< দানিয়েল 11 >

1 মাদীয় দারিয়াবসের প্রথম বছরে, আমি নিজেও মীখায়েলকে সাহায্য করার এবং সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এসে ছিলাম।
মাদীয় দারিয়াবসের রাজত্বের প্রথম বছরে, আমি তাকে শক্তি দেবার ও রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলাম।)
2 এখন আমি তোমার কাছে একটা সত্যি কথা প্রকাশ করব। পারস্যে আরো তিনজন রাজা উঠবে এবং চতুর্থ রাজা তাদের সবার থেকে অনেক বেশী ধনী হবে। যখন সে তার সম্পদ দিয়ে শক্তি অর্জন করবে তখন সে গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে সকলকে উত্তেজিত করবে।
“আমি, এখন, তোমাকে সত্যি বলছি: পারস্যে আরও তিনজন রাজা রাজত্ব করবে, তারপরে চতুর্থ একজন রাজা আসবে যে অন্যদের থেকে অনেক বেশি ঐশ্বর্যশালী হবে। ঐশ্বর্যের বলে ক্ষমতার শিখরে উঠে সে গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে সকলকে প্ররোচিত করবে।
3 একজন শক্তিশালী রাজা উঠবে এবং সে একটা বড় রাজ্যে রাজত্ব করবে এবং সে যা ইচ্ছা তাই করবে।
পরে এক শক্তিশালী রাজার উত্থান হবে যে মহাশক্তিতে এবং নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করবে।
4 যখন সে উঠবে, তার রাজ্য ভেঙে যাবে ও আকাশের চার বায়ুর দিকে (চার ভাগে) বিভক্ত হবে, কিন্তু তা তার বংশধরদের দেওয়া হবে না এবং সে যখন রাজত্ব করত তার আর সেই আগের মত শক্তি থাকবে না কারণ তার রাজ্যকে উপড়িয়ে ফেলা হবে এবং যারা তার বংশধর নয় সেই অন্যান্য লোকদের দেওয়া হবে।
কিন্তু উত্থানের পরে তার সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া হবে ও আকাশের চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সেই ভাগ তার বংশধরদের দেওয়া হবে না; এমনকি তার মতো প্রচণ্ড প্রতাপ তাদের থাকবে না কারণ তার সাম্রাজ্য উপড়ে ফেলা হবে ও অন্যদের দেওয়া হবে।
5 দক্ষিণের রাজা শক্তিশালী হয়ে উঠবে, কিন্তু তার একজন সেনাপতি তার থেকেও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং আরও বড় একটা রাজ্য শাসন করবে।
“এরপর দক্ষিণের রাজার শক্তিবৃদ্ধি পাবে কিন্তু তার একজন সেনাপতি তার তুলনায় বেশি শক্তিশালী হবে এবং সে মহাশক্তিতে নিজের রাজ্য শাসন করবে।
6 কয়েক বছর পরে, যখন সঠিক দিন উপস্থিত হবে, তারা বন্ধুত্ব করবে। চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য দক্ষিণ দিকের রাজার মেয়ে উত্তরের রাজার কাছে যাবে, কিন্তু সেই মেয়ে তার ক্ষমতা হারাবে এবং সে পরিত্যক্ত হবে, তাকে যারা নিয়ে এসেছিল তারা ও তার বাবা এবং সেই সমস্ত লোকেরাও হবে যারা তাকে সেই দিন সাহায্য করেছিল।
কয়েক বছর পরে, উত্তরের রাজা ও দক্ষিণের রাজার মধ্যে মিত্রতা স্থাপন হবে। দক্ষিণের রাজার কন্যা উত্তরের রাজার সঙ্গে নিয়ম স্থাপন করতে যাবে কিন্তু সেই কন্যা তার শক্তি ধরে রাখতে পারবে না এবং সেই রাজাও তার ক্ষমতায় স্থায়ী হবে না। তারপর সেই কন্যা, তার রাজকীয় সহচর, তার বাবা ও যে তাকে সমর্থন করেছিল সকলেই বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হবে।
7 কিন্তু সেই মেয়ের মূল থেকে একটা শাখা তার পরিবর্তে উঠবে। সে উত্তরের রাজার সৈন্যদলকে আক্রমণ করবে এবং তার দুর্গে ঢুকবে। সে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে এবং সে তাদের জয় করবে।
“কিন্তু যখন সেই কন্যার এক আত্মীয় দক্ষিণের রাজা হবে তখন সে উত্তরের রাজার সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করবে ও তার দুর্গে প্রবেশ করবে; তাদের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ করবে ও বিজয়ী হবে।
8 আর সে তাদের প্রতিমাগুলো, ছাঁচে ঢালা ধাতুর মূর্তিগুলোর সঙ্গে তাদের মূল্যবান রূপা ও সোনার বাসনপত্র দখল করে মিশরে নিয়ে যাবে এবং কয়েক বছর পর্যন্ত সে উত্তরের রাজাকে আক্রমণ করার থেকে দূরে থাকবে।
বিজয়ী এই রাজা তাদের দেবতাদের, তাদের ধাতুর তৈরি বিগ্রহ এবং তাদের রুপো ও সোনার মূল্যবান বস্তুসকল দখল করে মিশরে নিয়ে যাবে। কয়েক বছর সে উত্তরের রাজার বিরোধিতা করবে না।
9 তারপর উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজার রাজ্য আক্রমণ করবে, কিন্তু সে নিজের দেশে ফিরে যাবে।
তারপর উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজার রাজত্ব আক্রমণ করবে কিন্তু পরাজিত হয়ে নিজের দেশে ফিরে যাবে।
10 ১০ তার ছেলেরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে এক বিরাট সৈন্যদল জড়ো করবে, যা আসতেই থাকবে এবং বন্যার মত উথলিয়ে উঠে বাড়তে থাকবে এবং তারা ফিরে আসবে ও তার দূর্গ পর্যন্ত যুদ্ধ করবে।
তার পুত্রেরা যুদ্ধের প্রস্তুতি করবে ও এক মহা সৈন্যদল একত্রিত করবে। তারা ভীষণ বন্যার মতো অগ্রসর হবে ও যুদ্ধ করতে করতে দক্ষিণের রাজার দুর্গ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।
11 ১১ তখন দক্ষিণের রাজা ভীষণ রাগের সঙ্গে এগিয়ে যাবে এবং উত্তরের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। উত্তরের রাজা একটা বড় সৈন্যদল তৈরী করবে কিন্তু তা দক্ষিণের রাজার হাতে সমর্পণ করা হবে।
“তখন দক্ষিণের রাজা প্রচণ্ড ক্ষোভে উত্তরের রাজার বিরুদ্ধে যাত্রা করবে ও যুদ্ধ করবে। উত্তরের রাজা বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করলেও পরাজিত হবে।
12 ১২ যখন সেই সৈন্য দলকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন দক্ষিণের রাজা অহঙ্কারে পূর্ণ হবে এবং তার হাজার হাজার শত্রুদের মেরে ফেলবে। কিন্তু সে সফল হবে না।
যখন সৈন্যদের বন্দি করা হবে তখন দক্ষিণের রাজা অহংকারে মত্ত হয়ে উঠবে এবং হাজার হাজার জনকে হত্যা করবে অথচ সে বিজয়ী রইবে না।
13 ১৩ পরে উত্তরের রাজা আর একটা সৈন্যদল বানাবে যা প্রথম সৈন্যদলের থেকে অনেক বড়৷ কয়েক বছর পরে, সে এক বিরাট সৈন্যদলের সঙ্গে প্রচুর উপকরণ নিয়ে উপস্থিত হবে।
কারণ উত্তরের রাজা আগের তুলনায় আরও বিশাল এক সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করবে এবং কয়েক বছর পরে সম্পূর্ণ সুসজ্জিত এক বিশাল বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করবে।
14 ১৪ সেই দিনের অনেকে দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে উঠবে। এই দর্শন যাতে পূর্ণ হয় সেইজন্য তোমার নিজের জাতির মধ্য থেকে প্রচণ্ড হিংস্র লোকেরা নিজেদের উচ্চ করবে, কিন্তু তারা বাধা পাবে।
“সেই সময়ে অনেকে দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াবে। তোমার স্বজাতির মধ্যে যারা উগ্র তারা বিদ্রোহ করবে; এতে দর্শন সম্পূর্ণ হবে কিন্তু তারা সফল হবে না।
15 ১৫ তারপর উত্তরের রাজা আসবে এবং দূর্গের উপরে একটা ঢালু পথ তৈরী করবে ও দেয়ালে ঘেরা নগর অধিকার করবে। দক্ষিণের সৈন্যদল তার সামনে আর কোনো মতেই দাঁড়াতে পারবে না; এমন কি তাদের সবচেয়ে ভাল সৈন্যদেরও দাঁড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।
এসময় উত্তরের রাজা আসবে, আক্রমণ করে এক সুরক্ষিত নগর অবরোধ করবে এবং দখল করে নেবে। দক্ষিণের সেনাবাহিনী প্রতিরোধ করতে শক্তিহীন হয়ে পড়বে; তাদের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধারাও প্রতিরোধ করার শক্তি পাবে না।
16 ১৬ কিন্তু উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই করবে এবং কেউই তাকে বাধা দেবে না; সে নিজেকে সুন্দর দেশের মধ্যে স্থাপন করবে এবং তার হাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার ক্ষমতা থাকবে।
সেই আক্রমণকারী যেমন খুশি তেমনই করবে; কেউই তার বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। সে মনোরম দেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে ও সেটিকে ধ্বংস করার ক্ষমতা তার হাতেই থাকবে।
17 ১৭ উত্তরের রাজা তার সমস্ত রাজ্যের শক্তির সঙ্গে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নেবে এবং সে দক্ষিণের রাজার সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করবে। সে দক্ষিণের রাজ্য ধ্বংস করার জন্য দক্ষিণের রাজাকে বিয়ে করার জন্য তার একটা মেয়ে দেবে, কিন্তু তার পরিকল্পনা সফল হবে না অথবা এতে তার কোন লাভও হবে না।
সে তার রাজ্যের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে আসবার পরিকল্পনা করবে ও দক্ষিণের রাজার সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করবে। এবং সেই রাজা দক্ষিণের রাজার সঙ্গে তার এক মেয়ের বিয়ে দেবে এবং তার সাম্রাজ্য উৎখাত করতে চাইবে। কিন্তু তার এই অভিসন্ধি সফল হবে না।
18 ১৮ তারপর উত্তরের রাজা সমুদ্রের উপকূলগুলোর দিকে মনোযোগ দেবে এবং তাদের অনেকগুলোই দখল করে নেবে, কিন্তু একজন সেনাপতি তার সেই অহঙ্কারকে শেষ করে দেবে এবং তার টিটকারি তার উপরেই ফিরিয়ে দেবে।
এরপর সেই রাজা উপকূলের অঞ্চলের দিকে দৃষ্টি দেবে ও তাদের অনেক অংশ নিজের হস্তগত করবে, কিন্তু এক সেনানায়ক তার ঔদ্ধত্য শেষ করবে এবং লজ্জায় তাকে পিছু ফিরতে বাধ্য করবে।
19 ১৯ তারপরে সে তার নিজের দেশের দুর্গগুলোর প্রতি মনোযোগ দেবে, কিন্তু সে বাধা পাবে ও তার পতন হবে; তাকে আর পাওয়া যাবে না।
তারপর সে নিজের দেশের দুর্গে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু হোঁচট খাবে এবং তার পতন হবে, তাকে পরবর্তীকালে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
20 ২০ তারপরে তার জায়গায় আর একজন উঠবে যে তার রাজ্যের প্রতাপ ফিরিয়ে আনার জন্য কর দেওয়ার জন্য বাধ্য করবে। কিন্তু কিছু দিনের র মধ্যেই সে ধ্বংস হয়ে যাবে; কিন্তু কোন রাগে বা যুদ্ধের মাধ্যমে হবে না।
“তার উত্তরাধিকারী রাজ্যের প্রতিপত্তি বজায় রাখতে এক কর আদায়কারীকে পাঠাবে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে সেও ধ্বংস হবে, যদিও তার মৃত্যু ক্রোধে বা যুদ্ধে ঘটবে না।
21 ২১ তার জায়গায় একজন তুচ্ছ ব্যক্তি উঠবে যাকে লোকেরা রাজা হওয়ার সম্মান দেবে না; সে নিরবে আসবে এবং ছলনা করে রাজ্য দখল করবে।
“তার স্থানে এক তুচ্ছ ব্যক্তি রাজা হবে, যার রাজকীয় সম্মান পাবার কোনো অধিকার নেই। যখন লোকেরা সুরক্ষিত বোধ করবে তখন সে আক্রমণ করবে এবং ছলনায় রাজপদ অধিকার করবে।
22 ২২ তার সামনে একটা বড় সৈন্যদল বন্যার মত বয়ে চলে যাবে এবং সেই সৈন্যদল ও দলপতি যা নিয়মের মাধ্যমে স্থাপিত হয়েছিল তা ধ্বংস হবে।
তখন অদম্য এক সেনাবাহিনী তার সামনে বহিষ্কৃত হবে; সেই সেনাবাহিনী ও নিয়মের অধিপতি উভয়েই ধ্বংস হবে।
23 ২৩ সেই দিনের তার সঙ্গে এক সন্ধি স্থাপন করা হবে; সে ছলনার সঙ্গে কাজ করবে; আর অল্প কয়েকজন লোকের সাহায্যেই সে শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
তার সাথে নিয়ম স্থাপন করে সে ছলনা করবে ও অল্প কয়েকজনকে নিয়ে সে ক্ষমতায় আসবে।
24 ২৪ সে শান্তিপূর্ণ দিনের রাজ্যর মধ্যে ধনী প্রদেশে উপস্থিত হবে এবং তার পূর্বপুরুষেরা ও সেই পূর্বপুরুষদের পূর্বপুরুষেরা যা করে নি সে তাই করবে, সে তার অনুসরণকারীদের মধ্যে কেড়ে নেওয়া ও লুট করা জিনিসপত্র এবং সম্পত্তি ভাগ করে দেবে। সে দূর্গগুলোর সর্বনাশ করার জন্য ষড়যন্ত্র করবে, কিন্তু তা কিছু দিনের র জন্য।
যখন ঐশ্বর্যশালী অঞ্চলগুলি সুরক্ষিত বোধ করবে, সে তখন সেইসব অঞ্চল আক্রমণ করবে এবং এমন সবকিছু হস্তগত করবে যা তার পিতৃপুরুষ বা পূর্বপুরুষেরাও পারেনি। যুদ্ধে লুন্ঠিত দ্রব্য ও লুট করা ধনসম্পদ তার অনুচরদের মধ্যে সে ভাগ করে দেবে। সে অনেক সামরিক দুর্গ দখল করার পরিকল্পনা করবে কিন্তু সীমিত সময়ের জন্যই তা স্থায়ী হবে।
25 ২৫ সে একটা বড় সৈন্যদল নিয়ে দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে তার নিজের শক্তি ও সাহসকে উত্তেজিত করে তুলবে। দক্ষিণের রাজা একটা শক্তিশালী সৈন্যদল নিয়ে যুদ্ধ করবে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে সমস্ত ষড়যন্ত্রের জন্য সে দাঁড়াতে পারবে না।
“এক বিশাল বাহিনী নিয়ে সে দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে নিজের শক্তি ও সাহস বৃদ্ধি করবে। দক্ষিণের রাজা বিশাল ও শক্তিশালী এক সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করবে কিন্তু ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তার বিরুদ্ধে টিকতে পারবে না।
26 ২৬ এমনকি যারা রাজার টেবিল থেকে খাবারের ভাগ পায় তারাও তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। তার সৈন্যদল বন্যার মত বয়ে যাবে এবং তাদের মধ্যে অনেকে মারা যাবে।
তার রাজকীয় আদালতের সদস্যরা তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে; তার সেনাবাহিনী পরাজিত হবে এবং অনেকে যুদ্ধে প্রাণ হারাবে।
27 ২৭ এই দুই রাজা, যাদের অন্তর মন্দতায় একে অন্যের বিরুদ্ধে থাকবে, তারা একই টেবিলে বসে একে অন্যের কাছে মিথ্যা কথা বলবে, কিন্তু তা সফল হবে না। কারণ যে দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেই দিনের সব কিছুর শেষ উপস্থিত হবে।
দুই রাজা, হিংসায় পূর্ণ হয়ে, এক টেবিলে বসে আহার করবে অথচ পরস্পরকে মিথ্যা কথা বলবে, কিন্তু তাদের অভিসন্ধি সফল হবে না, কারণ নির্ধারিত সময়েই বিনাশ ঘটবে।
28 ২৮ তারপরে উত্তরের রাজা অনেক সম্পদ নিয়ে তার নিজের দেশে ফিরে যাবে, কিন্তু তার অন্তর পবিত্র নিয়মের বিরুদ্ধে থাকবে। সে যা ইচ্ছা তাই করবে এবং তার নিজের দেশে ফিরে যাবে।
উত্তরের রাজা প্রচুর ধনসম্পদ নিয়ে স্বদেশে ফিরে যাবে। কিন্তু তার হৃদয় পবিত্র নিয়মের বিপক্ষে যাবে এবং তার বিরুদ্ধে কাজ করবে; পরে সে দেশে ফিরে যাবে।
29 ২৯ নির্দিষ্ট দিনের সে আবার ফিরে যাবে এবং দক্ষিণ দেশ আক্রমণ করবে, কিন্তু যেমন আগে ছিল এই দিন এটা আর আগের মত হবে না।
“নির্ধারিত সময়ে আবার সে দক্ষিণ দেশ আক্রমণ করবে কিন্তু আগের তুলনায় ফলাফল এবার ভিন্ন হবে।
30 ৩০ কারণ কিত্তীমের জাহাজগুলো তার বিরুদ্ধে আসবে এবং সে নিরুত্সাহ হবে ও ফিরে যাবে। সে পবিত্র নিয়মের বিরুদ্ধে রেগে যাবে এবং যারা সেই পবিত্র নিয়ম ত্যাগ করে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবে।
পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের যুদ্ধজাহাজগুলি তার অভিযান প্রতিরোধ করবে এবং সে সাহস হারাবে। তখন সে ফিরে যাবে এবং পবিত্র নিয়মের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করবে। সে ফিরে গিয়ে যারা পবিত্র নিয়ম পরিত্যাগ করেছে তাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবে।
31 ৩১ তার সেনাবাহিনীরা উঠবে এবং পবিত্রস্থানকে ও দুর্গগুলোকে অশুচি করবে; তারা প্রতিদিনের র নৈবেদ্য বন্ধ করে দেবে এবং তারা ধ্বংসকারী ঘৃণার বস্তু স্থাপন করবে।
“তার সশস্ত্র সেনাবাহিনী অগ্রসর হয়ে সুরক্ষিত পবিত্রস্থান অশুচি করবে এবং নিত্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ বন্ধ করে দেবে। তারপর তারা ধ্বংস-আনয়নকারী সেই ঘৃণ্য বস্তুকে স্থাপন করবে।
32 ৩২ সে তাদের তোষামোদ করবে যারা সেই নিয়ম অমান্য করেছে এবং তাদের বিপথে নিয়ে যাবে, কিন্তু যে লোকেরা তাদের ঈশ্বরকে জানে তারা শক্তিশালী হবে ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যারা সেই পবিত্র নিয়ম লঙ্ঘন করেছে তাদের সে তোষামোদ করবে ও নিজের দলে করবে কিন্তু যেসব মানুষ তাদের ঈশ্বরকে জানে তারা দৃঢ়ভাবে তার প্রতিরোধ করবে।
33 ৩৩ সেই লোকদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারা অনেককে শিক্ষা দেবে। কিন্তু কিছু দিন ধরে তারা তরোয়াল ও আগুনের শিখায় মারা যাবে, তাদের বন্দীদের মত নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাদের সম্পত্তি লুট হবে।
“এসময় যারা জ্ঞানী তারা অনেককে সুপরামর্শ দেবে, কিন্তু পরিণামে তাদের তরোয়াল দিয়ে বধ করা হবে, অথবা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে, অথবা বন্দি করা হবে, অথবা তাদের সর্বস্ব লুট করে নেওয়া হবে।
34 ৩৪ যখন তারা বাধা পাবে, তখন তারা অল্পই সাহায্য পাবে এবং অনেকে কপটতায় তাদের সঙ্গে যোগ দেবে।
যখন তাদের পতন হবে, তারা স্বল্প সাহায্য পাবে, কিন্তু অনেকে যারা নিষ্ঠাহীন তাদের সঙ্গে যোগদান করবে।
35 ৩৫ আর জ্ঞানীদের মধ্যে কারও কারও পতন হবে যেন তারা শেষ দিন না আসা পর্যন্ত খাঁটি, শুদ্ধ ও নিখুঁত হয়; কারণ সেই নির্দিষ্ট দিন আসতে চলেছে।
জ্ঞানী লোকদের মধ্যে কেউ কেউ কষ্ট পাবে; এভাবে তারা পরীক্ষাসিদ্ধ, পরিষ্কৃত ও শুচিশুদ্ধ হয়ে উঠবে যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে কারণ নির্ধারিত সময়েই তা উপস্থিত হবে।
36 ৩৬ সেই রাজা তার যা ইচ্ছা তাই করবে। সমস্ত দেবতাদের উপরে সে নিজেকে উঁচু করবে ও বড় করে দেখাবে এবং যিনি সমস্ত দেবতাদের ঈশ্বর তাঁর বিরুদ্ধেও আশ্চর্য্য কথা বলবে। ক্রোধ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সে সফল হবে৷ কারণ যা স্থির করা হয়েছে তা করা হবে।
“রাজা নিজের ইচ্ছামতো কাজ করবে। সব দেবতাদের ঊর্ধ্বে সে নিজেকে উন্নত ও মহিমান্বিত করবে এবং দেবতাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এমন কথা বলবে যা আগে কখনও শোনা যায়নি। ক্রোধের সময় সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সে সফল হবে, যা নির্ধারিত হয়েছে তা অবশ্যই ঘটবে।
37 ৩৭ সে তার পূর্বপুরুষদের দেবতাদের কিম্বা যে দেবতার জন্য স্ত্রীলোকেরা বাসনা করে বা যে কোন দেবতাকেই মানবে না। সে অহঙ্কারের সঙ্গে কাজ করবে এবং নিজেকে তাদের সবার থেকে বড় করে দেখাবে।
তার পূর্বপুরুষদের আরাধ্য দেবতাদের ও নারীদের কাম্য দেবতাকে সে মানবে না, এমনকি সে কোনো দেবতাকেই মানবে না, কিন্তু সব দেবতাদের উপরে নিজেকে মহিমান্বিত করবে।
38 ৩৮ তাদের পরিবর্তে সে দূর্গের দেবতাকে সম্মান করবে। যে দেবতাকে তার পূর্বপুরুষেরা জানে না তাকে সে সোনা, রূপা, মূল্যবান পাথর ও দামী উপহার দিয়ে সম্মান করবে।
তাদের পরিবর্তে সে এক দুর্গ দেবতার সম্মান করবে, যে দেবতা তার পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত ছিল; কিন্তু সেই দেবতাকে সোনা, রুপো, মণিমাণিক্য ও উৎকৃষ্ট উপহার দিয়ে সম্মান করবে।
39 ৩৯ সে বিজাতীয় দেবতার সাহায্যে সে সবচেয়ে শক্তিশালী দূর্গগুলো আক্রমণ করবে৷ সে তাদেরকে সম্মান দেবে যারা তাকে স্বীকার করবে। সে তাদের অনেক লোকের উপরে শাসনকর্ত্তা করবে এবং সে পুরষ্কার হিসাবে জমি ভাগ করে দেবে।
অইহুদি দেবতার সাহায্যে সে শক্তিশালী দুর্গসকল আক্রমণ করবে এবং যারা তাকে স্বীকার করবে তাদের অনেক সম্মানিত করবে। অনেক লোকেদের উপরে সে তাদের শাসক রূপে প্রতিষ্ঠা করবে ও মূল্যের বিনিময়ে তাদের মধ্যে জমি ভাগ করে দেবে।
40 ৪০ শেষ দিন দক্ষিণের রাজা তাকে আক্রমণ করবে৷ উত্তরের রাজা রথ, ঘোড়সওয়ার এবং অনেক জাহাজ নিয়ে তার দিকে ঝড়ের মত যাবে। সে অনেক দেশ আক্রমণ করবে এবং তাদের মধ্য দিয়ে বন্যার মত প্রবাহিত হয়ে তাদের নিশ্চিহ্ন করবে।
“শেষ সময়ে দক্ষিণের রাজা তাকে যুদ্ধে রত করবে এবং উত্তরের রাজা মহাবিক্রমে তার রথ, ঘোড়া ও নৌবাহিনী নিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। সে অনেক দেশ আক্রমণ করবে ও জলস্রোতের মতো তাদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করবে।
41 ৪১ সে সেই সুন্দর দেশে উপস্থিত হবে এবং অনেকে বাধা পাবে, কিন্তু তাদের মধ্য ইদোম ও মোয়াব এবং অম্মোনের সবচেয়ে ভাল লোকেরা তার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
সে মনোরম দেশও আক্রমণ করবে। অনেক দেশ তার হাতে পরাস্ত হবে কিন্তু ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোনের রাজারা তার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
42 ৪২ অনেক দেশের উপর সে তার ক্ষমতাকে বাড়াবে; মিশর দেশও রেহাই পাবে না।
এইভাবে বিভিন্ন দেশের উপর সে ক্ষমতা বিস্তার করবে; মিশরও রক্ষা পাবে না।
43 ৪৩ সমস্ত সোনা ও রূপা ও মিশরের সমস্ত সম্পত্তির উপরে তার অধিকার থাকবে এবং লুবীয়েরা ও কূশীয়েরা তার সেবা করবে।
মিশরে সুরক্ষিত সোনা, রুপো ও বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী তার হস্তগত হবে; এমনকি লিবিয়া ও কূশকেও সে পদানত করবে।
44 ৪৪ কিন্তু পূর্ব ও উত্তর দিক থেকে যে সংবাদ আসবে তাতে সে ভয় পাবে এবং সে ভীষণ রাগে ধ্বংস করার ও অনেককে মেরে ফেলার জন্য সে যাবে।
কিন্তু পূর্ব ও উত্তর থেকে আগত সংবাদ তাকে আতঙ্কিত করে তুলবে এবং মহাক্রোধে সে অনেককে ধ্বংস ও বিনাশ করবে।
45 ৪৫ সে সমুদ্র ও সুন্দর পবিত্র পাহাড়ের মাঝখানে তার রাজকীয় তাঁবু স্থাপন করবে। সে তার শেষ দিনের উপস্থিত হবে এবং তাকে সাহায্য করার জন্য সেখানে কেউ থাকবে না।
সমুদ্র ও পবিত্র পর্বতের মাঝখানে সে রাজকীয় তাঁবু স্থাপন করবে। অথচ তার শেষকাল উপস্থিত হবে এবং কেউ তাকে সাহায্য করবে না।

< দানিয়েল 11 >