< দ্বিতীয় রাজাবলি 14 >

1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন। 2 তাঁর বয়স যখন পঁচিশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি যিরূশালেমে ঊনত্রিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দিন; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ছিলেন। 3 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক অমৎসিয় তাই করতেন, তবে তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত করতেন না। তিনি তাঁর বাবা যোয়াশ যেমন করতেন তিনি সেই মতই সমস্ত কাজ করতেন। 4 কিন্তু উঁচু স্থানগুলো তিনি ধ্বংস করলেন না; লোকেরা তখনও সেই উঁচুস্থানে বলি দিত এবং ধূপ জ্বালাত। 5 পরে রাজ্য তাঁর হাতে এসে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, যে দাসেরা রাজাকে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে মেরে ফেলেছিল, তিনি তাদেরকে হত্যা করলেন। 6 কিন্তু মোশির ব্যবস্থার বইতে যা লেখা আছে সেইমত তিনি তাদের সন্তানদের হত্যা করলেন না। সেই ব্যবস্থার বইতে সদাপ্রভুর এই আদেশ লেখা ছিল, “সন্তানদের জন্য বাবাকে কিম্বা বাবার কারণে সন্তানদের হত্যা করা চলবে না, তবে প্রত্যেককেই তার নিজের নিজের পাপের জন্য মরতে হবে।” 7 তিনি লবণ উপত্যকায় দশ হাজার ইদোমীয় লোককে হত্যা করলেন এবং যুদ্ধ করে সেলা দখল করে তার নাম যক্তেল রাখলেন; আজও সেই নাম আছে। 8 তখন অমৎসিয় দূত পাঠিয়ে যেহূর নাতি, অর্থাৎ যিহোয়াহসের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশকে বলে পাঠালেন, “আসুন, যুদ্ধ ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের মুখোমুখি হই।” 9 কিন্তু যিহোয়াশ ইস্রায়েলের রাজা দূতের মাধ্যমে উত্তরে দিয়ে যিহূদার রাজা অমৎসিয়র কাছে লোক বা দূত পাঠিয়ে বললেন, “লেবাননের এক শিয়ালকাঁটা লেবাননেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাল, ‘আমার ছেলের সঙ্গে আপনার মেয়ের বিয়ে দিন।’ কিন্তু লেবাননের একটা বন্য পশু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল। 10 ১০ তুমি ইদোমকে আক্রমণ করেছ এবং তোমার হৃদয় সত্যিই গর্বিত হয়েছে। নিজের জয়ের জন্য গর্ব কর, কিন্তু নিজের গৃহে থাকো। কারণ তুমি কেন নিজের বিপদের কারণ হবে? আর তার সঙ্গে ডেকে আনবে নিজের ও যিহূদার ধ্বংস?” 11 ১১ কিন্তু অমৎসিয় সেই কথা শুনলেন না। তাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ আক্রমণ করলেন। তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় যিহূদার বৈৎ-শেমশে একে অপরের মুখোমুখি হলেন। 12 ১২ ইস্রায়েলের কাছে যিহূদা হেরে গেল এবং প্রত্যেকে নিজের বাড়িতে পালিয়ে গেল। 13 ১৩ ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ বৈৎ-শেমশে অহসিয়ের নাতি, অর্থাৎ যোয়াশের ছেলে যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে ধরলেন। তারপর যিহোয়াশ যিরূশালেমে গিয়ে সেখানকার দেয়ালের ইফ্রয়িমের ফটক থেকে কোণের ফটক পর্যন্ত প্রায় চারশো হাত ভেঙে দিলেন। 14 ১৪ তিনি সোনা ও রূপা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র যা সদাপ্রভুর গৃহে পাওয়া গিয়েছিল এবং রাজবাড়ীর ধনভান্ডারে যে সব মূল্যবান জিনিস ছিল তা সবই নিয়ে গেলেন। তিনি জামিন হিসাবে কতগুলো লোককে নিয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন। 15 ১৫ যিহোয়াশের করা অবশিষ্ট অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং যিহূদার রাজা কেমন করে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন সেই সব ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই? 16 ১৬ পরে যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে যারবিয়াম তাঁর পদে রাজা হলেন। 17 ১৭ ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের মৃত্যুর পর যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন। 18 ১৮ অমৎসিয়ের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই? 19 ১৯ যিরূশালেমে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করলো এবং তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা তার পিছনে পিছনে লাখীশে লোক পাঠালো এবং সেখানে তাঁকে হত্যা করলো। 20 ২০ তাঁর দেহটা তারা ঘোড়ার পিঠে করে যিরূশালেমে ফিরিয়ে আনল এবং তাঁকে দায়ূদ-শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দিল। 21 ২১ তারপর যিহূদার সমস্ত লোক অসরিয়কে যার বয়স ষোলো বছর ছিল তাঁকে নিয়ে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের জায়গায় রাজা করল। 22 ২২ অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় যাবার পর পরে অসরিয় এলৎ শহরটি পুনরায় তৈরী করলেন এবং তা যিহূদার অধীনে করলেন। 23 ২৩ যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়ের রাজত্বের পনেরো বছরের দিন ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়াম শমরিয়াতে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন। 24 ২৪ সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম যে সব পাপ ইস্রায়েলকে দিয়ে করিয়েছিলেন তিনি সেই সব পাপ করতে ছাড়লেন না। 25 ২৫ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর দাস গাৎ-হেফরের অমিত্তয়ের ছেলে যোনা ভাববাদীর মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই কথা অনুযায়ী যারবিয়াম হমাৎ এলাকা থেকে অরাবার সমুদ্র পর্যন্ত আগে ইস্রায়েলের রাজ্যের যে সীমা ছিল তা পুনরায় নিজের হাতে ফিরিয়ে এনেছিলেন। 26 ২৬ কারণ, সদাপ্রভু দেখেছিলেন যে ইস্রায়েলের স্বাধীন মানুষ কিম্বা দাস সবাই ভীষণভাবে কষ্ট পাচ্ছে; কেউ তাদের সাহায্য করবার মত ছিল না। 27 ২৭ ফলে সদাপ্রভু বললেন যে তিনি আকাশের নীচ থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে ফেলবেন না। সেইজন্য তিনি যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়ামের মধ্য দিয়ে তাদের উদ্ধার করলেন। 28 ২৮ যারবিয়ামের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্টের কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং এক দিন যিহূদার অধিকারে থাকা দম্মেশক ও হমাৎ কিভাবে তিনি ইস্রায়েলের জন্য আবার অধিকার করে নিয়েছিলেন সেই কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই? 29 ২৯ পরে যারবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলে, ইস্রায়েলের রাজাদের কাছে চলে গেলেন এবং তাঁর ছেলে সখরিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।

< দ্বিতীয় রাজাবলি 14 >