এই অনুষ্ঠানটি তোমার জন্য তোমার হাতে এক চিহ্নের মতো ও তোমার কপালে এক স্মৃতিচিহ্ন হয়ে থাকবে যেন সদাপ্রভুর এই বিধান তোমার ঠোঁটেই থাকে। কারণ সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমাকে মিশর থেকে বের করে এনেছেন।
10 ১০ সুতরাং তুমি প্রত্যেক বছর এইদিনের এই নিয়ম পালন করবে।
বছরের পর বছর ধরে নিরূপিত সময়ে তোমাকে এই বিধিটি পালন করতে হবে।
11 ১১ সদাপ্রভু তোমার কাছে ও তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই অনুসারে যখন কনানীয়দের দেশে প্রবেশ করিয়ে তোমাকে সেই দেশ দেবেন,
“সদাপ্রভু তোমাকে কনানীয়দের দেশে নিয়ে আসার পর ও সেটি তোমাকে দেওয়ার পর, যেভাবে তিনি তোমার কাছে ও তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ নিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন,
12 ১২ তখন তুমি গর্ভজাত সমস্ত প্রথম ফল সদাপ্রভুর কাছে উপস্থিত করবে এবং তোমার পশুদেরও সকল প্রথমজাতদের মধ্যে পুরুষ সন্তান সদাপ্রভুর হবে।
তোমার প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম সন্তান সদাপ্রভুর হাতে তুলে দিতে হবে। তোমার গৃহপালিত পশুপালের সব প্রথমজাত মদ্দা সদাপ্রভুর।
13 ১৩ আর গাধার প্রত্যেক প্রথমজাতের মুক্তির জন্য তার পরিবর্তে ভেড়ার বাচ্চা দেবে; যদি মুক্ত না কর, তবে তার গলা ভাঙ্গবে; তোমার ছেলেদের মধ্যে মানুষের প্রথমজাত সবাইকে মুক্ত করতে হবে।
প্রত্যেকটি প্রথমজাত গাধাকে এক-একটি মেষশাবক দিয়ে মুক্ত কোরো, কিন্তু যদি সেটি মুক্ত না করো, তবে সেটির ঘাড় ভেঙে দিয়ো। তোমার ছেলেদের মধ্যে প্রত্যেক প্রথমজাতকে মুক্ত কোরো।
14 ১৪ আর তোমার ছেলে আগামীকালে যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, এ কি? তুমি বলবে, সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদেরকে মিশর থেকে, দাসত্বের ঘর থেকে, বের করেছেন।
“ভবিষ্যতে, তোমার সন্তানেরা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এর অর্থ কী?’ তখন তুমি তাকে বোলো, ‘শক্তিশালী হাত দিয়ে সদাপ্রভু আমাদের মিশর থেকে, ক্রীতদাসত্বের সেই দেশ থেকে বের করে এনেছেন।
15 ১৫ তখন ফরৌণ আমাদেরকে ছেড়ে দেবার বিষয়ে নিষ্ঠুর হলে সদাপ্রভু মিশর দেশের সমস্ত প্রথমজাত ফলকে, মানুষের প্রথমজাত ও পশুর প্রথমজাত ফল সব কিছুকে হত্যা করলেন, এই জন্য আমি গর্ভে জন্মানো পুরুষসন্তান গুলিকে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করি, কিন্তু আমার প্রথমজাত সব সন্তানকে মুক্ত করি।
ফরৌণ যখন একগুঁয়েমি দেখিয়ে আমাদের যেতে দিতে অস্বীকার করলেন, সদাপ্রভু তখন মিশরে মানুষ ও পশু, উভয়ের প্রথমজাতদের হত্যা করলেন। এজন্যই আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রত্যেকটি গর্ভের প্রথম পুং-সন্তানকে বলিরূপে উৎসর্গ করছি এবং আমার প্রথমজাত ছেলেদের মধ্যে এক একজনকে মুক্ত করছি।’
16 ১৬ এটি চিহ্ন হিসাবে তোমার হাতে ও স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে তোমার কপালে থাকবে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছেন।
আর এটি তোমার হাতে এই এক চিহ্নের ও তোমার কপালে এই এক প্রতীকের মতো হবে যে সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন।”
17 ১৭ আর ফরৌণ লোকদের ছেড়ে দিলে, পলেষ্টীয়দের দেশ দিয়ে সোজা পথ থাকলেও ঈশ্বর সেই পথে তাদেরকে যেতে দিলেন না, কারণ ঈশ্বর বললেন, “যুদ্ধ দেখলে হয়তো লোকেরা অনুতাপ করে মিশরে ফিরে যাবে।”
ফরৌণ যখন লোকদের যেতে দিলেন, ঈশ্বর তখন তাদের ফিলিস্তিনীদের দেশের মধ্যে দিয়ে স্থলপথে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাননি, যদিও সেটিই সংক্ষিপ্ত পথ। কারণ ঈশ্বর বললেন, “যদি তারা যুদ্ধের সম্মুখীন হয়, তবে তারা হয়তো তাদের মন পরিবর্তন করে ফেলবে এবং মিশরে ফিরে যাবে।”
18 ১৮ সুতরাং ঈশ্বর লোকেদেরকে সূফসাগরের মরুপ্রান্তের পথ দিয়ে নিয়ে গেলেন; আর ইস্রায়েল সন্তানরা যুদ্ধ সজ্জায় সজ্জিত হয়ে মিশর দেশ থেকে চলে গেল।
অতএব ঈশ্বর ঘুরপথে লোকদের মরুভূমির পথ দিয়ে লোহিত সাগরের দিকে নিয়ে গেলেন। ইস্রায়েলীরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েই মিশর থেকে বের হয়ে গেল।
19 ১৯ আর মোশি যোষেফের হাড় নিজের সঙ্গে নিলেন, কারণ তিনি ইস্রায়েল সন্তানদের কঠিন শপথ করিয়ে বলেছিলেন, “ঈশ্বর অবশ্যই তোমাদের দেখাশোনা করবেন, আর তোমরা তোমাদের সঙ্গে আমার হাড় এই জায়গা থেকে নিয়ে যাবে।”
মোশি যোষেফের অস্থিও সাথে নিলেন কারণ যোষেফ ইস্রায়েলীদের দিয়ে এক প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলে দিয়েছিলেন, “ঈশ্বর নিঃসন্দেহে তোমাদের সাহায্য করতে আসবেন, এবং তখন তোমাদের অবশ্যই নিজেদের সাথে আমার অস্থি এখান থেকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
20 ২০ পরে তারা সুক্কোৎ থেকে চলে গিয়ে মরুপ্রান্তের প্রান্তে থাকা এথমে শিবির স্থাপন করল।
সুক্কোৎ ছেড়ে আসার পর তারা মরুভূমির এক প্রান্তে অবস্থিত এথমে শিবির স্থাপন করল।
21 ২১ আর সদাপ্রভু দিনের র বেলা পথ দেখার জন্য মেঘস্তম্ভ থেকে এবং রাতে আলো দেবার জন্য অগ্নিস্তম্ভ থেকে তাঁদের আগে আগে যেতেন, যেন তারা দিন রাত চলতে পারে।
সদাপ্রভু দিনের বেলায় এক মেঘস্তম্ভের মধ্যে থেকে তাদের পথ দেখানোর জন্য এবং রাতের বেলায় এক অগ্নিস্তম্ভের মধ্যে থেকে তাদের আলো দেওয়ার জন্য তাদের অগ্রগামী হলেন, যেন দিনরাত তারা যাত্রা করতে পারে।
22 ২২ লোকেদের সামনে থেকে দিনের রবেলায় মেঘস্তম্ভ ও রাতে অগ্নিস্তম্ভ দূরে সরত না।
দিনের বেলায় মেঘস্তম্ভ বা রাতের বেলায় অগ্নিস্তম্ভ, কোনোটিই লোকদের সামনে থেকে সরে যায়নি।

< যাত্রাপুস্তক 13 >