< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 16 >

1 আসার রাজত্বের ছত্রিশ বছরে ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে গেলেন এবং তিনি যিহূদার রাজা আসার কাছে কাউকে যাওয়া-আসা করতে না দেবার জন্য রামা গাঁথলেন।
আসার রাজত্বকালের ছত্রিশতম বছরে ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে উঠে গেলেন এবং রামা নগরটি সুরক্ষিত করে সেখানে ঘাঁটি গেড়েছিলেন, যেন যিহূদার রাজা আসার এলাকা থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে না পারে বা সেখানে ঢুকতেও না পারে।
2 তখন আসা সদাপ্রভুর গৃহের ও রাজবাড়ীর ভান্ডার থেকে সোনা ও রূপা বের করে নিয়ে দম্মেশকের অধিবাসী অরামের রাজা বিনহদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাঁকে বলে পাঠালেন,
আসা তখন সদাপ্রভুর মন্দির থেকে ও তাঁর নিজের প্রাসাদের কোষাগার থেকে রুপো ও সোনা নিয়ে সেগুলি অরামের রাজা সেই বিন্‌হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, যিনি দামাস্কাসে রাজত্ব করছিলেন।
3 “আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি করা আছে, যেমন আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল; দেখুন, আমি আপনাকে সোনা ও রূপা উপহার পাঠালাম। আপনি গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার যে চুক্তি আছে, তা ভেঙে ফেলুন; তাতে সে আমার কাছ থেকে চলে যাবে।”
“আপনার ও আমার মধ্যে এক চুক্তি হোক,” তিনি বললেন, “যেমনটি আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল। দেখুন, আমি আপনার কাছে রুপো ও সোনা পাঠাচ্ছি। এখন আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে করা আপনার চুক্তিটি ভেঙে ফেলুন, তবেই সে আমার কাছ থেকে পিছিয়ে যাবে।”
4 তখন বিনহদদ রাজা আসার কথায় রাজি হয়ে ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সেনাপতিদের পাঠালেন এবং তারা ইয়োন, দান, আবেল-ময়িম ও নপ্তালির সমস্ত ভান্ডার-নগরগুলিকে আঘাত করল।
বিন্‌হদদ আসার কথায় রাজি হলেন এবং ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতিদের পাঠালেন। তারা ইয়োন, দান, আবেল-ময়িম ও নপ্তালির সব ভাঁড়ার-নগর জোর করে দখল করে নিয়েছিল।
5 তখন বাশা এই খবর পেয়ে রামা তৈরীর কাজ বন্ধ করে দিলেন, তাঁর কাজ থেমে গেল।
বাশা যখন একথা শুনতে পেলেন, তিনি রামা নগরটি গড়ে তোলার কাজ বন্ধ করে দিলেন এবং তাঁর কাজ পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে গেলেন।
6 পরে রাজা আসা সমস্ত যিহূদাকে সঙ্গে নিয়ে এসে রামায় বাশা যে সব পাথর ও কাঠ দিয়ে গেঁথেছিলেন, তারা সেই সব নিয়ে গেল। পরে আসা সেগুলি দিয়ে গেবা ও মিসপা নগর গাঁথলেন।
পরে রাজা আসা যিহূদার সব লোকজনকে সেখানে নিয়ে এলেন, এবং তারা রামা থেকে সেইসব পাথর ও কাঠ বয়ে নিয়ে গেল, যেগুলি বাশা ব্যবহার করছিলেন। সেগুলি দিয়ে তিনি গেবা ও মিস্‌পা নগর দুটি গড়ে তুলেছিলেন।
7 সেই দিন দর্শক হনানি যিহূদার রাজা আসার কাছে এসে বললেন, “আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর না করে অরামের রাজার উপর নির্ভর করলেন, তাই অরাম রাজার সৈন্যদল আপনার হাতছাড়া হয়ে গেল।
সেই সময় দর্শক হনানি যিহূদার রাজা আসার কাছে এলেন এবং তাঁকে বললেন: “যেহেতু আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর না করে অরামের রাজার উপর নির্ভর করেছেন, তাই অরামের রাজার সৈন্যদল আপনার হাতের নাগাল এড়িয়ে পালিয়েছে।
8 কূশীয় ও লূবীয়দের কি অনেক সৈন্য এবং রথ ও ঘোড়াচালক ছিল না? কিন্তু আপনি সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করেছিলেন বলে তিনি আপনার হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলেন।
বিশাল সংখ্যক রথ ও অশ্বারোহী সমেত কূশীয় ও লূবীয়েরা কি বিশাল এক সৈন্যদল ছিল না? তবুও আপনি যখন সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করলেন, তখন তিনি আপনার হাতে তাদের সঁপে দিলেন।
9 কারণ সদাপ্রভুর প্রতি যাদের হৃদয় এক থাকে, তাদের জন্য নিজেকে বলবান দেখাবার জন্য তাঁর চোখ পৃথিবীর সব জায়গায় থাকে। এ বিষয়ে আপনি বোকামির কাজ করেছেন, কারণ এর পরে পুনরায় আপনি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বেন।”
কারণ সদাপ্রভুর চোখ তাদেরই শক্তিশালী করে তোলার জন্য গোটা পৃথিবী জুড়ে বিচরণ করে যাচ্ছে, যাদের অন্তর তাঁর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত। আপনি মূর্খের মতো কাজ করেছেন, আর এখন থেকে বারবার আপনাকে যুদ্ধ করতে হবে।”
10 ১০ তখন আসা ঐ দর্শকের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলেন; কারণ ঐ কথার জন্য তিনি তাঁর উপরে ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। আর একই দিনের আসা প্রজাদের মধ্যে কতগুলি লোকের উপর অত্যাচার করলেন।
এতে আসা সেই দর্শকের উপর রেগে গেলেন; তিনি এত রেগে গেলেন যে হনানিকে জেলখানায় পুরে দিলেন। একইসাথে, কিছু কিছু লোকের প্রতি আসা নিষ্ঠুর অত্যাচারও চালিয়েছিলেন।
11 ১১ আর দেখ, আসার সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, আসার রাজত্বকালের সব ঘটনা যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা আছে।
12 ১২ আসার রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরে তাঁর পায়ে রোগ হল; তাঁর এই রোগ ভীষণ হলেও তিনি সদাপ্রভুর সাহায্য না চেয়ে কেবল ডাক্তারদের খোঁজ করলেন।
আসার রাজত্বকালের ঊনচল্লিশ বছরে তিনি তাঁর পায়ের রোগে কাতর হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর রোগ দুঃসহ হওয়া সত্ত্বেও, এমনকি অসুস্থতার সময়েও তিনি সদাপ্রভুর কাছে সাহায্য চাননি, কিন্তু শুধু চিকিৎসকদের কাছেই তিনি সাহায্য চেয়েছিলেন।
13 ১৩ পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন, তাঁর রাজত্বের একচল্লিশ বছরে তিনি মারা গেলেন।
পরে আসার রাজত্বকালের একচল্লিশতম বছরে তিনি মারা গেলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন।
14 ১৪ আর তিনি দায়ূদ-নগরে নিজের জন্য যে কবর খুঁড়ে রেখেছিলেন, তার মধ্যে লোকেরা তাঁকে কবর দিল এবং নানা রকম মশলা ও মেশানো সুগন্ধি জিনিষে পরিপূর্ণ খাটে তাঁকে শোয়ালো, আর তাঁর জন্য বিরাট দাহ কাজ হল।
দাউদ-নগরে তিনি নিজের জন্য যে কবরটি খুঁড়িয়েছিলেন, সেখানেই লোকেরা তাঁকে কবর দিয়েছিল। মশলাপাতি ও বিভিন্ন ধরনের মিশ্রিত সুগন্ধি মাখিয়ে তাঁর দেহটি তারা একটি খাটে শুইয়ে দিয়েছিল, এবং তাঁর সম্মানে তারা আগুন জ্বালানোর এলাহি এক আয়োজন করল।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 16 >