< দ্বিতীয় রাজাবলি 16 >

1 রমলিয়ের ছেলে পেকহের রাজত্বের সতেরো বছরের দিন যিহূদার রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজত্ব করতে শুরু করেন।
রমলিয়ের ছেলে পেকহের রাজত্বকালের সতেরোতম বছরে যিহূদার রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
2 আহস কুড়ি বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি ষোল বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। আহস তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেমন তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন, তিনি তেমন করতেন না।
আহস কুড়ি বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি ষোলো বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতো তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ভালো, তা করেননি।
3 তার পরিবর্তে তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের মতই চলতেন; এমন কি, সদাপ্রভু যে সব জাতিকে ইস্রায়েলের মানুষদের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের মত তিনিও তাঁর নিজের ছেলেকে আগুনে ফেলে দিয়ে হোম উৎসর্গ করলেন।
তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন এবং এমনকি সদাপ্রভু ইস্রায়েলীদের সামনে থেকে যেসব জাতিকে দূর করে দিলেন, তাদের ঘৃণ্য লোকাচারে লিপ্ত হয়ে তাঁর ছেলেকেও তিনি আগুনে উৎসর্গ করে দিলেন।
4 তিনি উঁচু জায়গাগুলিতে, পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটি সবুজ গাছের নীচে বলিদান উৎসর্গ করতেন ও ধূপ জ্বালাতেন।
প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলিতে, পাহাড়ের চূড়ায় ও ডালপালা বিস্তার করা প্রত্যেকটি গাছের তলায় তিনি বলি উৎসর্গ করলেন ও ধূপ জ্বালিয়েছিলেন।
5 অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহ যিরূশালেমে এসে আহস সুদ্ধ শহরটা ঘেরাও করলেন, কিন্তু তাঁরা আহসকে জয় করতে পারলেন না।
পরে অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে আহসকে অবরুদ্ধ করলেন, কিন্তু তারা তাঁকে বশে আনতে পারেননি।
6 সেই দিন অরামের রাজা রৎসীন এলৎ শহর আবার অরামের অধীনে নিয়ে আসলেন এবং এলৎশহর থেকে যিহূদার লোকদের তাড়িয়ে দিলেন। তারপর অরামীয়েরা এলতে গেলো, যেখানে আজও তারা বাস করছে।
সেই সময় অরামের রাজা রৎসীন যিহূদার লোকজনকে তাড়িয়ে দিয়ে এলৎ নগরটি আরেকবার অরামের অধিকারে নিয়ে এলেন। ইদোমীয়রা পরে এলতে গিয়ে আজও পর্যন্ত সেখানেই বসবাস করে চলেছে।
7 পরে আহস অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের কাছে এই কথা বলতে লোক পাঠিয়ে দিলেন, “আমি আপনার দাস এবং আপনার ছেলে। আপনি আসুন এবং অরামের রাজার হাত থেকে এবং ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন, যারা আমাকে আক্রমণ করেছে।”
আহস এই কথা বলার জন্য আসিরিয়ার রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের কাছে দূত পাঠালেন, “আমি আপনার দাস ও কেনা গোলাম। আপনি এখানে এসে, যারা আমাকে আক্রমণ করছে, সেই অরামের রাজা ও ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করুন।”
8 আহস সদাপ্রভুর গৃহে গিয়েছিলেন ও রাজবাড়ীর ভান্ডার থেকে সোনা ও রূপা নিলেন এবং উপহার হিসাবে অশূরের রাজার কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
আহস সদাপ্রভুর মন্দিরে ও রাজপ্রাসাদের কোষাগারে যত রুপো ও সোনা ছিল, সব নিয়ে উপহার রূপে সেগুলি আসিরিয়ার রাজার কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
9 তখন অশূরের রাজা তাঁর কথা শুনলেন এবং দম্মেশকের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তা দখল করলেন এবং তিনি সেখানকার লোকদের বন্দী করে কীরে নিয়ে গেলেন এবং অরামের রাজা রৎসীনকেও মেরে ফেললেন।
আসিরিয়ার রাজা দামাস্কাস আক্রমণ ও দখল করে এই অনুরোধে সাড়া দিলেন। সেখানকার অধিবাসীদের তিনি বন্দি করে কীরে পাঠালেন এবং রৎসীনকে হত্যা করলেন।
10 ১০ তখন রাজা আহস দম্মেশকে অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি সেখানকার বেদীটা দেখে তাঁর আকার, শিল্পকার্য্য, নকশা ও সেটা তৈরী করবার পুরো পদ্ধতি ঊরিয় যাজকের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
পরে রাজা আহস আসিরিয়ার রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের সাথে দেখা করার জন্য দামাস্কাসে গেলেন। দামাস্কাসে তিনি একটি যজ্ঞবেদি দেখেছিলেন এবং যাজক ঊরিয়ের কাছে তিনি সেই যজ্ঞবেদির একটি নকশা এবং সেটি কীভাবে বানাতে হবে, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা পাঠিয়ে দিলেন।
11 ১১ দম্মেশক থেকে রাজা আহসের পাঠানো সব পরিকল্পনা মতই যাজক ঊরিয় একটা বেদী তৈরী করলেন এবং রাজা আহস দম্মেশক থেকে ফিরে আসবার আগেই তা শেষ করলেন।
তাই দামাস্কাস থেকে রাজা আহসের পাঠানো সব পরিকল্পনা অনুসারেই যাজক ঊরিয় একটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন এবং রাজা আহস ফিরে আসার আগেই সেটি সম্পূর্ণ করে ফেলেছিলেন।
12 ১২ দম্মেশক থেকে ফিরে এসে রাজা সেই বেদীটা দেখলেন এবং সেই বেদির কাছে গিয়ে তার উপর বলি উৎসর্গ করলেন।
রাজামশাই দামাস্কাস থেকে ফিরে এসে সেই যজ্ঞবেদিটি দেখে সেটির দিকে এগিয়ে গেলেন ও সেটির উপরে চড়ে বলি উৎসর্গ করলেন।
13 ১৩ তিনি সেখানে তাঁর হোমবলি উৎসর্গ, শস্য উৎসর্গ ও পানীয় উৎসর্গ করলেন এবং তাঁর মঙ্গলার্থক উৎসর্গের রক্তও ছিটিয়ে দিলেন।
তিনি তাঁর হোমবলি ও দানা শস্যের বলি উৎসর্গ করলেন, পেয়-নৈবেদ্য ঢেলে দিলেন, এবং তাঁর মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের রক্ত বেদিতে ছিটিয়ে দিলেন।
14 ১৪ তিনি সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদীটা সদাপ্রভুর ঘর ও তাঁর নতুন বেদির মাঝখান থেকে সরিয়ে এনে নিজের নতুন বেদির উত্তর ধারে রাখলেন।
সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদিটি তিনি মন্দিরের সামনে থেকে সরিয়ে এনে—নতুন বেদি ও সদাপ্রভুর মন্দিরের মাঝখান থেকে—সেটি নতুন বেদির উত্তর দিকে রেখে দিলেন।
15 ১৫ তখন পরে রাজা আহস যাজক ঊরিয়কে এই সব আদেশ দিলেন, “ঐ বড় বেদীটার উপর সকালবেলার হোমবলি ও সন্ধ্যায় শস্য উৎসর্গ এবং তার উপর রাজার হোমবলি ও শস্য উৎসর্গ এবং দেশের সব লোকদের হোমবলি ও তাদের শস্য উৎসর্গ আর পানীয় উৎসর্গ অনুষ্ঠান করবেন। সমস্ত হোমবলি ও অন্যান্য পশু উৎসর্গের রক্ত নিজেই সেই বেদির উপর ছিটিয়ে দেবেন। কিন্তু ঈশ্বরের সাহায্য পাওয়ার জন্য আমি ঐ ব্রোঞ্জের বেদীটা ব্যবহার করব।”
রাজা আহস পরে যাজক ঊরিয়কে এই আদেশগুলি দিলেন: “এই নতুন বড়ো বেদিটির উপর সকালে হোমবলি ও সন্ধ্যায় দানা শস্যের বলি, রাজার হোমবলি ও তাঁর দানা শস্যের বলি, এবং দেশের সব প্রজার হোমবলি, ও তাদের দানা শস্যের বলি ও তাদের পেয়-নৈবেদ্য উৎসর্গ কোরো। সব হোমবলি ও পশুবলির রক্ত এই বেদিতে ছিটিয়ে দিয়ো। কিন্তু ব্রোঞ্জের বেদিটি আমি নির্দেশনা চাওয়ার জন্য ব্যবহার করব।”
16 ১৬ যাজক ঊরিয় রাজা আহস যেমন আদেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেই মতই সব করলেন।
রাজা আহসের আদেশানুসারেই যাজক ঊরিয় সবকিছু করলেন।
17 ১৭ রাজা আহস গামলা বসাবার ব্রোঞ্জের আসনগুলোর পাশের সব পাত খুলে ফেললেন এবং সেখান থেকে জলাধারগুলো খুলে ফেললেন। ব্রোঞ্জের গরুগুলোর উপর যে জলাধারটি বসানো ছিল সেটা তিনি খুলে নিয়ে একটা পাথর দিয়ে বাঁধানো এমন জায়গায় বসালেন।
রাজা আহস ধারের খুপিগুলি কেটে বাদ দিলেন এবং সরানোর উপযোগী তাকগুলি থেকে গামলাগুলি সরিয়ে দিলেন। ব্রোঞ্জের তৈরি বলদমূর্তিগুলির উপর বসানো সমুদ্রপাত্রটি সেখান থেকে সরিয়ে তিনি পাথরের একটি বেদিতে বসিয়ে দিলেন।
18 ১৮ সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারের উদ্দেশ্যে যে চাঁদোয়া তৈরী করা হয়েছিল অশূরের রাজার ভয়ে আহস সেটা খুলে অন্য জায়গায় রাখলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহের বাইরের দিকে রাজার ঢুকবার জন্য যে বিশেষ পথ তৈরী করা হয়েছিল তাও সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখলেন।
আসিরিয়ার রাজার প্রতি সম্মান দেখিয়ে, মন্দিরে সাব্বাথবারে (বিশ্রামবারে) ব্যবহারযোগ্য যে শামিয়ানাটি তৈরি করা হল, তিনি সেটি খুলে দিলেন এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের বাইরের দিকে রাজার যে প্রবেশদ্বারটি ছিল, সেটিও সরিয়ে দিলেন।
19 ১৯ আহসের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
আহসের রাজত্বের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই?
20 ২০ পরে আহস নিজের পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন এবং দায়ূদ শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজা হলেন।
আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাদের সাথেই তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।

< দ্বিতীয় রাজাবলি 16 >