< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 6 >

1 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু বলেছেন যে, তিনি ঘন অন্ধকারে বাস করবেন৷ 2 কিন্তু আমি তোমার এক বসবাসের গৃহ নির্মাণ করলাম; এটা চিরকালের জন্য তোমার বসবাসের জায়গায়৷” 3 পরে রাজা মুখ ফিরিয়ে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজকে আশীর্বাদ করলেন; আর সমস্ত ইস্রায়েল সমাজ দাঁড়িয়ে থাকলো৷ 4 আর তিনি বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর; তিনি আমার বাবা দায়ূদের কাছে নিজের মুখে এই কথা বলেছেন এবং নিজের হাতে করে এটা সফল করেছেন, যথা, 5 যে দিন আমার প্রজাদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছি, সেই দিন থেকে আমি নিজের নাম স্থাপনের জন্য গৃহ তৈরীর জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে কোনো নগর মনোনীত করিনি এবং নিজের প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্ত্তা হবার জন্য কোনো মানুষকে মনোনীত করিনি৷ 6 কিন্তু নিজের নাম স্থাপনের জন্য আমি যিরূশালেম মনোনীত করেছি ও আমার প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্ত্তা হবার জন্য দায়ূদকে মনোনীত করেছি৷ 7 আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এক গৃহ তৈরী করতে আমার বাবা দায়ূদের ইচ্ছা ছিল৷ 8 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দায়ূদকে বললেন, ‘আমার নামের উদ্দেশ্যে একটি গৃহ তৈরী করতে তোমার ইচ্ছা হয়েছে; তোমার এইরকম ইচ্ছা হওয়া অবশ্যই ভাল৷ 9 তবুও তুমি সেই গৃহ তৈরী করবে না, কিন্তু তোমার কটি থেকে উত্পন্ন ছেলেই আমার নামের উদ্দেশ্যে গৃহ তৈরী করবে৷’ 10 ১০ সদাপ্রভু এই যে কথা বলেছেন, তা সফল করলেন; সদাপ্রভু প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমি আমার বাবা দায়ূদের পদে উত্পন্ন ও ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এই গৃহ তৈরী করেছি৷ 11 ১১ আর সদাপ্রভু ইস্রায়েল সন্তানদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলেন, তার আধার সিন্দুক এর মধ্যে রাখলাম৷” 12 ১২ পরে তিনি সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের উপস্থিতিতে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সামনে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি করলেন; 13 ১৩ কারণ শলোমন পাঁচ হাত লম্বা, পাঁচ হাত প্রস্থ ও তিন হাত উঁচু পিতলের একটি মঞ্চ তৈরী করে উঠানের মাঝখানে রেখেছিলেন; তিনি তার উপর দাঁড়ালেন, পরে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের সামনে হাঁটু পেতে স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করলেন; 14 ১৪ আর তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে কি পৃথিবীতে তোমার মত ঈশ্বর নেই৷ যারা সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে তোমার সঙ্গে চলে, তোমার সেই দাসেদের পক্ষে তুমি নিয়ম ও দয়া পালন কর; 15 ১৫ তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা পালন করেছ, যা নিজের মুখে বলেছিলে, তা নিজের হাতে পূরণ করেছ, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে৷ 16 ১৬ এখন, হে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে, তা রক্ষা কর৷ তুমি বলেছিলে, আমার দৃষ্টিতে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসতে তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না, কেবলমাত্র যদি আমার সামনে তুমি যেমন চলছো, তোমার সন্তানেরা আমার সামনে সেইভাবে চলার জন্য নিজেদের পথে সাবধান থাকে৷ 17 ১৭ এখন, হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার দাস দায়ূদের কাছে যে কথা তুমি বলেছিলে, তা সত্য হোক৷ 18 ১৮ কিন্তু ঈশ্বর কি সত্যিই পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে বাস করবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ তোমাকে ধরে রাখতে পারে না, তবে আমার তৈরী এই গৃহ কি পারবে? 19 ১৯ সুতরাং হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমি তোমার দাসের প্রার্থনাতে ও বিনতিতে মনোযোগ দাও, তোমার দাস তোমার কাছে যেভাবে কাঁদছে ও প্রার্থনা করছে, তা শোন৷ 20 ২০ যে জায়গার বিষয়ে তুমি বলেছ যে, তোমার নাম সেই জায়গার রাখবে, সেই জায়গায় অর্থাৎ এই গৃহের ওপর দিন রাত তোমার দৃষ্টি থাকুক এবং এই জায়গায় সামনে তোমার দাস যে প্রার্থনা করে, তা শোনো৷ 21 ২১ আর তোমার দাস ও তোমার লোক ইস্রায়েল যখন এই জায়গায় সামনে প্রার্থনা করবে, তখন তাদের সব অনুরোধে কান দিও; তোমার বাসজায়গা থেকে, স্বর্গ থেকে, তাহা শুনো এবং শুনে ক্ষমা কোরো৷ 22 ২২ কেউ নিজের প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে পাপ করলে যদি তাকে শপথ করার জন্য কোনো শপথ সুনিশ্চিত হয়, আর সে এসে এই গৃহে তোমার যজ্ঞবেদির সামনে সেই শপথ করে, 23 ২৩ তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং সমাধান করে তোমার দাসদের বিচার কোরো; দোষীকে দোষী করে তার কাজের ফল তার মাথায় দিও এবং ধার্ম্মিককে ধার্মিক করে তার ধার্ম্মিকতা অনুযায়ী ফল দিও৷ 24 ২৪ তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার জন্য শত্রুর সামনে আহত হওয়ার পর যদি পুনরায় ফেরে এবং এই গৃহে তোমার নাম স্তব করে তোমার কাছে প্রার্থনা ও অনুরোধ করে; 25 ২৫ তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো, আর তাদেরকে ও তার পূর্বপুরুষদেরকে এই যে দেশ দিয়েছ, এখানে পুনরায় তাদেরকে এনো৷ 26 ২৬ তোমার বিরুদ্ধে তাদের পাপের জন্য যদি আকাশ থেমে যায়, বৃষ্টি না হয়, আর লোকেরা যদি এই জায়গার সামনে প্রার্থনা করে, তোমার নামের স্তব করে এবং তোমার থেকে দুঃখ পাওয়ার পর নিজেদের পাপ থেকে ফেরে, 27 ২৭ তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার দাসের ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো ও তাদের যাতায়াতের সত্পথ তাদেরকে দেখিও এবং তুমি তোমার প্রজাদেরকে যে দেশের অধিকার দিয়েছ, তোমার সেই দেশে বৃষ্টি পাঠিও৷ 28 ২৮ দেশের মধ্যে যদি দূর্ভিক্ষ হয়, যদি মহামারী হয়, যদি শস্যের শেষ কি ধ্বংস হয় অথবা পঙ্গপাল কিম্বা কীট হয়, যদি তাদের শত্রুরা তাদের দেশে নগরে নগরে তাদেরকে আটকে রাখে, যদি কোনো মহামারী বা রোগ দেখা হয়; 29 ২৯ তাহলে কোনো ব্যক্তি বা তোমার সমস্ত প্রজা ইস্রায়েল, যারা প্রত্যেকে নিজেদের মনের যন্ত্রণা ও শোক জানে এবং এই গৃহের দিকে যদি অঞ্জলি দিয়ে কোনো প্রার্থনা কি অনুরোধ করে; 30 ৩০ তবে তুমি তোমার বসবাসের জায়গা স্বর্গ থেকে সেটা শুনো এবং ক্ষমা কোরো এবং প্রত্যেক জনকে নিজেদের সমস্ত পথ অনুযায়ী প্রতিফল দিও; তুমি তো তাদের হৃদয় জানো; কারণ একমাত্র তুমিই মানুষের হৃদয় সম্বন্ধে জানো; 31 ৩১ যেন আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে তুমি যে দেশ দিয়েছ, এই দেশে তারা যত দিন জীবিত থাকে, তোমার পথে চলার জন্য তোমাকে ভয় করে৷ 32 ৩২ বিশেষত তোমার প্রজা ইস্রায়েল গোষ্ঠীর নয়, এমন কোনো বিদেশী যখন তোমার মহানাম, তোমার শক্তিশালী হাত ও তোমার প্রসারিত বাহুর উদ্দেশ্যে দূর দেশ থেকে আসবে, যখন তারা এসে এই গৃহের সামনে প্রার্থনা করবে, 33 ৩৩ তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বসবাসের জায়গা থেকে তা শুনো এবং সেই বিদেশী যে তোমার কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে, সেই অনুসারে কোরো; যেন তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মত পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার নাম জানে ও তোমাকে ভয় করে এবং তারা যেন জানতে পায় যে, আমার তৈরী করা এই গৃহের উপরে তোমারই নাম মহিমান্বিত৷ 34 ৩৪ তুমি তোমার প্রজাদেরকে কোন পথে পাঠালে, যদি তারা তাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হয় এবং তোমার মনোনীত এই নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে তোমার কাছে প্রার্থনা করে; 35 ৩৫ তবে তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার সম্পূর্ণ কোরো৷ 36 ৩৬ তারা যদি তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, কারণ পাপ করে না, এমন কোনো মানুষ নেই এবং তুমি যদি তাদের প্রতি প্রচন্ড রেগে গিয়ে শত্রুর হাতে তাদেরকে সমর্পণ করো ও শত্রুরা তাদেরকে বন্দী করে দূরের কিংবা কাছের কোনো দেশে নিয়ে যাবে; 37 ৩৭ তবুও যে দেশে তারা বন্দী হিসাবে নীত হয়েছে, সেই দেশে যদি মনে মনে বিবেচনা করে ও ফেরে, নিজেদের বন্দিত্বের দেশে তোমার কাছে অনুরোধ করে যদি বলে, আমরা পাপ করেছি; অপরাধ করেছি ও দুষ্টুমি করেছি 38 ৩৮ এবং যে দেশে বন্দী হিসাবে নীত হয়েছি, সেই বন্দিত্বের দেশে যদি সমস্ত হৃদয় দিয়ে ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার কাছে ফিরে আসে এবং তুমি তাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে দেশ দিয়েছ, আপনাদের সেই দেশের সামনে, তোমার মনোনীত নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে যদি প্রার্থনা করে; 39 ৩৯ তবে তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বাসজায়গা থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার সম্পূর্ণ কোরো; আর তোমার যে প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, তাদের ক্ষমা কোরো৷ 40 ৪০ এখন, হে আমার ঈশ্বর, অনুরোধ করি, এই জায়গায় যে প্রার্থনা হবে, তার প্রতি যেন তোমার দৃষ্টি ও কান খোলা থাকে৷ 41 ৪১ হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, এখন তুমি উঠে তোমার বিশ্রামের জায়গায় যাও; তুমি ও তোমার শক্তির সিন্দুক৷ হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তোমার যাজকরা পরিত্রানের পোশাক পড়ুক ও তোমার সাধুরা মঙ্গলের জন্য আনন্দ করুক৷ 42 ৪২ হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি তোমার অভিষিক্তের মুখ ফিরিয়ে দিও না, তোমার দাস দায়ূদের প্রতি করা সমস্ত দয়া স্মরণ কর৷”

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 6 >