< শমূয়েলের দ্বিতীয় বই 2 >

1 তারপরে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার কোনো একটি নগরে উঠে যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও৷” পরে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কোথায় যাব?” তিনি বললেন, “হিব্রোণে৷”
কালক্রমে, দাউদ সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নিয়েছিলেন। “আমি কি যিহূদার নগরগুলির মধ্যে কোনো একটিতে যাব?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। সদাপ্রভু বললেন, “চলে যাও।” দাউদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায় যাব?” “হিব্রোণে যাও,” সদাপ্রভু উত্তর দিলেন।
2 অতএব দায়ূদ আর তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়ম ও কর্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগল, সেই জায়গায় গেলেন৷
অতএব দাউদ তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়ম ও কর্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগলকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন।
3 আর দায়ূদ প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে নিজের সঙ্গীদেরকেও নিয়ে গেলেন, তাতে তারা হিব্রোণের নগরগুলিতে বসবাস করল৷
দাউদ সাথে করে পরিবার-পরিজনসহ তাঁর সঙ্গী লোকজনকেও নিয়ে গেলেন, এবং তারা হিব্রোণে ও তার পাশাপাশি গ্রামগুলিতে বসবাস করতে শুরু করল।
4 পরে যিহূদার লোকেরা এসে সেই জায়গায় দায়ূদকে যিহূদার বংশের উপরে রাজপদে অভিষেক করল৷ পরে “যাবেশ-গিলিয়দের (দেশের) লোকেরা শৌলের কবর দিয়েছে,” এই খবর লোকেরা দায়ূদকে দিল৷
পরে যিহূদার লোকজন হিব্রোণে পৌঁছেছিল, ও সেখানে তারা দাউদকে যিহূদা কুলের রাজারূপে অভিষিক্ত করল। দাউদকে যখন বলা হল যে যাবেশ-গিলিয়দের লোকজন শৌলকে কবর দিয়েছে,
5 তখন দায়ূদ যাবেশ-গিলিয়দের লোকেদের কাছে দূতদেরকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর আশীর্বাদের পাত্র, কারণ তোমরা নিজের প্রভুর প্রতি, শৌলের প্রতি, এই দয়া করেছ, তাঁর কবর দিয়েছ৷
তখন তিনি একথা বলার জন্য তাদের কাছে কয়েকজন দূত পাঠালেন, “তোমরা তোমাদের প্রভু শৌলকে কবর দিয়ে তাঁর প্রতি যে দয়া দেখিয়েছ, সেজন্য সদাপ্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন।
6 অতএব সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দয়া ও সত্য ব্যবহার করুন এবং তোমরা এই কাজ করেছ, এই জন্য আমিও তোমাদের প্রতি ভালো ব্যবহার করব৷
সদাপ্রভু এখন যেন তোমাদের প্রতি দয়া ও বিশ্বস্ততা দেখান, এবং আমিও তোমাদের প্রতি একইরকম অনুগ্রহ দেখাব, কারণ তোমরা ভালো কাজ করেছ।
7 অতএব এখন তোমাদের হাত সবল হোক ও তোমরা সাহসী হও, কারণ তোমাদের প্রভু শৌল মারা গেছেন, আর যিহূদার বংশ তাদের উপরে আমাকে রাজপদে অভিষেক করেছে৷”
তবে এখন, সবল ও সাহসী হও, কারণ তোমাদের মনিব শৌল মারা গিয়েছেন, এবং যিহূদার লোকজন তাদের উপর আমাকে রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে।”
8 ইতিমধ্যে নেরের ছেলে অবনের শৌলের সেনাপতি, শৌলের ছেলে ঈশবোশৎকে ওপারে মহনয়িমে নিয়ে গেলেন;
ইতিমধ্যে, শৌলের সৈন্যদলের সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনের শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতকে মহনয়িমে এনে তুলেছিলেন।
9 আর গিলিয়দের, অশূরীয়দের, যিষ্রিয়েলের, ইফ্রয়িমের ও বিন্যামীনের এবং সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজা করলেন৷
তিনি তাঁকে গিলিয়দ, আশের ও যিষ্রিয়েল, তথা ইফ্রয়িম, বিন্যামীন ও সম্পূর্ণ ইস্রায়েলের উপর রাজা করে দিলেন।
10 ১০ শৌলের ছেলে ঈশবোশৎ চল্লিশ বছর বয়সে ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং দুই বছর রাজত্ব করেন৷ কিন্তু যিহূদা বংশ দায়ূদকে অনুসরণ করত৷
চল্লিশ বছর বয়সে শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশত ইস্রায়েলের উপর রাজা হলেন, এবং তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন। যিহূদা কুল অবশ্য দাউদের প্রতি অনুগত থেকে গেল।
11 ১১ আর দায়ূদ সাত বছর ছয় মাস হিব্রোণে যিহূদা বংশের উপরে রাজত্ব করলেন৷
যিহূদা কুলে দাউদ সাত বছর ছয় মাস হিব্রোণে রাজা হয়ে ছিলেন।
12 ১২ একদিনের নেরের ছেলে অবনের এবং শৌলের ছেলে ঈশবোশতের দাসরা মহনয়িম থেকে গিবিয়োনে গেলেন৷
নেরের ছেলে অবনের শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতের লোকদের সঙ্গে নিয়ে মহনয়িম ছেড়ে গিবিয়োনে গেলেন।
13 ১৩ তখন সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও দায়ূদের দাসরা বেরিয়ে এলেন, আর গিবিয়োনের পুকুরের কাছে তাঁরা পরস্পর মুখোমুখি হল, একদল পুকুরের এপারে, অন্য দল পুকুরের ওপারে বসল৷
সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও দাউদের লোকরাও বের হয়ে এলেন এবং গিবিয়োনের ডোবার কাছে তাদের দেখা পেয়েছিলেন। একটি দল ডোবার এপারে ও অন্য দলটি ডোবার ওপারে গিয়ে বসেছিল।
14 ১৪ পরে অবনের যোয়াবকে বললেন, “অনুরোধ করি, যুবকরা উঠে আমাদের সামনে যুদ্ধের প্রতিযোগিতা করুক৷” যোয়াব বললেন, “ওরা উঠুক৷”
পরে অবনের যোয়াবকে বললেন, “আমাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন যুবক উঠে গিয়ে আমাদের চোখের সামনেই হাতাহাতি যুদ্ধ করুক।” “ঠিক আছে, তারা এরকমই করুক,” যোয়াব বললেন।
15 ১৫ অতএব লোকেরা সংখ্যা অনুসারে উঠে এগিয়ে গেল; শৌলের ছেলে ঈশবোশতের ও বিন্যামীনের পক্ষে বারো জন এবং দায়ূদের দাসেদের মধ্যে থেকে বার জন৷
তারা উঠে দাঁড়িয়েছিল ও তাদের সংখ্যা গোনা হল—বিন্যামীন ও শৌলের ছেলে ঈশ্‌বোশতের পক্ষে বারোজন, এবং দাউদের পক্ষে বারোজন।
16 ১৬ আর তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রতিযোদ্ধার মাথা ধরে পাঁজরে তরোয়াল বিদ্ধ করার ফলে সকলে এক জায়গায় মৃত্যু বরণ করল৷ এই জন্য সেই জায়গার নাম হিলকত্হত্সূরীম [তলোয়ার-ভূমি] হল; তা গিবিয়োনে আছে৷
পরে প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাথা জাপটে ধরে তাদের দেহপার্শ্বে ছোরা ঢুকিয়ে দিয়েছিল, ও তারা একসাথেই মারা গেল। তাই গিবিয়োনের সেই স্থানটি হিলকৎ-হৎসূরীম নামে আখ্যাত হল।
17 ১৭ আর সেই দিন ভীষণ যুদ্ধ হল এবং অবনের ও ইস্রায়েলের লোকেরা দায়ূদের দাসেদের সামনে হেরে গেল৷
সেদিন যুদ্ধ ভয়াবহ আকার ধারণ করল, এবং অবনের ও ইস্রায়েলীরা দাউদের লোকজনের হাতে পরাজিত হল।
18 ১৮ সেই জায়গায় যোয়াব, অবীশয় ও অসাহেল নামে সরূয়ার তিন ছেলে ছিলেন, সেই অসাহেল বনের হরিণের মত তাঁর পা দ্রতগামী ছিল৷
সরূয়ার তিন ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন: যোয়াব, অবীশয় ও অসাহেল। অসাহেল আবার এক গজলা হরিণের মতো ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন ছিলেন।
19 ১৯ আর অসাহেল অবনেরের পিছু পিছু দৌড়াতে লাগলেন, যেতে যেতে অবনেরের পিছু নেওয়া থেকে ডানদিকে কিংবা বাঁদিকে ফিরলেন না৷
তিনি অবনেরের পিছু ধাওয়া করলেন, আর অবনেরের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে তিনি ডাইনে বা বাঁয়ে, কোনোদিকেই ঘুরে তাকাননি।
20 ২০ পরে অবনের পিছন দিকে ফিরে বললেন, “তুমি কি অসাহেল?” তিনি উত্তর দিলেন, “আমি সেই৷”
অবনের তাঁর দিকে পিছু ফিরে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ কি তুমি, অসাহেল?” “হ্যাঁ আমিই,” তিনি উত্তর দিলেন।
21 ২১ অবনের তাঁকে বললেন, “তুমি ডানদিকে কিংবা বাঁদিকে ফিরে এই যুবকদের কোন এক জনকে ধরে তার মত সাজ৷” কিন্তু অসাহেল তাঁর পিছু নেওয়া থেকে ফিরতে রাজি হলেন না৷
তখন অবনের তাঁকে বললেন, “ডাইনে বা বাঁয়ে ফিরে যুবকদের মধ্যে কাউকে ধরে তার অস্ত্রশস্ত্র খুলে নাও।” কিন্তু অসাহেল তাঁর পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করেননি।
22 ২২ পরে অবনের অসাহেলকে পুনরায় বললেন, “আমার পিছু নেওয়া বন্ধ কর; আমি কেন তোমাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেব? এমন করলে তোমার ভাই যোয়াবের সামনে কি করে মুখ দেখাব?”
আরেকবার অবনের তাঁকে সাবধান করে দিলেন, “আর আমার পিছু ধাওয়া কোরো না! কেন মিছিমিছি আমি তোমাকে মারব? আর আমি তোমার দাদা যোয়াবের কাছে তখন কীভাবেই বা মুখ দেখাব?”
23 ২৩ তবু তিনি ফিরতে রাজি হলেন না; অতএব অবনের বর্শার গোড়া তাঁর পেটে এমন গেঁথে দিলেন যে, বর্শা তাঁর পিঠ দিয়ে বেরল; তাতে তিনি সেখানে পড়ে গেলেন, সেই জায়গাতেই মরলেন এবং যত লোক অসাহেলের পতন ও মৃত্যুর স্থানে উপস্থিত হল, সবাই দাঁড়িয়ে থাকল৷
কিন্তু অসাহেল পশ্চাদ্ধাবন বন্ধ করতে রাজি হননি; তাই অবনের তাঁর বর্শার বাঁটটি অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিলেন, ও বর্শাটি তাঁর পিঠ ভেদ করে বেরিয়ে এসেছিল। অকুস্থলেই তিনি পড়ে গেলেন। যেখানে অসাহেল পড়ে মারা গেলেন, প্রত্যেকেই সেখানে এসে দাঁড়িয়ে পড়েছিল।
24 ২৪ কিন্তু যোয়াব ও অবীশয় অবনেরের পিছনে পিছনে তাড়া করে গেলেন; সূর্য্য অস্ত যাবার দিন গিবিয়োনের মরুপ্রান্তের কাছে রাস্তার কাছে গীহের সামনের অম্মা গিরির কাছে উপস্থিত হলেন৷
কিন্তু যোয়াব ও অবীশয় অবনেরের পিছু ধাওয়া করে গেলেন, এবং সূর্য যখন অস্ত যাচ্ছিল, তখন তারা গিবিয়োনের মরুএলাকার পথে গীহের কাছাকাছি অম্মা পাহাড়ে পৌঁছেছিলেন।
25 ২৫ আর বিন্যামীন সন্তানরা অবনেরের সঙ্গে একসাথে জড়ো হয়ে এই গিরির চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকল৷
তখন বিন্যামীনের লোকজন অবনেরের পিছনে জমায়েত হল। তারা দল বেঁধে পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল।
26 ২৬ তখন অবনের যোয়াবকে ডেকে বললেন, “তরোয়াল কি চিরকাল গ্রাস করবে? অবশেষে তিক্ততা হবে, এটা কি জান না? অতএব তুমি নিজের ভাইদের পিছনে তাড়া না করে ফিরে আসতে নিজের লোকদেরকে কতদিন আদেশ করবে না?”
অবনের যোয়াবকে ডেকে বললেন, “তরোয়াল কি চিরকাল গ্রাসই করতে থাকবে? তুমি কি বুঝতে পারছ না যে তিক্ততা দিয়েই এর সমাপ্তি হবে? আর কখন তুমি তোমার লোকজনকে তাদের সমগোত্রীয় ইস্রায়েলীদের পিছু ধাওয়া করতে মানা করবে?”
27 ২৭ যোয়াব বললেন, “জীবন্ত ঈশ্বরের দিব্যি, তুমি যদি কথা না বলতে, তবে লোকে সকালেই চলে যেত, নিজের নিজের ভাইয়ের পিছনে পিছনে যেত না৷”
যোয়াব উত্তর দিলেন, “জীবন্ত ঈশ্বরের দিব্যি, তুমি যদি কথা না বলতে, তবে লোকেরা সকাল পর্যন্ত তাদের পিছু ধাওয়া করেই যেত।”
28 ২৮ পরে যোয়াব তূরী বাজালেন; তাতে সমস্ত লোক থেমে গেল, ইস্রায়েলের পিছনে আর তাড়া করল না, আর যুদ্ধ করল না৷
অতএব যোয়াব শিঙা বাজিয়েছিলেন, এবং সৈন্যসামন্ত সবাই থেমে গেল; তারা আর ইস্রায়েলের পিছু ধাওয়া করেনি, বা তারা আর যুদ্ধও করেনি।
29 ২৯ পরে অবনের ও তাঁর লোকেরা অরাবা উপত্যকা দিয়ে সেই সমস্ত রাত পায়ে হেঁটে যর্দ্দন পার হলেন এবং পুরো বিথোণ দিয়ে মহনয়িমে উপস্থিত হলেন৷
সারারাত ধরে অবনের ও তাঁর লোকজন অরাবার মধ্যে দিয়ে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে গেলেন। তারা জর্ডন নদী পার হয়ে সকালের দিকে মহনয়িমে এসে উপস্থিত হলেন।
30 ৩০ আর যোয়াব অবনেরের পিছনে তাড়া না করে ফিরে এলেন; পরে সমস্ত লোককে একসাথে করলে দায়ূদের দাসদের মধ্যে ঊনিশ জনের ও অসাহেলের অভাব হল৷
পরে যোয়াব অবনেরের পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়ে সমগ্র সৈন্যদল একত্রিত করলেন। অসাহেলের পাশাপাশি দেখা গেল দাউদের উনিশজন লোকও কম পড়ছিল।
31 ৩১ কিন্তু দায়ূদের দাসদের আঘাতে বিন্যামীনের ও অবনেরের লোকদের তিনশো ষাট জন মারা গেল৷
কিন্তু দাউদের লোকজন অবনেরের সঙ্গে থাকা 360 জন বিন্যামীনীয় লোককে হত্যা করল।
32 ৩২ পরে লোকেরা অসাহেলকে তুলে নিয়ে বৈৎলেহমে, তাঁর বাবার কবরে কবর দিল৷ পরে যোয়াব ও তাঁর লোকেরা সমস্ত রাত হেঁটে সকালে হিব্রোণে পৌঁছালেন৷
তারা অসাহেলকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বেথলেহেমে তাঁর বাবার কবরে কবর দিয়েছিল। পরে যোয়াব ও তাঁর লোকজন সারারাত ধরে কুচকাওয়াজ করে ভোরবেলায় হিব্রোণে পৌঁছে গেলেন।

< শমূয়েলের দ্বিতীয় বই 2 >