< দ্বিতীয় বিবরণ 8 >

1 আজ আমি তোমাদেরকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সে সব পালন করবে, যেন বাঁচতে পার ও বহুগুণ হও এবং সদাপ্রভু যে দেশের বিষয়ে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে প্রবেশ কর এবং অধিকার কর।
আমি আজ তোমাদের যেসব আদেশ দিচ্ছি তার প্রত্যেকটি পালন করবার দিকে তোমরা মন দাও, যাতে তোমরা বেঁচে থাকো ও সংখ্যায় বেড়ে ওঠো আর সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেওয়ার কথা শপথ করে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেখানে ঢুকে তা অধিকার করতে পারো।
2 আর তুমি সে সব পথ মনে রাখবে, যে পথে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে এই চল্লিশ বছর মরুপ্রান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেন তোমার পরীক্ষা করার জন্যে, অর্থাৎ তুমি তাঁর আদেশ পালন করবে কি না, এই বিষয়ে তোমার মনে কি আছে তা জানবার জন্যে তোমাকে নম্র করেন।
মনে করে দেখো তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই চল্লিশটি বছর প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে কীভাবে সব দিকে তোমাদের চালিয়ে এনেছেন, তোমাদের অহংকার ভেঙে দেওয়ার জন্য এবং পরীক্ষা করে জানার জন্য যে তোমাদের মনে কী আছে, তোমরা তাঁর আদেশ পালন করবে কি না।
3 তিনি তোমাকে নম্র করলেন ও তোমাকে ক্ষুধিত করে তোমার অজানা ও তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা মান্না দিয়ে প্রতিপালন করলেন; যেন তিনি তোমাকে জানাতে পারেন যে, মানুষ শুধু রুটিতে বাঁচে না, কিন্তু সদাপ্রভুর মুখ থেকে যা যা বের হয়, তাতেই মানুষ বাঁচে।
তিনি তোমাদের নত করেছিলেন, তোমাদের ক্ষিদে দিয়ে এবং পরে তোমাদের মান্না খেতে দিয়েছিলেন, যা তোমরা বা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা জানত না, তোমাদের এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য যে মানুষ কেবলমাত্র রুটিতে বাঁচে না কিন্তু সদাপ্রভুর মুখ থেকে নির্গত প্রত্যেকটি বাক্য দ্বারাই জীবনধারণ করবে।
4 এই চল্লিশ বছর তোমার গায়ে তোমার পোশাক পুরোনো হয়নি ও সেই চল্লিশ বছরে তোমার পা ফুলে যায়নি।
এই চল্লিশ বছর তোমাদের গায়ের পোশাক নষ্ট হয়নি এবং পাও ফুলে যায়নি।
5 তোমার হৃদয়ে চিন্তা করে দেখো, মানুষ যেমন নিজের ছেলেকে শাসন করে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে সেরকম শাসন করেন।
এই কথা তোমাদের অন্তরে জেনে রেখো যে, বাবা যেমন ছেলেকে শাসন করেন ঠিক সেইভাবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের শাসন করেন।
6 আর তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ সব পালন করবে যাতে তাঁর পথে চলতে পারো ও তাঁকে ভয় করো।
তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করবে, তাঁর পথে চলবে এবং তাঁকে ভক্তি করবে।
7 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে এক উত্তম দেশে নিয়ে যাচ্ছেন; সে দেশে উপত্যকা ও পর্বত থেকে বের হয়ে আসা জলস্রোত, ঝরনা ও গভীর জলাশয় আছে;
কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের মনোরম দেশে নিয়ে যাচ্ছেন—যে দেশে রয়েছে উপত্যকা ও পাহাড় থেকে বয়ে চলা নদী, ফোয়ারা আর মাটির তলার জল;
8 সেই দেশে গম, যব, আঙ্গুর গাছ, ডুমুর গাছ ও ডালিম এবং জিতগাছ ও মধু হয়;
সেই দেশে রয়েছে প্রচুর গম ও যব, আঙুর ও ডুমুর গাছ, ডালিম, জলপাই তেল এবং মধু;
9 সেই দেশে খাওয়ার বিষয়ে খরচ করতে হবে না, তোমার কোনো জিনিসের অভাব হবে না; সেই দেশের লোহার পাথর ও সেখানকার পর্বত থেকে তুমি তামা খুঁড়বে।
সেই দেশে তোমরা প্রচুর খাবার পাবে এবং তোমাদের কোনো কিছুরই অভাব থাকবে না; সেখানকার পাথরে রয়েছে লোহা এবং সেখানকার পাহাড় থেকে তোমরা তামা খুঁড়ে তুলতে পারবে।
10 ১০ আর তুমি খেয়ে তৃপ্তি পাবে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া সেই ভালো দেশের জন্য তাঁর ধন্যবাদ করবে।
তোমরা সেখানে খেয়েদেয়ে তৃপ্ত হওয়ার পর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে চমৎকার দেশেটি দিয়েছেন তার জন্য তাঁর গৌরব করবে।
11 ১১ সাবধান, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেও না; আমি আজ তাঁর যে সব আদেশ, শাসন ও বিধি তোমাকে দিচ্ছি, সে সব পালন করতে ভুল কর না।
সাবধান, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেয়ো না, আমি আজ তাঁর যেসব আদেশ, বিধান ও অনুশাসন তোমাদের দিচ্ছি তা ভুলে যেয়ো না।
12 ১২ তুমি খেয়ে তৃপ্তি পেলে, ভালো বাড়ি তৈরী করে বাস করলে,
নয়তো, তোমরা যখন খেয়েদেয়ে তৃপ্ত হবে, তোমরা যখন সুন্দর সুন্দর বাড়ি তৈরি করে সেখানে বসবাস করবে,
13 ১৩ তোমার গরু মোষের পাল বহুগুণ হলে, তোমার সোনা ও রূপা বাড়লে এবং তোমার সব সম্পত্তি বহুগুণ হলে
আর যখন তোমাদের পালের গরু, ছাগল ও মেষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের অনেক সোনা ও রুপো হবে,
14 ১৪ তোমার হৃদয়কে গর্বিত হতে দিও না এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেও না, যিনি মিশর দেশ থেকে, দাসের বাড়ি থেকে, তোমাকে বের করে এনেছেন;
তখন তোমরা অহংকারী হয়ে উঠবে এবং যিনি মিশর দেশ থেকে, সেই দাসত্বের দেশ থেকে, তোমাদের বের করে এনেছেন তোমাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তোমরা ভুলে যাবে।
15 ১৫ যিনি সেই ভয়ানক বিশাল মরুভূমি দিয়ে, জ্বালাদায়ী বিষধর ও কাঁকড়া বিছায় ভর্তি জলশূন্য মরুভূমি দিয়ে, তোমাকে নেতৃত্ব দিলেন এবং চক্‌মকি পাথর থেকে তোমার জন্যে জল বের করলেন;
তিনি তোমাদের এক বিরাট, ভয়ংকর, শুকনো, জলহীন এবং বিষাক্ত সাপ ও কাঁকড়াবিছেতে ভরা প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি শক্ত পাথরের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য জল বের করেছেন।
16 ১৬ যিনি তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা মান্নার মাধ্যমে মরুপ্রান্তে তোমাকে প্রতিপালন করলেন; যেন তিনি তোমার ভবিষ্যতের মঙ্গলের জন্যে তোমাকে নম্র করতে ও তোমার পরীক্ষা করতে পারেন।
তিনি তোমাদের প্রান্তরে খাওয়ার জন্য মান্না দিয়েছিলেন, যার কথা তোমাদের পূর্বপুরুষেরা কখনও জানেননি, যেন তিনি তোমাদের মঙ্গলের জন্য তোমাদের নত করতে ও তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন।
17 ১৭ আর মনে মনে বল না যে, “আমারই শক্তিতে ও হাতের জোরে আমি এই সব ঐশ্বর্য্য পেয়েছে।”
তোমরা হয়তো মনে মনে বলতে পারো, “আমার নিজের শক্তিতে, নিজের হাতে কাজ করে আমি এসব ধনসম্পত্তি করেছি।”
18 ১৮ কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে মনে রাখবে, কারণ তিনি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিজের যে নিয়মের বিষয়ে শপথ করেছেন, তা আজকের মত স্থির করার জন্যে তিনিই তোমাকে ঐশ্বর্য্য লাভের ক্ষমতা দিলেন।
কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে মনে রেখো, কারণ তিনিই তোমাদের ক্ষমতা দেন এই ধনসম্পত্তি করার, আর এইভাবে তিনি তোমাদের পূর্বপুরুযদের কাছে যে নিয়মের কথা শপথ করে বলেছিলেন তা তিনি এখন পূর্ণ করতে চলেছেন।
19 ১৯ আর যদি তুমি কোনো ভাবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যাও, অন্য দেবতাদের অনুগামী হও, তাদের সেবা কর ও তাদেরকে সম্মান জানাও, তবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আজ এই সাক্ষ্য দিচ্ছি, তোমরা অবশ্যই ধ্বংস হবে।
তোমরা যদি কখনও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গিয়ে অন্য দেবতাদের অনুসরণ করো এবং তাদের সেবা ও পূজা করো, তবে আজ আমি তোমাদের বিরুদ্ধে এই কথা নিশ্চয় করে বলছি যে, তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে।
20 ২০ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কন্ঠস্বরে কান না দিলে, তোমাদের সামনে সদাপ্রভু যে জাতিদেরকে ধ্বংস করছেন, তাদেরই মতো তোমরা ধ্বংস হবে।
সদাপ্রভু তোমাদের সামনে যেসব জাতিকে ধ্বংস করেছেন তাদের মতো তোমরাও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অবাধ্য হওয়ার দরুন ধ্বংস হয়ে যাবে।

< দ্বিতীয় বিবরণ 8 >