< উপদেশক 1 >

1 এই হল উপদেশকের কথা, দায়ূদের বংশধর এবং যিনি যিরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
উপদেশকের কথা; তিনি দাউদের ছেলে, জেরুশালেমের রাজা:
2 উপদেশক এই কথা বলেছেন, “কুয়াশার বাষ্পের মত, বাতাসে মিশে থাকা জল কণার মত, সব কিছুই উবে যায়, অনেক প্রশ্ন রেখে।
উপদেশক বলেন, “অসার! অসার! অসারের অসার! সকলই অসার।”
3 সূর্য্যের নিচে মানুষ সমস্ত কাজের জন্য যে পরিশ্রম করে, তাতে তার কি লাভ হয়?
সূর্যের নিচে মানুষ যে পরিশ্রম করে সেইসব পরিশ্রমে তার কী লাভ?
4 এক প্রজন্ম যায় এবং আর এক প্রজন্ম আসে, কিন্তু পৃথিবী চিরকাল থেকে যায়।
এক পুরুষ চলে যায় এবং আর এক পুরুষ আসে, কিন্তু পৃথিবী চিরকাল থাকে।
5 সূর্য্য ওঠে ও অস্ত যায় এবং তাড়াতাড়ি সেই জায়গায় ফিরে আসে যেখান থেকে সে আবার উঠবে।
সূর্য ওঠে এবং সূর্য অস্ত যায়, আর তাড়াতাড়ি নিজের জায়গায় ফিরে যায়।
6 বাতাস দক্ষিণে বয় এবং ঘুরে উত্তরে যায়, সবদিন তার পথে ঘুরতে ঘুরতে যায় এবং আবার ফিরে আসে।
বাতাস দক্ষিণ দিকে বয় তারপর ঘুরে যায় উত্তরে; এইভাবে সেটা ঘুরতে থাকে, আর নিজের পথে ফিরে আসে।
7 সব নদী সমুদ্রে গিয়ে পড়ে, কিন্তু সমুদ্র কখনও পূর্ণ হয় না। সেই জায়গায় যেখানে নদীরা যায়, সেখানে তারা আবার ফিরে যায়।
সমস্ত নদী সাগরে গিয়ে পড়ে, তবুও সাগর কখনও পূর্ণ হয় না। যেখান থেকে সব নদী বের হয়ে আসে, আবার সেখানেই তার জল ফিরে যায়।
8 সব কিছুই ক্লান্তিকর হয়ে উঠে এবং কেউ তার ব্যাখ্যা করতে পারে না। চোখ যা দেখে তাতে সে তৃপ্ত নয়, না কান শুনে তাতে পূর্ণ হয়।
সবকিছুই ক্লান্তিকর, এত যে বলা যায় না। যথেষ্ট দেখে চোখ তৃপ্ত হয় না, কিংবা কান শুনে তৃপ্ত হয় না।
9 যা কিছু হয়েছে সেটাই হবে এবং যা কিছু করা হয়েছে তাই করা হবে। সূর্য্যের নিচে কোন কিছুই নতুন নয়।
যা হয়ে গেছে তা আবার হবে, যা করা হয়েছে তা আবার করা হবে, সূর্যের নিচে নতুন কিছুই নেই।
10 ১০ এরকম কি কিছু আছে যার বিষয়ে বলা যেতে পারে, ‘দেখ, এটা নতুন?’ যা কিছুর অস্তিত্ব আছে যা অনেক আগে থেকেই ছিল, যুগ যুগ ধরে, যা আমাদের আসার অনেক আগেই এসেছিল।
এমন কিছু কি আছে যার বিষয়ে লোকে বলবে, “দেখো! এটি নতুন”? ওটি অনেক দিন আগে থেকেই ছিল; আমাদের কালের আগেই ছিল।
11 ১১ প্রাচীনকালে কি হয়েছিল তা হয়ত কারোরই মনে নেই এবং সেই সব বিষয়ে যা ঘটেছে অনেক পরে আর যা কিছু ঘটবে ভবিষ্যতে সেগুলোর কোনটাই মনে রাখা হবে না।”
আগেকার কালের লোকদের বিষয় কেউ মনে রাখে না, যারা ভবিষ্যতে আসবে তাদের কথাও মনে রাখবে না যারা তাদের পরে আসবে।
12 ১২ আমি উপদেশক এবং আমি ইস্রায়েলের যিরুশালেমের ওপর রাজা ছিলাম।
আমি, উপদেশক, জেরুশালেমে ইস্রায়েলের উপরে রাজা ছিলাম।
13 ১৩ যা কিছু আকাশের নিচে হয়েছে তা আমি আমার মনকে ব্যবহার করেছি জ্ঞান দিয়ে শিখতে এবং সবকিছু খুঁজে বার করতে। ঐ খোঁজ হল খুব কষ্টকর কাজ যা ঈশ্বর মানুষের সন্তানদের দিয়েছেন এটার সঙ্গে ব্যস্ত থাকার জন্য।
আকাশের নিচে যা কিছু করা হয় তা জ্ঞান দ্বারা পরীক্ষা ও খোঁজ করতে মনোযোগ করলাম। ঈশ্বর মানুষের উপরে কী ভারী কষ্ট চাপিয়ে দিয়েছেন!
14 ১৪ আমি সমস্ত কাজ দেখেছি যা সূর্য্যের নিচে করা হয়েছে এবং দেখ, তাদের সমস্তই অসার এবং বাতাসকে পরিবর্তন করার চেষ্টা।
সূর্যের নিচে যা কিছু হয় তা সবই আমি দেখেছি; সে সকলই অসার, কেবল বাতাসের পিছনে দৌড়ানো।
15 ১৫ যা বাঁকা তা সোজা করা যায় না! যা নেই তা গণনা করা যায় না!
যা বাঁকা তা সোজা করা যায় না; যা অসম্পূর্ণ তা গণনা করা যায় না।
16 ১৬ আমি আমার হৃদয়ের সাথে কথা বলেছি, “দেখ, আমার আগে যারা সকলে যিরুশালেমে ছিল তাদের থেকে আমি বেশি জ্ঞান অর্জন করেছি। আমার মন মহান প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান দেখেছে।”
আমি মনে মনে বললাম, “দেখো, আমার আগে যারা জেরুশালেমে রাজত্ব করে গেছেন তাদের সকলের চেয়ে আমি প্রজ্ঞায় অনেক বৃদ্ধিলাভ করেছি; আমার অনেক প্রজ্ঞা ও বিদ্যা অভিজ্ঞতা লাভ হয়েছে।”
17 ১৭ তাই আমি আমার হৃদয় প্রজ্ঞা জানার জন্য ব্যবহার করেছি এবং একইসঙ্গে মত্ততা আর মূর্খতা জানার জন্য। আমি বুঝতে পারলাম যে এটাও বাতাসকে পরিচালনা করার মত ছিল।
তারপর আমি প্রজ্ঞা এবং উন্মত্ততা ও মূর্খতা বুঝবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম যে তাও বাতাসের পিছনে দৌড়ানো।
18 ১৮ কারণ যেখানে প্রচুর জ্ঞান থাকে সেখানে অনেক হতাশাও থাকে এবং সে যে জ্ঞান বৃদ্ধি করে, সে দুঃখও বাড়ায়।
কারণ প্রজ্ঞা বাড়লে তার সঙ্গে দুঃখও বৃদ্ধি পায়; যত বেশি বিদ্যা, তত বেশি বিষাদ।

< উপদেশক 1 >