< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 10 >

1 রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ তাঁকে রাজা করবার জন্য ইস্রায়েলীয়েরা সকলে শিখিমে উপস্থিত হয়েছিল।
রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ সমগ্র ইস্রায়েল তাঁকে রাজা করার জন্য সেখানে পৌঁছেছিল।
2 আর যখন নবাটের ছেলে যারবিয়াম এই কথা শুনলেন, কারণ তিনি মিশরে ছিলেন, শলোমন রাজার সামনে থেকে সেখানে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু যারবিয়াম মিশর থেকে ফিরে আসলেন।
নবাটের ছেলে যারবিয়াম যখন সেকথা শুনলেন (রাজা শলোমনের কাছ থেকে পালিয়ে তিনি সেই যে মিশরে চলে গেলেন, তিনি সেখানেই ছিলেন), তখন তিনি মিশর থেকে ফিরে এলেন।
3 লোকেরা দূত পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে আনল; আর যারবিয়াম ও ইস্রায়লীয়েরা সবাই রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন,
তাই তারা লোক পাঠিয়ে যারবিয়ামকে ডেকে এনেছিল, এবং তিনি ও সমগ্র ইস্রায়েল রহবিয়ামের কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন:
4 “আপনার বাবা আমাদের উপর কঠিন জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন; তাই আপনার বাবা আমাদের উপরে যে কঠিন দাসত্ব ও ভারী জোয়াল চাপিয়েছেন, আপনি তা হালকা করুন, তাহলে আমরা আপনার সেবা করব।”
“আপনার বাবা আমাদের উপর এক ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু এখন আপনি সেই কঠোর পরিশ্রম ও ভারী জোয়ালের ভার লঘু করে দিন, যা আপনার বাবা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন, আর আমরাও আপনার সেবা করব।”
5 তিনি তাদের বললেন, “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো;” তাতে লোকেরা চলে গেল।
রহবিয়াম উত্তর দিলেন, “তিন দিন পর তোমরা আমার কাছে আবার এসো।” তাই লোকজন চলে গেল।
6 পরে রহবিয়াম রাজা, তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে যে সব বৃদ্ধ নেতারা তাঁর সামনে থাকতেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে বললেন, “আমি এই লোকদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
পরে রাজা রহবিয়াম সেইসব প্রাচীনের সঙ্গে শলাপরামর্শ করলেন, যারা তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে তাঁর সেবা করতেন। “এই লোকদের কী উত্তর দিতে হবে সে বিষয়ে আপনারা আমাকে কী পরামর্শ দিতে চান?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন।
7 তাঁরা তাঁকে বললেন, “যদি আপনি এই সব লোকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে তাদের সন্তুষ্ট করেন এবং তাদের ভালো কথা বলেন, তবে তারা সব দিন আপনার সেবা করবে।”
তারা উত্তর দিলেন, “আপনি যদি এই লোকদের প্রতি দয়া দেখান ও তাদের খুশি করেন এবং তাদের সন্তোষজনক এক উত্তর দেন, তবে তারা সবসময় আপনার দাস হয়েই থাকবে।”
8 কিন্তু তিনি ঐ বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ অগ্রাহ্য করে সমবয়সী যুবকেরা যারা তাঁর সামনে দাঁড়াতো, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন।
কিন্তু সেই বয়স্ক লোকজন রহবিয়ামকে যে পরামর্শ দিলেন, তিনি তা অগ্রাহ্য করলেন এবং সেই কমবয়সি যুবকদের সাথে শলাপরামর্শ করলেন, যারা তাঁর সাথেই বেড়ে উঠেছিল ও যারা তাঁর সেবা করত।
9 তিনি তাদের বললেন, “ঐ লোকেরা বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন;’ এখন আমরা তাদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী পরামর্শ দিতে চাও? সেই লোকদের আমরা কী উত্তর দেব, যারা আমাকে বলেছে, ‘আপনার বাবা আমাদের উপর যে জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, তা আপনি লঘু করে দিন’?”
10 ১০ তাঁর সমবয়সী যুবকেরা বলল, “যে লোকেরা আপনাকে বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন,’ তাদের এই কথা বলুন, ‘আমার কড়ে আঙুলটা আমার বাবার কোমরের চেয়েও মোটা,’
তাঁর সাথে বেড়ে ওঠা যুবকেরা উত্তর দিয়েছিল, “লোকেরা আপনাকে বলেছে, ‘আপনার বাবা আমাদের উপর ভারী এক জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু আপনি এখন আমাদের জোয়াল হালকা করে দিন।’ এখন আপনি তাদের বলুন, ‘আমার কড়ে আঙুল আমার বাবার কোমরের চেয়েও মোটা।
11 ১১ এখন আমার বাবা তোমাদের উপর যে ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তোমাদের জোয়াল আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
আমার বাবা তোমাদের উপর ভারী এক জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন; আমি সেটি আরও ভারী করে তুলব। আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিয়েছেন; আমি তোমাদের শাস্তি দেব কাঁকড়াবিছের কামড় দিয়ে।’”
12 ১২ পরে “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো,” রাজার এই কথা অনুসারে যারবিয়াম ও সমস্ত লোকেরা তিন দিন পর রহবিয়ামের কাছে এল।
“তিন দিন পর আমার কাছে তোমরা ফিরে এসো,” রাজার বলা এই কথামতো তিন দিন পর যারবিয়াম ও সব লোকজন রহবিয়ামের কাছে ফিরে এলেন।
13 ১৩ আর রাজা তাদের খুব কড়া উত্তর দিলেন; ফলে রহবিরাম রাজা বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ ত্যাগ করলেন
রাজা তাদের রুক্ষ ভাষায় উত্তর দিলেন। বয়স্ক লোকজনের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে,
14 ১৪ এবং সেই যুবকদের পরামর্শ মত তাদের তিনি বললেন, “আমার বাবা তোমাদের জোয়াল ভারী করেছিলেন, কিন্তু আমি তা আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক দিয়ে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি তোমাদের কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
তিনি যুবকদের পরামর্শ মতো তাদের বললেন, “আমার বাবা তোমাদের জোয়াল ভারী করে দিলেন; আমি সেটি আরও ভারী করে তুলব। আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিলেন; আমি কাঁকড়াবিছের কামড় দিয়ে তোমাদের শাস্তি দেব।”
15 ১৫ এই ভাবে রাজা লোকদের কথায় কান দিলেন না, কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মাধ্যমে সদাপ্রভু নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে যে কথা বলেছিলেন, তা পূর্ণ করবার জন্য ঈশ্বর থেকেই এই ঘটনা ঘটল।
এইভাবে রাজা, প্রজাদের কথা শুনলেন না, কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মাধ্যমে সদাপ্রভুর যে বাক্য নবাটের ছেলে যারবিয়ামের কাছে এসেছিল, সেটি পূর্ণ করার জন্য ঈশ্বরের কাছ থেকেই ঘটনার মোড় এভাবে ঘুরে গেল।
16 ১৬ যখন সমস্ত ইস্রায়েল দেখল, রাজা তাদের কথা শুনলেন না, তখন লোকেরা রাজাকে উত্তরে বলল, “দায়ূদের সঙ্গে আমাদের কি সম্পর্ক? যিশয়ের ছেলের উপর আমাদের কোনো অধিকার নেই; হে ইস্রায়েল, সবাই নিজেদের তাঁবুতে যাও; দায়ূদ! এখন তোমার নিজের বংশ তুমি নিজেই দেখ।” তারপরে সমস্ত ইস্রায়েল নিজেদের তাঁবুতে চলে গেল।
সমগ্র ইস্রায়েল যখন দেখেছিল যে রাজা তাদের কথা শুনতে চাইছেন না, তখন তারা রাজাকে উত্তর দিয়েছিল: “দাউদে আমাদের আর কী অধিকার আছে, যিশয়ের ছেলেই বা কী অধিকার আছে? হে ইস্রায়েল তোমাদের তাঁবুতে ফিরে যাও! হে দাউদ, তুমিও নিজের বংশ দেখাশোনা করো!” এই বলে ইস্রায়েলীরা সবাই ঘরে ফিরে গেল।
17 ১৭ তবে যে সব ইস্রায়েলীয়রা যিহূদার নগরগুলিতে বাস করত, রহবিয়াম তাদের উপরে রাজত্ব করলেন।
কিন্তু যেসব ইস্রায়েলী যিহূদার বিভিন্ন নগরে বসবাস করছিল, রহবিয়াম তখনও তাদের উপর রাজত্ব করে যাচ্ছিলেন।
18 ১৮ পরে রহবিয়াম রাজা তাঁর কাজে নিযুক্ত দাসেদের শাসনকর্ত্তা হদোরামকে পাঠালেন; কিন্তু ইস্রায়েলীয় সন্তানরা তাকে পাথর মারলো, তাতে সে মারা গেল। আর রাজা রহবিয়াম তাড়াতাড়ি তাঁর রথে উঠে যিরূশালেমে পালিয়ে গেলেন।
রাজা রহবিয়াম বেগার শ্রমিকদের দেখাশোনা করার দায়িত্বপ্রাপ্ত অদোনীরামকে তাদের কাছে পাঠালেন, কিন্তু ইস্রায়েলীরা তার উপর পাথর ছুঁড়ে তাকে মেরে ফেলেছিল। রাজা রহবিয়াম অবশ্য, কোনোমতে রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন।
19 ১৯ এই ভাবে ইস্রায়েলীয়েরা দায়ূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল; আজ পর্যন্ত সেই ভাবেই রয়েছে।
এইভাবে, আজও পর্যন্ত ইস্রায়েল, দাউদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই চলেছে।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 10 >