< প্রেরিত 1 >

1 প্রিয় থিয়ফিল, প্রথম বইটা আমি সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে লিখেছি, যা যীশু করতে এবং শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন, সেদিন পর্যন্ত,
হে থিয়ফিল, আমার আগের বইতে আমি সেইসব বিষয় লিখেছি, যেগুলি যীশু সম্পন্ন করতে ও শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন,
2 যেদিন তিনি নিজের মনোনীত প্রেরিতদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আদেশ দিয়ে স্বর্গে গেলেন।
সেদিন পর্যন্ত, যখন তিনি তাঁর মনোনীত প্রেরিতশিষ্যদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশদান করার পর ঊর্ধ্বে নীত হন।
3 নিজের দুঃখ সহ্য করার পর তিনি অনেক প্রমাণ দিয়ে তাঁদের কাছে নিজেকে জীবিত দেখালেন, চল্লিশ দিন ধরে তাঁদের কাছে দেখা দিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের ব্যাপারে বিভিন্ন কথা বললেন।
তাঁর কষ্টভোগের পর, তিনি এসব মানুষের কাছে নিজেকে দেখা দিলেন এবং বহু বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেন যে, তিনি জীবিত আছেন। চল্লিশ দিন অবধি তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্য সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন।
4 আর তিনি তাঁদের সঙ্গে মিলে এই নির্দেশ দিলেন, তোমরা যিরুশালেম থেকে বাইরে যেও না, কিন্তু পিতার প্রতিজ্ঞা করা যে দানের কথা আমার কাছে শুনেছ, তাঁর অপেক্ষা কর।
একবার, যখন তিনি তাদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছিলেন তখন তিনি তাঁদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা জেরুশালেম ছেড়ে যেয়ো না, কিন্তু আমার পিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া যে দানের কথা আমাকে বলতে শুনেছ, তাঁর অপেক্ষায় থেকো।
5 কারণ যোহন জলে বাপ্তিষ্ম দিতেন, কিন্তু তোমরা কিছুদিন পর পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।
কারণ যোহন জলে বাপ্তিষ্ম দিতেন ঠিকই, কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম লাভ করবে।”
6 সুতরাং তাঁরা সকলে একসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রভু, এই কি সেই দিন, যখন আপনি ইস্রায়েলের হাতে রাজ্য প্রতিস্থাপন করবেন?
পরে তাঁরা যখন একত্র মিলিত হলেন, তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইস্রায়েলীদের কাছে রাজ্য ফিরিয়ে দিতে চলেছেন?”
7 তিনি তাদেরকে বললেন, “যেসব দিন বা কাল পিতা নিজের অধিকারে রেখেছেন তা তোমাদের জানার বিষয় নয়।
তিনি তাঁদের বললেন, “পিতা তাঁর নিজস্ব অধিকারে যে সময় ও দিন নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, সেসব তোমাদের জানার কথা নয়।
8 কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তি পাবে; এবং তোমরা যিরূশালেম, সমস্ত যিহূদীয়া, শমরিয়া দেশে এবং পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে।”
কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তি লাভ করবে, আর তোমরা জেরুশালেমে ও সমস্ত যিহূদিয়ায় ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে।”
9 যখন প্রভু যীশু এসব কথা বলছেন, তিনি তাঁদের চোখের সামনে স্বর্গে উঠে যেতে লাগলেন, একটি মেঘ তাঁদের দৃষ্টিপথ থেকে তাঁকে ঢেকে দিল।
একথা বলার পর তাঁকে তাঁদের চোখের সামনেই স্বর্গে তুলে নেওয়া হল ও একখণ্ড মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল।
10 ১০ তিনি যাচ্ছেন আর তাঁরা আকাশের দিকে এক নজরে চেয়ে আছেন, এমন দিন, সাদা পোশাক পরা দুজন মানুষ তাদের কাছে দাঁড়ালেন;
তিনি যখন যাচ্ছিলেন, তাঁরা অপলক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়েছিলেন, তখন হঠাৎই সাদা পোশাক পরে দুজন পুরুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন।
11 ১১ আর তাঁরা বললেন, “প্রিয় গালিলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? এই যে যীশু তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে গেলেন, তাঁকে যেমন স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক তেমনি তাঁকে ফিরে আসতে দেখবে।”
তাঁরা বললেন, “হে গালীলীয়রা, তোমরা এখানে কেন আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ? এই একই যীশু, যাঁকে তোমাদের মধ্য থেকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হল, তাঁকে যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক সেভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।”
12 ১২ তখন তাঁরা জৈতুন পর্বত থেকে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন। সেই পর্বত যিরুশালেমের কাছে, এক বিশ্রামবারের পথ।
এরপর তাঁরা “জলপাই পর্বত” নামক পাহাড় থেকে জেরুশালেমে ফিরে এলেন। নগর থেকে তা ছিল এক বিশ্রামদিনের হাঁটাপথ।
13 ১৩ শহরে গিয়ে যেখানে তাঁরা ছিলেন, সেই উপরের ঘরে গেলেন পিতর, যোহন, যাকোব ও আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও থোমা, বর্থলময় ও মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব ও ঈশ্বরভক্ত শিমোন, জীলট এবং যাকোবের (ভাই) যিহূদা,
তাঁরা যখন নগরে পৌঁছালেন, তাঁরা উপরতলার সেই ঘরে গেলেন, যেখানে তাঁরা থাকতেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন: পিতর, যোহন, যাকোব ও আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও থোমা, বর্থলময় ও মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব এবং জিলট দলভুক্ত শিমোন ও যাকোবের ছেলে যিহূদা।
14 ১৪ তাঁরা সকলেই মহিলাদের এবং যীশুর মা মরিয়ম ও যীশুর ভাইদের সঙ্গে এক হৃদয়ে প্রার্থনা করতে থাকলেন।
তাঁরা সকলে এবং কয়েকজন মহিলা, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইরা একযোগে প্রার্থনায় ক্রমাগত লেগে রইলেন।
15 ১৫ সেদিন এক দিন প্রায় একশো কুড়ি জন এক জায়গায় একত্রে ছিলেন, সেখানে পিতর ভাইদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন
সেই সময় একদিন পিতর বিশ্বাসীদের (প্রায় একশো কুড়ি জনের একটি দল) মধ্যে উঠে দাঁড়ালেন।
16 ১৬ প্রিয় ভাইয়েরা, যারা যীশুকে ধরেছিল, তাদের পথ দেখিয়েছিলেন যে যিহূদা, তার ব্যাপারে পবিত্র আত্মা দায়ূদের মুখ থেকে আগেই যা বলেছিলেন, সেই শাস্ত্রীয় বাক্য সফল হওয়া দরকার ছিল।
তিনি বললেন, “সকল ভাই ও বোন, যীশুকে যারা গ্রেপ্তার করেছিল, তাদের পথপ্রদর্শক যে যিহূদা, তার সম্পর্কে অনেক আগে দাউদের মাধ্যমে পবিত্র আত্মা যে কথা বলেছিলেন, সেই শাস্ত্রবাণী পূর্ণ হওয়া আবশ্যক ছিল।
17 ১৭ কারণ সেই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে ছিল এবং এই পরিচর্য্যা কাজের লাভের ভাগিদার হয়েছিল।
সে আমাদেরই একজন ছিল এবং আমাদের এই পরিচর্যায় অংশগ্রহণ করেছিল।”
18 ১৮ সে মন্দ কাজের রোজগার দিয়ে একটি জমি কিনেছিল। তারপর সে মাথা নিচু অবস্থায় মাটিতে পড়ল, তার পেট ফেটে যাওয়াতে নাড়ি ভুঁড়ী সব বের হয়ে পড়ল;
তার দুষ্টতার জন্য সে যে পুরস্কার পেয়েছিল, তা দিয়ে যিহূদা একটি জমি কিনেছিল। সেখানেই সে নিচের দিকে মাথা করে পড়ে গেল, তার শরীর ফেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ও তার সমস্ত অন্ত্র বেরিয়ে পড়ল।
19 ১৯ আর যিরুশালেমের সকল লোকে সেটা জানতে পেরেছিল, এজন্য তাদের ভাষায় ঐ জমি হকলদামা অর্থাৎ “রক্তাক্ত ভূমি” নামে পরিচিত।
জেরুশালেমের সকলে একথা শুনতে পেল, তাই তারা তাদের ভাষায় সেই জমির নাম দিল হকলদামা, যার অর্থ, রক্তক্ষেত্র।
20 ২০ কারণ গীতসংহিতায় লেখা আছে, “তার ভূমি খালি হোক, তাতে বাস করে এমন কেউ না থাক এবং তার পালকের পদ অন্য কাউকে দেওয়া হোক।”
পিতর বললেন, “বস্তুত, গীতসংহিতায় লেখা আছে, “‘তার বাসস্থান শূন্য হোক; সেখানে বসবাস করার জন্য যেন কেউ না থাকে,’ আবার, “‘অন্য কেউ যেন তার নেতৃত্বের পদে নিযুক্ত হয়।’
21 ২১ সুতরাং, সেদিন পর্যন্ত, যতদিন যীশু আমাদের মধ্যে চলাফেরা করতেন, ততদিন সবদিন যাঁরা আমাদের সঙ্গ দিয়েছে,
অতএব, প্রভু যীশু যতদিন আমাদের সঙ্গে বাস করেছিলেন এবং সেই সময়ে আমাদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদেরই একজনকে মনোনীত করা আবশ্যক,
22 ২২ যোহনের বাপ্তিষ্ম থেকে শুরু করে যেদিন প্রভু যীশুকে আমাদের কাছ থেকে স্বর্গে উঠিয়ে নেওয়া হয়, এঁদের একজন আমাদের সঙ্গে তাঁর পুনরুত্থানের সাক্ষী হন, এটা অবশ্যই দরকার।
অর্থাৎ, যোহনের বাপ্তিষ্ম দেওয়ার সময় থেকে শুরু করে আমাদের মধ্য থেকে যীশুর স্বর্গে নীত হওয়ার সময় পর্যন্ত। কারণ এদেরই মধ্যে একজন ব্যক্তিকে আমাদের সঙ্গে তাঁর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে।”
23 ২৩ তখন তাঁরা এই দুজনকে দাঁড় করালেন, যোষেফ যাঁকে বার্শবা বলে, যাঁর উপাধি যুষ্ঠ,
তখন তাঁরা দুজনের নাম প্রস্তাব করলেন: বার্শব্বা নামে আখ্যাত যোষেফ (ইনি যুষ্ট নামেও পরিচিত ছিলেন), ও মত্তথিয়।
24 ২৪ এবং মত্তথিয়; আর তাঁরা প্রার্থনা করলেন, হে প্রভু, তুমি সবার হৃদয় জান, সুতরাং এই দুজনের মধ্যে যাকে মনোনীত করেছ তাকে দেখিয়ে দাও।
তারপর তাঁরা প্রার্থনা করলেন, “প্রভু, তুমি সকলের অন্তর জানো। আমাদের দেখিয়ে দাও, এই দুজনের মধ্যে তুমি কাকে মনোনীত করেছ,
25 ২৫ যিহূদা নিজের জায়গাতে যাওয়ার জন্য এই যে সেবার ও প্রেরিতের পদ ছেড়ে গিয়েছে, তার পরিবর্তে পদ গ্রহণের জন্য দেখিয়ে দাও।
যে এই প্রৈরিতিক পরিচর্যার ভার গ্রহণ করবে, যা যিহূদা ত্যাগ করে তার যেখানে যাওয়া উচিত ছিল, সেখানে গিয়েছে।”
26 ২৬ পরে তারা দুজনের জন্য গুলিবাঁট করলেন, আর মত্তথিয়ের নামে গুলি পড়ল, তাতে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে যোগ দিলেন।
পরে তাঁরা গুটিকাপাত করলেন ও মত্তথিয়ের নামে গুটি উঠল। এইভাবে তিনি সেই এগারোজন প্রেরিতশিষ্যের সঙ্গে যুক্ত হলেন।

< প্রেরিত 1 >